নতুন মোটরবাইক কেনার সময় দেখে নিতে পারেন যে ৫ টি টিপস

29 Mar, 2023   
নতুন মোটরবাইক কেনার সময় দেখে নিতে পারেন যে ৫ টি টিপস

পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এর ঝামেলা এড়ানোর জন্য বর্তমানে অনেকেই ঝুঁকছেন মোটরবাইকের দিকে। আর প্রথমবার মোটরবাইক কেনা এবং তা চালানোর অভিজ্ঞতার মত মসৃণ খুব কম কিছুই আছে। যদি আপনিও সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন নতুন মোটরবাইক কেনার তবে আপনাকে অভিনন্দন! এই সিদ্ধান্তের সাথে সাথে প্রথম যেই প্রশ্নটি মাথায় আসে তা হল, কিভাবে কি শুরু করব?

দেশের বাজারে মোটরবাইক কোম্পানিগুলোর ভিন্নতা এবং সহজলভ্যতার দরুণ বিভ্রান্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও মোটরবাইক কেনার ব্যাপারটি সম্পুর্ণ নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন, বাজেট এবং ভালোলাগার উপরে। আপনার একান্ত ইচ্ছা, কিছুটা ধৈর্য্য, আর ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিসার্চের মাধ্যমে পেয়ে যেতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত দুই-চাকার বাহন।

বাংলাদেশে নতুন বাইক এবং স্কুটার কেনার আগে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয় এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ  সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। মোটরবাইকের সেফটি হতে শুরু করে ইনস্যুরেন্স অথবা কেনার আগে যা যা করণীয় এই সমস্ত কিছু জানতে দেখে নিতে পারেন আমাদের আজকের এই ৫ টি টিপস।

মোটরবাইকের নিরাপত্তা এবং ইনস্যুরেন্স

নতুন মোটরবাইক কেনার পূর্বেই বাইকের নিরাপত্তার ব্যাপারে খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া ভালো। যা মূলত আপনাকে একজন চালকের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে সাহায্য করবে, একইসাথে আপনাকে এবং রাস্তায় আপনার আশেপাশের অন্যান্য চালকদেরও সুরক্ষিত রাখবে।

একজন দক্ষ চালক হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত নিজের দক্ষতাকে শান দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত আমরা যখন বাংলাদেশের মত একটি জনবহুল দেশে বসবাস করছি।

আপনি হয়ত মনে মনে একটি বাজেট ঠিক করে রেখেছেন আপনার পছন্দের বাইকটির জন্যে, কিন্তু নতুন বাইকের দাম এর সাথে পরবর্তীতে আপনাকে কিছু খরচ যোগ করতে হবে। যার মধ্যে অন্যতম হল বাইকের ইনস্যুরেন্স। যদিও আমাদের দেশে কিছু মোটরবাইক কোম্পানি বাইকের মূল দামের সাথেই ইনস্যুরেন্স সুবিধা দিয়ে থাকে, তবুও এই বাবদ কিছু খরচ আপনি মূল বাজেটের সাথে রাখতে পারেন।

আপনার পছন্দের বাইকটি যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় কিনবা কোনো দূর্ঘটনার কবলে পরে তাহলে আপনি ইনস্যুরেন্স এর মাধ্যমে সেটি পুষিয়ে নিতে পারবেন। এছাড়াও আপনার বাইকের রেজিস্ট্রেশন করার জন্যেও ইনস্যুরেন্স করা প্রয়োজন। আবার রাস্তায় বাইক চালানোর সময় রেজিস্ট্রেশন এবং ইনস্যুরেন্স এর প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকলে আপনাকে আইনি ঝামেলাও পোহাতে হতে পারে।

আপনার জন্য সঠিক বাইকটি বেঁছে নিন

মোটরবাইক যেহেতু গাড়ির মত নিয়ন্ত্রণযোগ্য টুলস অথবা সরঞ্জামের সাথে আসে না তাই বাইক কেনার পূর্বে সব দিক থেকে বিবেচনা করেই আগানো উচিত। হয়ত বাইকের শো-রুমে যেই বাইকটি আপনি পছন্দ করলেন, ৫ কিলোমিটার চালানোর পর আপনার মনে হল, এই বাইকটি আপনার জন্য নয়।

আপনার বয়স, উচ্চতা, এবং ওজন অনুযায়ী একটি সঠিক বাইক আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা প্রদান করবে। বাইক কেনার সময় পিঠের অবয়ব এবং সিটের উচ্চতা আপনার সাথে সামঞ্জস্য কিনা দেখে নিন, যেহেতু এই ফিচারগুলো মডিফিকেশন ছাড়া সহজে পরিবর্তনযোগ্য না তাই পরবর্তীতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা বাইকগুলোর মধ্যে বেশকিছু ক্যাটাগরি রয়েছে, যার মধ্যে স্পোর্টস বাইক, ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক, ক্রুজার বাইক উল্লেখ্যযোগ্য।

তরুণদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্পোর্টস ক্যাটাগরির বাইকগুলো। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কিছুটা উঁচুতে থাকার কারণে এই বাইকগুলোর সিটের উচ্চতাও কিছুটা বেশি। যেন গতি আর তারুণ্যের এক অনবদ্য মিশেলের প্রতিচ্ছবি। তবে স্পোর্টস বাইক গুলোর মাধ্যমে দীর্ঘ ভ্রমণ বেশ কষ্টসাধ্য। আবার নগর-জীবনের জ্যামের রাস্তাতেও এই ক্যাটাগরির বাইকগুলো নিয়ন্ত্রণ করা একজন নতুন রাইডারের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে। জনপ্রিয়তার পাশাপাশি স্পোর্টস বাইকগুলোর দাম কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।

নেকেড স্পোর্টস বা স্টান্ডার্ড বাইক গুলো সকল প্রকার রাইডারদের কথা বিবেচনায় রেখে বানানো হয়। ১১০-১৬৫ সিসি রেঞ্জের এই বাইকগুলো বিভিন্ন সুবিধাদি নিয়ে বাজারে আসে। যার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গেল/মাল্টি ডিস্ক ব্রেক, বিএস৬, এবিএস, সিবিএস ইত্যাদি।

ক্রুজার বাইক গুলোও বেশ জনপ্রিয় তবে নতুন রাইডারদের জন্য ক্রুজার বাইক দিয়ে শুরু করা কিছুটা কঠিন হতে পারে। এই ধরণের বাইকের ইঞ্জিন কিছুটা বড় আকৃতির হয় এবং সিটের উচ্চতা তুলনামূলক কম হয়। লম্বা হাতল বিশিষ্ট এই বাইকগুলি চালাতে আরামের জন্যেও সিটের উচ্চতা কম রাখা হয়।

নিজ উদ্যোগে যাচাই-বাছাই করুন

প্রথমবার বাইক কেনার আগে আপনাকে প্রচুর রিসার্চ করে নিতে হবে। যেই ব্র্যান্ডের বাইক কিনতে চাচ্ছেন তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। আপনার কাছাকাছি কোথায় সার্ভিসে সেন্টার আছে, সর্বমোট কেমন খরচ পরবে জেনে নিন। এছাড়াও বাইকের যন্ত্রাংশ কোথায় পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কেও খোঁজ নিন।

বাংলাদেশে মোটরবাইকের সিসি লিমিট ১৬৫, সেই অনুযায়ী নতুন রাইডারদের জন্য ১০০-১৬৫ সিসি রেঞ্জের বাইকগুলো বেশ ভালো। আধুনিক ডিজাইনে তৈরি এসব বাইক সহজেই নিয়ন্ত্রনযোগ্য এবং এই বাইকগুলো থেকে ভালো মাইলেজও পাওয়া যায়।

বাইক কেনার সময় বাজেট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরী। আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করছে আপনি কি ধরণের বা কোন ক্যাটাগরির বাইক কিনতে পারবেন। বর্তমানে বেশ কিছু বাইক কোম্পানি তাদের বাইক কেনার ক্ষেত্রে ইএমআই এবং ব্যংক লোন সুবিধা চালু করেছে। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে, ইএমআই অথবা ব্যংক লোনের মাধ্যমে বাইক কেনা হলে বাইকের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খরচ কিছুটা বেশি পরবে।

অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকে কিনুন আপনার পছন্দের মোটরবাইকটি

আপনি কোন বাইকটি কিনতে চান এবং আপনার বাজেট নির্ধারণ করার পর চলে আসুন সেই বাইকের অনুমোদিত ডিলারের শো-রুমে অথবা ঘুরে আসতে পারেন Bikroy.com- এ ডিলারের অনলাইন শপ থেকে। যার মাধ্যমে আপনি নিজের পছন্দের পাশাপাশি আরও বেশকিছু বাইক যাচাই করার সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে জনপ্রিয় মোটরবাইক ব্র্যান্ড গুলোর ব্যাপারে কিছুটা জানাশোনা আপনাকে বাইক পছন্দ করার ব্যাপারে বেশ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

পরিবেশকের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করুন। যেহেতু তারা দীর্ঘদিন যাবত বাইক বিক্রয় করছে, তারা আপনার সাথে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, তাদের উদ্দেশ্যই আপনাকে বাইক বিক্রয় করা। সুতরাং তাদের দ্বারা প্ররোচিত না হওয়াই ভালো। হ্যাঁ, আপনি একটি নির্দিষ্ট মডেলের বাইক কেনার ব্যাপারে ভাববার পর অন্য মডেলের বাইক কিনতেই পারেন তবে নতুন বাইকটি পূর্বের বাইকের তুলনায় সবদিক থেকে বেশি মানানসই তা নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

Hero Hunk
ন্যাকেড স্পোর্টস বাইকগুলো বাংলাদেশের বাজারে বেশ জনপ্রিয়

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম

নতুন বাইক কেনার পরই রাস্তায় বাইক চালাতে নেমে পরবেন না। একটু অসাবধানতা আপনার এবং আপনার বাইক উভয়ের জন্যেই কাল হয়ে দাড়াতে পারে। নিজের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কিনে ফেলুন প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি। একটু খরচ হলেও একটি ফুলফেস হেলমেট কিনুন এতে করে বাইক চালানোর সময় আপনার মাথা এবং মুখ সুরক্ষিত থাকবে। বাজারে ১০০০-১০০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন এই জাতীয় হেলমেট। হেলমেটের ভেতর থেকে যাতে রাস্তায় সবকিছু ভালোভাবে দেখা যায় কেনার সময় সেদিকেও খেয়াল রাখুন।

মাথা এবং মুখের সাথে নিজের শরীরকে সুরক্ষিত রাখার জন্যেও আপনাকে কিনে ফেলতে হবে কিছু সেফটি গিয়ার। বাইকে চড়ার সময় চেষ্টা করুন ফুল হাতা প্যান্ট এবং রাইডিং জ্যাকেট পরিধান করতে। যদি দূর্ঘটনাবশত আপনি রাস্তায় পরে যান তাহলে এই সেফটি গিয়ার গুলো আপনাকে কিছুটা হলেও সুরক্ষা প্রদান করবে।

মোটরবাইক চালানোর জন্য সবচেয়ে মানানসই হল বুট।  ভালো একজোড়া বুট এক্ষেত্রে বেশ মানানসই হতে পারে। এছাড়াও হাতের জন্য লেদারের গ্লাভস ব্যবহার করার জন্যেও পরামর্শ রইল। সবমিলিয়ে বাইক চালানোর জন্য আপনার জন্য যা যা প্রয়োজনীয়ঃ

  • একটি ফুলফেস হেলমেট
  • রাইডিং জ্যাকেট
  • রাইডিং বুট
  • রাইডিং হ্যান্ড গ্লাভস
  • রাইডিং প্যান্ট
  • রাইডিং গগলস বা চশমা

এই পুরো সেটটি আপনি ১০-১৫০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। তবে ঘরে বসেই অনলাইনে নিতে চাইলে আপনি ঘুরে আসতে পারেন Bikroy.com থেকে।

শেষকথা

সবকিছু বিবেচনা করে কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের মোটরবাইকটি। কেনার পরপরই বাইক টিউনিং এর একটা ব্যাপার থাকে, বেশিরভাগ সময়ে শো-রুম থেকেই নতুন বাইকটি টিউন-আপ করে দেওয়া হয় চালানোর জন্য। তবে আপনার পরিচিত কোনো মেকানিক থাকলে তার কাছেও নিয়ে যেতে পারেন আপনার নতুন বাইকটি।

নতুন বাইকটি যদি বাসায় চালিয়ে নিয়ে আসতে সমস্যা বোধ করেন তাহলে নির্দ্বিধায় শো-রুমকে অবহিত করুন। তাদের পক্ষ থেকেই আপনার বাইকটি বাসায় পৌছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। একজন নতুন রাইডার হিসেবে কেও-ই চায়না বাসায় আনার আগেই তাদের বাইকের কোনো ক্ষতি হোক, তাই এতে লজ্জার কিছু নেই।

আজ এ পর্যন্তই। আশা করি নতুন মোটরবাইক কেনার সময় এই ৫ টি টিপস আপনাকে সঠিক বাইকটি বেছে নিতে সাহায্য করবে।

হ্যাপী রাইডিং!

পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এর ঝামেলা এড়ানোর জন্য বর্তমানে অনেকেই ঝুঁকছেন মোটরবাইকের দিকে। আর প্রথমবার মোটরবাইক কেনা এবং তা চালানোর অভিজ্ঞতার মত মসৃণ খুব কম কিছুই আছে। যদি আপনিও সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন নতুন মোটরবাইক কেনার তবে আপনাকে অভিনন্দন! এই সিদ্ধান্তের সাথে সাথে প্রথম যেই প্রশ্নটি মাথায় আসে তা হল, কিভাবে কি শুরু করব?

দেশের বাজারে মোটরবাইক কোম্পানিগুলোর ভিন্নতা এবং সহজলভ্যতার দরুণ বিভ্রান্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও মোটরবাইক কেনার ব্যাপারটি সম্পুর্ণ নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন, বাজেট এবং ভালোলাগার উপরে। আপনার একান্ত ইচ্ছা, কিছুটা ধৈর্য্য, আর ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিসার্চের মাধ্যমে পেয়ে যেতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত দুই-চাকার বাহন।

বাংলাদেশে নতুন বাইক এবং স্কুটার কেনার আগে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয় এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ  সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। মোটরবাইকের সেফটি হতে শুরু করে ইনস্যুরেন্স অথবা কেনার আগে যা যা করণীয় এই সমস্ত কিছু জানতে দেখে নিতে পারেন আমাদের আজকের এই ৫ টি টিপস।

মোটরবাইকের নিরাপত্তা এবং ইনস্যুরেন্স

নতুন মোটরবাইক কেনার পূর্বেই বাইকের নিরাপত্তার ব্যাপারে খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া ভালো। যা মূলত আপনাকে একজন চালকের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে সাহায্য করবে, একইসাথে আপনাকে এবং রাস্তায় আপনার আশেপাশের অন্যান্য চালকদেরও সুরক্ষিত রাখবে।

একজন দক্ষ চালক হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত নিজের দক্ষতাকে শান দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত আমরা যখন বাংলাদেশের মত একটি জনবহুল দেশে বসবাস করছি।

আপনি হয়ত মনে মনে একটি বাজেট ঠিক করে রেখেছেন আপনার পছন্দের বাইকটির জন্যে, কিন্তু নতুন বাইকের দাম এর সাথে পরবর্তীতে আপনাকে কিছু খরচ যোগ করতে হবে। যার মধ্যে অন্যতম হল বাইকের ইনস্যুরেন্স। যদিও আমাদের দেশে কিছু মোটরবাইক কোম্পানি বাইকের মূল দামের সাথেই ইনস্যুরেন্স সুবিধা দিয়ে থাকে, তবুও এই বাবদ কিছু খরচ আপনি মূল বাজেটের সাথে রাখতে পারেন।

আপনার পছন্দের বাইকটি যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় কিনবা কোনো দূর্ঘটনার কবলে পরে তাহলে আপনি ইনস্যুরেন্স এর মাধ্যমে সেটি পুষিয়ে নিতে পারবেন। এছাড়াও আপনার বাইকের রেজিস্ট্রেশন করার জন্যেও ইনস্যুরেন্স করা প্রয়োজন। আবার রাস্তায় বাইক চালানোর সময় রেজিস্ট্রেশন এবং ইনস্যুরেন্স এর প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকলে আপনাকে আইনি ঝামেলাও পোহাতে হতে পারে।

আপনার জন্য সঠিক বাইকটি বেঁছে নিন

মোটরবাইক যেহেতু গাড়ির মত নিয়ন্ত্রণযোগ্য টুলস অথবা সরঞ্জামের সাথে আসে না তাই বাইক কেনার পূর্বে সব দিক থেকে বিবেচনা করেই আগানো উচিত। হয়ত বাইকের শো-রুমে যেই বাইকটি আপনি পছন্দ করলেন, ৫ কিলোমিটার চালানোর পর আপনার মনে হল, এই বাইকটি আপনার জন্য নয়।

আপনার বয়স, উচ্চতা, এবং ওজন অনুযায়ী একটি সঠিক বাইক আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা প্রদান করবে। বাইক কেনার সময় পিঠের অবয়ব এবং সিটের উচ্চতা আপনার সাথে সামঞ্জস্য কিনা দেখে নিন, যেহেতু এই ফিচারগুলো মডিফিকেশন ছাড়া সহজে পরিবর্তনযোগ্য না তাই পরবর্তীতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা বাইকগুলোর মধ্যে বেশকিছু ক্যাটাগরি রয়েছে, যার মধ্যে স্পোর্টস বাইক, ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক, ক্রুজার বাইক উল্লেখ্যযোগ্য।

তরুণদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্পোর্টস ক্যাটাগরির বাইকগুলো। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কিছুটা উঁচুতে থাকার কারণে এই বাইকগুলোর সিটের উচ্চতাও কিছুটা বেশি। যেন গতি আর তারুণ্যের এক অনবদ্য মিশেলের প্রতিচ্ছবি। তবে স্পোর্টস বাইক গুলোর মাধ্যমে দীর্ঘ ভ্রমণ বেশ কষ্টসাধ্য। আবার নগর-জীবনের জ্যামের রাস্তাতেও এই ক্যাটাগরির বাইকগুলো নিয়ন্ত্রণ করা একজন নতুন রাইডারের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে। জনপ্রিয়তার পাশাপাশি স্পোর্টস বাইকগুলোর দাম কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।

নেকেড স্পোর্টস বা স্টান্ডার্ড বাইক গুলো সকল প্রকার রাইডারদের কথা বিবেচনায় রেখে বানানো হয়। ১১০-১৬৫ সিসি রেঞ্জের এই বাইকগুলো বিভিন্ন সুবিধাদি নিয়ে বাজারে আসে। যার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গেল/মাল্টি ডিস্ক ব্রেক, বিএস৬, এবিএস, সিবিএস ইত্যাদি।

ক্রুজার বাইক গুলোও বেশ জনপ্রিয় তবে নতুন রাইডারদের জন্য ক্রুজার বাইক দিয়ে শুরু করা কিছুটা কঠিন হতে পারে। এই ধরণের বাইকের ইঞ্জিন কিছুটা বড় আকৃতির হয় এবং সিটের উচ্চতা তুলনামূলক কম হয়। লম্বা হাতল বিশিষ্ট এই বাইকগুলি চালাতে আরামের জন্যেও সিটের উচ্চতা কম রাখা হয়।

নিজ উদ্যোগে যাচাই-বাছাই করুন

প্রথমবার বাইক কেনার আগে আপনাকে প্রচুর রিসার্চ করে নিতে হবে। যেই ব্র্যান্ডের বাইক কিনতে চাচ্ছেন তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। আপনার কাছাকাছি কোথায় সার্ভিসে সেন্টার আছে, সর্বমোট কেমন খরচ পরবে জেনে নিন। এছাড়াও বাইকের যন্ত্রাংশ কোথায় পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কেও খোঁজ নিন।

বাংলাদেশে মোটরবাইকের সিসি লিমিট ১৬৫, সেই অনুযায়ী নতুন রাইডারদের জন্য ১০০-১৬৫ সিসি রেঞ্জের বাইকগুলো বেশ ভালো। আধুনিক ডিজাইনে তৈরি এসব বাইক সহজেই নিয়ন্ত্রনযোগ্য এবং এই বাইকগুলো থেকে ভালো মাইলেজও পাওয়া যায়।

বাইক কেনার সময় বাজেট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরী। আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করছে আপনি কি ধরণের বা কোন ক্যাটাগরির বাইক কিনতে পারবেন। বর্তমানে বেশ কিছু বাইক কোম্পানি তাদের বাইক কেনার ক্ষেত্রে ইএমআই এবং ব্যংক লোন সুবিধা চালু করেছে। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে, ইএমআই অথবা ব্যংক লোনের মাধ্যমে বাইক কেনা হলে বাইকের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খরচ কিছুটা বেশি পরবে।

অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকে কিনুন আপনার পছন্দের মোটরবাইকটি

আপনি কোন বাইকটি কিনতে চান এবং আপনার বাজেট নির্ধারণ করার পর চলে আসুন সেই বাইকের অনুমোদিত ডিলারের শো-রুমে অথবা ঘুরে আসতে পারেন Bikroy.com- এ ডিলারের অনলাইন শপ থেকে। যার মাধ্যমে আপনি নিজের পছন্দের পাশাপাশি আরও বেশকিছু বাইক যাচাই করার সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে জনপ্রিয় মোটরবাইক ব্র্যান্ড গুলোর ব্যাপারে কিছুটা জানাশোনা আপনাকে বাইক পছন্দ করার ব্যাপারে বেশ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

পরিবেশকের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করুন। যেহেতু তারা দীর্ঘদিন যাবত বাইক বিক্রয় করছে, তারা আপনার সাথে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, তাদের উদ্দেশ্যই আপনাকে বাইক বিক্রয় করা। সুতরাং তাদের দ্বারা প্ররোচিত না হওয়াই ভালো। হ্যাঁ, আপনি একটি নির্দিষ্ট মডেলের বাইক কেনার ব্যাপারে ভাববার পর অন্য মডেলের বাইক কিনতেই পারেন তবে নতুন বাইকটি পূর্বের বাইকের তুলনায় সবদিক থেকে বেশি মানানসই তা নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

Hero Hunk
ন্যাকেড স্পোর্টস বাইকগুলো বাংলাদেশের বাজারে বেশ জনপ্রিয়

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম

নতুন বাইক কেনার পরই রাস্তায় বাইক চালাতে নেমে পরবেন না। একটু অসাবধানতা আপনার এবং আপনার বাইক উভয়ের জন্যেই কাল হয়ে দাড়াতে পারে। নিজের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কিনে ফেলুন প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি। একটু খরচ হলেও একটি ফুলফেস হেলমেট কিনুন এতে করে বাইক চালানোর সময় আপনার মাথা এবং মুখ সুরক্ষিত থাকবে। বাজারে ১০০০-১০০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন এই জাতীয় হেলমেট। হেলমেটের ভেতর থেকে যাতে রাস্তায় সবকিছু ভালোভাবে দেখা যায় কেনার সময় সেদিকেও খেয়াল রাখুন।

মাথা এবং মুখের সাথে নিজের শরীরকে সুরক্ষিত রাখার জন্যেও আপনাকে কিনে ফেলতে হবে কিছু সেফটি গিয়ার। বাইকে চড়ার সময় চেষ্টা করুন ফুল হাতা প্যান্ট এবং রাইডিং জ্যাকেট পরিধান করতে। যদি দূর্ঘটনাবশত আপনি রাস্তায় পরে যান তাহলে এই সেফটি গিয়ার গুলো আপনাকে কিছুটা হলেও সুরক্ষা প্রদান করবে।

মোটরবাইক চালানোর জন্য সবচেয়ে মানানসই হল বুট।  ভালো একজোড়া বুট এক্ষেত্রে বেশ মানানসই হতে পারে। এছাড়াও হাতের জন্য লেদারের গ্লাভস ব্যবহার করার জন্যেও পরামর্শ রইল। সবমিলিয়ে বাইক চালানোর জন্য আপনার জন্য যা যা প্রয়োজনীয়ঃ

  • একটি ফুলফেস হেলমেট
  • রাইডিং জ্যাকেট
  • রাইডিং বুট
  • রাইডিং হ্যান্ড গ্লাভস
  • রাইডিং প্যান্ট
  • রাইডিং গগলস বা চশমা

এই পুরো সেটটি আপনি ১০-১৫০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। তবে ঘরে বসেই অনলাইনে নিতে চাইলে আপনি ঘুরে আসতে পারেন Bikroy.com থেকে।

শেষকথা

সবকিছু বিবেচনা করে কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের মোটরবাইকটি। কেনার পরপরই বাইক টিউনিং এর একটা ব্যাপার থাকে, বেশিরভাগ সময়ে শো-রুম থেকেই নতুন বাইকটি টিউন-আপ করে দেওয়া হয় চালানোর জন্য। তবে আপনার পরিচিত কোনো মেকানিক থাকলে তার কাছেও নিয়ে যেতে পারেন আপনার নতুন বাইকটি।

নতুন বাইকটি যদি বাসায় চালিয়ে নিয়ে আসতে সমস্যা বোধ করেন তাহলে নির্দ্বিধায় শো-রুমকে অবহিত করুন। তাদের পক্ষ থেকেই আপনার বাইকটি বাসায় পৌছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। একজন নতুন রাইডার হিসেবে কেও-ই চায়না বাসায় আনার আগেই তাদের বাইকের কোনো ক্ষতি হোক, তাই এতে লজ্জার কিছু নেই।

আজ এ পর্যন্তই। আশা করি নতুন মোটরবাইক কেনার সময় এই ৫ টি টিপস আপনাকে সঠিক বাইকটি বেছে নিতে সাহায্য করবে।

হ্যাপী রাইডিং!

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy New Bikesbikroy
Yamaha FZS 2022 for Sale

Yamaha FZS 2022

17,900 km
verified MEMBER
Tk 185,000
55 minutes ago
Honda X Blade DD Abs 2023 model for Sale

Honda X Blade DD Abs 2023 model

7,000 km
verified MEMBER
verified
Tk 170,000
10 hours ago
জংশন 2001 for Sale

জংশন 2001

60 km
MEMBER
Tk 30,500
17 hours ago
Honda CG125 Pakistani cg 125 2009 for Sale

Honda CG125 Pakistani cg 125 2009

12,000 km
MEMBER
Tk 55,000
23 hours ago
Buy Used Bikesbikroy
Bajaj Discover 110 Fress 2020 for Sale

Bajaj Discover 110 Fress 2020

21,000 km
verified MEMBER
verified
Tk 92,000
23 hours ago
Honda Livo On Test & File Ready 2021 for Sale

Honda Livo On Test & File Ready 2021

14,214 km
verified MEMBER
verified
Tk 85,000
8 minutes ago
Bajaj Discover 125 . 2018 for Sale

Bajaj Discover 125 . 2018

18,000 km
MEMBER
Tk 99,000
1 week ago
TVS Apache RTR 4v sd 2020 for Sale

TVS Apache RTR 4v sd 2020

20,360 km
verified MEMBER
verified
Tk 125,000
18 minutes ago
TVS Apache RTR 4v DD Super Fresh 2019 for Sale

TVS Apache RTR 4v DD Super Fresh 2019

18,745 km
verified MEMBER
verified
Tk 132,000
18 minutes ago
+ Post an ad on Bikroy