মোটরবাইক থেকে ভালো মাইলেজ পাওয়ার দুর্দান্ত কয়েকটি টিপস

29 Aug, 2023   
মোটরবাইক থেকে ভালো মাইলেজ পাওয়ার দুর্দান্ত কয়েকটি টিপস

আমাদের দেশে বাইক ক্রেতারা মাইলেজ বুঝে বাইক ক্রয় করতে বেশি পছন্দ করে। কোন বাইক বেশি ভালো মাইলেজ দেয় আবার কোনটা কম দেয় সেটার উপর নির্ভর করেই বেশিরভাগ ক্রেতারা বাইক কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

তবে বাইকের মাইলেজ কি সব সময় ভালো পাওয়া যায়? মোটেই নয়, বাইকের মাইলেজ কখনো বেশ ভালো হয় আবার কখনো কম মনে হবে। আপনি যদি বাইকের মাইলেজ ভালো পেয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাইকের বিশেষ কোনো সমস্যা নেই বললেই চলে। আর যদি মাইলেজ আগের তুলনায় কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনার বাইকে কোন ঝামেলা রয়েছে।

প্রথমত, সার্ভিসিং এর মাধ্যমে খুঁজে বের করুন বাইকের পার্টস সব ঠিক আছে কি না। অনেক সময় বাইকের ইঞ্জিনে জং ধরে গেলে বাইকের পারফরম্যান্স খারাপ হয়ে যায় এবং তা মাইলেজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। আবার ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে বাইকের মাইলেজ কমে যায়।

অন্যদিকে, টায়ারগুলোতে এয়ার প্রেসার কম থাকলে বাইক ভালো পারফর্ম করে না। ফলে মাইলেজও আগের তুলনায় কমে যায়। আবার অতিরিক্ত মাল বহন করলে বাইকে প্রেসার পড়ে। বেশি ওজনের কারণে বাইকের গতি কমে যায় এবং এর সাথে মাইলেজও কমে যায়। আপনার বাইকের সব অটোপার্টস সচল থাকলে মাইলেজ নিজ থেকেই বৃদ্ধি পাবে।

মাঝে মাঝে দেখা যায় বাইকের সব কিছু ভালো অবস্থায় থাকার পরও মাইলেজ ভালো পাচ্ছেন না। সব কিছু ঠিক থাকার পরও এরকম জটিলতা দেখা দিতে পারে যেকোনো সময়। আপনার মোটরসাইকেল যদি প্রত্যাশিত মাইলেজ না দেয়, তাহলে অবশ্যই নিকটস্থ অভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা চেক করিয়ে নিতে হবে।

সাধারণত বাইকের নানান সমস্যার কারণে বাইকের মাইলেজে এর প্রভাব পড়ে। ভালো মাইলেজ পেতে করণীয় কি হতে পারে সে বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো।

মোটরবাইকের ভালো মাইলেজ পাওয়ার ৮ টি উত্তম উপায়

আমাদের মোটরবাইক জেনো ভালো মাইলেজ পায় তা আমরা সকলেই আশা করে থাকি। কিন্তু মাঝেমাঝে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা নিজেদের অজ্ঞতার জন্য ভালো মাইলেজ পাওয়া যায় না।
চলুন নিচের লিখা থেকে জেনে নেই ৮ টি সেরা কিছু উপায় , যা মোটরবাইকের মাইলেজ ভালো পেতে সহযোগিতা করে।

১ . টায়ারগুলোতে সঠিক এয়ার প্রেসার থাকা প্রয়োজন

বাইকের টায়ারে এয়ার প্রেসার যদি বেশি মাত্রায় কমে যায় তাহলে বাইকের চাকাগুলো রাস্তার সাথে বেশি ঘষা লাগে। যার ফলে ফ্রিকশন বেড়ে যায়। এই ফ্রিকশন বেড়ে গেলে টায়ারগুলোতে ওভারহিটিং সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে আপনার বাইকের টায়ারগুলো অচল হয়ে পড়তে পারে এবং বাইকের মাইলেজের উপরও এর খারাপ প্রভাব পড়ে।

অন্যদিকে, বাইকের টায়ারগুলো যেকোনো কারণে জ্যাম হয়ে যেতে পারে। এমনটা হলে চলন্ত অবস্থায় বাইকের ইঞ্জিনে বেশ চাপ পড়বে, এবং যার ফলে বাইকের মাইলেজ কমে যেতে পারে।

অতএব, আপনার বাইকের টায়ারগুলোতে সঠিক এয়ার প্রেসার বজায় আছে কি না তা প্রতি মাসে একবার অন্তত চেক করে নেওয়া ভালো। বাইকের মাইলেজ ভালো পেতে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন, আপনার বাইকের টায়ারগুলোতে সঠিক মাত্রায় এয়ার প্রেসার রয়েছে কি না।

২. থ্রটলে প্রেসার পড়লে মাইলেজ কমে আসে

অনেক ক্ষেত্রেই বাইক চালকেরা মোটরসাইকেলের গতি দ্রুত বাড়াতে থ্রটলে জোরে চাপ দেয়। 

এতে ইঞ্জিনের উপর প্রেশার পড়ে। যার ফলে ইঞ্জিন বেশি শক্তি উৎপন্ন করে এবং বাইকের ফুয়েল তাড়াতাড়ি খরচ হয়ে যায়। এমনটা হলে বাইকের মাইলেজও কমে আসে। সুতরাং,বাইকের মাইলেজ সঠিক রাখতে থ্রটলে অতিরিক্ত প্রেসার দেওয়া যাবে না।

৩. বাইকের মাইলেজ বৃদ্ধি করতে বাইক সার্ভিসিং

বাইক সার্ভিসিং মানে এক কথায় বাইকের যত্ন নেওয়া কে বলা হয়। প্রতি ২৫০০ থেকে ৩০০০ হাজার কিলোমিটার পর পর সার্ভিসিং করালে বাইকের পারফরম্যান্স ঠিক থাকে। সার্ভিসিং মানেই হলো বাইকের প্রতিটা অটোপার্টস কে পরীক্ষা করা, এবং তাদের কার্যকারিতা আগের মতো সচল আছে কি না তা নিশ্চিত করা।

বাইকের কোন অংশে ডিফেক্ট রয়েছে তা সার্ভিসিং এর মাধ্যমে ধরা পড়ে। এমন অনেক চালক রয়েছে যারা দীর্ঘ বছর ধরে একই বাইক চালাচ্ছেন তবে সার্ভিসিং সচারাচর করান না। যার ফলে বাইকের যন্ত্রাংশগুলো আগের মতো সচল থাকে না এবং এর প্রভাবে বাইকের মাইলেজ কমে আসে।

নিয়মিত সার্ভিসিং করালে বাইকের পার্টগুলোর পারফরম্যান্স আগের তুলনায় ভালো হয়। এবং যার ফলে, বাইকের মাইলেজ বৃদ্ধি পায়।

৪. কার্বুরেটরের ভূমিকা

কার্বুরেটর নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে এতে ধুলোবালি আটকে থাকে। কার্বুরেটর একবার জ্যাম হয়ে গেলে একে পুনরায় সচল করতে বাইকের জ্বালানি খরচ বেশি বেড়ে যায়। যার ফলে বাইকের মাইলেজ কমে যায়।

মনে রাখবেন, কোনো অনভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা কার্বুরেটর টিউনিং করানো যাবে না। এতে আপনার কার্বুরেটর নষ্ট হযে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

অবশ্যই, কার্বুরেটর কে পুনরায় সচল করতে একে রি-টিউনিং করানো প্রয়োজন। কার্বুরেটর রি-টিউনিং করানোর পর ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স আগের চেয়ে দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। যার ফলে বাইকের মাইলেজ বেড়ে যায়।

৫. ড্রাইভ চেইন

আপনার বাইকের ড্রাইভ চেইন ইঞ্জিনের মাধ্যমে টায়ারগুলোকে সচলভাবে চলতে সাহায্য করে। ড্রাইভ চেইন যদি হঠাৎ অধিক টাইট কিংবা ঢিলে হয়ে যায় তাহলে টায়ারগুলোতে ইঞ্জিনের শক্তি যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে না। ফলে ভালো মাইলেজ পাওয়া সম্ভব হয় না।

সুতরাং, ভালো মাইলেজ পেতে ড্রাইভ চেইন সঠিকভাবে এডজাস্ট করে নিন। নিয়মিত এটি পরিষ্কার করুন এবং লুব্রিকেন্ট দিয়ে এটি সচল রাখুন।

৬. উন্নতমানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়

ভালো কোয়ালিটির ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকের জন্য দুর্দান্ত মাইলেজ নিশ্চিত করতে পারে। তবে আপনার বাইকের জন্য, যেকোনো গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা উপযোগী নয়। শুধুমাত্র সার্টিফাইড কোম্পানি অনুমোদিত সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকের জন্য ব্যবহারযোগ্য। আপনার বাইকের ইঞ্জিনের ধরণ অনুযায়ী সঠিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে বাইকের মাইলেজ ভালো পাবেন।

আমাদের দেশে ভেজালের ভিড়ে মানসম্পন্ন ইঞ্জিন অয়েল পাওয়া বেশ মুশকিল। তাই, ইঞ্জিন অয়েল কেনার সময় মান যাচাই বাছাই করে তারপর কেনা উচিত। অভিজ্ঞদের কথা বিবেচনা করে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে, অরিজিনাল এবং যথাযথ গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা আবশ্যক। এতে বাইকের মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়।

৭. অতিরিক্ত ওজন বহন থেকে বিরত থাকুন

প্রতিটি বাইকেরই ওজন বহন করার নির্দিষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। সাধারণত একটি বাইক সর্বোচ্চ ১৫০ কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে পারে। অনেকেই মাল পরিবহনের জন্য বাইক ব্যবহার করে থাকে। এই অভ্যাস বাইকের যন্ত্রাংশে যন্ত্রাংশগুলোতে প্রচুর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে বাইক রাইড স্মুথ হয় না এবং মাইলেজ কমে আসে।

অধিক ওজন নিয়ে বাইক রাইড করলে ইঞ্জিনকে বেশি পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করে করতে, যার ফলে মাইলেজ কমে আসে। অতএব, বাইকের মাইলেজ ভালো পেতে বাইকে অতিরিক্ত ওজন বহন করা যাবে না।

৮. অতিরিক্ত রোদ থেকে দূরে রাখতে হবে

দীর্ঘ সময় রোদে বাইক পার্ক করে রাখলে বাইকের ফুয়েল ট্যাংকে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। অকটেন বা পেট্রোল দুটোই দাহ্য পদার্থ। তাই কড়া রোদের প্রভাবে এটি আস্তে আস্তে বাষ্পে পরিণত হয়, তবে স্বল্প পরিমাণে।

এভাবে প্রতিনিয়ত আপনার বাইক বেশিক্ষন রোদে পার্ক করে রাখলে বাইকের ফুয়েল আস্তে আস্তে বাষ্প হতে শুরু করে। যার ফলে আপনার অজান্তেই বাইকের ফুয়েল কমে আসবে ও বাইকের গতি কমে যাবে এবং এর সাথে বাইকের মাইলেজও কমে আসবে।

সুতরাং, রোদে বাইক পার্ক করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার বাইকের মাইলেজ সঠিক রূপে বজায় রাখতে এই পরামর্শ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে

শুধুমাত্র সার্ভিসিং করালেই বাইকের মাইলেজ ভালো পাওয়া যায় না। দুর্দান্ত মাইলেজ পেতে প্রয়োজন বাইকের সঠিক যত্ন। আপনি উপযুক্ত বাইকের জ্বালানি ব্যবহার করছেন কি না সেটার উপর নির্ভর করবে আপনি মাইলেজ কতটা ভালো পাবেন। ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায় না। আপনার ইঞ্জিনের ধরণ বুঝে সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে বাইকের মাইলেজ অপেক্ষাকৃত দ্বিগুন বেড়ে যায়। 

অন্যদিকে, নতুন বাইক কেনার পর বাইকের ব্রেক-ইন পিরিয়ড শুরু হয়। এই সময় বাইকের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করার জন্য কমপক্ষে ১০০০ -১৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাইক চালানো প্রয়োজন হয়। এতে বাইকের অটোপার্টস সচল হয় এবং পরবর্তীতে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়। এছাড়াও, দীর্ঘ সময় সার্ভিসিং না করানোর ফলে বাইকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশে জং ধরে যেতে পারে কিংবা কিছু পার্টস নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে। 

এমনটা হলে, আপনার দুই থেকে তিনবার সার্ভিস করানো প্রয়োজন হতে পারে। সার্ভিসিং কতবার করানো ভালো হবে তা নির্ভর করবে আপনার বাইকের অবস্থা ধরণের উপর। এবং বাইক কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটারও উপর নির্ভর করে সার্ভিসিং এর মাত্রা বাড়ানো হয়, নয়তো বাইকের মাইলেজ বাড়বে না।

সুতরাং, বাইকের যত্ন সঠিক নিয়মে করলে বাইকের মাইলেজ অপেক্ষাকৃত দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। উপরে সকল আলোচিত বিষয়গুলো মেনে চললে আপনার বাইকের মাইলেজ ভালো পাবেন আশা করা যায়।

গ্রাহকদের কিছু জিজ্ঞাসা

১. রোদের অতিরিক্ত তাপমাত্রা বাইকের মাইলেজে কি রকম প্রভাব ফেলে?

দীর্ঘ সময় রোদে বাইক পার্ক করে রাখলে বাইকের ফুয়েল ট্যাংকে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। কড়া রোদের প্রভাবে বাইকের ফুয়েল আস্তে আস্তে বাষ্পে পরিণত হয়, তবে স্বল্প পরিমাণে। যার ফলে সময়ের সাথে সাথে বাইকের ফুয়েল কমে আসবে ও এর সাথে বাইকের মাইলেজও কমে আসবে।

২. বাইকে অতিরিক্ত ওজন বহন করলে বাইকের মাইলেজে কি প্রভাব পড়ে?

অধিক ওজন নিয়ে বাইক চালালে বাইকের যন্ত্রাংশগুলোতে প্রচুর চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে ইঞ্জিন বেশি পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করে এবং বাইকের মাইলেজ কমে আসে।

৩. ইঞ্জিন অয়েল কিভাবে মাইলেজের উপর প্রভাব ফেলে?

ভালো কোয়ালিটির ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকের জন্য দুর্দান্ত মাইলেজ নিশ্চিত করতে পারে। শুধুমাত্র সার্টিফাইড কোম্পানি অনুমোদিত সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকের জন্য ব্যবহারযোগ্য। আপনার ইঞ্জিনের ধরণ অনুযায়ী সঠিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে বাইকের মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়।

৪. থ্রটলে প্রেসার পড়লে বাইকের মাইলেজ কমে আসে কেন?

অনেক ক্ষেত্রেই বাইক চালকেরা মোটরসাইকেলের গতি দ্রুত বাড়াতে থ্রটলে জোরে চাপ দেয়। 

এতে ইঞ্জিনের উপর বেশি প্রেশার পড়ে, যার ফলে ইঞ্জিন বেশি শক্তি উৎপন্ন করে, তাই বাইকের ফুয়েল তাড়াতাড়ি খরচ হয়ে যায়। এমনটা হলে বাইকের মাইলেজও কমে আসে।

আমাদের দেশে বাইক ক্রেতারা মাইলেজ বুঝে বাইক ক্রয় করতে বেশি পছন্দ করে। কোন বাইক বেশি ভালো মাইলেজ দেয় আবার কোনটা কম দেয় সেটার উপর নির্ভর করেই বেশিরভাগ ক্রেতারা বাইক কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

তবে বাইকের মাইলেজ কি সব সময় ভালো পাওয়া যায়? মোটেই নয়, বাইকের মাইলেজ কখনো বেশ ভালো হয় আবার কখনো কম মনে হবে। আপনি যদি বাইকের মাইলেজ ভালো পেয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাইকের বিশেষ কোনো সমস্যা নেই বললেই চলে। আর যদি মাইলেজ আগের তুলনায় কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনার বাইকে কোন ঝামেলা রয়েছে।

প্রথমত, সার্ভিসিং এর মাধ্যমে খুঁজে বের করুন বাইকের পার্টস সব ঠিক আছে কি না। অনেক সময় বাইকের ইঞ্জিনে জং ধরে গেলে বাইকের পারফরম্যান্স খারাপ হয়ে যায় এবং তা মাইলেজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। আবার ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে বাইকের মাইলেজ কমে যায়।

অন্যদিকে, টায়ারগুলোতে এয়ার প্রেসার কম থাকলে বাইক ভালো পারফর্ম করে না। ফলে মাইলেজও আগের তুলনায় কমে যায়। আবার অতিরিক্ত মাল বহন করলে বাইকে প্রেসার পড়ে। বেশি ওজনের কারণে বাইকের গতি কমে যায় এবং এর সাথে মাইলেজও কমে যায়। আপনার বাইকের সব অটোপার্টস সচল থাকলে মাইলেজ নিজ থেকেই বৃদ্ধি পাবে।

মাঝে মাঝে দেখা যায় বাইকের সব কিছু ভালো অবস্থায় থাকার পরও মাইলেজ ভালো পাচ্ছেন না। সব কিছু ঠিক থাকার পরও এরকম জটিলতা দেখা দিতে পারে যেকোনো সময়। আপনার মোটরসাইকেল যদি প্রত্যাশিত মাইলেজ না দেয়, তাহলে অবশ্যই নিকটস্থ অভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা চেক করিয়ে নিতে হবে।

সাধারণত বাইকের নানান সমস্যার কারণে বাইকের মাইলেজে এর প্রভাব পড়ে। ভালো মাইলেজ পেতে করণীয় কি হতে পারে সে বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো।

মোটরবাইকের ভালো মাইলেজ পাওয়ার ৮ টি উত্তম উপায়

আমাদের মোটরবাইক জেনো ভালো মাইলেজ পায় তা আমরা সকলেই আশা করে থাকি। কিন্তু মাঝেমাঝে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা নিজেদের অজ্ঞতার জন্য ভালো মাইলেজ পাওয়া যায় না।
চলুন নিচের লিখা থেকে জেনে নেই ৮ টি সেরা কিছু উপায় , যা মোটরবাইকের মাইলেজ ভালো পেতে সহযোগিতা করে।

১ . টায়ারগুলোতে সঠিক এয়ার প্রেসার থাকা প্রয়োজন

বাইকের টায়ারে এয়ার প্রেসার যদি বেশি মাত্রায় কমে যায় তাহলে বাইকের চাকাগুলো রাস্তার সাথে বেশি ঘষা লাগে। যার ফলে ফ্রিকশন বেড়ে যায়। এই ফ্রিকশন বেড়ে গেলে টায়ারগুলোতে ওভারহিটিং সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে আপনার বাইকের টায়ারগুলো অচল হয়ে পড়তে পারে এবং বাইকের মাইলেজের উপরও এর খারাপ প্রভাব পড়ে।

অন্যদিকে, বাইকের টায়ারগুলো যেকোনো কারণে জ্যাম হয়ে যেতে পারে। এমনটা হলে চলন্ত অবস্থায় বাইকের ইঞ্জিনে বেশ চাপ পড়বে, এবং যার ফলে বাইকের মাইলেজ কমে যেতে পারে।

অতএব, আপনার বাইকের টায়ারগুলোতে সঠিক এয়ার প্রেসার বজায় আছে কি না তা প্রতি মাসে একবার অন্তত চেক করে নেওয়া ভালো। বাইকের মাইলেজ ভালো পেতে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন, আপনার বাইকের টায়ারগুলোতে সঠিক মাত্রায় এয়ার প্রেসার রয়েছে কি না।

২. থ্রটলে প্রেসার পড়লে মাইলেজ কমে আসে

অনেক ক্ষেত্রেই বাইক চালকেরা মোটরসাইকেলের গতি দ্রুত বাড়াতে থ্রটলে জোরে চাপ দেয়। 

এতে ইঞ্জিনের উপর প্রেশার পড়ে। যার ফলে ইঞ্জিন বেশি শক্তি উৎপন্ন করে এবং বাইকের ফুয়েল তাড়াতাড়ি খরচ হয়ে যায়। এমনটা হলে বাইকের মাইলেজও কমে আসে। সুতরাং,বাইকের মাইলেজ সঠিক রাখতে থ্রটলে অতিরিক্ত প্রেসার দেওয়া যাবে না।

৩. বাইকের মাইলেজ বৃদ্ধি করতে বাইক সার্ভিসিং

বাইক সার্ভিসিং মানে এক কথায় বাইকের যত্ন নেওয়া কে বলা হয়। প্রতি ২৫০০ থেকে ৩০০০ হাজার কিলোমিটার পর পর সার্ভিসিং করালে বাইকের পারফরম্যান্স ঠিক থাকে। সার্ভিসিং মানেই হলো বাইকের প্রতিটা অটোপার্টস কে পরীক্ষা করা, এবং তাদের কার্যকারিতা আগের মতো সচল আছে কি না তা নিশ্চিত করা।

বাইকের কোন অংশে ডিফেক্ট রয়েছে তা সার্ভিসিং এর মাধ্যমে ধরা পড়ে। এমন অনেক চালক রয়েছে যারা দীর্ঘ বছর ধরে একই বাইক চালাচ্ছেন তবে সার্ভিসিং সচারাচর করান না। যার ফলে বাইকের যন্ত্রাংশগুলো আগের মতো সচল থাকে না এবং এর প্রভাবে বাইকের মাইলেজ কমে আসে।

নিয়মিত সার্ভিসিং করালে বাইকের পার্টগুলোর পারফরম্যান্স আগের তুলনায় ভালো হয়। এবং যার ফলে, বাইকের মাইলেজ বৃদ্ধি পায়।

৪. কার্বুরেটরের ভূমিকা

কার্বুরেটর নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে এতে ধুলোবালি আটকে থাকে। কার্বুরেটর একবার জ্যাম হয়ে গেলে একে পুনরায় সচল করতে বাইকের জ্বালানি খরচ বেশি বেড়ে যায়। যার ফলে বাইকের মাইলেজ কমে যায়।

মনে রাখবেন, কোনো অনভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা কার্বুরেটর টিউনিং করানো যাবে না। এতে আপনার কার্বুরেটর নষ্ট হযে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

অবশ্যই, কার্বুরেটর কে পুনরায় সচল করতে একে রি-টিউনিং করানো প্রয়োজন। কার্বুরেটর রি-টিউনিং করানোর পর ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স আগের চেয়ে দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। যার ফলে বাইকের মাইলেজ বেড়ে যায়।

৫. ড্রাইভ চেইন

আপনার বাইকের ড্রাইভ চেইন ইঞ্জিনের মাধ্যমে টায়ারগুলোকে সচলভাবে চলতে সাহায্য করে। ড্রাইভ চেইন যদি হঠাৎ অধিক টাইট কিংবা ঢিলে হয়ে যায় তাহলে টায়ারগুলোতে ইঞ্জিনের শক্তি যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে না। ফলে ভালো মাইলেজ পাওয়া সম্ভব হয় না।

সুতরাং, ভালো মাইলেজ পেতে ড্রাইভ চেইন সঠিকভাবে এডজাস্ট করে নিন। নিয়মিত এটি পরিষ্কার করুন এবং লুব্রিকেন্ট দিয়ে এটি সচল রাখুন।

৬. উন্নতমানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়

ভালো কোয়ালিটির ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকের জন্য দুর্দান্ত মাইলেজ নিশ্চিত করতে পারে। তবে আপনার বাইকের জন্য, যেকোনো গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা উপযোগী নয়। শুধুমাত্র সার্টিফাইড কোম্পানি অনুমোদিত সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল আপনার বাইকের জন্য ব্যবহারযোগ্য। আপনার বাইকের ইঞ্জিনের ধরণ অনুযায়ী সঠিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে বাইকের মাইলেজ ভালো পাবেন।

আমাদের দেশে ভেজালের ভিড়ে মানসম্পন্ন ইঞ্জিন অয়েল পাওয়া বেশ মুশকিল। তাই, ইঞ্জিন অয়েল কেনার সময় মান যাচাই বাছাই করে তারপর কেনা উচিত। অভিজ্ঞদের কথা বিবেচনা করে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে, অরিজিনাল এবং যথাযথ গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা আবশ্যক। এতে বাইকের মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়।

৭. অতিরিক্ত ওজন বহন থেকে বিরত থাকুন

প্রতিটি বাইকেরই ওজন বহন করার নির্দিষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। সাধারণত একটি বাইক সর্বোচ্চ ১৫০ কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে পারে। অনেকেই মাল পরিবহনের জন্য বাইক ব্যবহার করে থাকে। এই অভ্যাস বাইকের যন্ত্রাংশে যন্ত্রাংশগুলোতে প্রচুর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে বাইক রাইড স্মুথ হয় না এবং মাইলেজ কমে আসে।

অধিক ওজন নিয়ে বাইক রাইড করলে ইঞ্জিনকে বেশি পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করে করতে, যার ফলে মাইলেজ কমে আসে। অতএব, বাইকের মাইলেজ ভালো পেতে বাইকে অতিরিক্ত ওজন বহন করা যাবে না।

৮. অতিরিক্ত রোদ থেকে দূরে রাখতে হবে

দীর্ঘ সময় রোদে বাইক পার্ক করে রাখলে বাইকের ফুয়েল ট্যাংকে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। অকটেন বা পেট্রোল দুটোই দাহ্য পদার্থ। তাই কড়া রোদের প্রভাবে এটি আস্তে আস্তে বাষ্পে পরিণত হয়, তবে স্বল্প পরিমাণে।

এভাবে প্রতিনিয়ত আপনার বাইক বেশিক্ষন রোদে পার্ক করে রাখলে বাইকের ফুয়েল আস্তে আস্তে বাষ্প হতে শুরু করে। যার ফলে আপনার অজান্তেই বাইকের ফুয়েল কমে আসবে ও বাইকের গতি কমে যাবে এবং এর সাথে বাইকের মাইলেজও কমে আসবে।

সুতরাং, রোদে বাইক পার্ক করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার বাইকের মাইলেজ সঠিক রূপে বজায় রাখতে এই পরামর্শ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে

শুধুমাত্র সার্ভিসিং করালেই বাইকের মাইলেজ ভালো পাওয়া যায় না। দুর্দান্ত মাইলেজ পেতে প্রয়োজন বাইকের সঠিক যত্ন। আপনি উপযুক্ত বাইকের জ্বালানি ব্যবহার করছেন কি না সেটার উপর নির্ভর করবে আপনি মাইলেজ কতটা ভালো পাবেন। ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায় না। আপনার ইঞ্জিনের ধরণ বুঝে সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে বাইকের মাইলেজ অপেক্ষাকৃত দ্বিগুন বেড়ে যায়। 

অন্যদিকে, নতুন বাইক কেনার পর বাইকের ব্রেক-ইন পিরিয়ড শুরু হয়। এই সময় বাইকের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করার জন্য কমপক্ষে ১০০০ -১৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাইক চালানো প্রয়োজন হয়। এতে বাইকের অটোপার্টস সচল হয় এবং পরবর্তীতে মাইলেজ ভালো পাওয়া যায়। এছাড়াও, দীর্ঘ সময় সার্ভিসিং না করানোর ফলে বাইকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশে জং ধরে যেতে পারে কিংবা কিছু পার্টস নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে। 

এমনটা হলে, আপনার দুই থেকে তিনবার সার্ভিস করানো প্রয়োজন হতে পারে। সার্ভিসিং কতবার করানো ভালো হবে তা নির্ভর করবে আপনার বাইকের অবস্থা ধরণের উপর। এবং বাইক কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটারও উপর নির্ভর করে সার্ভিসিং এর মাত্রা বাড়ানো হয়, নয়তো বাইকের মাইলেজ বাড়বে না।

সুতরাং, বাইকের যত্ন সঠিক নিয়মে করলে বাইকের মাইলেজ অপেক্ষাকৃত দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। উপরে সকল আলোচিত বিষয়গুলো মেনে চললে আপনার বাইকের মাইলেজ ভালো পাবেন আশা করা যায়।

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy Engine Oilsbikroy
Castrol Engine Oil Full Synthetic 5w 30 for Sale

Castrol Engine Oil Full Synthetic 5w 30

MEMBER
Tk 3,600
22 hours ago
Honda 4T 10W-30 SL/MA Engine Oil for Sale

Honda 4T 10W-30 SL/MA Engine Oil

MEMBER
Tk 600
4 days ago
APEX Lubricant for Sale

APEX Lubricant

MEMBER
Tk 1,850
1 week ago
Buy Other Auto partsbikroy
Xl 100 Sprocket Set for Sale

Xl 100 Sprocket Set

MEMBER
Tk 1,000
43 minutes ago
হেলমেট for Sale

হেলমেট

MEMBER
Tk 800
1 hour ago
bilmola helmet for Sale

bilmola helmet

MEMBER
Tk 3,000
1 hour ago
3 speed Shifter for Sale

3 speed Shifter

MEMBER
Tk 350
3 hours ago
original Denso horn for Sale

original Denso horn

MEMBER
Tk 1,100
3 hours ago
+ Post an ad on Bikroy