নতুন মোটরসাইকেল কেনার পূর্বে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত

29 Mar, 2023   
নতুন মোটরসাইকেল কেনার পূর্বে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত

কর্মব্যস্ত শহরের যানজট থেকে মুক্তি পেতে চলাচলের জন্য অনেকেরই প্রথম পছন্দ মোটরবাইক। এতে মূল্যবান সময় বাঁচে আর একই সাথে অর্থেরও সাশ্রয় হয়। ঢাকা শহরে যদিও পাবলিক বাসে ভ্রমণ আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী, তবুও সময় বাঁচাতে অনেকেই ঝুঁকছেন মোটরবাইকের প্রতি। আপনার সাধ এবং সাধ্য অনুযায়ী কেমন বাইক কিনতে চান সেটা ভাবছেন? আপনার কাজকে সহজ করতে আমরা হাজির হয়েছি এই লেখা নিয়ে। আশা করছি আমাদের সাজানো তথ্যের ভিত্তিতে আপনি সহজেই কিনে নিতে পারবেন আপনার পছন্দের বাইকটি। 

আপনার প্রয়োজন এবং বাজেট অনুযায়ী বাজারে রয়েছে বিভিন্ন রকমের মোটরবাইক। বর্তমানে দেশীয় বাজারে ৫০,০০০ থেকে শুরু করে ৫,০০,০০০ টাকার মধ্যে নানান ব্র্যান্ডের বাইক আপনি কিনতে পারবেন। দুই চাকার এই যানের প্রতি মানুষের আগ্রহ বরাবরই খুব বেশি। যেকোনো ধরণের রাস্তায় চলাচল, গতি, এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের জন্য আর্থিক অবস্থা ভেদে প্রায় সকলেরই পছন্দের শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। পছন্দের নতুন মোটরসাইকেল খুঁজে পেতে ঘুরে আসতে পারেন Bikroy.com এর বিশাল বাইক সমাহার থেকে। 

বাংলাদেশের বাজারে বাইকের ধরণ 

বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় চার ধরণের বাইক রয়েছে। এগুলো হল ক্রুজার বাইক, কমিউটার বাইক, স্পোর্টস বাইক, এবং প্রিমিয়াম বাইক। এছাড়াও আরও কিছু ক্যাটাগরির বাইক আপনি বাজারে পেয়ে যাবেন। যেমন মাউন্টেন হাইকিং বাইক অথবা ডার্ট রেসিং বাইকও আজকাল কোথাও কোথাও চোখে পড়ে। বাংলাদেশে যেই বাইক কোম্পানিগুলো জনপ্রিয় তারা তাদের নিজস্ব সংগ্রহে রেখেছে প্রায় সকল সেগমেন্টের বাইক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাইকগুলো নিম্নরূপঃ 

ক্রুজার বাইক 

আপনি হয়ত সিনেমার পর্দায় ক্রুজার বাইক চালাতে দেখেছেন আপনার পছন্দের কোন নায়ক কিংবা ভিলেনকে। বিশাল ফ্রেম আর ভারী এই বাইকগুলো মূলত ক্রুজার বাইক হিসেবে পরিচিত। বাইকগুলো দেখতে চওড়া হলেও, এখানে বসে আপনি পেতে পারেন আরামদায়ক যাত্রার অনুভূতি। তবে ঢাকা শহরে জ্যামের কারণে এই বাইক চালাতে আপনার বেশ বেগ পেতে হবে। তাই দূরে ভ্রমণ কিংবা অপেক্ষাকৃত ফাঁকা রাস্তাই ক্রুজার বাইকের জন্য পারফেক্ট। দেশের রাস্তায় সুজুকি মোটরবাইক কোম্পানির ইন্ট্রুডার, রিগাল র‍্যাপ্টর, ছাড়াও ইউ এম কমান্ডার বাইকটি হামেশাই আপনার চোখে পরতে পারে।

কমিউটার বাইক 

নিত্যদিনের যাতায়াতের সুবিধার্থে তেল সাশ্রয়ী এবং একইসাথে আরামদায়ক বাইকগুলোই মূলত কমিউটার বাইক হিসেবে পরিচিত। জনপ্রিয় প্রতিটি কোম্পানিরই এই সেগমেন্ট এ বাইক রয়েছে। মধ্যম থেকে উচ্চ পর্যায়ের দামের মধ্যেই বেছে নিতে পারবেন কমিউটার বাইক। সাধারণত এই সিরিজের বাইকগুলো ৮০ থেকে ১২৫ সিসির মধ্যেই হয়ে থাকে। লক্ষ করলে দেখতে পাবেন বড় শহরগুলিতে রাস্তায় চলাচলকারী বেশিরিভাগই কমিউটার বাইক। ৭০ হাজার থেকে ১.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে খুঁজে নিতে পারেন আপনার পছন্দসই কমিউটার মোটরসাইকেল। 

স্পোর্টস বাইক 

আপনি যদি মোটরবাইক রেস পছন্দ করে থাকেন এবং নিয়মিত টিভিতে রেসিং অনুষ্ঠানগুলো উপভোগ করেন তাহলে এই ক্যাটাগরির বাইকগুলো আপনার কাছে নতুন নয়। রেসিং বাইকগুলো যেই রকম দেখতে হয়, ঠিক সেরকম যেই বাইকগুলো আমাদের দেশের রাস্তায় চলে- সেগুলোকেই মূলত রেসিং বাইক বলা হয়ে থাকে। 

আমাদের দেশে সিসি লিমিট থাকার কারণে যদিও আমরা উচ্চ গতির রেসিং বাইকের দেখা পাই না তবে বেশ কিছু শক্তিশালী এবং আরামদায়ক স্পোর্টস বাইক এর মডেল রাস্তায় চোখে পরে। হোন্ডা মোটরবাইক কোম্পানির সিবিআর কিংবা ইয়ামাহা মোটরবাইক কোম্পানির আর-১৫ সিরিজ এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য। এছাড়াও চাইনিজ কোম্পানিগুলো স্পোর্টস বাইক সেগমেন্টে নিয়মিত তাদের ব্র্যান্ডগুলোকে আরো জনপ্রিয় ও সহজলভ্য করে তুলছে।   

অন্যান্য বাইক ক্যাটাগরির তুলনায় স্পোর্টস ক্যাটাগরির বাইকগুলোর দাম কিছুটা বেশি। রেসিং বাইকগুলোর দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিয়ে তারপর শো-রুমে যেতে পারেন, এতে করে আপনার বাজেট এবং চাহিদার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে কিনতে সুবিধা হবে। 

প্রিমিয়াম বাইক 

আধুনিকতা আর গতির মিশেলে প্রিমিয়াম বাইক ক্যাটাগরিটি আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এই সেগমেন্ট এর বেশিরভাগ বাইক ১৬০ সিসি ক্যাপাসিটির হয়ে থাকে। বর্তমানে এই সেগমেন্টের জনপ্রিয় মডেল গুলো হচ্ছে সুজুকি জিক্সার এস এফ, ইয়মাহা এফ জেড, পালসার টুইন ডিস্ক, সুজুকি জি এস এক্সার, এছাড়াও আরও কিছু মডেল রয়েছে বাজারে।  

স্কুটার বা স্কুটি 

স্কুটার অথবা স্কুটি আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। যারা বারবার বাইকের ক্লাচ পরিবর্তনকে ঝামেলা মনে করেন তাদের জন্য স্কুটি বেশ কাজের। বর্তমানে বাজারে হিরো, মাহিন্দ্রা, বাজাজ, টিভিএস সহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের স্কুটি পাওয়া যাবে। পুরুষ এবং মহিলাদের নিত্যদিনের ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে কোম্পানিগুলো নকশা করছে বিভিন্ন স্কুটার। 

চাইনিজ মোটরসাইকেল 

আমাদের অনেকের একটি ধারণা রয়েছে যে চাইনিজ বাইক ব্র্যান্ডগুলো বেশিদিন ভালো সার্ভিস দেয়না। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ অমূলক। দেশের বাজারে লিফান কিংবা কিওয়ে এর মত ব্র্যান্ডগুলো ক্রমাগত ভালো করে চলেছে। যার একটি স্পষ্ট ধারণা ব্যবহারকারীদের রিভিউ এবং মোটরসাইকেল ভিত্তিক দেশী ওয়েবসাইটগুলোর তথ্য থেকে পাওয়া যায়। এছাড়াও ইয়ামাহা কিনবা হোন্ডা মোটরবাইক গুলির তুলনায় কম দাম, অথচ কোয়ালিটি পার্ফরম্যান্স, এবং আকর্ষণীয় ডিজাইন এর কারণেও আমাদের দেশের তরুণেরা ঝুঁকছে চাইনিজ ব্র্যান্ড গুলির প্রতি। 

বাইক কেনার সময় মাথায় রাখুন ৩টি বিষয় 

নতুন মোটরবাইক কেনার সময় এই ৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি নজর দিলে আপনি খুব সহজেই  আপনার জন্য সঠিক বাইকটি নির্বাচন করতে পারবেনঃ

  • চেষ্টা করুন অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকে আপনার শখের মোটরসাইকেলটি কিনতে। আপনাকে যে ইউনিটটি দেওয়া হচ্ছে সেটি টেস্ট ড্রাইভ করে দেখে নিন, সমস্যা থাকলে সাথে সাথে শো-রুমকে অবহিত করুন। 
  • বাইকের কাগজ-পত্র (ডিজিটাল নাম্বার) করার জন্য যে চালান এর দরকার হয় সেটি বুঝে নিন। বেশিরভাগ কোম্পানি ফ্রি-তেই এই চালান দিয়ে থাকে। তবে এর জন্য টাকার প্রয়োজন হলেও তা ১,০০০-২০০০ এর বেশি হওয়ার কথা না। তবে আপনি নিজে থেকে এই নাম্বারটি করে নিতে চাইলে আপনাকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে।  
  • বাইক কেনার পর পরই সার্ভিসিং নাম্বার এবং টোকেন বুঝে নিন। এই দুটি কাগজ ছাড়া আপনি অনুমোদিত ফ্রি সার্ভিসিং উপভোগ করতে পারবেন না। 

নতুন মোটরবাইকের রক্ষণাবেক্ষণ 

নতুন বাইক কেনার পর মাথায় রাখতে হবে এর সাথে জড়িত সকল প্রকার নিরাপত্তা, কাগজ-পত্র এবং বাইক রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়সমূহ। রাইড করার সময় রাইডার এবং পিলিয়ন দুজনার জন্যেই হেলমেট পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। এটি আপনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আপনাকে আইনি ঝামেলা থেকেও নিরাপত্তা দেবে। এছাড়াও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিনে নিতে পারেন বাইকের প্রয়োজনীয় সেফটি গিয়ার সমূহ।  

ঢাকা অথবা অন্য যেকোনো মেট্রোপলিটন এলাকায় থাকলে বাইকের দরকারি কাগজপত্র ছাড়া সেটি নিয়ে রাস্তায় বের না হওয়াই ভালো। এতে করে অহেতুক মামলায় জড়ানোর সম্ভাবনা প্রকট। টাকা জমা দেওয়ার ১ মাসের মধ্যেই সাধারণত সকল প্রকার কাগজ-পত্র হাতে চলে আসে। তাই এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। 

নতুন মোটরবাইকের ইন্সুরেন্স করিয়ে রাখুন। সেক্ষেত্রে ইঞ্জিন নাম্বার, চেসিস নাম্বার এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে ইন্সুরেন্স করানোর জন্য। ইন্সুরেন্স না থাকলেও মামলা হবার ভয় থাকে।

যন্ত্র মাত্রই সেটির কার্যক্ষমতা তার রক্ষণাবেক্ষণের উপর  নির্ভরশীল। তাই নতুন বাইক কেনার পর থেকেই তার নিয়মিত যত্ন নিশ্চিত করুন। যার মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মোবিল পরিবর্তন, উন্নত মানের অকটেনের ব্যবহার, এবং দক্ষ মেকানিক বা অনুমোদিত সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিস নেওয়া।

শেষকথা

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কিনে নিন আপনার পছন্দের নতুন মোটরসাইকেল। সব সময় বাইকের যাবতীয় কাগজ-পত্র যেমন লাইসেন্স, বাইকের কাগজ, ইন্সুরেন্স সাথে রাখুন। এছাড়াও রাইডিং এর সময় নিজের এবং পিলিয়ন থাকলে তার জন্যেও মনে করে হেলমেট নিন। নতুন অবস্থায় বাইক চালানোর সময় সমস্যার সম্মুখীন হওয়া স্বাভাবিক একটি ব্যাপার, এক্ষেত্রে ঘাবড়ে না গিয়ে অনুমোদিত সার্ভিসিং সেন্টার এর সাথে যোগাযোগ করুন এবং তাদের সাহায্য নিন। 

হ্যাপী রাইডিং! 

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy New Bikesbikroy
Zongshen BIKE 2024 for Sale

Zongshen BIKE 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 430,000
2 weeks ago
Zongshen Sierra 200 bike 2024 for Sale

Zongshen Sierra 200 bike 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 320,000
1 week ago
Zongshen CG 125 bike 2025 for Sale

Zongshen CG 125 bike 2025

8 km
verified MEMBER
Tk 190,000
2 weeks ago
Zongshen GS 250 Bike 2025 for Sale

Zongshen GS 250 Bike 2025

0 km
verified MEMBER
Tk 420,000
6 hours ago
bike 2024 for Sale

bike 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 430,000
1 week ago
Buy Used Bikesbikroy
Hero Karizma XMR 210 . 2024 for Sale

Hero Karizma XMR 210 . 2024

8,000 km
MEMBER
Tk 350,000
4 weeks ago
Suzuki Gixxer . 2021 for Sale

Suzuki Gixxer . 2021

11,000 km
MEMBER
Tk 150,000
6 days ago
Yamaha FZ V3 DELUXE 2022 for Sale

Yamaha FZ V3 DELUXE 2022

16,000 km
MEMBER
Tk 230,000
1 day ago
Benelli 165S . 2020 for Sale

Benelli 165S . 2020

24,500 km
MEMBER
Tk 130,000
1 week ago
Honda ADV 150 2021 2024 for Sale

Honda ADV 150 2021 2024

7,200 km
MEMBER
Tk 465,000
1 week ago
+ Post an ad on Bikroy