মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংক যেকোনো মোটরসাইকেলের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আবার এটি সবচেয়ে সামনের দিকে অংশ’ও বটে। তাই ফুয়েল ট্যাংকে কিছু হলে তা সবার আগে নজরে পড়ে। আবার ফুয়েল ট্যাংকে মরিচা ধরলে তা বাইকের সৌন্দর্য্য’ও নষ্ট করে। তবে মরিচার ইফেক্ট শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়।
বরং ফুয়েল ট্যাংকে মরিচা ধরে ছিদ্র হয়ে গেলে তা জ্বালানীকে দূষিত করে দেয় এবং বাইকের ফুয়েল এফিশিয়েন্সি একদম কমিয়ে দেয়। তাই মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংক’র এই সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় সেই সম্পর্কে জানবো আজ।
মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংকে মরিচাধরা প্রতিরোধ
মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংকে মরিচাধরা প্রতিরোধ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংকের যত্ন নিতে হবে। বছরে ১ বা ২ বার কোনো ভালো সার্ভিসিং সেন্টারে বাইক নিয়ে গিয়ে ট্যাংকটি পরিষ্কার করালেই চলবে। আর কখনোই ডিজেল বা কেরোসিন দিয়ে মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংক পরিষ্কার করা যাবে না। বরং মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংক পরিষ্কার করার জন্য অকটেন বা পেট্রোল ব্যবহার করতে হবে।
মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংকের মরিচাধরা ছিদ্র মেরামত
মোটরসাইকেল ফুয়েল ট্যাংক’র মরিচাধরা ছিদ্র মেরামত করা অনেক সহজ একটি কাজ। এটি আপনি একাই করে ফেলতে পারবেন যদি আপনার কাছে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো থাকে।
প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম :
- চোখের জন্য চশমা
- ফেস মাস্ক
- গ্লাভস
- পরিষ্কার কাপড়
- ফুয়েল ট্যাংকের রঙ
- প্রাইমার
- পেট্রোল রেসিস্ট্যান্ট প্রাইমার
- মেটাল বডি ফিলার
- মেটাল ক্লিনার
- শিরিষ কাগজ
- ব্রাশ
তো চলুন এবার আপনার মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংকের মরিচাধরা ছিদ্র পরিষ্কার করা যাক। তবে তার আগে আপনার হাতে গ্লাভস, চোখে চশমা ও মুখে একটি মাস্ক পরে নিন।
ধাপ ১ – প্রথমেই আপনাকে ফুয়েল ট্যাংকটি বাইক থেকে খুলে ফেলতে হবে। এর জন্য আপনি বাইকের সাথে আসা ম্যানুয়াল দেখে তা খুলতে পারবেন।
ধাপ ২ – ফুয়েল ট্যাংক থেকে সম্পূর্ণ জ্বালানি বের করে ফেলুন। খরচ করতে হবে না, যাস্ট আলাদা একটি পাত্রে ঢেলে রাখুন।
ধাপ ৩ – এবার একটি মেটাল ক্লিনারের সাহায্যে ফুয়েল ট্যাংকের ভেতর ও বাহির ভালো করে পরিষ্কার করে ফেলুন।
ধাপ ৪ – এবার শিরিষ কাগজের সাহায্যে মরিচাধরা অংশগুলো ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে ফেলুন। সম্পূর্ণ মরিচা উঠে যাওয়া অবদি ঘষতে হবে। এতে করে ফুয়েল ট্যাংকের রঙ উঠে যাবে, তবে চিন্তা করার কিছু নেই। মরিচা তুলে ফেলার পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ট্যাংকটি মুছে ফেলুন।
ধাপ ৫ – এবার মরিচাধরা ছিদ্রের উপর প্রাইমার লাগিয়ে নিন।
ধাপ ৬ – মেটাল বডি ফিলার ব্যবহার করে ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দিন। প্রয়োজনে শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে ভালো ফিনিশিং দিয়ে চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন যাতে এখানে যে আগে ছিদ্র ছিল তা যাতে বোঝাই না যায় এমন ফিনিশিং দিতে। ফিনিশিং দেয়া হয়ে গেলে শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৭ – ছিদ্র বন্ধ হয়ে গেলে পরবর্তী কাজ হচ্ছে আগামীতে যেন আর ছিদ্র না হয় সেটা এনশিওর করা। এই জন্য আপনাকে পেট্রোল রেসিস্ট্যান্ট প্রাইমার ব্যবহার করে ফুয়েল ট্যাংকে একটি প্রলেপ দিতে হবে। প্রলেপ দেয়ার পর শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৮ – পরবর্তী কাজ হচ্ছে ফুয়েল ট্যাংক রঙ করা। ব্রাশ ও আপনার পছন্দের রঙ ব্যবহার করে ফুয়েল ট্যাংকটি ভালো করে রঙ করে ফেলুন। রঙ করা হয়ে গেলে তা শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৯ – সর্বশেষ কাজ হচ্ছে আপনার ফুয়েল ট্যাংকটি আবারো বাইকে লাগিয়ে দেয়া। ম্যানুয়াল দেখে সাবধানতার সাথে ফুয়েল ট্যাংকটি লাগিয়ে নিন। সবকিছু ঠিকঠাক বসেছে কি না তা বার বার চেক করুন।
পরিসংহার
প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো আপনি যেকোনো বাইকের দোকানে গেলেই পেয়ে যাবেন। প্রথমবার ক্রয় করতে হয়তো কিছু টাকা বেশি যাবে, তবে একবার এগুলো ক্রয় করার পর আপনি নিজেই নিজের বাইক পরিষ্কার করতে পারবেন। তাই দীর্ঘমেয়াদে আপনার বেশ কিছু টাকা বেচে যাবে। আর কিছুদিন পর পর ফুয়েল ট্যাংক পরিষ্কার করলে মোটরবাইক থেকে ভালো মাইলেজ’ও পাওয়া যাবে।