কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনছেন? জেনে নিন দরকারি কিছু টিপস

29 Mar, 2023   
কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনছেন? জেনে নিন দরকারি কিছু টিপস

একটি স্বপ্নের মোটরসাইকেল সবার হাতের নাগালে থাকে না। জীবনের নানা সংগ্রাম, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ইত্যাদি নানা কারণে তরুণ বয়সের অনেক স্বপ্নই অধরা থেকে যায়। এই সমস্যাকে একটু সহজ করতে পারে কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা। বাংলাদেশের লোকাল এবং আন্তর্জাতিক, প্রায় সব বাইকের শো-রুমেই এখন কিস্তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আজকে আমরা কিস্তিতে বাইক কেনার সময় যা কিছু জেনে নেয়া জরুরি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

মোটরসাইকেল কোম্পানির উপর রিসার্চ করে নিন

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার জন্য আগে আপনাকে বাজারের কোন কোম্পানি কী কী নিয়মে কিস্তি দিচ্ছে সেটা নিয়ে রিসার্চ করতে হবে। বর্তমানে আমাদের দেশে ইয়ামাহা, বাজাজ, টিভিএস, হিরো, রানার, ওয়ালটন ইত্যাদি কোম্পানিগুলো বাইকারদের কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার উপায় করে দিচ্ছে। বাইকের ব্র্যান্ড, কোম্পানি এবং কখনও মডেল ভেদে কিস্তির ধরণে কিছুটা ভিন্নতা থাকে, তবে কিছু ব্যাপার সব ক্ষেত্রেই একই।

বেশিরভাগ কোম্পানিই বাইকের দামের ০-৫০% পর্যন্ত ডাউন পেমেন্ট হিসেবে রাখে, এবং বাকিটা বিভিন্ন রকম মেয়াদের মধ্যে প্রতি মাসে অল্প অল্প করে পরিশোধ করার অপশন দেয়। এই পদ্ধতিতে বাইক কিনলে একবারে অনেক বেশি টাকা খরচ হবে না, কিন্তু মাসে মাসে সুদ যোগ হওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে বাইকটির দাম বেশি হয়ে যায়।

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার উপায়গুলো

মোটরসাইকেলের কিস্তি মূলত তিন ধরণের হতে পারে- কোম্পানি প্রদত্ত সাধারণ কিস্তি, ব্যাংক লোন, ক্রেডিট কার্ড ইএমআই পদ্ধতি।

সাধারণ কিস্তি হচ্ছে যখন কোনো ডিলার বা কোম্পানি একটা নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট কিছু মডেলের বাইক কিস্তিতে কেনার অপশন দেন। আপনার নিকটস্থ যেকোনো ভেরিফাইড অটোমোবাইল শো-রুম বা ব্র্যান্ড ডিলারের শপ থেকে সহজ কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে পারবেন।

ব্যাংক লোন পদ্ধতির জন্য আপনি ব্যাংক অথবা ডিলার যেকোনো মাধ্যম থেকে শুরু করতে পারেন। সাধারণত বড় অটোমোবাইল শো-রুমগুলোতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের প্রতিনিধি থাকেন, যারা আপনাদেরকে ব্যাংক লোন নেয়ার ব্যাপারে সব রকম সাহায্য করতে পারবেন। এই ব্যাংক লোন নেয়ার জন্য আপনার নূন্যতম কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে ও কাগজপত্র সাথে আনতে হবে।

তিন ধরণের ব্যক্তি ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারা হচ্ছেনঃ

  • চাকরিজীবীঃ এক্ষেত্রে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন আসতে হবে, এবং নিয়মিত লেনদেনের একটা ট্রান্সক্রিপ্ট জমা দিতে হবে। সাধারণত কারও নূন্যতম বেতন ১৫,০০০-২০,০০০ এর মধ্যে হলেই তিনি বাইক লোন পাওয়ার উপযুক্ত হবেন।
  • ব্যবসায়ীঃ আপনার নিজস্ব কোন ব্যবসা থাকলে, ও সেই ব্যবসায়িক ব্যাংক একাউন্টে প্রতি মাসে নূন্যতম ৫-৬ লাখ টাকা অথবা আরও বেশি লেনদেন সম্পন্ন করা হলে, আপনি ব্যাংক লোনের আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্র বৈধ ও চলমান থাকতে হবে।
  • প্রপার্টির মালিকঃ আপনি যদি যেকোন ধরণের প্রপার্টির মালিক হন, যেখান থেকে আপনার একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা উপার্জন হয় ও সেটা ব্যাংকে জমা করেন, তাহলে আপনি লোন নেয়ার জন্য উপযুক্ত।

ইএমআই পদ্ধতিতে মোটরসাইকেল কিস্তিতে নেয়ার জন্য আপনার কাছে অবশ্যই মেয়াদ ও লিমিটসহ একটা সচল ‘ক্রেডিট কার্ড’ থাকতে হবে।

কিস্তিতে বাইক কেনার জন্য দরকারি ডকুমেন্ট

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার জন্য বিভিন্ন রকম কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। সাধারণত যেসব ডকুমেন্ট আপনাকে সাথে নিতে হবে তা হচ্ছেঃ

ঠিকানা বিষয়ক ডকুমেন্ট

কিস্তির আবেদন করার সময় আপনাকে অবশ্যই আপনার একটি ঠিকানা দিতে হবে যেখানে যেকোনো প্রয়োজনে আপনার সাথে যোগাযোগ করা যাবে। এই ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে কোনও এক মাসের ইউটিলিটি বিলের কাগজ যেমন, বিদ্যুৎ বিল, টিএন্ডটি ফোনের বিল, পানি অথবা গ্যাস বিল। এই ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই সর্বশেষ তিন মাসের মধ্যে হতে হবে, এর আগের কোনও ডকুমেন্ট গ্রহনযোগ্য হবে না।

পরিচয়

পরিচয়পত্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট। কিছু ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ট্রেড লাইসেন্স দিয়েও কাজ চালানো যায়, তবে বর্তমানে সরকারি আইন কঠোর থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্রই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক রাখা হচ্ছে।

ব্যাংকের বিবৃতি

আপনার সর্বশেষ ০৩ থেকে ০৬ মাসের মধ্যে ব্যাংক লেনদেনের বিবৃতি, বা শুধু সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডকুমেন্ট সাথে নিতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংক সলভেন্সি প্রশংসাপত্রও গ্রহণ করা হয়।

আয়ের বিবরণ

আপনি যদি ব্যবসায়ী হন, তাহলে আপ-টু-ডেট ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে; তবে সেটা চলমান এক বছরের না হলেও চলবে।

চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অন্তত তিন মাসের বেতনের রশিদ, অথবা ব্যাংক বিবৃতির প্রয়োজন হবে। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে আপনার ডিপার্টমেন্ট প্রধানের স্বাক্ষর করা অনুমোদন পত্রও দরকার হতে পারে।

গ্যারান্টারের ডকুমেন্ট

আপনি যদি নিজে বাইক লোন নেয়ার উপযুক্ত না হন, তাহলে আপনার লাগবে একজন গ্যারান্টার। আর এই গ্যারান্টারের বেশ কিছু ডকুমেন্ট, যেমন- পাসপোর্ট ছবি, এনআইডি তথা জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, পোস্ট তারিখের চেক ইত্যাদি সাথে আনতে হবে। এছাড়াও ২০০ টাকার একটা স্ট্যাম্প পেপারে গ্যারান্টারের এফিডেভিট লিখিয়ে নিতে হবে। লেটার হেড এবং পোস্ট তারিখের চেকের উপর গ্যারান্টারের এফিডেভিট সরবরাহ করবে মোটরসাইকেল কোম্পানি।

ড্রাইভিং লাইসেন্স

কিস্তিতে কিনুন বা নগদ টাকায়, মোটরসাইকেল কিনতে যাওয়ার আগেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা জরুরি। বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কারো কাছে বাইক বিক্রি করাটা আইনত দন্ডনীয় একটি কাজ।

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা ও অসুবিধা

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা সম্পর্কে আলাদা করে কিছু না বললেও চলে। এই পদ্ধতিতে আপনি বাজেটের দিকে না তাকিয়ে মনের মতো যেকোন ব্র্যান্ডের বাইক কিনতে পারবেন। অনেক সময় টাকার অভাবে অত্যাধুনিক ফিচারসহ লেটেস্ট মডেলের বাইক কেনা সম্ভব হয়না, কিন্তু কিস্তিতে কিনলে এই কষ্টটা নেই। আর তাই অনেকগুলো টাকা একবারে খরচ না করে অনেকেই কিস্তিতে কিনে অল্প সময়ে লেটেস্ট মোটরসাইকেলের মালিক হতে চান।

তবে এই পদ্ধতিতে বাইক কেনার কিছু অসুবিধাও রয়েছে। মাসিক কিস্তির সাথে ইন্টারেস্ট যোগ হওয়ায় বাইকটির মোট দাম বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা বেশি হয়ে যায়। সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত আপনি নিশ্চিন্তে বাইক নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। মোটরসাইকেলটির কোনও রকম ক্ষতি হলে, বা চুরি হয়ে গেলেও প্রতি মাসে আপনাকে কিস্তির টাকা শোধ করতেই হবে; সেই সাথে আরও যোগ হয় মোটরবাইক সার্ভিসিং-এর খরচ অথবা জিডি করার ভোগান্তি।

উপসংহার

সুবিধা ও অসুবিধা সবকিছু বিবেচনা করে তবেই কিস্তির পথে আগান। নিজের জীবনযাত্রা, প্রয়োজন ইত্যাদি সব মিলিয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপনারই। মোটরসাইকেল কেনার পর সেটি রেজিষ্ট্রেশন করার প্রক্রিয়াও দেখে নিন। তাহলে দালালের দিকে না তাকিয়ে নিজেই এই কাজগুলো করে ফেলা আপনার জন্য সহজ হবে।

আশা করছি আমাদের এই বেসিক তথ্যগুলো আপনার সিদ্ধান্ত আরেকটু সহজ করতে এবং বাড়তি ঝামেলা এড়াতে সাহায্য করবে। নতুন বাইক সফলভাবে কেনায় আপনাকে অভিনন্দন!

গ্রাহকদের নিয়মিত কিছু প্রশ্নের উত্তর

কিস্তিতে বাইক কেনার সময় কীভাবে পেমেন্ট করব?

এমআইসিআর চেক বা তারিখ ছাড়া একটি সিকিউরিটি এমআইসিআর / নন এমআইসিআর চেক ব্যবহার করে অনলাইন শাখায় পেমেন্ট করতে পারবেন। এছাড়াও নগদ ডিএস / বিকাশ / রকেট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেও মাসিক কিস্তির টাকা পেমেন্ট করা সম্ভব।

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার জন্য সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্ট কত?

ডাউন পেমেন্টের পরিমাণ বাইকের দাম, কোম্পানির নিয়ম, আর ক্রেতার সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়। তবে সাধারণত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাইকের দামের উপর সর্বনিম্ন ১৫-৩০% ডাউন পেমেন্ট রাখে। তবে দেশি ব্র্যান্ড, যেমন- ওয়ালটন, রানার, রোডমাস্টার ইত্যাদি কোম্পানি অনেক সময় ০% ডাউন পেমেন্টে কিস্তিতে বাইক কেনার অফার দেয়।

বাংলাদেশে বাইক লোন নেয়ার জন্য সেরা ব্যাংক কোনটি?

বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক রয়েছে, যারা মোটরসাইকেল কেনার জন্য সহজ শর্তে লোন দিয়ে থাকে। বাইক লোনের ক্ষেত্রে সেরা কিছু ব্যাংকের নাম হচ্ছেঃ

  • ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)
  • উত্তরা ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক
  • প্রাইম ব্যাংক
  • ব্র্যাক ব্যাংক, ইত্যাদি

ইএমআই-এর অর্থ কী?

‘ইকুয়েটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট’ বা ইএমআই এর বাংলা নাম “সমমান মাসিক কিস্তি”। ব্যাংক থেকে কোন লোন নেয়া হলে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট পরিমাণ কিস্তিতে তা পরিশোধ করার পদ্ধতিই হচ্ছে ইএমআই। 

বাইক লোন নেয়ার সর্বনিম্ন বয়সসীমা কত?

বাইক লোন নিতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী আপনার বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে। লোন পরিশোধ শেষ করার সময় সর্বোচ্চ বয়সসীমা হচ্ছে ৬০ বছর

একটি স্বপ্নের মোটরসাইকেল সবার হাতের নাগালে থাকে না। জীবনের নানা সংগ্রাম, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ইত্যাদি নানা কারণে তরুণ বয়সের অনেক স্বপ্নই অধরা থেকে যায়। এই সমস্যাকে একটু সহজ করতে পারে কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা। বাংলাদেশের লোকাল এবং আন্তর্জাতিক, প্রায় সব বাইকের শো-রুমেই এখন কিস্তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আজকে আমরা কিস্তিতে বাইক কেনার সময় যা কিছু জেনে নেয়া জরুরি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

মোটরসাইকেল কোম্পানির উপর রিসার্চ করে নিন

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার জন্য আগে আপনাকে বাজারের কোন কোম্পানি কী কী নিয়মে কিস্তি দিচ্ছে সেটা নিয়ে রিসার্চ করতে হবে। বর্তমানে আমাদের দেশে ইয়ামাহা, বাজাজ, টিভিএস, হিরো, রানার, ওয়ালটন ইত্যাদি কোম্পানিগুলো বাইকারদের কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার উপায় করে দিচ্ছে। বাইকের ব্র্যান্ড, কোম্পানি এবং কখনও মডেল ভেদে কিস্তির ধরণে কিছুটা ভিন্নতা থাকে, তবে কিছু ব্যাপার সব ক্ষেত্রেই একই।

বেশিরভাগ কোম্পানিই বাইকের দামের ০-৫০% পর্যন্ত ডাউন পেমেন্ট হিসেবে রাখে, এবং বাকিটা বিভিন্ন রকম মেয়াদের মধ্যে প্রতি মাসে অল্প অল্প করে পরিশোধ করার অপশন দেয়। এই পদ্ধতিতে বাইক কিনলে একবারে অনেক বেশি টাকা খরচ হবে না, কিন্তু মাসে মাসে সুদ যোগ হওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে বাইকটির দাম বেশি হয়ে যায়।

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার উপায়গুলো

মোটরসাইকেলের কিস্তি মূলত তিন ধরণের হতে পারে- কোম্পানি প্রদত্ত সাধারণ কিস্তি, ব্যাংক লোন, ক্রেডিট কার্ড ইএমআই পদ্ধতি।

সাধারণ কিস্তি হচ্ছে যখন কোনো ডিলার বা কোম্পানি একটা নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট কিছু মডেলের বাইক কিস্তিতে কেনার অপশন দেন। আপনার নিকটস্থ যেকোনো ভেরিফাইড অটোমোবাইল শো-রুম বা ব্র্যান্ড ডিলারের শপ থেকে সহজ কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে পারবেন।

ব্যাংক লোন পদ্ধতির জন্য আপনি ব্যাংক অথবা ডিলার যেকোনো মাধ্যম থেকে শুরু করতে পারেন। সাধারণত বড় অটোমোবাইল শো-রুমগুলোতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের প্রতিনিধি থাকেন, যারা আপনাদেরকে ব্যাংক লোন নেয়ার ব্যাপারে সব রকম সাহায্য করতে পারবেন। এই ব্যাংক লোন নেয়ার জন্য আপনার নূন্যতম কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে ও কাগজপত্র সাথে আনতে হবে।

তিন ধরণের ব্যক্তি ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারা হচ্ছেনঃ

  • চাকরিজীবীঃ এক্ষেত্রে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন আসতে হবে, এবং নিয়মিত লেনদেনের একটা ট্রান্সক্রিপ্ট জমা দিতে হবে। সাধারণত কারও নূন্যতম বেতন ১৫,০০০-২০,০০০ এর মধ্যে হলেই তিনি বাইক লোন পাওয়ার উপযুক্ত হবেন।
  • ব্যবসায়ীঃ আপনার নিজস্ব কোন ব্যবসা থাকলে, ও সেই ব্যবসায়িক ব্যাংক একাউন্টে প্রতি মাসে নূন্যতম ৫-৬ লাখ টাকা অথবা আরও বেশি লেনদেন সম্পন্ন করা হলে, আপনি ব্যাংক লোনের আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্র বৈধ ও চলমান থাকতে হবে।
  • প্রপার্টির মালিকঃ আপনি যদি যেকোন ধরণের প্রপার্টির মালিক হন, যেখান থেকে আপনার একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা উপার্জন হয় ও সেটা ব্যাংকে জমা করেন, তাহলে আপনি লোন নেয়ার জন্য উপযুক্ত।

ইএমআই পদ্ধতিতে মোটরসাইকেল কিস্তিতে নেয়ার জন্য আপনার কাছে অবশ্যই মেয়াদ ও লিমিটসহ একটা সচল ‘ক্রেডিট কার্ড’ থাকতে হবে।

কিস্তিতে বাইক কেনার জন্য দরকারি ডকুমেন্ট

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার জন্য বিভিন্ন রকম কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। সাধারণত যেসব ডকুমেন্ট আপনাকে সাথে নিতে হবে তা হচ্ছেঃ

ঠিকানা বিষয়ক ডকুমেন্ট

কিস্তির আবেদন করার সময় আপনাকে অবশ্যই আপনার একটি ঠিকানা দিতে হবে যেখানে যেকোনো প্রয়োজনে আপনার সাথে যোগাযোগ করা যাবে। এই ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে কোনও এক মাসের ইউটিলিটি বিলের কাগজ যেমন, বিদ্যুৎ বিল, টিএন্ডটি ফোনের বিল, পানি অথবা গ্যাস বিল। এই ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই সর্বশেষ তিন মাসের মধ্যে হতে হবে, এর আগের কোনও ডকুমেন্ট গ্রহনযোগ্য হবে না।

পরিচয়

পরিচয়পত্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট। কিছু ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ট্রেড লাইসেন্স দিয়েও কাজ চালানো যায়, তবে বর্তমানে সরকারি আইন কঠোর থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্রই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক রাখা হচ্ছে।

ব্যাংকের বিবৃতি

আপনার সর্বশেষ ০৩ থেকে ০৬ মাসের মধ্যে ব্যাংক লেনদেনের বিবৃতি, বা শুধু সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডকুমেন্ট সাথে নিতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংক সলভেন্সি প্রশংসাপত্রও গ্রহণ করা হয়।

আয়ের বিবরণ

আপনি যদি ব্যবসায়ী হন, তাহলে আপ-টু-ডেট ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে; তবে সেটা চলমান এক বছরের না হলেও চলবে।

চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অন্তত তিন মাসের বেতনের রশিদ, অথবা ব্যাংক বিবৃতির প্রয়োজন হবে। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে আপনার ডিপার্টমেন্ট প্রধানের স্বাক্ষর করা অনুমোদন পত্রও দরকার হতে পারে।

গ্যারান্টারের ডকুমেন্ট

আপনি যদি নিজে বাইক লোন নেয়ার উপযুক্ত না হন, তাহলে আপনার লাগবে একজন গ্যারান্টার। আর এই গ্যারান্টারের বেশ কিছু ডকুমেন্ট, যেমন- পাসপোর্ট ছবি, এনআইডি তথা জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, পোস্ট তারিখের চেক ইত্যাদি সাথে আনতে হবে। এছাড়াও ২০০ টাকার একটা স্ট্যাম্প পেপারে গ্যারান্টারের এফিডেভিট লিখিয়ে নিতে হবে। লেটার হেড এবং পোস্ট তারিখের চেকের উপর গ্যারান্টারের এফিডেভিট সরবরাহ করবে মোটরসাইকেল কোম্পানি।

ড্রাইভিং লাইসেন্স

কিস্তিতে কিনুন বা নগদ টাকায়, মোটরসাইকেল কিনতে যাওয়ার আগেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা জরুরি। বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কারো কাছে বাইক বিক্রি করাটা আইনত দন্ডনীয় একটি কাজ।

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা ও অসুবিধা

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা সম্পর্কে আলাদা করে কিছু না বললেও চলে। এই পদ্ধতিতে আপনি বাজেটের দিকে না তাকিয়ে মনের মতো যেকোন ব্র্যান্ডের বাইক কিনতে পারবেন। অনেক সময় টাকার অভাবে অত্যাধুনিক ফিচারসহ লেটেস্ট মডেলের বাইক কেনা সম্ভব হয়না, কিন্তু কিস্তিতে কিনলে এই কষ্টটা নেই। আর তাই অনেকগুলো টাকা একবারে খরচ না করে অনেকেই কিস্তিতে কিনে অল্প সময়ে লেটেস্ট মোটরসাইকেলের মালিক হতে চান।

তবে এই পদ্ধতিতে বাইক কেনার কিছু অসুবিধাও রয়েছে। মাসিক কিস্তির সাথে ইন্টারেস্ট যোগ হওয়ায় বাইকটির মোট দাম বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা বেশি হয়ে যায়। সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত আপনি নিশ্চিন্তে বাইক নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। মোটরসাইকেলটির কোনও রকম ক্ষতি হলে, বা চুরি হয়ে গেলেও প্রতি মাসে আপনাকে কিস্তির টাকা শোধ করতেই হবে; সেই সাথে আরও যোগ হয় মোটরবাইক সার্ভিসিং-এর খরচ অথবা জিডি করার ভোগান্তি।

উপসংহার

সুবিধা ও অসুবিধা সবকিছু বিবেচনা করে তবেই কিস্তির পথে আগান। নিজের জীবনযাত্রা, প্রয়োজন ইত্যাদি সব মিলিয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপনারই। মোটরসাইকেল কেনার পর সেটি রেজিষ্ট্রেশন করার প্রক্রিয়াও দেখে নিন। তাহলে দালালের দিকে না তাকিয়ে নিজেই এই কাজগুলো করে ফেলা আপনার জন্য সহজ হবে।

আশা করছি আমাদের এই বেসিক তথ্যগুলো আপনার সিদ্ধান্ত আরেকটু সহজ করতে এবং বাড়তি ঝামেলা এড়াতে সাহায্য করবে। নতুন বাইক সফলভাবে কেনায় আপনাকে অভিনন্দন!

গ্রাহকদের নিয়মিত কিছু প্রশ্নের উত্তর

কিস্তিতে বাইক কেনার সময় কীভাবে পেমেন্ট করব?

এমআইসিআর চেক বা তারিখ ছাড়া একটি সিকিউরিটি এমআইসিআর / নন এমআইসিআর চেক ব্যবহার করে অনলাইন শাখায় পেমেন্ট করতে পারবেন। এছাড়াও নগদ ডিএস / বিকাশ / রকেট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেও মাসিক কিস্তির টাকা পেমেন্ট করা সম্ভব।

কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার জন্য সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্ট কত?

ডাউন পেমেন্টের পরিমাণ বাইকের দাম, কোম্পানির নিয়ম, আর ক্রেতার সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়। তবে সাধারণত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাইকের দামের উপর সর্বনিম্ন ১৫-৩০% ডাউন পেমেন্ট রাখে। তবে দেশি ব্র্যান্ড, যেমন- ওয়ালটন, রানার, রোডমাস্টার ইত্যাদি কোম্পানি অনেক সময় ০% ডাউন পেমেন্টে কিস্তিতে বাইক কেনার অফার দেয়।

বাংলাদেশে বাইক লোন নেয়ার জন্য সেরা ব্যাংক কোনটি?

বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক রয়েছে, যারা মোটরসাইকেল কেনার জন্য সহজ শর্তে লোন দিয়ে থাকে। বাইক লোনের ক্ষেত্রে সেরা কিছু ব্যাংকের নাম হচ্ছেঃ

  • ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)
  • উত্তরা ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক
  • প্রাইম ব্যাংক
  • ব্র্যাক ব্যাংক, ইত্যাদি

ইএমআই-এর অর্থ কী?

‘ইকুয়েটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট’ বা ইএমআই এর বাংলা নাম “সমমান মাসিক কিস্তি”। ব্যাংক থেকে কোন লোন নেয়া হলে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট পরিমাণ কিস্তিতে তা পরিশোধ করার পদ্ধতিই হচ্ছে ইএমআই। 

বাইক লোন নেয়ার সর্বনিম্ন বয়সসীমা কত?

বাইক লোন নিতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী আপনার বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে। লোন পরিশোধ শেষ করার সময় সর্বোচ্চ বয়সসীমা হচ্ছে ৬০ বছর

Similar Advices

New Bikes for Salebikroy
GB-Padma-Gold (Blue) 2023 for Sale

GB-Padma-Gold (Blue) 2023

0 km
verified MEMBER
Tk 70,000
14 hours ago
atv Quad বাইক 2024 for Sale

atv Quad বাইক 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 295,000
17 hours ago
golf kart 4 seater 2024 for Sale

golf kart 4 seater 2024

0 km
verified MEMBER
Tk 645,000
17 hours ago
E bike brand new 2023 for Sale

E bike brand new 2023

0 km
verified MEMBER
Tk 70,000
20 hours ago
TVS Metro এ 2017 for Sale

TVS Metro এ 2017

2,000 km
MEMBER
Tk 55,000
23 hours ago
Used Bikes for Salebikroy
Roadmaster Prime ২০১৮ 2024 for Sale

Roadmaster Prime ২০১৮ 2024

25,000 km
MEMBER
Tk 28,000
2 minutes ago
Runner Skooty . 2021 for Sale

Runner Skooty . 2021

15,325 km
MEMBER
Tk 82,000
4 minutes ago
TVS NTORQ VERY GOOD CONDITION 2022 for Sale

TVS NTORQ VERY GOOD CONDITION 2022

4,000 km
verified MEMBER
Tk 170,000
9 minutes ago
Suzuki Gixxer SF FI ABS BIKE 2023 for Sale

Suzuki Gixxer SF FI ABS BIKE 2023

4,100 km
verified MEMBER
Tk 328,000
9 minutes ago
Runner KnightRider SUPER FRESH BIKE 2023 for Sale

Runner KnightRider SUPER FRESH BIKE 2023

170 km
verified MEMBER
Tk 105,000
10 minutes ago
+ Post an ad on Bikroy