বাইকের চাকা টালঃ কী, কেন ও সমাধান

29 Mar, 2023   
বাইকের চাকা টালঃ কী, কেন ও সমাধান

বাইক চালানোর সময় অনেক সময় হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন যে অদ্ভুত রকম কাঁপুনি হচ্ছে বা ব্যালেন্সে সমস্যা হচ্ছে। চাকার অ্যালয় রিম কিংবা ডিস্ক, এমনকি টায়ারও অনেক সময় এবড়ো থেবড়ো বা কিছু জায়গায় বাঁকা হয়ে যেতে পারে; এই সমস্যাকে আমরা বলি বাইকের চাকা টাল হওয়া। কোনো রকম অ্যাক্সিডেন্ট না করা সত্ত্বেও অনেক সময় চাকা টাল হতে পারে। এই ব্যাপারটা একদিকে যেমন বিরক্তিকর, আবার পরবর্তীতে বড় রকম দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়। আমাদের দেশে অনেক বাইকারদেরই ধারণা, এই বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় শুধু একটাই – তা হলো চাকা বা রীম পরিবর্তন করে ফেলা। কিন্তু আসলে এটা সত্যি না।

আমাদের দেশে অ্যালয় রিম এবং ডিস্ক এর টাল ঠিক করা যায় এমন জায়গা খুব কম। কিন্তু অনেক সময় ভাংগা রিমও ঠিক করা যায়, যদি আপনি সঠিক লোকের কাছে যেতে পারেন। আজ আমরা জানবো, বাইকের চাকা টাল কীভাবে হয়, কখন বুঝবেন চাকা টাল হয়েছে, এবং ডিস্ক বা বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় কি ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন আপনার বাইকের চাকা টাল হয়েছে?

মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়ার আগে অন্তত ৫-১০ মিনিট সময় নিয়ে বাইকটিকে পর্যবেক্ষণ করুন। মোটরবাইক মেইন্টেনেস নিয়ে লিখা আমাদের প্রতিবেদনেও আমরা এই ব্যাপারে বেশ জোর দিয়েছি। অনেক সময় বাইকের চাকা টাল হলে বা ডিস্কে সমস্যা হলে সেটা খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায়। বাইকের চাকা টাল হয়েছে, এটা বুঝার জন্য আপনি যেসব জিনিস খেয়াল রাখতে পারেন তা নিচে তুলে ধরছিঃ

  • চাকার গায়ে অস্বাভাবিক জায়গায় কোন ফোলা বা ডেবে যাওয়া থাকতে পারে। চাকার সাথে রিম যেইখানে এসে মিলেছে সেইখানে লক্ষ্য করে দেখলে অনেক সময় রিম কিছু যায়গায় বাঁকা বা ফাটলের চিহ্ন থাকতে পারে।
  • চোখের দেখায় কিছু বোঝা না গেলেও চালানোর সময় বাইক কিছুটা অস্বাভাবিকভাবে কাঁপতে পারে।
  • বেশিরভাগ সময় আমাদের বাইকের সামনের চাকা টাল হয়। এরকম হলে বাইকের ব্যালেন্স বেশি নষ্ট হয়। ৬০-৭০ স্পিডে যদি বাইক চালান তখন বাইকের হ্যান্ডেলের সাইডটা কাঁপবে, অথবা বাইকের সামনের দিকটা অকারণে লাফাবে। এরকম হলে বুঝতে হবে আপনার বাইকের চাকা টাল হয়েছে।
  • পেছনের চাকার ক্ষেত্রেও একই রকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
  • ডিস্ক টাল হলে সেটাও বাইরে থেকে দেখেই বুঝা যাবে।

কীভাবে ও কেন বাইকের চাকা টাল হয়?

বিভিন্ন কারনে বাইকের চাকা টাল হতে পারে। অনেক সময় কোনো অ্যাক্সিডেন্ট ছাড়াই অথবা কোন ভাংগা, গর্তে বাইক না চালানো সত্ত্বেও বাইকের চাকা টাল হতে পারে। অধিকাংশ সময় যেসব কারনে চাকা টাল হয়ে থাকে, সে কারণগুলো নিচে উল্লেখ করছিঃ

  • বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করা

চাকা টাল হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করা। বাইক চলানোর সময় দুর্ঘটনায় পড়লে, অথবা কিছুর সাথে সজোরে ধাক্কা লাগলে বাইকের চাকা টাল হতে পারে। ছোটখাটো অ্যাক্সিডেন্টের ক্ষেত্রে অনেক সময় এই টাল বোঝা যায় না, বা আমাদের নজরে আসে না। তাই এরকম কিছু হলে অবশ্যই নিরাপদ কোথাও থামিয়ে চাকা পরীক্ষা করে দেখুন, অথবা চালানোর সময় কোনো কাঁপুনি হছে কি না সেটা লক্ষ্য রাখুন।

  • গর্ত বা ভাংগার উপর সজোরে বাইক চালানো

বাইক চালানোর সময় অনেক সময় এমন পরিস্থিতি আসতে পারে, যখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য ভাংগা রাস্তা বা গর্তের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আপনি যদি হাই স্পীডে বড় গর্তের উপর সজোরে বাইক চালিয়ে দেন, তাহলে আপনার বাইকের চাকা টাল হয়ে যেতে পারে।

  • স্পিড ব্রেকারের উপর সজোরে বাইক চালানো

আমাদের দেশে অনেক রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় এমন কিছু স্পীড ব্রেকার থাকে যেগুলো দূর থেকে চোখে পরে না, নতুবা সেগুলোর গায়ে ভালো ভাবে রোড সাইন আঁকা থাকে না। এরকম ক্ষেত্রে খেয়াল না করায় স্পিড না কমিয়ে, হঠাৎ করে স্পিড ব্রেকারের উপর সজোরে বাইক চালিয়ে দেয়া অসম্ভব কিছু না। এক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলেও আপনার বাইকের চাকা টাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

  • লোড ক্যাপাসিটির বেশি লোড নেয়া

প্রতিটা বাইকে একটা নির্দিষ্ট মাত্রার লোড ক্যাপাসিটি থাকে। অর্থাৎ, এর চেয়ে বেশি ওজন বাইকে বহন না করাই ভালো। কিন্তু আমাদের দেশে অনেকেই না জেনে কিংবা পাত্তা না দিয়ে লোড ক্যাপাসিটির চেয়ে অতিরিক্ত ওজন মোটরবাইকে নেয়ার চেষ্টা করেন। এরকম ক্ষেত্রেও বাইকের চাকা টাল হতে পারে।

এছাড়াও বাইকের ডিস্ক টাল হতে পারে, যেটা আরো বেশি বিপদজনক। ডিস্ক টাল হওয়ার কিছু মূল কারণ নিচে উল্লেখ করছিঃ

  • ডিস্ক লক খেয়াল না করা

ডিস্ক লকের কাজ হচ্ছে আপনার বাইককে নিরাপত্তা দেয়া। কিন্তু এই ব্যাপারে উদাসীন থাকলে উলটো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই ডিস্ক লক দেয়ার পর সেটার কথা ভুলে যান। বাইক চালু করার আগে অসাবধানতার কারণে যদি ডিস্ক লক না খুলে বাইক টান দেয়া হয়, তাহলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বেশ জোরে টান দেয়া হলে নিজে আঘাত পাওয়ার পাশপাশি ডিস্ক টাল হয়ে যাওয়া, এমনকি ভেংগেও যেতে পারে।

  • ডিস্কে সজোরে আঘাত লাগা

বাইক চালানোর সময় কোনো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলে বাইকের ডিস্ক ও চাকা টাল হতে পারে। অনেক সময় অসাবধানভাবে বাইক চালানোর সময়, অথবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যদি সামনের কোনো গাড়ির সাথে বাইক ধাক্কা লাগে, তখন এই ধাক্কা আপনার বাইকের ডিস্কেও এসে লাগতে পারে।

আবার অনেক নতুন বাইকার বৃষ্টিতে বাইক চালানোর সময় অথবা ইমারজেন্সি ব্রেক কষতে গিয়েও এরকম ধাক্কা লাগিয়ে ফেলেন। ডিস্কে সজোরে ধাক্কা লাগলে ডিস্ক টাল হয়ে যেতে পারে।

  • চাকা খোলার সময় অসাবধানতা

মোটরসাইকেল সারানো অথবা মেকানিকের কাছে বাইক মেইন্টেনেন্স করানোর সময় তাদের কাজের দিকে ভালোভাবে নজর দিন। বাইকের চাকা খোলার সময় তারা সেটাকে যত্নের সাথে রাখছেন কি না, কিংবা কাজ করার সময় চাকার উপর কেউ দাঁড়াচ্ছে কি না, মোটকথা চাকায় কোন অস্বাভাবিক চাপ বা আঘাত লাগছে কি না সেদিকে ভালোভাবে লক্ষ্য রাখুন। অনেক সময় কিছু মেকানিক চাকা খোলার পর সেটা সজোরে রাস্তার উপর ফেলেন। চাকার উপর ছোট কোন শিশু দাঁড়ালেও চাকার ও ডিস্কের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাত থেকে ডিস্ক টাল হয়ে যেতে পারে। 

বাইকের চাকা টাল হলে করণীয়

অ্যালয় রিম যখন টাল হয়ে যায় তখন অনেকেই মনে করেন রিম মনে হয় নতুন একটা কিনতে হবে। বাংলাদেশে মোটরবাইকের দরদাম যেমন, সেই অনুপাতে রিমের দামও অনেক বেশি। তাই রিম অথবা ডিস্ক যেটাই হোক, বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় হচ্ছে প্রথমেই সেটা সারানোর চেষ্টা করা। বাইকের চাকা টাল ঠিক করা সম্ভব হলে রিম কেনার বিশাল খরচ বেচে যাবে। আর আমাদের দেশেই এটা সম্ভব!

এক্ষেত্রে আপনি মোজাম্মেল ভাইয়ের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। ঢাকা শহরের বংশাল এলাকার মোজাম্মেল ভাইকে অভিজ্ঞ বাইকাররা বাইকের চাকার জাদুকর বলে চিনেন। প্রায় ১০ বছর ধরে মোজাম্মেল ভাই বাইকের চাকা টাল ঠিক করে আসছেন। বংশালে গিয়ে খোঁজ নিলে মোজাম্মেল এর দোকান আপনাকে যে কেউ চিনিয়ে দিতে পারবে; আর আমরাও ঠিকানাটা নিচেই বলে দিব। এখানে শুধু বাইকের চাকা টালই ঠিক হয় না, ডিস্ক টালও ঠিক করানো হয়, এছাড়া টায়ার সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সহজ সমাধান তিনি দিয়ে থাকেন।

মোজাম্মেল মোটরসাইকেল চাকা ওয়ার্কশপঃ 

১৪২/আর-২, বংশাল, মাজেদ সরদার রোড, বাংলাদেশ ম্যাচ মোড়, ঢাকা – ১২১১।

মোবাইল নম্বরঃ 01717938582

শেষকথা

মসৃণ ও আরামদায়ক বাইক রাইডের জন্য বাইকের নিয়মিত মেইন্টেনেন্স করা অত্যাবশ্যক। কিছু কিছু বেসিক মেইন্টেনেন্স আপনি নিজেই করতে পারবেন। আর যেকোনো সাহায্যের জন্য মোজাম্মেল ভাইয়ের মত অভিজ্ঞ মেকানিকরা তো আছেনই। আশা করি বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় বিষয়গুলো এবং টাল প্রতিরোধে আমাদের টিপসগুলো আপনার কাজে আসবে। যত্নে থাকুক আমাদের সকলে বাইকগুলো। হ্যাপী রাইডিং!

বাইক চালানোর সময় অনেক সময় হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন যে অদ্ভুত রকম কাঁপুনি হচ্ছে বা ব্যালেন্সে সমস্যা হচ্ছে। চাকার অ্যালয় রিম কিংবা ডিস্ক, এমনকি টায়ারও অনেক সময় এবড়ো থেবড়ো বা কিছু জায়গায় বাঁকা হয়ে যেতে পারে; এই সমস্যাকে আমরা বলি বাইকের চাকা টাল হওয়া। কোনো রকম অ্যাক্সিডেন্ট না করা সত্ত্বেও অনেক সময় চাকা টাল হতে পারে। এই ব্যাপারটা একদিকে যেমন বিরক্তিকর, আবার পরবর্তীতে বড় রকম দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়। আমাদের দেশে অনেক বাইকারদেরই ধারণা, এই বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় শুধু একটাই – তা হলো চাকা বা রীম পরিবর্তন করে ফেলা। কিন্তু আসলে এটা সত্যি না।

আমাদের দেশে অ্যালয় রিম এবং ডিস্ক এর টাল ঠিক করা যায় এমন জায়গা খুব কম। কিন্তু অনেক সময় ভাংগা রিমও ঠিক করা যায়, যদি আপনি সঠিক লোকের কাছে যেতে পারেন। আজ আমরা জানবো, বাইকের চাকা টাল কীভাবে হয়, কখন বুঝবেন চাকা টাল হয়েছে, এবং ডিস্ক বা বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় কি ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন আপনার বাইকের চাকা টাল হয়েছে?

মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়ার আগে অন্তত ৫-১০ মিনিট সময় নিয়ে বাইকটিকে পর্যবেক্ষণ করুন। মোটরবাইক মেইন্টেনেস নিয়ে লিখা আমাদের প্রতিবেদনেও আমরা এই ব্যাপারে বেশ জোর দিয়েছি। অনেক সময় বাইকের চাকা টাল হলে বা ডিস্কে সমস্যা হলে সেটা খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায়। বাইকের চাকা টাল হয়েছে, এটা বুঝার জন্য আপনি যেসব জিনিস খেয়াল রাখতে পারেন তা নিচে তুলে ধরছিঃ

  • চাকার গায়ে অস্বাভাবিক জায়গায় কোন ফোলা বা ডেবে যাওয়া থাকতে পারে। চাকার সাথে রিম যেইখানে এসে মিলেছে সেইখানে লক্ষ্য করে দেখলে অনেক সময় রিম কিছু যায়গায় বাঁকা বা ফাটলের চিহ্ন থাকতে পারে।
  • চোখের দেখায় কিছু বোঝা না গেলেও চালানোর সময় বাইক কিছুটা অস্বাভাবিকভাবে কাঁপতে পারে।
  • বেশিরভাগ সময় আমাদের বাইকের সামনের চাকা টাল হয়। এরকম হলে বাইকের ব্যালেন্স বেশি নষ্ট হয়। ৬০-৭০ স্পিডে যদি বাইক চালান তখন বাইকের হ্যান্ডেলের সাইডটা কাঁপবে, অথবা বাইকের সামনের দিকটা অকারণে লাফাবে। এরকম হলে বুঝতে হবে আপনার বাইকের চাকা টাল হয়েছে।
  • পেছনের চাকার ক্ষেত্রেও একই রকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
  • ডিস্ক টাল হলে সেটাও বাইরে থেকে দেখেই বুঝা যাবে।

কীভাবে ও কেন বাইকের চাকা টাল হয়?

বিভিন্ন কারনে বাইকের চাকা টাল হতে পারে। অনেক সময় কোনো অ্যাক্সিডেন্ট ছাড়াই অথবা কোন ভাংগা, গর্তে বাইক না চালানো সত্ত্বেও বাইকের চাকা টাল হতে পারে। অধিকাংশ সময় যেসব কারনে চাকা টাল হয়ে থাকে, সে কারণগুলো নিচে উল্লেখ করছিঃ

  • বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করা

চাকা টাল হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করা। বাইক চলানোর সময় দুর্ঘটনায় পড়লে, অথবা কিছুর সাথে সজোরে ধাক্কা লাগলে বাইকের চাকা টাল হতে পারে। ছোটখাটো অ্যাক্সিডেন্টের ক্ষেত্রে অনেক সময় এই টাল বোঝা যায় না, বা আমাদের নজরে আসে না। তাই এরকম কিছু হলে অবশ্যই নিরাপদ কোথাও থামিয়ে চাকা পরীক্ষা করে দেখুন, অথবা চালানোর সময় কোনো কাঁপুনি হছে কি না সেটা লক্ষ্য রাখুন।

  • গর্ত বা ভাংগার উপর সজোরে বাইক চালানো

বাইক চালানোর সময় অনেক সময় এমন পরিস্থিতি আসতে পারে, যখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য ভাংগা রাস্তা বা গর্তের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আপনি যদি হাই স্পীডে বড় গর্তের উপর সজোরে বাইক চালিয়ে দেন, তাহলে আপনার বাইকের চাকা টাল হয়ে যেতে পারে।

  • স্পিড ব্রেকারের উপর সজোরে বাইক চালানো

আমাদের দেশে অনেক রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় এমন কিছু স্পীড ব্রেকার থাকে যেগুলো দূর থেকে চোখে পরে না, নতুবা সেগুলোর গায়ে ভালো ভাবে রোড সাইন আঁকা থাকে না। এরকম ক্ষেত্রে খেয়াল না করায় স্পিড না কমিয়ে, হঠাৎ করে স্পিড ব্রেকারের উপর সজোরে বাইক চালিয়ে দেয়া অসম্ভব কিছু না। এক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলেও আপনার বাইকের চাকা টাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

  • লোড ক্যাপাসিটির বেশি লোড নেয়া

প্রতিটা বাইকে একটা নির্দিষ্ট মাত্রার লোড ক্যাপাসিটি থাকে। অর্থাৎ, এর চেয়ে বেশি ওজন বাইকে বহন না করাই ভালো। কিন্তু আমাদের দেশে অনেকেই না জেনে কিংবা পাত্তা না দিয়ে লোড ক্যাপাসিটির চেয়ে অতিরিক্ত ওজন মোটরবাইকে নেয়ার চেষ্টা করেন। এরকম ক্ষেত্রেও বাইকের চাকা টাল হতে পারে।

এছাড়াও বাইকের ডিস্ক টাল হতে পারে, যেটা আরো বেশি বিপদজনক। ডিস্ক টাল হওয়ার কিছু মূল কারণ নিচে উল্লেখ করছিঃ

  • ডিস্ক লক খেয়াল না করা

ডিস্ক লকের কাজ হচ্ছে আপনার বাইককে নিরাপত্তা দেয়া। কিন্তু এই ব্যাপারে উদাসীন থাকলে উলটো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই ডিস্ক লক দেয়ার পর সেটার কথা ভুলে যান। বাইক চালু করার আগে অসাবধানতার কারণে যদি ডিস্ক লক না খুলে বাইক টান দেয়া হয়, তাহলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বেশ জোরে টান দেয়া হলে নিজে আঘাত পাওয়ার পাশপাশি ডিস্ক টাল হয়ে যাওয়া, এমনকি ভেংগেও যেতে পারে।

  • ডিস্কে সজোরে আঘাত লাগা

বাইক চালানোর সময় কোনো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলে বাইকের ডিস্ক ও চাকা টাল হতে পারে। অনেক সময় অসাবধানভাবে বাইক চালানোর সময়, অথবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যদি সামনের কোনো গাড়ির সাথে বাইক ধাক্কা লাগে, তখন এই ধাক্কা আপনার বাইকের ডিস্কেও এসে লাগতে পারে।

আবার অনেক নতুন বাইকার বৃষ্টিতে বাইক চালানোর সময় অথবা ইমারজেন্সি ব্রেক কষতে গিয়েও এরকম ধাক্কা লাগিয়ে ফেলেন। ডিস্কে সজোরে ধাক্কা লাগলে ডিস্ক টাল হয়ে যেতে পারে।

  • চাকা খোলার সময় অসাবধানতা

মোটরসাইকেল সারানো অথবা মেকানিকের কাছে বাইক মেইন্টেনেন্স করানোর সময় তাদের কাজের দিকে ভালোভাবে নজর দিন। বাইকের চাকা খোলার সময় তারা সেটাকে যত্নের সাথে রাখছেন কি না, কিংবা কাজ করার সময় চাকার উপর কেউ দাঁড়াচ্ছে কি না, মোটকথা চাকায় কোন অস্বাভাবিক চাপ বা আঘাত লাগছে কি না সেদিকে ভালোভাবে লক্ষ্য রাখুন। অনেক সময় কিছু মেকানিক চাকা খোলার পর সেটা সজোরে রাস্তার উপর ফেলেন। চাকার উপর ছোট কোন শিশু দাঁড়ালেও চাকার ও ডিস্কের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাত থেকে ডিস্ক টাল হয়ে যেতে পারে। 

বাইকের চাকা টাল হলে করণীয়

অ্যালয় রিম যখন টাল হয়ে যায় তখন অনেকেই মনে করেন রিম মনে হয় নতুন একটা কিনতে হবে। বাংলাদেশে মোটরবাইকের দরদাম যেমন, সেই অনুপাতে রিমের দামও অনেক বেশি। তাই রিম অথবা ডিস্ক যেটাই হোক, বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় হচ্ছে প্রথমেই সেটা সারানোর চেষ্টা করা। বাইকের চাকা টাল ঠিক করা সম্ভব হলে রিম কেনার বিশাল খরচ বেচে যাবে। আর আমাদের দেশেই এটা সম্ভব!

এক্ষেত্রে আপনি মোজাম্মেল ভাইয়ের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। ঢাকা শহরের বংশাল এলাকার মোজাম্মেল ভাইকে অভিজ্ঞ বাইকাররা বাইকের চাকার জাদুকর বলে চিনেন। প্রায় ১০ বছর ধরে মোজাম্মেল ভাই বাইকের চাকা টাল ঠিক করে আসছেন। বংশালে গিয়ে খোঁজ নিলে মোজাম্মেল এর দোকান আপনাকে যে কেউ চিনিয়ে দিতে পারবে; আর আমরাও ঠিকানাটা নিচেই বলে দিব। এখানে শুধু বাইকের চাকা টালই ঠিক হয় না, ডিস্ক টালও ঠিক করানো হয়, এছাড়া টায়ার সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সহজ সমাধান তিনি দিয়ে থাকেন।

মোজাম্মেল মোটরসাইকেল চাকা ওয়ার্কশপঃ 

১৪২/আর-২, বংশাল, মাজেদ সরদার রোড, বাংলাদেশ ম্যাচ মোড়, ঢাকা – ১২১১।

মোবাইল নম্বরঃ 01717938582

শেষকথা

মসৃণ ও আরামদায়ক বাইক রাইডের জন্য বাইকের নিয়মিত মেইন্টেনেন্স করা অত্যাবশ্যক। কিছু কিছু বেসিক মেইন্টেনেন্স আপনি নিজেই করতে পারবেন। আর যেকোনো সাহায্যের জন্য মোজাম্মেল ভাইয়ের মত অভিজ্ঞ মেকানিকরা তো আছেনই। আশা করি বাইকের চাকা টাল হলে করণীয় বিষয়গুলো এবং টাল প্রতিরোধে আমাদের টিপসগুলো আপনার কাজে আসবে। যত্নে থাকুক আমাদের সকলে বাইকগুলো। হ্যাপী রাইডিং!

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy Other Auto partsbikroy
v2 body kit sell for Sale

v2 body kit sell

MEMBER
Tk 7,000
4 minutes ago
oil breake calivert for Sale

oil breake calivert

MEMBER
Tk 700
25 minutes ago
Yohe Helmet for Sale

Yohe Helmet

MEMBER
Tk 3,000
57 minutes ago
Helmet sell for Sale

Helmet sell

MEMBER
Tk 1,000
1 hour ago
+ Post an ad on Bikroy