ABS কি – এবিএস সম্পর্কে খুঁটিনাটি

29 Mar, 2023   
ABS কি – এবিএস সম্পর্কে খুঁটিনাটি

বাইক নিরাপদে চালানোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ব্রেকিং সিস্টেম। আধুনিক বাইকগুলোর জনপ্রিয় ব্রেকিং সিস্টেম হল এবিএস (এন্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম) । এটি এমন একধরণের অসাধারণ ব্রেকিং সিস্টেম যা বাইককে সহজে কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে।

এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম (ABS- Anti-lock braking system) বাইক ব্রেকিং এর সময় চাকা লক হতে দেয় না, এমনকি চাকা স্কীড করা থেকেও সুরক্ষা দেয়। বাইকার যারা বেশি গতি সম্পন্ন বাইকে অর্থাৎ ১৫০ সিসি বাইকে এই ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করেছেন তারা এর সুবিধা ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। এই ব্রেকিং সিস্টেম আধুনিক এবং বেশি গতিসম্পন্ন বাইকে ব্যবহার হয়। উন্নত সব দেশেই বাইকে এবিএস ব্যবহার কম্পোলসারি, বাংলাদেশে এই ব্রেকিং সিস্টেম কিছুটা দামি তাই বেশিরভাগ বাইকে ব্যবহার করা হয় না। তবে নিরাপদে চলাচলের জন্যে সরকারের উচিত এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম বাধ্যতামূলক করা।

ABS এর সুবিধা হল, এই ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহারে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যায়। যেমন ধরুন, বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে গেছে, অথবা কর্দমাক্ত বা বালুময় রাস্তায় আপনি বাইক রাইড করছেন। এসব রাস্তায় হুট্ করে বাইক ব্রেক করা বা থামানো সহজ নয়। বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় হঠাৎ ব্রেক করলে আপনার বাইকের চাকা স্কীড করবে। কাদা বা বালুময় রাস্তায় হঠাৎ ব্রেক করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পরে যেতে পারেন। এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম আপনাকে এসব সিচুয়েশনে দুর্ঘটনা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। এই ব্রেকিং সিস্টেমে একটি সেন্সর থাকে যা চাকা লক হতে দেয় না। তাই চাকা স্কীড করা বা উল্টে পরা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

দ্রুত গতির বাইক হলে নিরাপত্তা এবং ভালো ব্রেকিং এর জন্যে ABS খুব দরকার। আমাদের দেশের রাস্তার অবস্থা বিবেচনা করলে অল্প কিছু বাইক ছাড়া সব বাইকেই এই ব্রেকিং সিস্টেম দরকার। তাহলে যেকোনো প্রতিকূল আবহাওয়া, অস্থিতিশীল রাস্তায় চলাচলের সময় আপনি কনফিডেন্ট পাবেন। এই ব্লগে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে ABS কাজ করে এবং ABS এর সুবিধা নিয়ে।

ABS নতুন কোনো প্রযুক্তি নয়। গাড়ি এবং এরোপ্লেনে আগে থেকেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার হতো। জার্মানরা প্রথম এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে ১৯২৮ সালে। তখন গাড়ি এবং প্লেনে এটি ব্যবহার হতো। এরপর রয়েল এনফিল্ড ১৯৫৮ সালে প্রথম তাদের বাইকে ABS সংযোজিত করে। বিএমডাব্লিউ ১৯৮৮ সালে এই প্রযুক্তি সংযুক্ত বাইক বাজারে আনে। এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১২ সালে সব বাইকে এই প্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করে আইন জারি করে। চলুন দেশের মোটরবাইকের বাজার ও এবিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। 

এবিএস ব্রেকিং কী?

এবিএস বা এন্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম হল অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত একটি কার্যকর ব্রেকিং সিস্টেম। বাইক ব্রেক করার সময় এটি চাকা লক হতে দেয় না। এই সেন্সর বাইকের দুই চাকার গতি মেজারমেন্ট করে, সাথে বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট গতিও পরিমাপ করে। ব্রেকিংয়ের সময় যদি চাকার গতির মেজারমেন্ট এবং ডিসপ্লেসমেন্ট গতির তারতম্য হয়, তখন ABS এই গতি পার্থক্যকে কোঅর্ডিনেট করে, এবং চাকা স্কীড করতে দেয় না।  স্কীড ব্যাপারটা অবশ্য চাকার মানের উপর নির্ভর করে। চাকার মান খারাপ হলে কিছুটা স্কীড হয়ই। এই সেন্সরটি একটি ইসিইউ প্রোগ্রামিং দ্বারা কন্ট্রোল হয়। এটি রেশনাল স্পিড মেজারমেন্ট করে, এবং চাকা লক না করে চাকার ঘূর্ণন বন্ধ করে।

এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ছাড়া বাইক গুলোতে বাইকাররা ব্রেক লিভার হালকা ভাবে ধরে বা পুশ ব্রেক ধরে বাইক কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেন, হার্ড ব্রেক করা থেকে বাঁচতে। বাইকে ABS থাকলে আপনি প্রয়োজন মতো হার্ড ব্রেক করতে পারবেন। এটাই ABS এর সুবিধা, হার্ড ব্রেক করলে চাকা হঠাৎ করে লক করে না, তাই চাকা স্লিপও করবে না। তবে মনে রাখবেন, ABS একটি সেন্সর সম্বলিত প্রযুক্তি, তাই চলন্ত অবস্থায় বার বার পুশ ব্রেক করবেন না, ব্রেকিংয়ে সমস্যা হতে পারে।

সাধারণ ব্রেকিং সিস্টেমে, হাতলে ব্রেক ধরার একটি মাস্টার সিলিন্ডার আছে, এতে এক ধরণের লিকুইড থাকে। এটি সরাসরি চাকার সাথে লিংকড। যখন এই হাতলের ব্রেকে আপনি চাপ দেবেন, এই প্রেসার সরাসরি চাকায় লাগানো ডিস্কে চাপ দেয়, চাপে চাকা থেমে যায়। সাধারণ ব্রেক এভাবেই কাজ করে। আপনি হাতল ব্রেকে হালকা করে প্রেসার দেবেন, বাইক হালকা ভাবে চলবে, হুট্ করে জোরে প্রেসার দেবেন, চাকার উপরেও জোরে প্রেসার পরবে। এভাবে চাকায় হুট্ করে জোরে প্রেসার পরলে, চাকা লক হয়ে যায়, বাইক রানিং এর উপর থাকে স্কীডও হয়। এতেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এসব দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্যেই এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করা উচিত। এটি চাকা লক হয়ে যাওয়াকে অ্যান্টিলক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রিভেন্ট করে।

কিভাবে ABS কাজ করে?

ABS এর মূল কাজ হলো বাইক ব্রেকিংয়ের সময়, চাকা লক হওয়া রোধ করা। ABS সংযুক্ত করা বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম আলাদা, এতে ব্রেক করার সময় প্রথমবার ব্রেক প্রেসার দিয়ে আবার ছেড়ে দিয়ে আবার ব্রেকে প্রেসার দিতে হয়। এভাবেই ABS কাজ করে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি একটি সেন্সরের মাধ্যমে হয়। ব্রেক লিভার এবং চাকার মাঝখানে একটি ডিভাইস থাকে। এই সেন্সর বাইকের চাকার গতি মেজারমেন্ট করে, সাথে বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট গতিও পরিমাপ করে। সেন্সরটি চাকায় লাগানো থাকে। ব্রেক করার সময় সেন্সর চাকার গতি এবং বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট মেজার করে, ABS এরপর পিস্টনের লিকুইডটি ডিভাইসে পাঠায়। এরপর সেন্সরের মেজারমেন্ট অনুযায়ী ডিভাইস প্রয়োজনীয় লিকুইড প্রেসার চাকাতে পাঠায়। ফলে চাকা থেমে যায়, স্কীড করে না। এভাবে হাইড্রোলিক ব্রেক এবং চাকার ঘূর্ণনের সাথে মেজারমেন্ট রেখে চাকা লক হওয়া, স্কিড করা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে ABS ব্রেকিং সিস্টেম।

অর্থাৎ বাইকার ব্রেকে চাপ দিলে, সেন্সরের মাধ্যমে ABS, ব্রেক লিকুইডে প্রেসার দেয়, এতে চাকা আর লক হতে পারে না। তখন সেন্সরের মাধ্যমে ABS সিস্টেম মেজার করে বাইকটির চাকার গতি, সে অনুযায়ী ব্রেক কন্ট্রোল করে। সেন্সর কাজ হলো চাকা কত জোরে ঘুরছে সেটি বের করা, এরপর তা ডিভাইসে পাঠানো। আপনি তাহলে বুঝতেই পারছেন, চাকার ঘূর্ণনের উপর ডিপেন্ড করে ব্রেক লিভারে লিকুইড পাঠায়, আর এই ঘূর্ণন মেজার করে চাকায় লাগানো সেন্সর, এতে ব্রেক অনুযায়ী চাকার গতি সব সময় মনিটর করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ বাইকের গতি বা চাকার ঘূর্ণন এর সাথে কোঅর্ডিনেট করে ব্রেক লিকুইডে প্রেসার তৈরী করে। ডিভাইস প্রয়োজন মতো লিকুইড ব্রেক পিষ্ঠনে থেমে থেমে প্রেসার দেয়। ফলে চাকা একবারে লক হয় না, এবং স্কীড করে না। দ্রুতগামী বাইক কন্ট্রোল করা বা থামানো সহজ ও নিরাপদ হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে কিভাবে ABS কাজ করে। 

এবিএস সম্পর্কে খুঁটিনাটি

প্রধানত দুই ধরণের ABS (আন্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম) আছে। সেগুলো হলো –

(১) সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস (Single Channel ABS)

(২) ডুয়েল চ্যানেল এবিএস (Dual Channel ABS)

সিঙ্গেল চ্যানেল ABS: এখানে বাইকের সামনের চাকায় সেন্সর থাকে। এক্ষেত্রে পিছনের চাকাতে এই ব্রেকিং সিস্টেম কাজ করে না। এই সিস্টেমের সুবিধা হলো, আপনি ইচ্ছা করলে এটি চালু রাখতে পারেন অথবা অফও করে রাখতে পারেন।

ডুয়েল চ্যানেল ABS: এখানে বাইকের দুই চাকাতেই সেন্সর থাকে। অর্থাৎ বাইকার ব্রেকে চাপ দিলে সেন্সর দুই চাকার উপরেই সমান ভাবে কাজ করে। এই সিস্টেম বাইকারকে আরো নিরাপদ করে।

বাইকের ABS মূলত তিনটি অংশ দিয়ে তৈরি।

স্পিড সেন্সর: বাইকার যখন ব্রেকে প্রেসার দেয়, তখন সেন্সর চাকার ঘূর্ণন, বা বাইকের গতি মেজারমেন্ট করে। সেন্সর বাইকের গতি এবং বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট সমন্বয় করে। সেন্সর মেজার করে বাইকের গতি হঠাৎ কমে গিয়ে, চাকা লক হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছে, তখন সেন্সর লিকুইড প্রয়োজন মতো ভালভ দিয়ে চাকায় পাঠায়। লিকুইড সিলিন্ডারে প্রবেশ করলে ব্রেক নিয়ন্ত্রণে আসে। ব্রেকের প্রেসার ছেড়ে দিলে ভাল্ভ আবার বন্ধ হয়ে যায়, তখন বাইক আবার হাইড্রোলিক ব্রেকিং সিস্টেমে চলে যায়।

পাম্প: এটি চাকার সেন্সরকে চাকার ঘূর্ণন বা বাইকের গতি নির্ণয় করতে সাহায্য করে। এটি ডিস্ক ব্রেকের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই জায়গাটিকে টুথ ডিস্কও বলে।

ভাল্ভ: ভালব ব্রেক করার সময় সিলিন্ডারের চাপ নিয়ন্ত্রন করে এবং এটি ইসিইউ এর পাশেই থাকে। ইসিইউ একটি মাইক্রো প্রসেসর সিস্টেম যাতে ABS এর প্রোগ্রাম স্টোরড থাকে। সেন্সর ইসিইউ প্রোগ্রামিং দ্বারা কন্ট্রোল হয়। এটি সাধারনত বাইকারের সিট এর নিচে থাকে।

 ABS এর সুবিধা সমূহ

(১) ABS সিস্টেম থাকলে হার্ড ব্রেক করা অবস্থাতেও, বাইক না থামিয়ে, গতি কমিয়ে, থামানো বা চলন্ত যে কোনো বস্তুকে পাশ কাটাতে পারবেন। সাধারণ ব্রেকিং সিস্টেম হলে, হার্ড ব্রেক করলে, ছিটকে পরার সম্ভবনা থাকতো, পাশ কাটানো তো সম্ভবই না, কারণ তার আগেই পিছলে যাবেন। এর কারণ হলো, এবিএস ব্রেকিং সংযুক্ত সিস্টেমে চাকা লক হয় না, অর্থাৎ হার্ড ব্রেক করলে, চাকা স্কীড করতে দেবে না। ফলে ব্রেকে প্রেসার দিয়েও আপনি বাইক ঘুরিয়ে সরে যেতে পারবেন।

(২) এই ব্রেকিং সিস্টেম থাকলে যেকোনো সময় হুট্ করে ব্রেক করলে, ব্যালান্স হারাবেন না, কারণ চাকা লক হবে না, স্কীডও করবে না। 

(৩) আবহাওয়া যেমনই হোক, রাস্তা পিচ্ছিল, বালুময়, কর্দমাক্ত কিংবা উঁচু-নিচু যেমনই হোক, আপনার ব্রেক বা চাকা পিছলে যাবে কিনা তা নিয়ে টেনশন করতে হবে না।

(৪) সারাক্ষন ইঞ্জিন ব্রেক চেপে ধরে রাখা লাগে না, তাই ক্লাচ দীর্ঘদিন ভালো থাকে। এই ব্রেকিং সিস্টেমে ট্রাকশন কন্ট্রোল করে বাইকের গতি নিয়ন্ত্রন করা খুব সহজ।

(৫) রাস্তার মোড় ঘোরার সময় বা বাইক কর্ণারিং করার সময় হার্ড ব্রেক করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ABS ব্রেকিং সিস্টেম থাকলে স্মুথলি বাইক কর্নারিং করতে পারবেন।

 ABS এর অসুবিধা

(১) অনেক সুবিধার মাঝেও কিছু না কিছু অসুবিধা থাকেই। যেহেতু ABS সিস্টেম বাইক চাকা লক হতে দেয় না, তাই বাইক দিয়ে স্টান্ট করা সম্ভব না। স্টান্ট এর চেষ্টা করলে ব্রেকিং সিস্টেমের ক্ষতি হবে।

(২) যেহেতু এই সিস্টেম চাকাকে একেবারে লক হতে দেয় না, তাই যারা অনেক বেশি গতিতে বাইক চালান, ওই অবস্থায় জরুরি মুহূর্তে বাইক থামানোর প্রয়োজন পরলে, কিছুটা সমস্যার মুখে পরবেন।

(৩) এই ব্রেকিং সিস্টেমে অভ্যস্থ হোন। প্রাকটিস ছাড়া হাইওয়ে রাস্তায় উঠবেন না। এটি একটি টেকনিকাল ফীচার, তাই বাইক চালানো অবস্থায় আপনি এই ব্রেকিং সিস্টেম অফ করতে পারবেন না।

(৪) আপনার বাইকে যদি ABS সংযুক্ত না থাকে, তাহলে এই ফীচারটি ইন্সটল করা খুব কঠিন। আপনি সংযুক্ত করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের ইঞ্জিনিয়ারের সহায়তা নিন।

(৫) ABS ইনস্টল করা ব্যায়বহুল হওয়ায় অনেকেই এই দরকারি ফিচারটি সংযুক্ত করতে চায় না।

এবিএস ব্রেকিংয়ের ফিচারে অসুবিধার চেয়ে ABS এর সুবিধাই অনেক বেশি। এটি নিরাপত্তা এবং নিরাপদে পথ চলার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাইকারদের অনেক কনফিডেন্স দেয়। এই ব্রেকিং সিস্টেম হাইড্রোলিক ব্রেকের চাপ কমায়, গতি নিয়ন্ত্রণ করা তো অনেক সহজ। এই ব্রেকিং সিস্টেম দিয়ে আপনি বাইক চালনা আয়ত্ত করলে, অনাকাঙ্খিত অনেক দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে পারবেন।

 বাংলাদেশে বেশ কিছু এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম সংযুক্ত বাইক পাওয়া যায়

বাজাজ পালসার এনএস ১৬০ (Bajaj Pulsar NS160 ABS), বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্ক (Bajaj Pulsar 150 Twin Disc ABS), হিরো থ্রিলার ১৬০ আর এফআই (Hero Thriller 160R Fi ABS DD and SD), হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০ আর ডিলাক্স (Honda CB Hornet 160R Deluxe ABS), হোন্ডা সিবিআর ১৫০ আর (Honda CBR 150R ABS Motogp Edition), হোন্ডা সিবিআর ১৫০ আর রেপ্সল (Honda CBR 150R Repsol ABS Motogp), কাওয়াসাকি নিনজা ১২৫ (Kawasaki Ninja 125), কাওয়াসাকি জেড ১২৫ (Kawasaki Z125), কেটিএম ১২৫ ডিউক (KTM 125 Duke), লিফান কেপিটি ১৫০ (Lifan KPT 150 ABS), সুজুকি জিক্সার এফআই (New Suzuki Gixxer Fi ABS), সুজুকি জিএসএক্স আর ডুয়াল (Suzuki GSX R Dual ABS), টিভিএস এপাচি আরটিএর (TVS Apache RTR 4V ABS), ইয়ামাহা এফজেডএস (Yamaha FZS V3), ইয়ামাহা এক্সএসআর ১৫৫ (Yamaha XSR 155), ইত্যাদি।

 বাইক সম্পর্কে আরো ধারণা পেতে, বিভিন্ন বাইকের স্পেসিফিকেশন্স জানতে, ভিজিট করুন বাইকস গাইডে। এখানে পাবেন বিভিন্ন বাইক সম্পর্কিত রিভিউ, আপডেট নিউজ, টিপস সহ আরো অনেক প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন।

বাইক নিরাপদে চালানোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ব্রেকিং সিস্টেম। আধুনিক বাইকগুলোর জনপ্রিয় ব্রেকিং সিস্টেম হল এবিএস (এন্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম) । এটি এমন একধরণের অসাধারণ ব্রেকিং সিস্টেম যা বাইককে সহজে কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে।

এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম (ABS- Anti-lock braking system) বাইক ব্রেকিং এর সময় চাকা লক হতে দেয় না, এমনকি চাকা স্কীড করা থেকেও সুরক্ষা দেয়। বাইকার যারা বেশি গতি সম্পন্ন বাইকে অর্থাৎ ১৫০ সিসি বাইকে এই ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করেছেন তারা এর সুবিধা ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। এই ব্রেকিং সিস্টেম আধুনিক এবং বেশি গতিসম্পন্ন বাইকে ব্যবহার হয়। উন্নত সব দেশেই বাইকে এবিএস ব্যবহার কম্পোলসারি, বাংলাদেশে এই ব্রেকিং সিস্টেম কিছুটা দামি তাই বেশিরভাগ বাইকে ব্যবহার করা হয় না। তবে নিরাপদে চলাচলের জন্যে সরকারের উচিত এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম বাধ্যতামূলক করা।

ABS এর সুবিধা হল, এই ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহারে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যায়। যেমন ধরুন, বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে গেছে, অথবা কর্দমাক্ত বা বালুময় রাস্তায় আপনি বাইক রাইড করছেন। এসব রাস্তায় হুট্ করে বাইক ব্রেক করা বা থামানো সহজ নয়। বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় হঠাৎ ব্রেক করলে আপনার বাইকের চাকা স্কীড করবে। কাদা বা বালুময় রাস্তায় হঠাৎ ব্রেক করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পরে যেতে পারেন। এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম আপনাকে এসব সিচুয়েশনে দুর্ঘটনা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। এই ব্রেকিং সিস্টেমে একটি সেন্সর থাকে যা চাকা লক হতে দেয় না। তাই চাকা স্কীড করা বা উল্টে পরা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

দ্রুত গতির বাইক হলে নিরাপত্তা এবং ভালো ব্রেকিং এর জন্যে ABS খুব দরকার। আমাদের দেশের রাস্তার অবস্থা বিবেচনা করলে অল্প কিছু বাইক ছাড়া সব বাইকেই এই ব্রেকিং সিস্টেম দরকার। তাহলে যেকোনো প্রতিকূল আবহাওয়া, অস্থিতিশীল রাস্তায় চলাচলের সময় আপনি কনফিডেন্ট পাবেন। এই ব্লগে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে ABS কাজ করে এবং ABS এর সুবিধা নিয়ে।

ABS নতুন কোনো প্রযুক্তি নয়। গাড়ি এবং এরোপ্লেনে আগে থেকেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার হতো। জার্মানরা প্রথম এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে ১৯২৮ সালে। তখন গাড়ি এবং প্লেনে এটি ব্যবহার হতো। এরপর রয়েল এনফিল্ড ১৯৫৮ সালে প্রথম তাদের বাইকে ABS সংযোজিত করে। বিএমডাব্লিউ ১৯৮৮ সালে এই প্রযুক্তি সংযুক্ত বাইক বাজারে আনে। এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১২ সালে সব বাইকে এই প্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করে আইন জারি করে। চলুন দেশের মোটরবাইকের বাজার ও এবিএস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। 

এবিএস ব্রেকিং কী?

এবিএস বা এন্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম হল অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত একটি কার্যকর ব্রেকিং সিস্টেম। বাইক ব্রেক করার সময় এটি চাকা লক হতে দেয় না। এই সেন্সর বাইকের দুই চাকার গতি মেজারমেন্ট করে, সাথে বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট গতিও পরিমাপ করে। ব্রেকিংয়ের সময় যদি চাকার গতির মেজারমেন্ট এবং ডিসপ্লেসমেন্ট গতির তারতম্য হয়, তখন ABS এই গতি পার্থক্যকে কোঅর্ডিনেট করে, এবং চাকা স্কীড করতে দেয় না।  স্কীড ব্যাপারটা অবশ্য চাকার মানের উপর নির্ভর করে। চাকার মান খারাপ হলে কিছুটা স্কীড হয়ই। এই সেন্সরটি একটি ইসিইউ প্রোগ্রামিং দ্বারা কন্ট্রোল হয়। এটি রেশনাল স্পিড মেজারমেন্ট করে, এবং চাকা লক না করে চাকার ঘূর্ণন বন্ধ করে।

এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ছাড়া বাইক গুলোতে বাইকাররা ব্রেক লিভার হালকা ভাবে ধরে বা পুশ ব্রেক ধরে বাইক কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেন, হার্ড ব্রেক করা থেকে বাঁচতে। বাইকে ABS থাকলে আপনি প্রয়োজন মতো হার্ড ব্রেক করতে পারবেন। এটাই ABS এর সুবিধা, হার্ড ব্রেক করলে চাকা হঠাৎ করে লক করে না, তাই চাকা স্লিপও করবে না। তবে মনে রাখবেন, ABS একটি সেন্সর সম্বলিত প্রযুক্তি, তাই চলন্ত অবস্থায় বার বার পুশ ব্রেক করবেন না, ব্রেকিংয়ে সমস্যা হতে পারে।

সাধারণ ব্রেকিং সিস্টেমে, হাতলে ব্রেক ধরার একটি মাস্টার সিলিন্ডার আছে, এতে এক ধরণের লিকুইড থাকে। এটি সরাসরি চাকার সাথে লিংকড। যখন এই হাতলের ব্রেকে আপনি চাপ দেবেন, এই প্রেসার সরাসরি চাকায় লাগানো ডিস্কে চাপ দেয়, চাপে চাকা থেমে যায়। সাধারণ ব্রেক এভাবেই কাজ করে। আপনি হাতল ব্রেকে হালকা করে প্রেসার দেবেন, বাইক হালকা ভাবে চলবে, হুট্ করে জোরে প্রেসার দেবেন, চাকার উপরেও জোরে প্রেসার পরবে। এভাবে চাকায় হুট্ করে জোরে প্রেসার পরলে, চাকা লক হয়ে যায়, বাইক রানিং এর উপর থাকে স্কীডও হয়। এতেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এসব দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্যেই এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করা উচিত। এটি চাকা লক হয়ে যাওয়াকে অ্যান্টিলক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রিভেন্ট করে।

কিভাবে ABS কাজ করে?

ABS এর মূল কাজ হলো বাইক ব্রেকিংয়ের সময়, চাকা লক হওয়া রোধ করা। ABS সংযুক্ত করা বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম আলাদা, এতে ব্রেক করার সময় প্রথমবার ব্রেক প্রেসার দিয়ে আবার ছেড়ে দিয়ে আবার ব্রেকে প্রেসার দিতে হয়। এভাবেই ABS কাজ করে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি একটি সেন্সরের মাধ্যমে হয়। ব্রেক লিভার এবং চাকার মাঝখানে একটি ডিভাইস থাকে। এই সেন্সর বাইকের চাকার গতি মেজারমেন্ট করে, সাথে বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট গতিও পরিমাপ করে। সেন্সরটি চাকায় লাগানো থাকে। ব্রেক করার সময় সেন্সর চাকার গতি এবং বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট মেজার করে, ABS এরপর পিস্টনের লিকুইডটি ডিভাইসে পাঠায়। এরপর সেন্সরের মেজারমেন্ট অনুযায়ী ডিভাইস প্রয়োজনীয় লিকুইড প্রেসার চাকাতে পাঠায়। ফলে চাকা থেমে যায়, স্কীড করে না। এভাবে হাইড্রোলিক ব্রেক এবং চাকার ঘূর্ণনের সাথে মেজারমেন্ট রেখে চাকা লক হওয়া, স্কিড করা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে ABS ব্রেকিং সিস্টেম।

অর্থাৎ বাইকার ব্রেকে চাপ দিলে, সেন্সরের মাধ্যমে ABS, ব্রেক লিকুইডে প্রেসার দেয়, এতে চাকা আর লক হতে পারে না। তখন সেন্সরের মাধ্যমে ABS সিস্টেম মেজার করে বাইকটির চাকার গতি, সে অনুযায়ী ব্রেক কন্ট্রোল করে। সেন্সর কাজ হলো চাকা কত জোরে ঘুরছে সেটি বের করা, এরপর তা ডিভাইসে পাঠানো। আপনি তাহলে বুঝতেই পারছেন, চাকার ঘূর্ণনের উপর ডিপেন্ড করে ব্রেক লিভারে লিকুইড পাঠায়, আর এই ঘূর্ণন মেজার করে চাকায় লাগানো সেন্সর, এতে ব্রেক অনুযায়ী চাকার গতি সব সময় মনিটর করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ বাইকের গতি বা চাকার ঘূর্ণন এর সাথে কোঅর্ডিনেট করে ব্রেক লিকুইডে প্রেসার তৈরী করে। ডিভাইস প্রয়োজন মতো লিকুইড ব্রেক পিষ্ঠনে থেমে থেমে প্রেসার দেয়। ফলে চাকা একবারে লক হয় না, এবং স্কীড করে না। দ্রুতগামী বাইক কন্ট্রোল করা বা থামানো সহজ ও নিরাপদ হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে কিভাবে ABS কাজ করে। 

এবিএস সম্পর্কে খুঁটিনাটি

প্রধানত দুই ধরণের ABS (আন্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম) আছে। সেগুলো হলো –

(১) সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস (Single Channel ABS)

(২) ডুয়েল চ্যানেল এবিএস (Dual Channel ABS)

সিঙ্গেল চ্যানেল ABS: এখানে বাইকের সামনের চাকায় সেন্সর থাকে। এক্ষেত্রে পিছনের চাকাতে এই ব্রেকিং সিস্টেম কাজ করে না। এই সিস্টেমের সুবিধা হলো, আপনি ইচ্ছা করলে এটি চালু রাখতে পারেন অথবা অফও করে রাখতে পারেন।

ডুয়েল চ্যানেল ABS: এখানে বাইকের দুই চাকাতেই সেন্সর থাকে। অর্থাৎ বাইকার ব্রেকে চাপ দিলে সেন্সর দুই চাকার উপরেই সমান ভাবে কাজ করে। এই সিস্টেম বাইকারকে আরো নিরাপদ করে।

বাইকের ABS মূলত তিনটি অংশ দিয়ে তৈরি।

স্পিড সেন্সর: বাইকার যখন ব্রেকে প্রেসার দেয়, তখন সেন্সর চাকার ঘূর্ণন, বা বাইকের গতি মেজারমেন্ট করে। সেন্সর বাইকের গতি এবং বাইকের ডিসপ্লেসমেন্ট সমন্বয় করে। সেন্সর মেজার করে বাইকের গতি হঠাৎ কমে গিয়ে, চাকা লক হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছে, তখন সেন্সর লিকুইড প্রয়োজন মতো ভালভ দিয়ে চাকায় পাঠায়। লিকুইড সিলিন্ডারে প্রবেশ করলে ব্রেক নিয়ন্ত্রণে আসে। ব্রেকের প্রেসার ছেড়ে দিলে ভাল্ভ আবার বন্ধ হয়ে যায়, তখন বাইক আবার হাইড্রোলিক ব্রেকিং সিস্টেমে চলে যায়।

পাম্প: এটি চাকার সেন্সরকে চাকার ঘূর্ণন বা বাইকের গতি নির্ণয় করতে সাহায্য করে। এটি ডিস্ক ব্রেকের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই জায়গাটিকে টুথ ডিস্কও বলে।

ভাল্ভ: ভালব ব্রেক করার সময় সিলিন্ডারের চাপ নিয়ন্ত্রন করে এবং এটি ইসিইউ এর পাশেই থাকে। ইসিইউ একটি মাইক্রো প্রসেসর সিস্টেম যাতে ABS এর প্রোগ্রাম স্টোরড থাকে। সেন্সর ইসিইউ প্রোগ্রামিং দ্বারা কন্ট্রোল হয়। এটি সাধারনত বাইকারের সিট এর নিচে থাকে।

 ABS এর সুবিধা সমূহ

(১) ABS সিস্টেম থাকলে হার্ড ব্রেক করা অবস্থাতেও, বাইক না থামিয়ে, গতি কমিয়ে, থামানো বা চলন্ত যে কোনো বস্তুকে পাশ কাটাতে পারবেন। সাধারণ ব্রেকিং সিস্টেম হলে, হার্ড ব্রেক করলে, ছিটকে পরার সম্ভবনা থাকতো, পাশ কাটানো তো সম্ভবই না, কারণ তার আগেই পিছলে যাবেন। এর কারণ হলো, এবিএস ব্রেকিং সংযুক্ত সিস্টেমে চাকা লক হয় না, অর্থাৎ হার্ড ব্রেক করলে, চাকা স্কীড করতে দেবে না। ফলে ব্রেকে প্রেসার দিয়েও আপনি বাইক ঘুরিয়ে সরে যেতে পারবেন।

(২) এই ব্রেকিং সিস্টেম থাকলে যেকোনো সময় হুট্ করে ব্রেক করলে, ব্যালান্স হারাবেন না, কারণ চাকা লক হবে না, স্কীডও করবে না। 

(৩) আবহাওয়া যেমনই হোক, রাস্তা পিচ্ছিল, বালুময়, কর্দমাক্ত কিংবা উঁচু-নিচু যেমনই হোক, আপনার ব্রেক বা চাকা পিছলে যাবে কিনা তা নিয়ে টেনশন করতে হবে না।

(৪) সারাক্ষন ইঞ্জিন ব্রেক চেপে ধরে রাখা লাগে না, তাই ক্লাচ দীর্ঘদিন ভালো থাকে। এই ব্রেকিং সিস্টেমে ট্রাকশন কন্ট্রোল করে বাইকের গতি নিয়ন্ত্রন করা খুব সহজ।

(৫) রাস্তার মোড় ঘোরার সময় বা বাইক কর্ণারিং করার সময় হার্ড ব্রেক করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ABS ব্রেকিং সিস্টেম থাকলে স্মুথলি বাইক কর্নারিং করতে পারবেন।

 ABS এর অসুবিধা

(১) অনেক সুবিধার মাঝেও কিছু না কিছু অসুবিধা থাকেই। যেহেতু ABS সিস্টেম বাইক চাকা লক হতে দেয় না, তাই বাইক দিয়ে স্টান্ট করা সম্ভব না। স্টান্ট এর চেষ্টা করলে ব্রেকিং সিস্টেমের ক্ষতি হবে।

(২) যেহেতু এই সিস্টেম চাকাকে একেবারে লক হতে দেয় না, তাই যারা অনেক বেশি গতিতে বাইক চালান, ওই অবস্থায় জরুরি মুহূর্তে বাইক থামানোর প্রয়োজন পরলে, কিছুটা সমস্যার মুখে পরবেন।

(৩) এই ব্রেকিং সিস্টেমে অভ্যস্থ হোন। প্রাকটিস ছাড়া হাইওয়ে রাস্তায় উঠবেন না। এটি একটি টেকনিকাল ফীচার, তাই বাইক চালানো অবস্থায় আপনি এই ব্রেকিং সিস্টেম অফ করতে পারবেন না।

(৪) আপনার বাইকে যদি ABS সংযুক্ত না থাকে, তাহলে এই ফীচারটি ইন্সটল করা খুব কঠিন। আপনি সংযুক্ত করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের ইঞ্জিনিয়ারের সহায়তা নিন।

(৫) ABS ইনস্টল করা ব্যায়বহুল হওয়ায় অনেকেই এই দরকারি ফিচারটি সংযুক্ত করতে চায় না।

এবিএস ব্রেকিংয়ের ফিচারে অসুবিধার চেয়ে ABS এর সুবিধাই অনেক বেশি। এটি নিরাপত্তা এবং নিরাপদে পথ চলার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাইকারদের অনেক কনফিডেন্স দেয়। এই ব্রেকিং সিস্টেম হাইড্রোলিক ব্রেকের চাপ কমায়, গতি নিয়ন্ত্রণ করা তো অনেক সহজ। এই ব্রেকিং সিস্টেম দিয়ে আপনি বাইক চালনা আয়ত্ত করলে, অনাকাঙ্খিত অনেক দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে পারবেন।

 বাংলাদেশে বেশ কিছু এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম সংযুক্ত বাইক পাওয়া যায়

বাজাজ পালসার এনএস ১৬০ (Bajaj Pulsar NS160 ABS), বাজাজ পালসার ১৫০ টুইন ডিস্ক (Bajaj Pulsar 150 Twin Disc ABS), হিরো থ্রিলার ১৬০ আর এফআই (Hero Thriller 160R Fi ABS DD and SD), হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০ আর ডিলাক্স (Honda CB Hornet 160R Deluxe ABS), হোন্ডা সিবিআর ১৫০ আর (Honda CBR 150R ABS Motogp Edition), হোন্ডা সিবিআর ১৫০ আর রেপ্সল (Honda CBR 150R Repsol ABS Motogp), কাওয়াসাকি নিনজা ১২৫ (Kawasaki Ninja 125), কাওয়াসাকি জেড ১২৫ (Kawasaki Z125), কেটিএম ১২৫ ডিউক (KTM 125 Duke), লিফান কেপিটি ১৫০ (Lifan KPT 150 ABS), সুজুকি জিক্সার এফআই (New Suzuki Gixxer Fi ABS), সুজুকি জিএসএক্স আর ডুয়াল (Suzuki GSX R Dual ABS), টিভিএস এপাচি আরটিএর (TVS Apache RTR 4V ABS), ইয়ামাহা এফজেডএস (Yamaha FZS V3), ইয়ামাহা এক্সএসআর ১৫৫ (Yamaha XSR 155), ইত্যাদি।

 বাইক সম্পর্কে আরো ধারণা পেতে, বিভিন্ন বাইকের স্পেসিফিকেশন্স জানতে, ভিজিট করুন বাইকস গাইডে। এখানে পাবেন বিভিন্ন বাইক সম্পর্কিত রিভিউ, আপডেট নিউজ, টিপস সহ আরো অনেক প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন।

Similar Advices



7 comments

  1. ভালো লাগলো সুন্দর দিকনির্দেশনার জন্য। ABS নিঃসন্দেহে ভালো প্রযুক্তি।

  2. বাইক সঠিকভাবে রাইট করার টিপস গুলো উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন আশা করি

    1. ভাল লাগল প্রতিবেদনটি পড়ে। আগামীতে আরো নুতন নুতন আপডেট পাব, প্রত‍্যাশা রইল।

  3. ভাল লাগল প্রতিবেদনটি পড়ে। আগামীতে আরো নুতন নুতন আপডেট পাব, প্রত‍্যাশা রইল।

Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy New Bikesbikroy
Bajaj Pulsar ug3 2012 for Sale

Bajaj Pulsar ug3 2012

35,000 km
MEMBER
Tk 55,000
3 hours ago
TVS Apache RTR 2V 2022 model for Sale

TVS Apache RTR 2V 2022 model

7,000 km
verified MEMBER
verified
Tk 145,000
1 day ago
Hero CD ভালো 2003 for Sale

Hero CD ভালো 2003

30,000 km
MEMBER
Tk 48,000
1 day ago
Suzuki Access 2024 for Sale

Suzuki Access 2024

60 km
MEMBER
Tk 30,000
1 day ago
Bajaj V15 2022 for Sale

Bajaj V15 2022

16,000 km
MEMBER
Tk 115,000
2 days ago
Buy Used Bikesbikroy
Yamaha Fazer 2018 for Sale

Yamaha Fazer 2018

28,000 km
MEMBER
Tk 182,000
4 minutes ago
TVS Creon 110 2015 for Sale

TVS Creon 110 2015

110 km
MEMBER
Tk 30,000
9 minutes ago
Jialing motorbike 2010 for Sale

Jialing motorbike 2010

60,000 km
MEMBER
Tk 28,000
11 minutes ago
TVS Metro 2016 for Sale

TVS Metro 2016

5,000 km
MEMBER
Tk 65,000
16 minutes ago
Runner AD 80s . 2021 for Sale

Runner AD 80s . 2021

19,500 km
MEMBER
Tk 56,500
21 minutes ago
+ Post an ad on Bikroy