মোটরসাইকেল চালানোর সময় যা যা মনে রাখা উচিৎ

29 Mar, 2023   
মোটরসাইকেল চালানোর সময় যা যা মনে রাখা উচিৎ

আমাদের দেশের শহরাঞ্চলে রাস্তার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। যানজট নিত্য দিনের সমস্যা। এসব সমস্যা থেকে সমাধান পেতে অনেকেই মোটরসাইকেলের দিকে ঝুঁকছেন। দেশে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী দিন দিন বাড়ছে। তবে বাইকের জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা যেভাবে বাড়ছে, রাস্তার নিরাপত্তা, বাইকারদের সেফটি ততটা বাড়ছে না। বাইকাররা অনেকেই রাস্তায় বাইক চালানোর সময় অনেক নিয়ম নীতি মানেন না। বাইক চালানোর সময়, নিজের এবং আশেপাশের মানুষজনের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। এই ব্লগে কিছু বাইক রাইডিং টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।

যানজট, গণপরিবহন সমস্যা, অসামঞ্জস্য ট্রাফিক সিস্টেম, নিরাপত্তাহীনতা, এসব অবস্থা বিবেচনায় সব শ্রেণীর, সব পেশার মানুষের কাছেই মোটরসাইকেলের গুরুত্ব বাড়ছে। তরুণদের বাইক প্রীতি লক্ষণীয়, তাছাড়া নির্দিষ্ট কিছু কর্মজীবী মানুষ বাইকের উপর খুবই নির্ভরশীল। বলা যায় প্রয়োজনের তাগিদেই মোটরসাইকেলের প্রতি নির্ভরশীলতা দিন দিন বাড়ছে। এটি শুধু মাত্র এখন সিটি কমিউটার না, এক শহর থেকে আরেক শহর, দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, গন্তব্যে পৌঁছাতে বাইক এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন।

আমাদের দেশে ট্রাফিক সমস্যা-যানজট একটি স্বাভাবিক বিষয়, যানজট ও ব্যস্ততা পূর্ণ এলাকায় বাইক চালানো এখন সবার কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার। তরুণ-যুবক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মজীবি মানুষজন, বয়স্ক মানুষ সবাইকে এখন বাইক ব্যবহার করতে দেখা যায়। বাইক চালানো শিখে, সবাই পছন্দমতো বাইক কিনছেন। কিন্তু শুধু বাইক চালানো শিখলেই হবে না, বাইক চালানোর সময়, ট্রাফিক সাইন, ট্রাফিক রুলস, আরো কিছু বিষয় সবসময় মেনে চলতে হবে। যখন আপনি যানজটপূর্ণ এবং ব্যস্ত রাস্তায় বাইক চালাবেন তখন অবশ্যই কিছু নিয়মনীতি মেনে চলবেন। যানবাহন নিয়ে রাস্তায় চলাচলের জন্য কিছু ট্রাফিক নিয়মনীতি আছে এবং প্রত্যেক মানুষেরই এই নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত। এখানে কিছু বাইক রাইডিং টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, এই মোটরসাইকেল টিপস গুলো খেয়াল রাখলে আপনি রাস্তায় নিরাপদ থাকবেন, এবং অন্যকেও বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবেন।

মোটরসাইকেল চালানোর সময় যা যা মনে রাখা উচিৎ

(১) বাইক চালানোর সময় চোখ-কান সজাগ রাখুন, আপনার কাছাকাছি গাড়ীর উপর খেয়াল রাখুন। যে কোন বাঁক বা মোড় নেবার সময় হর্ন বাজাবেন। যে দিকে যাবেন সে দিকের ইনডিকেটর লাইট দেবেন। অন্য গাড়ির ইনডিকেটর লাইটের দিকে খেয়াল রাখবেন। বাইক আকারে ছোট, তাই মোড় ঘোরার সময় গতি কমাবেন, এতে বড় গাড়ি চালক আপনাকে দেখতে পাবে। গতি কম থাকলে পরিস্থিতি অনুযায়ী বিপদ এড়াতে পারবেন। লেন পরিবর্তনের সময় এবং হাইওয়ে রোডে সবসময় ইন্ডিকেটর লাইট ব্যবহার করুন।

(২) বাইক চালানোর সময় লুকিং গ্লাসের দিকে নজর রাখবেন। লুকিং গ্লাস এমন ভাবে সেট করুন যাতে পিছনের দিকটা ভালো ভাবে দেখতে পারেন। আয়না ঠিক মতো বসানো না থাকলে বাঁক নেবার সময়, বা যে কোনো ক্রিটিকাল সিচুয়েশনে, পিছনের দিকে ভালোভাবে দেখতে পাবেন না। তাহলে দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। লুকিং গ্লাসের আসল ব্যবহার হলো, বাইক কমানোর আগে, পিছন থেকে কোনো দ্রুতগামী গাড়ি আসছে কিনা দেখা। এতে আপনি বাইকের আয়নায় দেখেই, পিছনের গাড়ির অবস্থান বুঝতে পারবেন, এবং সে অনুযায়ী বাইক ব্রেক করতে পারবেন।

(৩) বাইকের গিয়ারের ব্যবহার ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। বাইকের গিয়ার বাড়ানো বা কমানোর ক্ষেত্রে ক্লাচ ব্যবহারও ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। আপনি যখন হাইস্পীডে বাইক চালাবেন তখন ক্লাচ ধরে গিয়ার পরিবর্তন করলে বাইকের স্পীড কমে যেতে পারে। এতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা থাকে। কারণ হুট্ করে বাইক থামানো সম্ভবনাও হতে পারে। প্রাকটিস করুন হাইস্পীডে ক্লাচ ছাড়া গিয়ার শিফটিং করতে। মনে রাখবেন, ক্লাচ ছাড়া গিয়ার শিফটিং করবেন, গিয়ার বাড়ানোর জন্য, কমানোর জন্য নয়। ক্লাচ এবং গিয়ারের ব্যবহার ঠিকমতো আয়ত্ত করলে রাস্তার অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

(৪) ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলবেন। ট্রাফিক সাইনের অর্থ জানবেন এবং মেনে চলবেন। দেশের সব রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল কাজ করে না, সে ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ মেনে চলুন। বাইক রাস্তার মাঝে দিয়ে চালাবেন না, সব সময় এক পাশে থাকুন। স্বাভাবিক গতিতে বাইক চালাবেন, যেন হুট্ করে থামতে বা গতি কমাতে সমস্যা না হয়।

(৫) কুয়াশায়, কম আলো বা অন্ধকার রাস্তায় বড় গাড়ির যেমন বাস-ট্রাক চালক বাইক ঠিক মতো দেখতে পারেন না। তাই বাইক চালককেই নিজের অবস্থান জানাতে হবে। বাইকের ইনডিকেটর লাইট অন করে রাখতে হবে। আলো পরলে স্পষ্ট চোখে পরে এমন পোশাক পরিধান করতে হবে। বাঁক ঘোরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন অন্য গাড়ি চালকদের ব্লাইন্ড স্পটে না পরেন। এসময় গতি কম রাখতে হবে।

(৬) বাইক চালানোর সময় সামনে-পিছনে, দুই দিকেই বাইকারদের নজর দিতে হয়। সামনের দিক থেকে আসা গাড়িগুলোর গতিবিধি খেয়াল রাখুন। লুকিং গ্লাস দিয়ে পিছনের গাড়ির গতিবিধি খেয়াল করুন। বিশেষ করে মহাসড়কের বাঁক এবং দুর্ঘটনা প্রবণ স্থান গুলোতে ওভারটেকিং করবেন না। মহাসড়কে গতি কমিয়ে যাওয়া যায় না, তাই রাস্তার এক পাশে থাকুন।

(৭) হেলমেট এবং গ্লোভস ব্যবহার করবেন। ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করবেন, কারণ বাইক রাইডিংয়ের সময় কোনো কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে, মাথায়ই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, এটিই সবচেয়ে নাজুক স্থান। চোখ এবং নাকে যেন বালি বা অন্য কিছু না পরে সে দিকে খেয়াল রাখবেন। রাস্তায় গর্ত, স্পিড ব্রেকার, পাথর, বালির দিকেও ভালো মতো নজর রাখবেন। এগুলো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

(৮) মোটরসাইকেল চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না, হেডফোনে গান শুনবেন না। জরুরি প্রয়োজনে এয়ারবাড এক কানে রাখতে পারেন, তবে কথা বলার প্রয়োজনে বাইক রাস্তার একপাশে সাইড করে তারপর বলবেন।

(৯) ইউটার্ন নেবার সময় গতি কমিয়ে, চারপাশে খেয়াল করে তারপর টার্ন নেবেন। কারণ রাস্তার উল্টো পাশ থেকেও গাড়ি আসতে পারে, আপনার আশেপাশে বা পিছনে থেকেও কোনো গাড়ি ইউটার্ন নেবার জন্য আসতে পারে। কাজেই ইউটার্নের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। উল্টো পাশের গাড়ির দিকে সতর্ক নজর রাখবেন, কারণ উল্টো পাশে গাড়ি গুলো মুখোমুখি অবস্থানে থাকে। রাস্তার এক পাশ দিয়ে চালানোর সময় আইল্যান্ডের দিকেও খেয়াল রাখবেন।

(১০) ট্রাফিক সিগন্যাল এবং রোডসাইন সম্পর্কে ধারণা নেবেন। রাস্তায় মাঝে মাঝে রোডসাইন/সিগন্যাল দেখবেন, সেগুলো মেনে চলবেন। যেমন, সামনে বাঁক, রেল ক্রসিং, মসজিদ, স্কুল, ওভার টেকিং নিষেধ, স্পিড ব্রেকার, হর্ন বাজানো নিষেধ, ইত্যাদি। এসব সিগন্যাল নেমে চলবেন, এতে দুর্ঘটনা কমবে।

(১১) বাইকের নিয়মিত যত্ন নিন। বাইকের ইঞ্জিন, জ্বালানি, ব্রেকিং সিস্টেম, টায়ার, ইনডিকেটর, ঠিক আছে কিনা নিয়মিত চেক করবেন। নির্দিষ্ট সময় পর পর বাইক পরিষ্কার করবেন। ইঞ্জিন অয়েল এবং লুব্রিকেন্ট ভালো মানের ব্যবহার করবেন। 

(১২) ভেজা রাস্তায় বাইক চালানো ঠিক নয়। এতে টায়ার এবং ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়। আবহাওয়া খারাপ থাকলে বাইক নিয়ে বের হবেন না। রাস্তার পানি জমা স্থানে বাইক আস্তে চালাবেন। রাস্তায় গর্ত বা উঁচু-নিচু থাকলে গিয়ার্ কমিয়ে চালাবেন, এবং ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহারের চেষ্টা করবেন। বাইক চালানো অবস্থায় বৃষ্টি হলে, নিরাপদ স্থানে সরে যান, একান্তই বাইক চালাতে হলে, সাবধানে গতি কমিয়ে চালাবেন।

বাইক রাইডিং টিপস

(১) টয়লেটের চাপ নিয়ে কখনোই বাইক রাইড করবেন না। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়। কারণ বাইকে বসার স্থানটাই এমন যে, মূত্রথলি এবং তলপেটে চাপ পড়বেই।

(২) বাইক রাইড করার সময় হেলমেট এবং চশমা ব্যবহার করুন। এতে চোখে ধুলা ময়লা পরবে না। অনেক সময় ছোট পাথর বা ইটের টুকরা চোখে এসে পরে, এতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়, তাই সতর্ক থাকুন। গ্লাস বা গগলস পরে বাইক চালানোর নিয়মিত অভ্যাস করুন।

(৩) রিলাক্স হয়ে এবং ফ্লেক্সিবল ভাবে বাইক চালাবেন। বাঁকা হয়ে বসে বা খুব টান-টান হয়ে বাইক চালাবেন না। এতে মেরুদণ্ডে সমস্যা হয়, ব্যাক-পেইন হতে পারে। ঘাড় এবং শরীরের অন্য মাসলেও পেইন হতে পারে। এসব বাজে অভ্যাস ত্যাগ না করলে দীর্ঘ মেয়াদী শারীরিক সমস্যা হতে পারে।

(৪) খুব টাইট বা খুব মোটা, ভারী পোশাক পরে বাইক চালাবেন না। খুব টাইট পোশাক পরলে প্রোস্টেট গ্লান্ডে সমস্যা হয়। খুব ভারী বা মোটা কাপড় পরলে বাইকে ব্যালান্স রাখতে সমস্যা হয়।

(৫)  আপনার শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন বাইক কিনবেন। এমন বাইক চালাবেন, যেটি আপনি স্মুথ এবং কম্ফোর্টলি চালাতে পারবেন। বাইকে আপনি যদি কমফোর্ট ফিল না করেন, এবং এই অবস্থায় দীর্ঘদিন রাইডিং করলে শরীর ব্যথা ও পরে নানা দীর্ঘ মেয়াদি শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হবে।

(৬) দীর্ঘ সময় যারা বাইক চালান তাদের হাতে ব্যাথা হয়, তাই নরম গ্রিপ ও থ্রটল হোল্ডার ব্যবহার করবেন। বাইকে বসার সুবিধার জন্য বসার জায়গা অ্যাডজাস্টমেন্ট করে নেবেন।

মোটরসাইকেল চালানোর সময় যেসব কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে হবে

(১) বাইকের লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সব সময় সাথে রাখবেন। এগুলো ছাড়া বাইক রাইডিং সম্পূর্ণ অবৈধ। রাস্তায় চলাচলের সময় এগুলো সাথে না থাকলে পুলিশ আপনাকে আটক করতে পারে। এসব আইন অমান্য করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।

(২)  বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর অবশ্যই থাকতে হবে। আপনার বাইক বৈধ কিনা তা রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়েই যাচাই করা হয়, এবং বাইকের মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য এখানে থাকে। রেজিস্ট্রেশন না থাকলে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আপনার বাইক ডাম্পিংয়ে নিতে পারে।

(৩) বাইক রেজিস্ট্রেশন করার পর একটি ট্যাক্স টোকেন রশিদ পাবেন, রশিদটি সাথে রাখবেন। প্রত্যেক যানবাহনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান ট্যাক্স জমা দিতে হয়। এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর ট্যাক্স রিনিউ করতে হয়। লিগ্যাল ভাবে রাস্তায় বাইক বা যেকোনো যানবাহন চালাতে এই ট্যাক্স টোকেন লাগবেই। এক কথায় এই রশিদটি রাস্তায় বাইক চালানোর অনুমতিপত্র। এটি না থাকলে আপনি জরিমানার মুখে পরবেন।

(৪) সব যানবাহনের জন্যেই ইন্সুরেন্স করতে হয়। মোটরসাইকেলের জন্যও ইন্সুরেন্স পেমেন্ট করে, ইন্সুরেন্সের পেপারটি সাথে রাখতে হবে। দুর্ঘটনায় বাইকের কোনো ক্ষতি হলে, ইন্সুরেন্স সেই ক্ষতি অনেকটাই কভারেজ দেবে। ইন্সুরেন্সের পেপার আপডেটেড না থাকলেও আপনি জরিমানার মুখে পরবেন।

(৫) মনে রাখবেন শুধু কাগজপত্র না থাকলে মামলা হবে তা নয়, ট্রাফিক রুলস না মানলে পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারে। যেমন উল্টো পথে আসা, আপনার পিছিনের আরোহীর হেলমেট না থাকা, তিন জন আরোহী নিয়ে চালনা, রং পার্কিং, ওভারস্পিড সহ নানা কারনে মামলা হতে পারে।

এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে পোশাকের ব্যাপারেও সাবধানী হতে হবে। বাইক চালানোর সময় অবশ্যই মাথায় হেলমেট পরতে হবে। ফুলহাতা জামা কাপড় পরবেন, রাতের বেলা উজ্জ্বল রঙের জামা পরবেন, যাতে অন্য গাড়ি চালকদের নজরে পরে। স্যান্ডেল বা চটি পরে বাইক চালাবেন না, জুতা বা কেডস পরে বাইক চালাবেন।

পরিশেষে, বাইক চালকদের মনোযোগ এবং ধৈর্য্য খুব জরুরি বিষয়। এদুটি বিষয় মাথায় রাখবেন এবং চর্চা করবেন। কখনই বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাবেন না। হাইওয়ে বা ব্যস্ত রাস্তা, যেখানেই হোক উপরের আলোচিত নিয়মগুলো বাইক চালানোর সময় মেনে চলতে চেষ্টা করবেন। আশা করি এই বাইক রাইডিং টিপস আপনার উপকারে আসবে।

বাইকের মামলা বিষয়ক কিছু সাধারণ প্রশ্ন

প্র: লার্নার কার্ড দিয়ে বাইক চালানো যায়?

উঃ না। লার্নার কার্ড দেয়া হয় ড্রাইভিং শেখার জন্য। হাইওয়ে রোডে আসলে, পুলিশ মামলা করতে পারে।

প্র: বাইক রেকার করে কখন?

উঃ বাইকের লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স টোকেন, ইন্সুরেন্স, এগুলোর কোনো একটি থাকতেই হবে। না হলে পুলিশ বাইক রেকারে নেবে। অনেক সময় রং পার্কিং করলেও রেকারে নেয়া হয়।

প্র: লুকিং গ্লাস না থাকলে কি মামলা হয়?

উঃ লুকিং গ্লাস না থাকলে মামলা হবে।

প্র: বাইকে বীকন লাইট, ইমারজেন্সি হর্ন এগুলো লাগালে কি মামলা হয়?

উঃ ইমারজেন্সি হর্ন লাগালে শব্দ দূষন হয়, বীকন লাইট, অন্য যানবাহন দেখতে সমস্যার সৃষ্টি করে। এগুলো শুধু অ্যাম্বুলেন্স, ভিআইপি গাড়ির জন্য প্রযোজ্য। বাইকে এসব লাগালে ১৫১ ধারায় বড় জরিমানা হতে পারে।

বাইক সম্পর্কিত যে কোনো তথ্য, আপডেট প্রাইস, বিভিন্ন এডভাইস, বাইক রাইডিং টিপস সহ যে কোনো মোটরসাইকেল টিপস জানতে ভিজিট করুন বাইকস গাইড। এখানে আপনি পাবেন আপনার মোটরসাইকেলের জন্য ওয়ান-স্টপ সল্যুশন।

আমাদের দেশের শহরাঞ্চলে রাস্তার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। যানজট নিত্য দিনের সমস্যা। এসব সমস্যা থেকে সমাধান পেতে অনেকেই মোটরসাইকেলের দিকে ঝুঁকছেন। দেশে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী দিন দিন বাড়ছে। তবে বাইকের জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা যেভাবে বাড়ছে, রাস্তার নিরাপত্তা, বাইকারদের সেফটি ততটা বাড়ছে না। বাইকাররা অনেকেই রাস্তায় বাইক চালানোর সময় অনেক নিয়ম নীতি মানেন না। বাইক চালানোর সময়, নিজের এবং আশেপাশের মানুষজনের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। এই ব্লগে কিছু বাইক রাইডিং টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।

যানজট, গণপরিবহন সমস্যা, অসামঞ্জস্য ট্রাফিক সিস্টেম, নিরাপত্তাহীনতা, এসব অবস্থা বিবেচনায় সব শ্রেণীর, সব পেশার মানুষের কাছেই মোটরসাইকেলের গুরুত্ব বাড়ছে। তরুণদের বাইক প্রীতি লক্ষণীয়, তাছাড়া নির্দিষ্ট কিছু কর্মজীবী মানুষ বাইকের উপর খুবই নির্ভরশীল। বলা যায় প্রয়োজনের তাগিদেই মোটরসাইকেলের প্রতি নির্ভরশীলতা দিন দিন বাড়ছে। এটি শুধু মাত্র এখন সিটি কমিউটার না, এক শহর থেকে আরেক শহর, দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, গন্তব্যে পৌঁছাতে বাইক এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন।

আমাদের দেশে ট্রাফিক সমস্যা-যানজট একটি স্বাভাবিক বিষয়, যানজট ও ব্যস্ততা পূর্ণ এলাকায় বাইক চালানো এখন সবার কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার। তরুণ-যুবক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মজীবি মানুষজন, বয়স্ক মানুষ সবাইকে এখন বাইক ব্যবহার করতে দেখা যায়। বাইক চালানো শিখে, সবাই পছন্দমতো বাইক কিনছেন। কিন্তু শুধু বাইক চালানো শিখলেই হবে না, বাইক চালানোর সময়, ট্রাফিক সাইন, ট্রাফিক রুলস, আরো কিছু বিষয় সবসময় মেনে চলতে হবে। যখন আপনি যানজটপূর্ণ এবং ব্যস্ত রাস্তায় বাইক চালাবেন তখন অবশ্যই কিছু নিয়মনীতি মেনে চলবেন। যানবাহন নিয়ে রাস্তায় চলাচলের জন্য কিছু ট্রাফিক নিয়মনীতি আছে এবং প্রত্যেক মানুষেরই এই নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত। এখানে কিছু বাইক রাইডিং টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, এই মোটরসাইকেল টিপস গুলো খেয়াল রাখলে আপনি রাস্তায় নিরাপদ থাকবেন, এবং অন্যকেও বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবেন।

মোটরসাইকেল চালানোর সময় যা যা মনে রাখা উচিৎ

(১) বাইক চালানোর সময় চোখ-কান সজাগ রাখুন, আপনার কাছাকাছি গাড়ীর উপর খেয়াল রাখুন। যে কোন বাঁক বা মোড় নেবার সময় হর্ন বাজাবেন। যে দিকে যাবেন সে দিকের ইনডিকেটর লাইট দেবেন। অন্য গাড়ির ইনডিকেটর লাইটের দিকে খেয়াল রাখবেন। বাইক আকারে ছোট, তাই মোড় ঘোরার সময় গতি কমাবেন, এতে বড় গাড়ি চালক আপনাকে দেখতে পাবে। গতি কম থাকলে পরিস্থিতি অনুযায়ী বিপদ এড়াতে পারবেন। লেন পরিবর্তনের সময় এবং হাইওয়ে রোডে সবসময় ইন্ডিকেটর লাইট ব্যবহার করুন।

(২) বাইক চালানোর সময় লুকিং গ্লাসের দিকে নজর রাখবেন। লুকিং গ্লাস এমন ভাবে সেট করুন যাতে পিছনের দিকটা ভালো ভাবে দেখতে পারেন। আয়না ঠিক মতো বসানো না থাকলে বাঁক নেবার সময়, বা যে কোনো ক্রিটিকাল সিচুয়েশনে, পিছনের দিকে ভালোভাবে দেখতে পাবেন না। তাহলে দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। লুকিং গ্লাসের আসল ব্যবহার হলো, বাইক কমানোর আগে, পিছন থেকে কোনো দ্রুতগামী গাড়ি আসছে কিনা দেখা। এতে আপনি বাইকের আয়নায় দেখেই, পিছনের গাড়ির অবস্থান বুঝতে পারবেন, এবং সে অনুযায়ী বাইক ব্রেক করতে পারবেন।

(৩) বাইকের গিয়ারের ব্যবহার ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। বাইকের গিয়ার বাড়ানো বা কমানোর ক্ষেত্রে ক্লাচ ব্যবহারও ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। আপনি যখন হাইস্পীডে বাইক চালাবেন তখন ক্লাচ ধরে গিয়ার পরিবর্তন করলে বাইকের স্পীড কমে যেতে পারে। এতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা থাকে। কারণ হুট্ করে বাইক থামানো সম্ভবনাও হতে পারে। প্রাকটিস করুন হাইস্পীডে ক্লাচ ছাড়া গিয়ার শিফটিং করতে। মনে রাখবেন, ক্লাচ ছাড়া গিয়ার শিফটিং করবেন, গিয়ার বাড়ানোর জন্য, কমানোর জন্য নয়। ক্লাচ এবং গিয়ারের ব্যবহার ঠিকমতো আয়ত্ত করলে রাস্তার অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

(৪) ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলবেন। ট্রাফিক সাইনের অর্থ জানবেন এবং মেনে চলবেন। দেশের সব রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল কাজ করে না, সে ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ মেনে চলুন। বাইক রাস্তার মাঝে দিয়ে চালাবেন না, সব সময় এক পাশে থাকুন। স্বাভাবিক গতিতে বাইক চালাবেন, যেন হুট্ করে থামতে বা গতি কমাতে সমস্যা না হয়।

(৫) কুয়াশায়, কম আলো বা অন্ধকার রাস্তায় বড় গাড়ির যেমন বাস-ট্রাক চালক বাইক ঠিক মতো দেখতে পারেন না। তাই বাইক চালককেই নিজের অবস্থান জানাতে হবে। বাইকের ইনডিকেটর লাইট অন করে রাখতে হবে। আলো পরলে স্পষ্ট চোখে পরে এমন পোশাক পরিধান করতে হবে। বাঁক ঘোরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন অন্য গাড়ি চালকদের ব্লাইন্ড স্পটে না পরেন। এসময় গতি কম রাখতে হবে।

(৬) বাইক চালানোর সময় সামনে-পিছনে, দুই দিকেই বাইকারদের নজর দিতে হয়। সামনের দিক থেকে আসা গাড়িগুলোর গতিবিধি খেয়াল রাখুন। লুকিং গ্লাস দিয়ে পিছনের গাড়ির গতিবিধি খেয়াল করুন। বিশেষ করে মহাসড়কের বাঁক এবং দুর্ঘটনা প্রবণ স্থান গুলোতে ওভারটেকিং করবেন না। মহাসড়কে গতি কমিয়ে যাওয়া যায় না, তাই রাস্তার এক পাশে থাকুন।

(৭) হেলমেট এবং গ্লোভস ব্যবহার করবেন। ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করবেন, কারণ বাইক রাইডিংয়ের সময় কোনো কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে, মাথায়ই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, এটিই সবচেয়ে নাজুক স্থান। চোখ এবং নাকে যেন বালি বা অন্য কিছু না পরে সে দিকে খেয়াল রাখবেন। রাস্তায় গর্ত, স্পিড ব্রেকার, পাথর, বালির দিকেও ভালো মতো নজর রাখবেন। এগুলো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

(৮) মোটরসাইকেল চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না, হেডফোনে গান শুনবেন না। জরুরি প্রয়োজনে এয়ারবাড এক কানে রাখতে পারেন, তবে কথা বলার প্রয়োজনে বাইক রাস্তার একপাশে সাইড করে তারপর বলবেন।

(৯) ইউটার্ন নেবার সময় গতি কমিয়ে, চারপাশে খেয়াল করে তারপর টার্ন নেবেন। কারণ রাস্তার উল্টো পাশ থেকেও গাড়ি আসতে পারে, আপনার আশেপাশে বা পিছনে থেকেও কোনো গাড়ি ইউটার্ন নেবার জন্য আসতে পারে। কাজেই ইউটার্নের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। উল্টো পাশের গাড়ির দিকে সতর্ক নজর রাখবেন, কারণ উল্টো পাশে গাড়ি গুলো মুখোমুখি অবস্থানে থাকে। রাস্তার এক পাশ দিয়ে চালানোর সময় আইল্যান্ডের দিকেও খেয়াল রাখবেন।

(১০) ট্রাফিক সিগন্যাল এবং রোডসাইন সম্পর্কে ধারণা নেবেন। রাস্তায় মাঝে মাঝে রোডসাইন/সিগন্যাল দেখবেন, সেগুলো মেনে চলবেন। যেমন, সামনে বাঁক, রেল ক্রসিং, মসজিদ, স্কুল, ওভার টেকিং নিষেধ, স্পিড ব্রেকার, হর্ন বাজানো নিষেধ, ইত্যাদি। এসব সিগন্যাল নেমে চলবেন, এতে দুর্ঘটনা কমবে।

(১১) বাইকের নিয়মিত যত্ন নিন। বাইকের ইঞ্জিন, জ্বালানি, ব্রেকিং সিস্টেম, টায়ার, ইনডিকেটর, ঠিক আছে কিনা নিয়মিত চেক করবেন। নির্দিষ্ট সময় পর পর বাইক পরিষ্কার করবেন। ইঞ্জিন অয়েল এবং লুব্রিকেন্ট ভালো মানের ব্যবহার করবেন। 

(১২) ভেজা রাস্তায় বাইক চালানো ঠিক নয়। এতে টায়ার এবং ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়। আবহাওয়া খারাপ থাকলে বাইক নিয়ে বের হবেন না। রাস্তার পানি জমা স্থানে বাইক আস্তে চালাবেন। রাস্তায় গর্ত বা উঁচু-নিচু থাকলে গিয়ার্ কমিয়ে চালাবেন, এবং ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহারের চেষ্টা করবেন। বাইক চালানো অবস্থায় বৃষ্টি হলে, নিরাপদ স্থানে সরে যান, একান্তই বাইক চালাতে হলে, সাবধানে গতি কমিয়ে চালাবেন।

বাইক রাইডিং টিপস

(১) টয়লেটের চাপ নিয়ে কখনোই বাইক রাইড করবেন না। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়। কারণ বাইকে বসার স্থানটাই এমন যে, মূত্রথলি এবং তলপেটে চাপ পড়বেই।

(২) বাইক রাইড করার সময় হেলমেট এবং চশমা ব্যবহার করুন। এতে চোখে ধুলা ময়লা পরবে না। অনেক সময় ছোট পাথর বা ইটের টুকরা চোখে এসে পরে, এতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়, তাই সতর্ক থাকুন। গ্লাস বা গগলস পরে বাইক চালানোর নিয়মিত অভ্যাস করুন।

(৩) রিলাক্স হয়ে এবং ফ্লেক্সিবল ভাবে বাইক চালাবেন। বাঁকা হয়ে বসে বা খুব টান-টান হয়ে বাইক চালাবেন না। এতে মেরুদণ্ডে সমস্যা হয়, ব্যাক-পেইন হতে পারে। ঘাড় এবং শরীরের অন্য মাসলেও পেইন হতে পারে। এসব বাজে অভ্যাস ত্যাগ না করলে দীর্ঘ মেয়াদী শারীরিক সমস্যা হতে পারে।

(৪) খুব টাইট বা খুব মোটা, ভারী পোশাক পরে বাইক চালাবেন না। খুব টাইট পোশাক পরলে প্রোস্টেট গ্লান্ডে সমস্যা হয়। খুব ভারী বা মোটা কাপড় পরলে বাইকে ব্যালান্স রাখতে সমস্যা হয়।

(৫)  আপনার শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন বাইক কিনবেন। এমন বাইক চালাবেন, যেটি আপনি স্মুথ এবং কম্ফোর্টলি চালাতে পারবেন। বাইকে আপনি যদি কমফোর্ট ফিল না করেন, এবং এই অবস্থায় দীর্ঘদিন রাইডিং করলে শরীর ব্যথা ও পরে নানা দীর্ঘ মেয়াদি শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হবে।

(৬) দীর্ঘ সময় যারা বাইক চালান তাদের হাতে ব্যাথা হয়, তাই নরম গ্রিপ ও থ্রটল হোল্ডার ব্যবহার করবেন। বাইকে বসার সুবিধার জন্য বসার জায়গা অ্যাডজাস্টমেন্ট করে নেবেন।

মোটরসাইকেল চালানোর সময় যেসব কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে হবে

(১) বাইকের লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সব সময় সাথে রাখবেন। এগুলো ছাড়া বাইক রাইডিং সম্পূর্ণ অবৈধ। রাস্তায় চলাচলের সময় এগুলো সাথে না থাকলে পুলিশ আপনাকে আটক করতে পারে। এসব আইন অমান্য করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।

(২)  বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর অবশ্যই থাকতে হবে। আপনার বাইক বৈধ কিনা তা রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়েই যাচাই করা হয়, এবং বাইকের মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য এখানে থাকে। রেজিস্ট্রেশন না থাকলে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আপনার বাইক ডাম্পিংয়ে নিতে পারে।

(৩) বাইক রেজিস্ট্রেশন করার পর একটি ট্যাক্স টোকেন রশিদ পাবেন, রশিদটি সাথে রাখবেন। প্রত্যেক যানবাহনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান ট্যাক্স জমা দিতে হয়। এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর ট্যাক্স রিনিউ করতে হয়। লিগ্যাল ভাবে রাস্তায় বাইক বা যেকোনো যানবাহন চালাতে এই ট্যাক্স টোকেন লাগবেই। এক কথায় এই রশিদটি রাস্তায় বাইক চালানোর অনুমতিপত্র। এটি না থাকলে আপনি জরিমানার মুখে পরবেন।

(৪) সব যানবাহনের জন্যেই ইন্সুরেন্স করতে হয়। মোটরসাইকেলের জন্যও ইন্সুরেন্স পেমেন্ট করে, ইন্সুরেন্সের পেপারটি সাথে রাখতে হবে। দুর্ঘটনায় বাইকের কোনো ক্ষতি হলে, ইন্সুরেন্স সেই ক্ষতি অনেকটাই কভারেজ দেবে। ইন্সুরেন্সের পেপার আপডেটেড না থাকলেও আপনি জরিমানার মুখে পরবেন।

(৫) মনে রাখবেন শুধু কাগজপত্র না থাকলে মামলা হবে তা নয়, ট্রাফিক রুলস না মানলে পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারে। যেমন উল্টো পথে আসা, আপনার পিছিনের আরোহীর হেলমেট না থাকা, তিন জন আরোহী নিয়ে চালনা, রং পার্কিং, ওভারস্পিড সহ নানা কারনে মামলা হতে পারে।

এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে পোশাকের ব্যাপারেও সাবধানী হতে হবে। বাইক চালানোর সময় অবশ্যই মাথায় হেলমেট পরতে হবে। ফুলহাতা জামা কাপড় পরবেন, রাতের বেলা উজ্জ্বল রঙের জামা পরবেন, যাতে অন্য গাড়ি চালকদের নজরে পরে। স্যান্ডেল বা চটি পরে বাইক চালাবেন না, জুতা বা কেডস পরে বাইক চালাবেন।

পরিশেষে, বাইক চালকদের মনোযোগ এবং ধৈর্য্য খুব জরুরি বিষয়। এদুটি বিষয় মাথায় রাখবেন এবং চর্চা করবেন। কখনই বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাবেন না। হাইওয়ে বা ব্যস্ত রাস্তা, যেখানেই হোক উপরের আলোচিত নিয়মগুলো বাইক চালানোর সময় মেনে চলতে চেষ্টা করবেন। আশা করি এই বাইক রাইডিং টিপস আপনার উপকারে আসবে।

বাইকের মামলা বিষয়ক কিছু সাধারণ প্রশ্ন

প্র: লার্নার কার্ড দিয়ে বাইক চালানো যায়?

উঃ না। লার্নার কার্ড দেয়া হয় ড্রাইভিং শেখার জন্য। হাইওয়ে রোডে আসলে, পুলিশ মামলা করতে পারে।

প্র: বাইক রেকার করে কখন?

উঃ বাইকের লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স টোকেন, ইন্সুরেন্স, এগুলোর কোনো একটি থাকতেই হবে। না হলে পুলিশ বাইক রেকারে নেবে। অনেক সময় রং পার্কিং করলেও রেকারে নেয়া হয়।

প্র: লুকিং গ্লাস না থাকলে কি মামলা হয়?

উঃ লুকিং গ্লাস না থাকলে মামলা হবে।

প্র: বাইকে বীকন লাইট, ইমারজেন্সি হর্ন এগুলো লাগালে কি মামলা হয়?

উঃ ইমারজেন্সি হর্ন লাগালে শব্দ দূষন হয়, বীকন লাইট, অন্য যানবাহন দেখতে সমস্যার সৃষ্টি করে। এগুলো শুধু অ্যাম্বুলেন্স, ভিআইপি গাড়ির জন্য প্রযোজ্য। বাইকে এসব লাগালে ১৫১ ধারায় বড় জরিমানা হতে পারে।

বাইক সম্পর্কিত যে কোনো তথ্য, আপডেট প্রাইস, বিভিন্ন এডভাইস, বাইক রাইডিং টিপস সহ যে কোনো মোটরসাইকেল টিপস জানতে ভিজিট করুন বাইকস গাইড। এখানে আপনি পাবেন আপনার মোটরসাইকেলের জন্য ওয়ান-স্টপ সল্যুশন।

Similar Advices



6 comments

  1. আপনার গুরুত্বপূর্ণ উপদেশের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
    আশা করি বাইক রাইড করতে বাইকারদের অনেক উপকার আসবে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

  2. এখনো কি বাইকের ইন্সুরেন্স করতে হয়। আমার ইন্সুরেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হ‌ওয়ার পর নতুন করে করতে গেলে একজন বললো এখন আর বাইকের জন্য ইন্সুরেন্স করতে হবে না। জানাবেন প্লিজ..

    1. বাইকের ইন্সুরেন্স এখন বাধ্যতামূলক নয়। তবে আপনি যদি চান আপনার এবং আপনার বাইকের কথা চিন্তা করে ইন্সুরেন্স করাতে পারেন।

  3. আপনাদের পরামর্শ গুলো অনেক ভালো লাগল।

Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy New Bikesbikroy
TVS Raider 125 1234 2022 for Sale

TVS Raider 125 1234 2022

2,022 km
MEMBER
Tk 3,500
2 hours ago
GB-Padma-Gold (Blue) 2023 for Sale

GB-Padma-Gold (Blue) 2023

0 km
verified MEMBER
Tk 70,000
18 hours ago
atv Quad বাইক 2024 for Sale

atv Quad বাইক 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 295,000
21 hours ago
golf kart 4 seater 2024 for Sale

golf kart 4 seater 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 645,000
21 hours ago
E bike brand new 2023 for Sale

E bike brand new 2023

0 km
verified MEMBER
Tk 70,000
1 day ago
Buy Used Bikesbikroy
Suzuki Gixxer DD CRB ON-TEST 2021 for Sale

Suzuki Gixxer DD CRB ON-TEST 2021

9,741 km
verified MEMBER
verified
Tk 197,500
21 seconds ago
Hero Glamour good candetin All 2016 for Sale

Hero Glamour good candetin All 2016

22,565 km
verified MEMBER
verified
Tk 65,000
13 minutes ago
Yamaha FZS all Most good 2015 for Sale

Yamaha FZS all Most good 2015

25,698 km
verified MEMBER
verified
Tk 82,000
14 minutes ago
Yamaha R15 M Indo 2022 for Sale

Yamaha R15 M Indo 2022

85,000 km
MEMBER
Tk 540,000
15 minutes ago
Bajaj Discover 125 . 2018 for Sale

Bajaj Discover 125 . 2018

18,000 km
MEMBER
Tk 99,000
19 minutes ago
+ Post an ad on Bikroy