শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্নঃ যা যা মাথায় রাখতে হবে

29 Mar, 2023   
শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্নঃ যা যা মাথায় রাখতে হবে

গ্রীষ্মের তুলনায় শীতকালে বাইক রাইডিং একটু কঠিন। যারা নিয়মিত বাইক চালান তারা এই সমস্যার সম্মুখীন হোন প্রতি শীতেই। আমাদের দেশে শীত কাল খুবই অল্প সময়ের জন্য আসে। বছরের অর্ধেকের বেশি সময়ই প্রায় গরম থাকে এর মাঝেও প্রায় ৩-৪ মাস শীত কালের স্থায়ীত্ব থাকে। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারী এই দুই মাস শীতের দেখা পাওয়া যায়। শীত কালে যেন সবকিছুই একটু থমকে যায়, এসময় যেকোন কিছুর একটু বেশি যত্ন দরকার হয় ঠিক তেমনি আমাদের বাইকেরও এসময় কিছু যত্নের প্রয়োজন আছে। শীতকালে বাইকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। শীতের সকালে বাইক/স্কুটারের ইঞ্জিন স্টার্ট নিতে চায় না। কমে যায় টায়ারের বাতাসের চাপ। ধুলোমলিন হয় প্রিয় বাইক। তাই এসময়ে দরকার বাড়তি যত্ন। বাইকের সামান্য কিছু যত্ন আর সতর্কতা শীতে বাইকের বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে দূরে রাখে। সামান্য কয়েকটি উপায় অবলম্বন করলেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় ।

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শীতকালে বাইক চালানোর সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যেমন, কুয়াশার সময় সতর্ক থাকা, প্রয়োজনীয় পোশাক পরা, বাইকের ইঞ্জিনের যত্ন নেয়া, ইত্যাদি। শীতে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন বেশি বিগড়ায়। শীতকালে অনেকেই তাদের মোটরসাইকেল কম ব্যবহার করেন বা ব্যবহার করেন না। আপনি আপনার পছন্দের সব জিনিসের সঙ্গে শীত উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্ন নিতে ভুলে করবেন না। শীতকালে আপনার মোটরসাইকেলটির যত্ন নেওয়ার জন্য এখানে কয়েকটি টিপস দেওয়া হল, যাতে আসন্ন শীত মৌসুমের জন্য ভাল অবস্থায় থাকে এবং এটি চালাতে অসুবিধা না হয়। জেনে নিন শীতকাল বাইকের ইঞ্জিন সচল রাখতে কীভাবে যত্ন নেবেন।

শীতকালে বাইক চালানো এবং বাইকের যত্নে কি কি করণীয়ঃ

(১) প্রতিদিনই ইঞ্জিন চালু করুন, দীর্ঘ সময় ফেলে রাখবেন না

শীতে যদি আপনার বাইক নিয়মিত ব্যবহারের সুযোগ না হয় তাহলে অন্তত প্রতিদিন বাইকটি স্টার্ট দিয়ে কিছুক্ষন রেখে দিন। দিনের প্রথম স্টার্টের পর স্টার্ট দিয়েই বাইক না চালিয়ে বা রেভ না করে চেষ্টা করবেন স্টার্টের পর কিছুক্ষন বাইকটি আইডল আর পি এম এ রেখে ৪-৫ মিনিট পর চালানোর যদিও এটা কার্বুরেটর বাইকে একটু কষ্টকর কেননা কার্বুরেটর বাইকে সকালের প্রথম স্টার্টে স্টার্ট ধরে রাখা একটু সমস্যা আর পি এম ছেড়ে দেয় তারা কিছুক্ষন থ্রোটল দিয়ে ইঞ্জিন হিট করে চালাবেন এতে করে ইঞ্জিন ভাল থাকবে। এতে যে কোনো সময় বাইক রাইডিং এর জন্য প্রস্তুত থাকবে।

(২) ব্যাটারী চেক আপ করুন এবং যত্ন নিন

নিয়মিত ব্যাটারী চেক আপ করুন, যাদের বাইকে কিক অপশন নেই তাদের জন্য ব্যাটারী অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক সিলড ড্রাই ব্যাটারির চার্জিং ছাড়া অন্য কোনও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না। এখনকার অনেক মডেলের বাইকে কিকার নেই। যেসব বাইকে কিকার নেই তাদের বাড়তি চিন্তা। কেননা, শীতকালে দীর্ঘক্ষণ বাইক রাইডিং না করলে, বাইক স্টার্ট নিতে সমস্যা হয়। যাদের বাইকে কিকার আছে তারা কিকার দিয়ে বাইক স্টার্ট দিন। যাদের বাইকে এই বাড়তি সুবিধা নেই তারা ব্যাটারির যত্ন নিন। শীতে যেহেতু স্টার্ট এর কিছু সমস্যা তৈরী হয় তাই ব্যাটারীতে সব সময় পর্যাপ্ত চার্জ থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখুন। লিড অ্যাসিড ব্যাটারি হলে ওয়াটার লেভেল পরীক্ষা করুন। কমে গেলে টপ আপ করুন। চার্জ কমে গেলে চার্জ দিন।

(৩) কিকে বাইক স্টার্ট করুন

শীতের সকালে বাইক স্টার্ট না নেয়া অনেক সময়ে বাইকারদের জন্য আতংকের কারন হয়ে দাড়ায়। সেল্ফতো নিতেই চায় না, কিকেও কাজ হয় না। বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ বাইকেই সেলফ বা ইলেক্ট্রিক স্টার্ট সিস্টেম এখন তাই এখন প্রায় কিক প্রায় কিক দিয়ে স্ট্রাট দিয়ে ভূলেই গেছি আমরা

শীতকালে সকল পদার্থেরই সংকোচন হয়। তাই পেট্রোলরের ঘনত্ব স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়ে যায়। শীতকালে চেষ্টা করবেন দিনের প্রথম স্টার্টটা কিক দিয়ে দিতে, কেননা শীতে পেট্রোলের ঘনত্ব অনেকটাই কমে যায় আর ইঞ্জিন অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে যায় যার দলে স্পার্ক প্লাগে সহজে কারেণ্ট পৌঁছায় না এজন্য সেলফ তো দূরে কিকেই অনেক সময় কাজ হয় না।এ ক্ষেত্রে চোক টেনে কিক দিয়ে স্টার্ট দিন। সেল্ফস্টার্ট থাকলেও শীতের দিনে অন্তত প্রথমবার চোক টেনে কিক স্টার্ট দিয়ে স্টার্ট দিন। পরের থেকে সেল্ফ ব্যবহার করতে পারেন। আর যেহেতু এখন অনেক বাইকেই কিক অপশন থাকে না তারা চেষ্টা করবো বাইকের ব্যাটারির সঠিক যত্ন নেয়া । কিকস্টার্ট থাকুক বা না থাকুক ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ চার্জ রয়েছে কিনা তা অবশ্যই দেখে নিন।

(৪) প্লাগ পরিস্কার রাখুন

মোটরবাইকের একটি গুরুত্বপূ্র্ণ অংশ হল স্পার্ক প্লাগ। এটি মোটরবাইক স্টার্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। শীতকালে একটু ঘন ঘন স্পার্ক প্লাগ পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন, এতে কারেন্ট ভাল পাবে। কারণ দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর এই যন্ত্রাংশটিতে ময়লা জমে। সার্ভিসিং করানোর সময় বা এমনি সময়ও স্পার্ক প্লাগটি পরিষ্কার রাখুন। সবচেয়ে ভাল হয় শীতের শুরুতে নতুন স্পার্ক লাগিয়ে নিলে আর চিন্তা থাকবে না। এতে শীতকালের অনাকাংখিত যন্ত্রনা থেকে বেচে যাবেন।

(৫) এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার রাখুন

এয়ার ফিল্টার অনেক প্রয়োজনীয় একটা পার্টস। শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্প কম থাকে। ফলে বাতাসে ওড়ে ধুলা। এই ধুলা বাইকের জন্য ক্ষতিকর। বাইকের এয়ার ফিল্টার থাকলে আপনি যেমন ভাল মাইলেজ পাবেন তেমনি ভাল পারফরমেন্সও পাবেন। ধুলা এয়ার ফিল্টার ভেদকরে তেলের সঙ্গে ইঞ্জিনেও প্রবেশ করে। আর শীতে ধুলা বালি অনেক বেড়ে যায় তাই ঘন ঘন এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করুন। আর শীতে অধিক কুয়াশার কারণে এয়ার ফিল্টার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই নিয়মিত এয়ার পরষ্কার এবং পরিবর্তন করা উচিত।

(৬) পেট্রোলের সাথে সামান্য অকটেন মিশিয়ে নিন

শীতকালে ফুয়েল বুস্টার হিসেবে অকটেন ব্যবহার করতে পারেন। পেট্রোলের সাথে খুবই সামান্য অকটনের মিশ্রন দ্রুত স্টার্ট নিতে যেমন সাহায্য করবে তেমন বাইকের গতি ঠিক রাখবে। আমরা অনেকেই বাইকে পেট্রোল ব্যবহার করে থাকি, যেটা শীত কালে বাইকের স্টার্টে সমস্যা করে, এতে অনেক সময় পাওয়ার লুস করে। পেট্রোল এবং অকটেনের মিশ্রন ১০:১ রাখতে পারেন। তবে ভালো মানের পেট্রোল পেলে তার প্রয়োজন নেই। ফুয়েল বুস্টার হিসেবে অকটেন অনেক ভাল জিনিস, অকটেন দ্রুত ইঞ্জিনের সাথে মিশে দ্রুত পাওয়া প্রদান করে। আর যারা রেগুলার অকটেন ব্যবহার করেন তাদের এক্ষেত্রে ভাল পারফরমেন্স পাবেন।

(৭) বাইক ঢেকে রাখুন

শীতের সময়ে মোটর সাইকেলের কভার বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। বাইরে বাইক রাখলে ঢেকে রাখুন। শীত কালে প্রচুর পরিমাণে কুয়াশা পড়ে যা বাইকের জন্য ক্ষতিকর, বাইক সরাসরি খোলা আকাশে নিচে রাখবেন না এতে করে কুয়াশায় বাইক সম্পূর্ন ভিজে যায় এতে ব্যাটারীর উপর প্রভাব পরে।  আপনার মোটরসাইকেলটি ভালভাবে পরিষ্কার করুন এবং এটিকে ঢেকে দেওয়ার আগে নিশ্চিত করুন যে এটি স্যাঁতসেঁতে না হয়। চেষ্টা করবেন বাইক ফাঁকা জায়গায় না রাখার যদি একান্তই রাখতে হয় তাহলে অবশ্যই ঢেকে রাখবেন। এতে শীতের কুয়াশা বাইককে ভেজাতে পারবে না, বাইক ভালো থাকবে। ওয়াটার রেপিলেন্ট স্প্রে মোটরসাইকেল শুষ্ক রাখতে সাহায্য করতে পারে।  তবে বাইক রাইডিং শেষে, ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হতে সময় দিন। ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হলে ঢেকে রাখুন।

(৮) সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন নিয়মিত ওয়েল পরিবর্তন করুন

মোটরবাইকে থাকা ইঞ্জিন অয়েলটি একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বদলানো উচিত। শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্নে  আলাদা গ্রেডের নির্ধারিত ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। পুরানো তেল ইঞ্জিনকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই সময়ে সময়ে তেল পরিবর্তন করতে থাকুন। ঘন ইঞ্জিন অয়েল দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে পাতলা হয়ে যায় তখনই ইঞ্জিন স্টার্ট না নেওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। মেন্যুয়াল অনুযায়ী সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট পথ পাড়ি দেয়ার পর বদলে ফেলুন ইঞ্জিন ওয়েল। এটিতে আপনার কিছু অর্থ খরচ হতে পারে, তবে এটি ইঞ্জিনকে কার্যকর রাখবে। এছাড়া বাইকের ক্লাচ ক্যাবল, চেইন, ব্রেক ও গিয়ার লিভার ইত্যাদি, এই সব জায়গায় গ্রিজ দেওয়া থাকে, আপনি গ্রিজ না দিয়ে ইঞ্জিন ওয়েল দিবেন, কারন শীতকালে গ্রিজ আরো জমে যায়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্কুটার/বাইকের সার্ভিসিং করান।

(৯) টায়ারের যত্ন নিন এবং বাতাসের চাপ ঠিক রাখুন

স্বাভাবিক সময়ে তো বটেই, শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্ন নেওয়ার সময়, আমরা প্রায়শই টায়ারকে উপেক্ষা করি। অতি শীতে টায়ারে বাতাসের সংকোচন হয়ে আয়তন কমে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাপের চেয়ে সামান্য বেশি হাওয়া রাখতে পারেন টায়ারে। মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হবার আগে অবশ্যই টায়ারের বাতাসের চাপ চেক করবেন। টায়ারে বাতাসের চাপ ঠিক না থাকলে, শীতকালে বাইক চালানো খুব বিপর্জনক, দুর্ঘটনার সমূহ সম্ভবনা থাকে।

(১০) চেইনের যত্ন নিন

শীতকালে চেইনে ব্যবহৃত অয়েল এবং ময়লার মিশ্রনটি জমে শক্ত হয়ে যেতে পারে। যা গরমের সময়ের থেকে বেশি দ্রুত হয়ে থাকে। এই অবস্থা, শীতকালে বাইক চালানোর সময়ে অস্বস্তির কারণ হতে পারে, দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। বাইকের চেইন শীতকালে অধিক ধুলাবালির জন্য ময়লা হয়, তাই চেষ্টা করবেন প্রতি ২০০কিঃমিঃ পর পর চেইন ক্লিন করার। শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্নে চেইন পরিষ্কারের ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে।

শীতকালে বাইক চালানো আনন্দদায়ক। কিন্তু দীর্ঘ ভ্রমণে যাওয়ার আগে অবশ্যই বাইক সার্ভিস করাবেন। শীতকালে বাইকের রঙ অল্পদিনেই মলিন হয়ে যায়। তাই নিয়মিত পরিষ্কার করবেন, পরিষ্কার করার পর চকচকে ভাব আনতে পলিশ ব্যবহার করুন। ভ্রমণকালে অবশ্যই ঠাণ্ডারোধী পোশাক পরবেন, সাথে বুট, গ্লাভস, সেফটি গার্ড সঙ্গে নেবেন। দীর্ঘভ্রমণে অতিরিক্ত জ্বালানি এবং ইঞ্জিন ওয়েলও নেবেন।

শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্ন এবং রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস

(১) বাইক স্টার্ট করার পর ব্রেক, ক্লাস লিভার, ব্যাটারি এবং লাইটস সবগুলো পুরোপুরি কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।

(২) বাইক স্টার্ট করার আগে বাইকের ইঞ্জিন অয়েল টায়ার এবং চেইন পরীক্ষা করে নিন ।

(৩) দিনের প্রথম স্টার্ট দেওয়ার পর ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট অপেক্ষা করে গিয়ার দিন। বাইক চালু করার প্রথম ৪ থেকে ৫ মিনিট ৪০০০থেকে ৫০০০ আরপিএম মধ্য চালান।

(৪) বাইক রাইডিং এর সময় যাতে ঠান্ডা বাতাস সরাসরি বুক এবং গলায় না লাগে সেজন্য ভালোমানের জ্যাকেট পরিধান করুন। প্রয়োজন অনুযায়ী শীতের কাপড় সাথে নিন। ঠান্ডা বাতাস এবং সর্দিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে ফুলফেইস হেলমেট পরিধান করুন।

(৫) শীতকালে বাইক চালানোর সময় কুয়াশায় সঠিকভাবে ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুনএবং মোটরসাইকেলের হেডলাইট অন রেখে বাইক রাইডিং করুন।

(৬) শীতের সকালে এবং রাতে অনেক কুয়াশা থাকে ফলে রাস্তায় রাস্তায় চলাচল করা অন্যান্য যানবাহন যাতে সহজেই আপনাকে দেখতে পায় সেজন্য রিফ্লেক্টিভ জ্যাকেট ব্যবহার করুন ।

(৭) শীতের সময়ে বাইক রাইডিং-এ হ্যান্ড গ্লাভস অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। এই ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা জরুরি কারণ অতিরিক্ত ঠান্ডা পরলে, বাইকের হ্যান্ডেল দীর্ঘ সময় ধরে রাখলে, হাতের আংগুল নড়াচড়া করতে সমস্যা হয় তাই আঙ্গুল গরম রাখতে ভালো মানের হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করুন।

পরিশেষে, শীতকালে মোটরসাইকেলের  যত্নে, অন্য সময়ের স্বাভাবিক যত্নের চেয়ে ২/১টি দিকে অতিরিক্ত খেয়াল রাখলেই আপনার বাইক ভালো থাকবে, আপনাকে কম সমস্যায় ফেলবে। শীতকালে এইসব কিছু যদি খেয়াল করে বাইকের যত্ন নেয়া যায় তবে কোনো রকম সমস্যা পরবেন না, বাইক একটি যান্ত্রিক যান সুতরাং এর সমস্যা হবেই আর সেটা আমাদেরই নিজেদের খেয়াল করে যত্ন নিতে হবে। এছাড়াও শীতকালে বাইক চালানো হলে নিজের পোশাকের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যেনো সহজে ঠান্ডা লেগে না যায়। শীতের সকালে কুয়াশায় অতিরিক্ত গতির জন্য অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, অতিরিক্ত গতি জীবন পুরাটাই নষ্ট করে দিতে পারে। তাই বাইকের গতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

আপনি মোটরসাইকেল সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়ে জানতে ভিজিট করতে পারেন বাইকস গাইডেবাইকস গাইড হল বাংলাদেশের অন্যতম বড়ো, এবং অথেন্টিক মোটরবাইক পোর্টাল যেখানে আপনি বাইক সম্পর্কিত অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন। এখানে আপনি পাবেন বিভিন্ন বাইকের বিস্তারিত বর্ণনা, দাম, প্রযুক্তিগত স্পেসিফিকেশন, ছবি, ভিডিও এবং আরও অনেক কিছু।

গ্রীষ্মের তুলনায় শীতকালে বাইক রাইডিং একটু কঠিন। যারা নিয়মিত বাইক চালান তারা এই সমস্যার সম্মুখীন হোন প্রতি শীতেই। আমাদের দেশে শীত কাল খুবই অল্প সময়ের জন্য আসে। বছরের অর্ধেকের বেশি সময়ই প্রায় গরম থাকে এর মাঝেও প্রায় ৩-৪ মাস শীত কালের স্থায়ীত্ব থাকে। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারী এই দুই মাস শীতের দেখা পাওয়া যায়। শীত কালে যেন সবকিছুই একটু থমকে যায়, এসময় যেকোন কিছুর একটু বেশি যত্ন দরকার হয় ঠিক তেমনি আমাদের বাইকেরও এসময় কিছু যত্নের প্রয়োজন আছে। শীতকালে বাইকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। শীতের সকালে বাইক/স্কুটারের ইঞ্জিন স্টার্ট নিতে চায় না। কমে যায় টায়ারের বাতাসের চাপ। ধুলোমলিন হয় প্রিয় বাইক। তাই এসময়ে দরকার বাড়তি যত্ন। বাইকের সামান্য কিছু যত্ন আর সতর্কতা শীতে বাইকের বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে দূরে রাখে। সামান্য কয়েকটি উপায় অবলম্বন করলেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় ।

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শীতকালে বাইক চালানোর সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যেমন, কুয়াশার সময় সতর্ক থাকা, প্রয়োজনীয় পোশাক পরা, বাইকের ইঞ্জিনের যত্ন নেয়া, ইত্যাদি। শীতে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন বেশি বিগড়ায়। শীতকালে অনেকেই তাদের মোটরসাইকেল কম ব্যবহার করেন বা ব্যবহার করেন না। আপনি আপনার পছন্দের সব জিনিসের সঙ্গে শীত উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্ন নিতে ভুলে করবেন না। শীতকালে আপনার মোটরসাইকেলটির যত্ন নেওয়ার জন্য এখানে কয়েকটি টিপস দেওয়া হল, যাতে আসন্ন শীত মৌসুমের জন্য ভাল অবস্থায় থাকে এবং এটি চালাতে অসুবিধা না হয়। জেনে নিন শীতকাল বাইকের ইঞ্জিন সচল রাখতে কীভাবে যত্ন নেবেন।

শীতকালে বাইক চালানো এবং বাইকের যত্নে কি কি করণীয়ঃ

(১) প্রতিদিনই ইঞ্জিন চালু করুন, দীর্ঘ সময় ফেলে রাখবেন না

শীতে যদি আপনার বাইক নিয়মিত ব্যবহারের সুযোগ না হয় তাহলে অন্তত প্রতিদিন বাইকটি স্টার্ট দিয়ে কিছুক্ষন রেখে দিন। দিনের প্রথম স্টার্টের পর স্টার্ট দিয়েই বাইক না চালিয়ে বা রেভ না করে চেষ্টা করবেন স্টার্টের পর কিছুক্ষন বাইকটি আইডল আর পি এম এ রেখে ৪-৫ মিনিট পর চালানোর যদিও এটা কার্বুরেটর বাইকে একটু কষ্টকর কেননা কার্বুরেটর বাইকে সকালের প্রথম স্টার্টে স্টার্ট ধরে রাখা একটু সমস্যা আর পি এম ছেড়ে দেয় তারা কিছুক্ষন থ্রোটল দিয়ে ইঞ্জিন হিট করে চালাবেন এতে করে ইঞ্জিন ভাল থাকবে। এতে যে কোনো সময় বাইক রাইডিং এর জন্য প্রস্তুত থাকবে।

(২) ব্যাটারী চেক আপ করুন এবং যত্ন নিন

নিয়মিত ব্যাটারী চেক আপ করুন, যাদের বাইকে কিক অপশন নেই তাদের জন্য ব্যাটারী অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক সিলড ড্রাই ব্যাটারির চার্জিং ছাড়া অন্য কোনও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না। এখনকার অনেক মডেলের বাইকে কিকার নেই। যেসব বাইকে কিকার নেই তাদের বাড়তি চিন্তা। কেননা, শীতকালে দীর্ঘক্ষণ বাইক রাইডিং না করলে, বাইক স্টার্ট নিতে সমস্যা হয়। যাদের বাইকে কিকার আছে তারা কিকার দিয়ে বাইক স্টার্ট দিন। যাদের বাইকে এই বাড়তি সুবিধা নেই তারা ব্যাটারির যত্ন নিন। শীতে যেহেতু স্টার্ট এর কিছু সমস্যা তৈরী হয় তাই ব্যাটারীতে সব সময় পর্যাপ্ত চার্জ থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখুন। লিড অ্যাসিড ব্যাটারি হলে ওয়াটার লেভেল পরীক্ষা করুন। কমে গেলে টপ আপ করুন। চার্জ কমে গেলে চার্জ দিন।

(৩) কিকে বাইক স্টার্ট করুন

শীতের সকালে বাইক স্টার্ট না নেয়া অনেক সময়ে বাইকারদের জন্য আতংকের কারন হয়ে দাড়ায়। সেল্ফতো নিতেই চায় না, কিকেও কাজ হয় না। বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ বাইকেই সেলফ বা ইলেক্ট্রিক স্টার্ট সিস্টেম এখন তাই এখন প্রায় কিক প্রায় কিক দিয়ে স্ট্রাট দিয়ে ভূলেই গেছি আমরা

শীতকালে সকল পদার্থেরই সংকোচন হয়। তাই পেট্রোলরের ঘনত্ব স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়ে যায়। শীতকালে চেষ্টা করবেন দিনের প্রথম স্টার্টটা কিক দিয়ে দিতে, কেননা শীতে পেট্রোলের ঘনত্ব অনেকটাই কমে যায় আর ইঞ্জিন অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে যায় যার দলে স্পার্ক প্লাগে সহজে কারেণ্ট পৌঁছায় না এজন্য সেলফ তো দূরে কিকেই অনেক সময় কাজ হয় না।এ ক্ষেত্রে চোক টেনে কিক দিয়ে স্টার্ট দিন। সেল্ফস্টার্ট থাকলেও শীতের দিনে অন্তত প্রথমবার চোক টেনে কিক স্টার্ট দিয়ে স্টার্ট দিন। পরের থেকে সেল্ফ ব্যবহার করতে পারেন। আর যেহেতু এখন অনেক বাইকেই কিক অপশন থাকে না তারা চেষ্টা করবো বাইকের ব্যাটারির সঠিক যত্ন নেয়া । কিকস্টার্ট থাকুক বা না থাকুক ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ চার্জ রয়েছে কিনা তা অবশ্যই দেখে নিন।

(৪) প্লাগ পরিস্কার রাখুন

মোটরবাইকের একটি গুরুত্বপূ্র্ণ অংশ হল স্পার্ক প্লাগ। এটি মোটরবাইক স্টার্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। শীতকালে একটু ঘন ঘন স্পার্ক প্লাগ পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন, এতে কারেন্ট ভাল পাবে। কারণ দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর এই যন্ত্রাংশটিতে ময়লা জমে। সার্ভিসিং করানোর সময় বা এমনি সময়ও স্পার্ক প্লাগটি পরিষ্কার রাখুন। সবচেয়ে ভাল হয় শীতের শুরুতে নতুন স্পার্ক লাগিয়ে নিলে আর চিন্তা থাকবে না। এতে শীতকালের অনাকাংখিত যন্ত্রনা থেকে বেচে যাবেন।

(৫) এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার রাখুন

এয়ার ফিল্টার অনেক প্রয়োজনীয় একটা পার্টস। শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্প কম থাকে। ফলে বাতাসে ওড়ে ধুলা। এই ধুলা বাইকের জন্য ক্ষতিকর। বাইকের এয়ার ফিল্টার থাকলে আপনি যেমন ভাল মাইলেজ পাবেন তেমনি ভাল পারফরমেন্সও পাবেন। ধুলা এয়ার ফিল্টার ভেদকরে তেলের সঙ্গে ইঞ্জিনেও প্রবেশ করে। আর শীতে ধুলা বালি অনেক বেড়ে যায় তাই ঘন ঘন এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করুন। আর শীতে অধিক কুয়াশার কারণে এয়ার ফিল্টার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই নিয়মিত এয়ার পরষ্কার এবং পরিবর্তন করা উচিত।

(৬) পেট্রোলের সাথে সামান্য অকটেন মিশিয়ে নিন

শীতকালে ফুয়েল বুস্টার হিসেবে অকটেন ব্যবহার করতে পারেন। পেট্রোলের সাথে খুবই সামান্য অকটনের মিশ্রন দ্রুত স্টার্ট নিতে যেমন সাহায্য করবে তেমন বাইকের গতি ঠিক রাখবে। আমরা অনেকেই বাইকে পেট্রোল ব্যবহার করে থাকি, যেটা শীত কালে বাইকের স্টার্টে সমস্যা করে, এতে অনেক সময় পাওয়ার লুস করে। পেট্রোল এবং অকটেনের মিশ্রন ১০:১ রাখতে পারেন। তবে ভালো মানের পেট্রোল পেলে তার প্রয়োজন নেই। ফুয়েল বুস্টার হিসেবে অকটেন অনেক ভাল জিনিস, অকটেন দ্রুত ইঞ্জিনের সাথে মিশে দ্রুত পাওয়া প্রদান করে। আর যারা রেগুলার অকটেন ব্যবহার করেন তাদের এক্ষেত্রে ভাল পারফরমেন্স পাবেন।

(৭) বাইক ঢেকে রাখুন

শীতের সময়ে মোটর সাইকেলের কভার বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। বাইরে বাইক রাখলে ঢেকে রাখুন। শীত কালে প্রচুর পরিমাণে কুয়াশা পড়ে যা বাইকের জন্য ক্ষতিকর, বাইক সরাসরি খোলা আকাশে নিচে রাখবেন না এতে করে কুয়াশায় বাইক সম্পূর্ন ভিজে যায় এতে ব্যাটারীর উপর প্রভাব পরে।  আপনার মোটরসাইকেলটি ভালভাবে পরিষ্কার করুন এবং এটিকে ঢেকে দেওয়ার আগে নিশ্চিত করুন যে এটি স্যাঁতসেঁতে না হয়। চেষ্টা করবেন বাইক ফাঁকা জায়গায় না রাখার যদি একান্তই রাখতে হয় তাহলে অবশ্যই ঢেকে রাখবেন। এতে শীতের কুয়াশা বাইককে ভেজাতে পারবে না, বাইক ভালো থাকবে। ওয়াটার রেপিলেন্ট স্প্রে মোটরসাইকেল শুষ্ক রাখতে সাহায্য করতে পারে।  তবে বাইক রাইডিং শেষে, ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হতে সময় দিন। ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হলে ঢেকে রাখুন।

(৮) সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন নিয়মিত ওয়েল পরিবর্তন করুন

মোটরবাইকে থাকা ইঞ্জিন অয়েলটি একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বদলানো উচিত। শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্নে  আলাদা গ্রেডের নির্ধারিত ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। পুরানো তেল ইঞ্জিনকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই সময়ে সময়ে তেল পরিবর্তন করতে থাকুন। ঘন ইঞ্জিন অয়েল দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে পাতলা হয়ে যায় তখনই ইঞ্জিন স্টার্ট না নেওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। মেন্যুয়াল অনুযায়ী সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট পথ পাড়ি দেয়ার পর বদলে ফেলুন ইঞ্জিন ওয়েল। এটিতে আপনার কিছু অর্থ খরচ হতে পারে, তবে এটি ইঞ্জিনকে কার্যকর রাখবে। এছাড়া বাইকের ক্লাচ ক্যাবল, চেইন, ব্রেক ও গিয়ার লিভার ইত্যাদি, এই সব জায়গায় গ্রিজ দেওয়া থাকে, আপনি গ্রিজ না দিয়ে ইঞ্জিন ওয়েল দিবেন, কারন শীতকালে গ্রিজ আরো জমে যায়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্কুটার/বাইকের সার্ভিসিং করান।

(৯) টায়ারের যত্ন নিন এবং বাতাসের চাপ ঠিক রাখুন

স্বাভাবিক সময়ে তো বটেই, শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্ন নেওয়ার সময়, আমরা প্রায়শই টায়ারকে উপেক্ষা করি। অতি শীতে টায়ারে বাতাসের সংকোচন হয়ে আয়তন কমে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাপের চেয়ে সামান্য বেশি হাওয়া রাখতে পারেন টায়ারে। মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হবার আগে অবশ্যই টায়ারের বাতাসের চাপ চেক করবেন। টায়ারে বাতাসের চাপ ঠিক না থাকলে, শীতকালে বাইক চালানো খুব বিপর্জনক, দুর্ঘটনার সমূহ সম্ভবনা থাকে।

(১০) চেইনের যত্ন নিন

শীতকালে চেইনে ব্যবহৃত অয়েল এবং ময়লার মিশ্রনটি জমে শক্ত হয়ে যেতে পারে। যা গরমের সময়ের থেকে বেশি দ্রুত হয়ে থাকে। এই অবস্থা, শীতকালে বাইক চালানোর সময়ে অস্বস্তির কারণ হতে পারে, দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। বাইকের চেইন শীতকালে অধিক ধুলাবালির জন্য ময়লা হয়, তাই চেষ্টা করবেন প্রতি ২০০কিঃমিঃ পর পর চেইন ক্লিন করার। শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্নে চেইন পরিষ্কারের ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে।

শীতকালে বাইক চালানো আনন্দদায়ক। কিন্তু দীর্ঘ ভ্রমণে যাওয়ার আগে অবশ্যই বাইক সার্ভিস করাবেন। শীতকালে বাইকের রঙ অল্পদিনেই মলিন হয়ে যায়। তাই নিয়মিত পরিষ্কার করবেন, পরিষ্কার করার পর চকচকে ভাব আনতে পলিশ ব্যবহার করুন। ভ্রমণকালে অবশ্যই ঠাণ্ডারোধী পোশাক পরবেন, সাথে বুট, গ্লাভস, সেফটি গার্ড সঙ্গে নেবেন। দীর্ঘভ্রমণে অতিরিক্ত জ্বালানি এবং ইঞ্জিন ওয়েলও নেবেন।

শীতকালে মোটরসাইকেলের যত্ন এবং রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস

(১) বাইক স্টার্ট করার পর ব্রেক, ক্লাস লিভার, ব্যাটারি এবং লাইটস সবগুলো পুরোপুরি কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।

(২) বাইক স্টার্ট করার আগে বাইকের ইঞ্জিন অয়েল টায়ার এবং চেইন পরীক্ষা করে নিন ।

(৩) দিনের প্রথম স্টার্ট দেওয়ার পর ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট অপেক্ষা করে গিয়ার দিন। বাইক চালু করার প্রথম ৪ থেকে ৫ মিনিট ৪০০০থেকে ৫০০০ আরপিএম মধ্য চালান।

(৪) বাইক রাইডিং এর সময় যাতে ঠান্ডা বাতাস সরাসরি বুক এবং গলায় না লাগে সেজন্য ভালোমানের জ্যাকেট পরিধান করুন। প্রয়োজন অনুযায়ী শীতের কাপড় সাথে নিন। ঠান্ডা বাতাস এবং সর্দিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে ফুলফেইস হেলমেট পরিধান করুন।

(৫) শীতকালে বাইক চালানোর সময় কুয়াশায় সঠিকভাবে ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুনএবং মোটরসাইকেলের হেডলাইট অন রেখে বাইক রাইডিং করুন।

(৬) শীতের সকালে এবং রাতে অনেক কুয়াশা থাকে ফলে রাস্তায় রাস্তায় চলাচল করা অন্যান্য যানবাহন যাতে সহজেই আপনাকে দেখতে পায় সেজন্য রিফ্লেক্টিভ জ্যাকেট ব্যবহার করুন ।

(৭) শীতের সময়ে বাইক রাইডিং-এ হ্যান্ড গ্লাভস অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। এই ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা জরুরি কারণ অতিরিক্ত ঠান্ডা পরলে, বাইকের হ্যান্ডেল দীর্ঘ সময় ধরে রাখলে, হাতের আংগুল নড়াচড়া করতে সমস্যা হয় তাই আঙ্গুল গরম রাখতে ভালো মানের হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করুন।

পরিশেষে, শীতকালে মোটরসাইকেলের  যত্নে, অন্য সময়ের স্বাভাবিক যত্নের চেয়ে ২/১টি দিকে অতিরিক্ত খেয়াল রাখলেই আপনার বাইক ভালো থাকবে, আপনাকে কম সমস্যায় ফেলবে। শীতকালে এইসব কিছু যদি খেয়াল করে বাইকের যত্ন নেয়া যায় তবে কোনো রকম সমস্যা পরবেন না, বাইক একটি যান্ত্রিক যান সুতরাং এর সমস্যা হবেই আর সেটা আমাদেরই নিজেদের খেয়াল করে যত্ন নিতে হবে। এছাড়াও শীতকালে বাইক চালানো হলে নিজের পোশাকের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যেনো সহজে ঠান্ডা লেগে না যায়। শীতের সকালে কুয়াশায় অতিরিক্ত গতির জন্য অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, অতিরিক্ত গতি জীবন পুরাটাই নষ্ট করে দিতে পারে। তাই বাইকের গতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

আপনি মোটরসাইকেল সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়ে জানতে ভিজিট করতে পারেন বাইকস গাইডেবাইকস গাইড হল বাংলাদেশের অন্যতম বড়ো, এবং অথেন্টিক মোটরবাইক পোর্টাল যেখানে আপনি বাইক সম্পর্কিত অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন। এখানে আপনি পাবেন বিভিন্ন বাইকের বিস্তারিত বর্ণনা, দাম, প্রযুক্তিগত স্পেসিফিকেশন, ছবি, ভিডিও এবং আরও অনেক কিছু।

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy FOG Lightsbikroy
FOG LIGHTS & HEADLAMP for Sale

FOG LIGHTS & HEADLAMP

MEMBER
Tk 460
2 days ago
A7 Fog Light for Sale

A7 Fog Light

MEMBER
Tk 1,300
2 weeks ago
ফগ লাইট for Sale

ফগ লাইট

MEMBER
Tk 1,500
2 weeks ago
Fog Light for Sale

Fog Light

MEMBER
Tk 250
2 weeks ago
1996 carina lights setup for Sale

1996 carina lights setup

MEMBER
Tk 2,900
4 weeks ago
Buy Other Auto partsbikroy
Vega Bolt New condition for Sale

Vega Bolt New condition

MEMBER
Tk 1,700
59 minutes ago
Yohe ECER22-05 for Sale

Yohe ECER22-05

MEMBER
Tk 4,000
1 hour ago
Bega Helmet for Sale

Bega Helmet

MEMBER
Tk 2,300
1 hour ago
Pulsar ns 160 carborator for Sale

Pulsar ns 160 carborator

MEMBER
Tk 3,500
1 hour ago
+ Post an ad on Bikroy