মোটরসাইকেলে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হচ্ছে একটি ভালো হেলমেট। তবে জীবনের সুরক্ষার জন্য এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অনেকেই দিশেহারা হয়ে ওঠেন। কারণ, বাজারের এতো এতো হেলমেট ব্র্যান্ডের মাঝে ভালো হেলমেট ব্র্যান্ড খুজে বের করা যে দায়! আজকের লেখায় আমরা পৃথিবীর সেরা কিছু হেলমেট ব্র্যান্ডের নাম ও তথ্য দিবে যাতে করে আপনি সেরা হেলমেট ব্র্যান্ড থেকে হেলমেট ক্রয় করতে পারেন।
সেরা হেলমেট ব্র্যান্ডগুলোর নাম
চলুন বিশ্বের সেরা হেলমেট ব্র্যান্ড এবং তাদের সেরা হওয়ার কারণগুলো জেনে আসি।
১। Bell Helmets
১৯৫৪ সালে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানী তাদের হালকা ও স্টাইলিশ ধরণের হেলমেটগুলোর জন্য বেশ জনপ্রিয়। যার কারণে এই কোম্পানীর হেলমেটগুলো গড়ে ৪.৪ সেফটি রেটিং পেয়েছে। এমনকি অফরোড কন্ডিশনেও এই হেলমেটগুলো বেশ ভালো নিরাপত্তা দেয়। তাই প্রফেশনাল বাইকারদের জন্য এই ব্র্যান্ডের হেলমেটগুলো সবসময় প্রথম চয়েসে থাকে। এদের কাছে নারী, পুরুষ, শিশু সবার জন্য হেলমেট পেয়ে যাবেন আপনি।
২। Shoei Helmets
এটি জাপানের একটি কোম্পানী। জাপান নাম শুনেই এদের কোয়ালিটি হেলমেট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়ে যাচ্ছে। কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি হেলমেট এই ব্র্যান্ড অনেক আগে থেকেই বিক্রয় করে আসছে। এই কোম্পানীর হেলমেটগুলো তাই ৪.৫ সেফটি রেটিং পেয়েছে। এদের কাছে নারী ও পুরুষদের জন্য অনেক ধরণের হেলমেট পাওয়া যাবে।
৩। HJC Helmets
বাজারের সবচেয়ে সেইফ ও আরামদায়ক হেলমেট তৈরি করার জন্য এই ব্র্যান্ড জনপ্রিয়। এই কোম্পানীর আগের মডেলের হেলমেটগুলো তাই ৫ সেফটি রেটিং পেয়েছে। আর তুলনামুলক নতুন হেলমেটগুলোও নিয়মিত ৪ থেকে ৫ সেফটি রেটিং পায়। ছোট থেকে বড়, সকল বয়সের মানুষের জন্যই তাদের কাছে বিভিন্ন ধরণের হেলমেট রয়েছে।
৪। LS2 Helmets
এটি ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় হেলমেট ব্র্যান্ডগুলোর একটি। তাদের প্রিমিয়াম হেলমেটগুলো সেফটির সাথে কমফোর্ট কম্বাইন করে তৈরি করা। তাদের হেলমেটগুলোর বাইরের শেল কিনেটিক পলিমার অ্যালয় দিয়ে তৈরি করা এবং ভেতরের লাইনারগুলো রিমুভেবল এবং ওয়াশেবল।
৫। AGV Helmets
আপনি যদি ভালো কোয়ালিটির তবে অ্যাফোর্ডেবল হেলমেট তৈরি করে এমন ব্র্যান্ড খুজে থাকেন, তাহলে এই ব্র্যান্ড আপনার জন্য বেস্ট হবে। তাদের হেলমেটগুলো কার্বন ফাইবার গ্লাস শেল দিয়ে তৈরি করায় বেশ শক্তপোক্ত হয়।
৬। Arai Helmets
এটি জাপানের সবচেয়ে পুরনো হেলমেট তৈরি করা ব্র্যান্ডগুলোর একটি। এই ব্র্যান্ডের হেলমেটগুলো প্রফেশনালদের দ্বারা পুরোপুরি হাতে তৈরি করা এবং একবার হেলমেটের কাঠামো তৈরি করার পর প্রতিটি হেলমেট একের অধিক লেভেলের টেস্টিং-এর মধ্য দিয়ে যায়। এই কারণে এই ব্র্যান্ডের অনেকগুলো হেলমেট ৪.৪ থেকে ৪.৫ সেফটি রেটিং পেয়েছে। আর এদের হেলমেট বেশ সাশ্রয়ী’ও বটে।
৭। Shark Helmets
ব্র্যান্ডটি ফ্রান্সের হলেও, দুনিয়া জুড়েই তাদের খ্যাতি। বাইকারদের জন্য এই ব্র্যান্ড হাই গ্রেড সেফটির হেলমেট অফার করছে। আবার তাদের হেলমেটের সাথে সব ইনোভেটিভ ডিজাইন ও নতুন নতুন টেকনোলজির’ও দেখা পাওয়া যায়। খুব অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসে হেলমেট অফার করার পাশাপাশি তারা দিচ্ছে ৫ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি।
৮। MT Helmets
এটি একটি স্প্যানিশ ব্র্যান্ড হলেও, তাদের সর্বাধিক জনপ্রিয়তা যুক্তরাজ্যে। তাদের সবগুলো প্রোডাক্টের সেফটি রেটিং থাকে ৩ থেকে ৫ ভেতর, তা’ও খুব অ্যাফোর্ডেবল প্রাইস রেঞ্জে। তাদের হেলমেটগুলোর সামনের দিক কিছুটা তীক্ষ্ণ আকারে তৈরি করা, তাই স্পোর্টি হেলমেট যারা পছন্দ করেন তারা এই ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টগুলো ঘুরে দেখতে পারেন।
৯। Studds Helmets
এটি ভারতের একটি হেলমেট ব্র্যান্ড, তবে কোয়ালিটির দিক দিয়ে তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেলমেট ব্র্যান্ডগুলোর সাথে টক্কর দিচ্ছে। তারা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাদের হাই-ইমপ্যাক্ট গ্রেডের থার্মোপ্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এক্সটেরিয়রের জন্য। আবার ব্যবহার করা হয়েছে স্ক্র্যাচ-রেজিস্ট্যান্ট উপাদান, তাই হেলমেটে সহজে আচড় পরে না। ছোট থেকে বড় সকল বয়সী বাইকারদের জন্য হেলমেট তৈরি করছে তারা।
১০। THH Helmets
তাইওয়ানের এই হেলমেট ব্র্যান্ড তাদের হালকা ওজনের ও অত্যান্ত টেকসই হেলমেটগুলোর জন্য বেশ জনপ্রিয়। তারা তাদের হেলমেটে বিভিন্ন আধুনিক টেকনোলজি যেমন কার্বন ফাইবার কেভ্লার ব্যবহার করে থাকে। চমকপ্রদ ডিজাইন ও চোখ ধাধানো কালারের জন্য তাদের হেলমেটগুলো খুব সহজেই সবার নজর কাড়ে। আবার তাদের হেলমেটে যথেষ্ট পরিমাণ ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকায় পরেও খুব আরাম পাওয়া যায়।
পরিসংহার
বাজার থেকে অনেক কম দামে অনেক র্যান্ডম কোম্পানীর হেলমেট চাইলেই ক্রয় করা যায়। তবে সেগুলো সাধারণত টেকসই হয় না এবং কোনো ধরণের অ্যাডভান্সড টেকনোলজির ব্যবহার সেগুলোতে থাকে না। তাই সর্বদা ভালো ব্র্যান্ডের ভালো সেফটি রেটিং আছে এমন হেলমেট ক্রয় করা উচিত। এছাড়া’ও ভালো মানের মোটরবাইক এক্সেসরিজ ক্রয় করার দিকে আমাদের আরো বেশি মনোযোগী হওয়ার উচিত।