ঈদের সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে করণীয়

29 Mar, 2023   
ঈদের সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে করণীয়

বর্তমানে উদ্বেগজনক হারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। নানা পদক্ষেপ গ্রহণের পরও সড়কে মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু বেড়েই চলেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন তরুণসহ সব বয়সের মানুষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। স্বভাবতই তরুণরা কৌতূহলপ্রবণ হয়। আবেগের বশবর্তী হয়ে তরুণরা নিজেদের বীরত্ব প্রদর্শন করতে গিয়ে অকালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। দুর্ঘটনা হোক ছোট কিংবা বড় তাতে যে প্রাণহানি ঘটে তার ক্ষতি অপূরণীয়।

ঈদ আসলে এই দুর্ঘটনার হার দ্বিগুণ হয়ে যায়। গত কয়েক বছরে ঈদের দিন, ঈদের আগে ও পরের তিনদিনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা আশংকাজনকভাবে বেড়েছে এবং এর মধ্যে তরুণ ও কিশোরদের সংখ্যা বেশি। যাত্রীকল্যাণ সমিতির তথ্য মতে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশেরই বয়স ২১-এর নিচে; অর্থাৎ কিশোর-তরুণ। বিজ্ঞানীরা মনে করেন খুব কম বয়সে বা কিশোর বয়সে এই বাহন সহজে হাতে পাওয়া, কম বয়সের উচ্ছ্বাস, জীবনে প্রথম গাড়ি চালানোর উত্তেজনা, প্রতিযোগিতার মনোভাব, যত খুশি গতি বাড়ানোর সুযোগ ইত্যাদি কারণে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা হয় বেশি।

দেশের সব সড়ক ও মহাসড়কও যান চলাচলের জন্য শতভাগ নিরাপদ নয়। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা গবেষকদের বক্তব্য, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তা হলো-অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিংয়ের চেষ্টা, বারবার লেন পরিবর্তন করা, ট্রাফিক আইন না মানা, চলন্ত অবস্থায় মুঠোফোনে কথা বলা, হেলমেট ব্যবহার না করা কিংবা নিম্নমানের হেলমেট ব্যবহার করা প্রভৃতি। দেশে ভগ্নদশাগ্রস্ত সড়কের অভাব নেই। এছাড়া কিছু মহাসড়কে রয়েছে বিপজ্জনক বাঁক। সড়কের কাঠামোগত ত্রুটিও কিছু দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য মেনে চলতে হবে কিছু সতর্কতা

  •         স্পীড ব্রেকার লক্ষ্য করুন

রাস্তার মাঝে অনেক সময় অনেকেই স্পিড ব্রেকারের প্রতি একদমই নজর দিতে ভুলে যান অথবা নতুন কোন রাস্তা দিয়ে গেলে কোথায় কোথায় স্পীডব্রেকার আছে তা জানা থাকেনা। সড়কে স্পিডব্রেকারে প্রায়ই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এর একমাত্র কারণ দ্রুত গতি।

  •         গতি রাখুন সীমিত

মনে রাখবেন বেশিরভাগ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ বেপরোয়া গতি। আপনার সামনে পিছনে কি ধরণের যানবাহন চলছে তাঁদের গতি কেমন কিংবা কিভাবে চালাচ্ছে তা সবসময় ফলো করতে হবে। না হলে আপনার সামনের গাড়ি হঠাৎ ব্রেক করলে আপনি ঐ গাড়ির উপর উঠে যেতে পারেন অথবা আপনি হঠাৎ ব্রেক করলে আপনার পেছনের গাড়ি আপনার উপর উঠে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে গতিতে মোটরসাইকেল চালাবেন না।

  •         খারাপ আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল নয়

আবহাওয়া বিবেচনায় আনুন। মোটরসাইকেল খারাপ আবহাওয়া উপযোগী বাহন নয়। তাই আবহাওয়া খারাপ থাকলে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হবেন না। ঝড়-বৃষ্টি, ঘন কুয়াশা, তুষারপাতের সময় মোটরসাইকেল নয়। মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেলে যদি বৃষ্টি বা যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে তবে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন।

  •         দুই রাস্তার সংযোগস্থলে অধিক ঝুঁকি

দুই বা একাধিক রাস্তার সংযোগস্থল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। বেশিরভাগ দুর্ঘটনা এসব জায়গায়ই হয়ে থাকে। শহরের বাইরে যেসব সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই সেখানে খুবই সতর্ক হতে হবে। কেননা আপনি সঠিক নিয়ম পালন করলেও দেখা যাবে আরেক গাড়ির নিয়ম ভাঙার ফল ভোগ করতে হতে পারে আপনাকে। তাই খেয়াল রাখুন অন্য রাস্তায় গাড়ির গতিবিধি।

  •         বাঁকে বিপদ

বাঁক নেওয়ার সময় বিপদ ঘটে। এসময় গতি কমাতে হবে। গতি বেশি থাকলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া এ সময় উল্টোদিক থেকে আসা গাড়ি খেয়াল রাখতে হবে খুব সতর্কতার সঙ্গে। লেন পরিবর্তনের সময় অবশ্যই বাইকের ইন্ডিকেটর লাইট দিয়ে সঠিকভাবে সিগন্যাল দিতে হবে। উল্টোদিক থেকে কী আসছে বা কী আছে তা পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে এগোবেন না।

  •         মহাসড়কে দূরের যাত্রা মোটরসাইকেলে নয়

দূরের যাত্রায় মোটরসাইকেল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বাহন। মহাসড়কে দূরের যাত্রায় মোটরসাইকেল মোটেও নিরাপদ নয়। দূরের যাত্রা উপযোগী হিসেবে তৈরি করা হয়নি এ বাহন। এ বাহনটি দিয়ে স্বল্প দূরত্বের গন্তব্যে ভ্রমণ করাই শ্রেয়। মহাসড়কে দূরের যাত্রা পুরপুরি পরিহার করুণ। যেসব মহাসড়কে দুই চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ সেসব মহাসড়কে উঠবেন না।

  •         দুইয়ের অধিক নয়

আমাদের দেশে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে জায়গা থাকায় প্রায়ই তিন জন আরোহী ভ্রমণ করেন যা একইসঙ্গে বেআইনি ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। মনে রাখবেন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়াররা মোটরসাইকেল এমনভাবে নকশা করেছেন যেন একসঙ্গে দুই জন চলতে পারেন।

  •         সড়কে প্রতিযোগিতা নয়

একটি মোটরসাইকেল অভারটেক করলেই দুই মোটরসাইকেলে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। অদক্ষ ও অপরিণামদর্শী চালকরাই মূলত এ ধরণের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে থাকেন। এছাড়া আরেক ধরণের প্রতিযোগিতা দেখা যায়- কে কত কায়দা করে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। কেউ কেউ দুই হাত ছেড়ে চালানোর চেষ্টা করেন, কেউ আবার সড়কে জিগজ্যাগ চালান। এসবই অদক্ষতার চরম বহিঃপ্রকাশ।

অপ্রয়োজনীয় ওভারটেক বিপদ ডেকে আনে। দেশে ওভারটেক করতে গিয়ে এক্সিডেন্টের ঘটনা অনেক।ওভারটেক করতে হলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে হর্ণ দিয়ে ওভারটেক করুন।

  •         সড়কে বালি, পাথর, কাঁদায় ঘটে দুর্ঘটনা

অনেক সতর্কতার পরেও বালি, পাথর ও কাঁদায় ঘটে দুর্ঘটনা। শুকনো বালি বা পাথর রাস্তায় বেশি পরিমাণে থাকলে এতে চাকা স্লিপ করবে। তাই সড়কের বালি ও পাথরপূর্ণ অংশে মোটরসাইকেল চালাবেন না। এছাড়া রাস্তায় কাঁদা জমে গেলেও চাকা স্লিপ করে। ঘটে বিপদ।

  •         অদক্ষদের মোটরসাইকেল চালাতে দেবেন না

সাধারণত ঈদ বা কোনো উৎসবের সময় দেখা যায় মোটরসাইকেল ধার নেন বন্ধু-বান্ধব, নিকট আত্মীয়, সহপাঠী, সহকর্মী বা প্রতিবেশীরা। তাদের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দেবেন না। মোটরসাইকেলে যাত্রা শুরুর আগে কিছু যান্ত্রিক বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন। তেল, ব্রেক, লাইট, হর্ন ইত্যাদি কাজ করছে কি না পরীক্ষা করুণ।

  •         চলন্ত অবস্থায় মোবাইলে কথা বলা সম্পূর্ণ নিষেধ

বাইক চালানো অবস্থায় মোবাইলে কথাবলা মোটেও উচিত নয়। আপনার জীবনের থেকে মোবাইলে কথা বলা বেশি গুরুত্বপূর্ন নয়। প্রয়োজনে বাইক রাস্তার একপাশে নিরাপদে পার্ক করে এরপর কথা বলুন।

সম্পূর্ণ মনোযোগ ড্রাইভিংয়ের দিকে রাখা একটি অবশ্য পালনীয়। যেকোনো প্রকার অমনোযোগিতায় বাইক চালকের জন্য ক্ষতিকর এবং তা দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। গান শোনা কিংবা কারো সাথে ফোনে কথা বলা ইত্যাদি একবারেই বন্ধ করা উচিত। সাধারনত গাড়ি ওভারটেক করা ঠিক নয়। বলে রাখা ভালো গাড়ি দুর্ঘটনার ৯০ ভাগই রোধ করা সম্ভব কেবল এই বিষয়টি খেয়াল করার মাধ্যমে।গাড়ি মোড় ঘুরানোর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।তাই এই বিষয়টি শতভাগ ফলো করে চলবেন। সর্বোপরি, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে পথ চলতে হবে। 

দুর্ঘটনা রোধে বাইক চালানোর প্রাথমিক জ্ঞান মাথায় রাখতে হবে

পিঠের অবস্থান: কোমরে বেল্ট ব্যবহার করুন এবং পিঠের ওপরের অংশ পেছনের দিকে একটু বাঁকা রাখুন।

বিশ্রাম: মোটরসাইকেল চালানোর সময় চিন্তামুক্ত ও প্রফুল্ল মন থাকতে হবে। ২০/৩০ কিলোমিটার পর পর বিশ্রাম নিন।এতে গাড়ির ইঞ্জিনের উত্তপ্ততা একটু হৃাস পাবে।

সেফটি গিয়ার ব্যবহার: যেমন হেলমেট, গ্লাভস, জুতা, হাটু-কনুই গার্ড, চেস্ট প্রটেক্টর ইত্যাদি ব্যবহার করা। আবহাওয়ার সাথে মিলিয়ে প্রয়োজনীয় পোশাক পরা যেমন শীতে গরম পোশাক, বর্ষায় রেইনকোট, গরমে সুতির কাপড় এবং রাতে উজ্বল রং এর পোশাক । হেলমেট পড়তে একেবারেই ভুলবেননা ।

সিএনজি, অটো, লেগুনাকে ভুলেও ফলো করবেন না:  দুর্ঘটনা প্রায়ই সংঘটিত হয় সিএনজি, অটো, লেগুনা বা এই জাতীয় পাবলিক যানবাহনকে ফলো করার মাধ্যমে। কারন এই যানবাহন গুলো হঠাৎ থামিয়ে দেয় লোক উঠানো বা নামানোর জন্য। এমতাবস্থায় আপনি একটু বেখেয়াল হলেই দুর্ঘটনা নিশ্চিত।কাজেই এদের ফলো করা এড়িয়ে চলুন।

বড় গাড়ির পেছনে থাকলে হর্ণ বাজতে ভুলবেননা: আপনার চাইতে বড় গাড়ির পেছনে থাকলে বার বার হর্ণ বাজাবেন।এতে করে আপনার বিপরীতগামী গাড়ির ড্রাইভার আপনার উপস্থিতি সহজে বুঝতে পারবে।তখন ঐ ড্রাইভার সতর্কভাবে গাড়ির গতি এবং পথ কন্ট্রোলিং করবে।

উঁচু ব্রীজ অতিক্রম করতে খুবই সতর্ক থাকুন:  ব্রীজে উঠতে বার বার হুঁইসেল দিন কারন বিপরীতগামী গাড়ি আপনিও দেখবেননা, ওরাও আপনিও দেখবেননা। সেক্ষেত্রে হর্ণ বাজানো অব্যাহত রাখলে উভয়েই উভয়ের উপস্থিতি সহজে অনিধাবন করতে পারবেন। ঠিক তেমনি ব্রীজ থেকে নিচে নামার ক্ষেত্রে গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন নতুবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্য কোন গাড়ী, পথচারী বা বড় গাছে আঘাত অথবা খাঁদে পরে যেতে পারেন।

ক্লাস কন্ট্রোল না করে গিয়ার উঠাবেন নামাবেন না:  চলতি পথে অনেক সময় গাড়ির গিয়ার চেঞ্জ করতে হয়।সেক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই ক্লাস কন্ট্রোল করে অর্থাৎ গাড়ি নিউট্রাল করে গিয়ার উঠাবেন বা নামাবেন নতুবা গাড়ির গিয়ারে চাপ দিলে গাড়ির অপ্রত্যাশিত ঝাঁকুনি বা গতির পরিবর্তন জনিত কারণে আপনি কন্ট্রোল হারিয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্তিতির মুখোমুখি হতে পারেন।আর একটি গাড়ির গিয়ার কখনই একসাথে চর নম্বরে নিবেননা বা চার নম্বর থেকে এক নম্বরে নামাবেন না।

সম্ভব হলে একটি ড্রাইভিং কোর্স করুন: সম্ভব হলে একটি ড্রাইভিং কোর্স করে নিতে পারেন। একটি মোটর সাইকেল কোর্স আপনাকে কিভাবে মোটর সাইকেল নিরাপদে চালাতে হয় তার নিয়ম শিখাবে। কিভাবে অপ্রত্যাশিত রাইডিং পরিস্থিতিতে দেখা দিতে পারে তখন আপনার পদক্ষেপ কি হতে পারে এমন উপযুক্ত পদক্ষেপগুলিও শিখতে পারবেন।

সচেতনতাই মুখ্য

অভিভাবকদের উচিত কিশোর বয়সীদের মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে না দেয়া। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে ব্যক্তি সচেতনতাই মুখ্য। জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে। তাই মোটরসাইকেল চালানোর সময় সর্তক থাকতে হবে।

দুর্ঘটনা এড়াতে সবচেয়ে জরুরি হলো আইন মেনে চলা। পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে হাইওয়ে পুলিশের কর্মদক্ষতা ও নজরদারি বাড়াতে হবে। যানবাহন চলাচলের গতি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগের স্পিডমিটার ব্যবহারসহ যানবাহন চালকের বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিংসহ এখানে সেখানে গণপরিবহন থামানো বন্ধ করতে হবে।

পাশাপাশি প্রশাসনকেও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ট্রাফিক আইন যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। লাইসেন্সবিহীন চালকদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ১৮ বছরের নিচে কেউ যাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স না পায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। সর্বোপরি, পারিবারিক সচেতনতা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার মাধ্যমে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।

সবশেষে বলায় যায় বাঁচতে হলে সময়ের মূল্য অনেক। কিন্তু মনে রাখবেন সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য আরো অনেক বেশি। আশাকরি উপরের নিয়মগুলো ফলো করলে অন্তত ৯০ ভাগ দুর্ঘটনা এড়াতে পারবেন। বাকিটুকু সৃষ্টি কর্তার উপর ভরসা।

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy Helmetsbikroy
LS2 Special edition for Sale

LS2 Special edition

MEMBER
Tk 5,500
2 days ago
MT Helmet stinger Brave Matt Yellow for Sale

MT Helmet stinger Brave Matt Yellow

MEMBER
Tk 2,600
4 hours ago
axxis helmet for Sale

axxis helmet

MEMBER
Tk 2,800
6 hours ago
Helmet for sale for Sale

Helmet for sale

MEMBER
Tk 600
6 hours ago
Yohe Sport Helmet for Sale

Yohe Sport Helmet

MEMBER
Tk 3,650
8 hours ago
Explore Other Safety Gearsbikroy
LS2 Special edition for Sale

LS2 Special edition

MEMBER
Tk 5,500
2 days ago
ENGINE COOLER CABLE for Sale

ENGINE COOLER CABLE

MEMBER
Tk 3,000
2 days ago
Nissan juke 4 door complete sell for Sale

Nissan juke 4 door complete sell

MEMBER
Tk 40,000
5 days ago
Led Backpack for Bikers for Sale

Led Backpack for Bikers

MEMBER
Tk 12,000
2 weeks ago
+ Post an ad on Bikroy