বাইক লোনের আদ্যোপান্ত
দেশের ট্রাফিক জ্যাম এর করুন অবস্থার কথা কম বেশি আমরা সবাই জানি। তাই ব্যস্ত জীবনে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেলা করার জন্যে মোটরসাইকেল এর প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কর্মস্থানে পৌঁছানো থেকে শুরু করে যেকোনো জায়গায় খুব দ্রুত যাওয়ার সুবিধা এনে দেয় মোটরসাইকেল বা বাইক রাইড।
এমনও মানুষ আছে যারা মোটরসাইকেল কিনতে বেশ আগ্রহী কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে সেই শখ পূরণ করতে পারছে না। তাদেরকে সহায়তা দিতে ব্যাংকগুলো বর্তমানে ঋণের প্রস্তাব দিচ্ছে।
বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো গাড়ি কেনার জন্য সাধারণত ঋণ দিয়ে থাকে। সময়ের সাথে এবার চাহিদা অনুযায়ী মোটরসাইকেল ঋণ চালু হয়েছে বেশ কিছু ব্যাংকগুলোতে।
সহজেই কেনা যায় এমন সব ঋন প্রস্তাবে নতুন মোটরসাইকেল কিনতে পারা এখন সহজ ব্যাপার।
বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে দ্যা সিটি ব্যাংক(city bank bike loan), ইস্টার্ণ ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, HSBC লিমিটেড, প্রাইম ও ব্র্যাক ব্যাংক (brac bank bike loan), এরা বিশেষ ভাবে মোটরসাইকেল ঋণ দিতে নতুন সেবা চালু করেছে।
আগ্রহী গ্রাহকদের বেশ বড় সুযোগ এনে দিয়েছে এই মোটরসাইকেল বা বাইক ঋণ।
ঋণের আকার সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা। সকল ধরণের গ্রাহকেরা সহজেই এই ঋণ পাচ্ছেন। কিন্তু অবশ্যই বিশেষ কিছু শর্তাবলীর মাধ্যমেই এই ঋন নেওয়া সম্ভব হবে।
বাইক লোন নিয়ে চুক্তি
এখনকার সময়ে, ব্যাংকগুলো সরাসরি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করছে বাইক ঋণ বিষয়ে। যেমন সুজুকি ব্র্যান্ডের সাথে সিটি ব্যাংক এর চুক্তি।
সিটি ব্যাংকের অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকেরা ৩৪ মাসে টাকা পরিশোধের সুযোগ পাবে যদি তারা সুজুকি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কিনে।
আরেকদিকে ব্র্যাক ব্যাংক ঋণ দিবে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কিনার কারণে। কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনার সুবিধা হলো অল্প টাকায় ভালো ব্র্যান্ড এর বাইক কিনা যায় খুব কম সময়ের ভিতর।
বর্তমানে আমাদের দেশে ইয়ামাহা, বাজাজ, টিভিএস, হিরো, রানার ইত্যাদি কোম্পানিগুলো কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুযোগ করে দিচ্ছে বাইকারদের। খুব সহজে একজন বাইকার চাইলে তার পছন্দের বাইকটি এখনি কিনতে পারবেন।
কিস্তিতে বাইক কেনার সুবিধা এবং অসুবিধা
সুবিধা | অসুবিধা |
অল্প টাকায় যেকোন ব্র্যান্ডের অত্যাধুনিক ফিচারের বাইক কিনিতে পারবেন | বাইকের ইন্টারেস্টে মূল্য বেশি দিতে হয় |
বেশি টাকা খরচ পরবে না | বাইকের কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না |
স্বল্প সময়ের মধ্যে পছন্দের দামি বাইকটাও কিনতে পারবেন | বাইকের যেকোনো অপ্রত্যাশিত ক্ষতির দায়ভার আপনার উপর থাকবে |
Hero Motorcycle বাইক লোনের জন্য ইনস্টলমেন্ট সিস্টেম
বাংলাদেশে হিরো মোটরসাইকেল কিস্তিতে কিনার সুবিধা করেছে ভক্তদের জন্য। শুধু মাত্র ২০,০০০ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে হিরো মোটরসাইকেলের মালিক হতে পারে যেকোনো গ্রাহক।
হিরো মোটরসাইকেল নতুন আপডেটেড ভার্সন এর জন্য ৬ মাস থেকে ১৮ মাসের কিস্তি পর্যন্ত বাইক লোন দেওয়া হচ্ছে।
Hero Motorcycle ইনস্টলমেন্ট সুবিধা সবচেয়ে ভালো। কিস্তিতে বিক্রি হওয়া সমস্ত হিরো মোটরসাইকেলে কেবলমাত্র ১% ইন্টারেস্ট দিতে হবে।
হিরো ওয়েবসাইটে যেয়ে পাবেন ইএমআই ক্যালকুলেটর যা থেকে কিস্তি, রেজিস্ট্রেশন, বাইকটির ইএমআই এবং মোট দাম নির্ধারণ করতে পারবেন সেখানে।
এই বাইকটি আপনি ৬ মাস থেকে ১৮ মাসের EMI সুবিধা পাবেন। গ্রাহককে কিছু ডকুমেন্টস দেখাতে হবে। যেমন মাসের মাসিক ইউটিলিটি বিল, গ্যারান্টার, এনআইডি বা পাসপোর্ট এবং পূর্ববর্তী ৩ থেকে ৬ মাসের একটি সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যাংক বিবরণী ইত্যাদি আরও কিছু তথ্য।
ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স সরবরাহ করতে হবে। যারা চাকরি করেন তাদের বেতনের স্টেটমেন্ট এবং বেতনের সার্টিফিকেট সরবরাহ করতে হবে। নগদ / ব্যাংক আমানত / রকেট / বিকাশের মাধ্যমে আপনি টাকা প্রদান করতে পারবেন।
একজন গ্রাহকের বাইক ঋণ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিবরণ
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- ই-টিআইএন ও ব্যবসায়িক কার্ড
- অফিস আইডির ফটোকপি
- এ ছাড়া বেতন বা আয়ের সনদ
- পরিষেবা বিলের কপি
- বাইকের দামের কোটেশন
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- যেকোনো ব্যাংকের সিকিউরিটি চেক জমা দিতে হয়
- ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স
- বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকের ভাড়ার ডকুমেন্ট জমা দিতে
- আবেদন পত্র
- আপডেট করা ট্রেড লাইসেন্স
- টিন সার্টিফিকেট
- নেট ওরথ স্টেটমেন্ট
- ভ্যাট সার্টিফিকেট (প্রয়োজন বিশেষে)
- ব্যবসার উপর ভিত্তি করে অনুমতি পত্র
- গ্রাহক এবং গ্যারান্টার NID কপি
- সিআইবি আন্ডারটেকিং
- আর্থিক বিবরণী
The reason for the demand for bike loans in Bangladesh
মোটরবাইক চালানো শুধু তরুণদের শখ বলা ঠিক হবে না। এটি নিত্য দিনের যাতায়াতের জন্য একটি দরকারী পণ্য হিসাবে দেখা হয়।
ঢাকার মতো শহরে যানজটের নানান সমস্যা যে কারণে অফিস, স্কুল বা ভার্সিটি যেতে দেরি হয়ে যায়। বাইকের ব্যবহার খুব জরুরি হয়ে পড়েছে নিত্য দিনের সুবিধার্তে।
সকলের যথাযথ সামর্থ থাকে না বাইক কিনার। তাই বাইক লোন সাধারণ জনগণের জন্য একটি স্বস্তির কারণ। এখনখার সময়ে Food Panda সার্ভিস, Pathao / Uber অথবা পার্সেল ডেলিভারি সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত হবার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে এই বাইকগুলো।
সময়ের মধ্যে যেকোনো জায়গায় পৌঁছাতে পারা এই শহরে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সুতরাং শুধু বাইক থাকলেই এসব সার্ভিস দেওয়া সম্ভব হয়।
এখন অনেক কর্মক্ষেত্রে মোটরসাইকেল ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ছে বেশি পরিমানে। সেজন্যই, বর্তমানে বেশির ভাগ ব্যাংকগুলো বাইক লোন অফার করছে ব্যাপক চাহিদা অনুযায়ী।
সাধারণ মানুষদের জন্য কিস্তিতে বাইক কেনা আরও সুবিধাজনক হবে বলে সরকারের কাছে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।
FAQs about bike loans in Bangladesh
১. বাংলাদেশের কোন কোন ব্যাংকে বাইকের জন্য লোন দেয়?
উঃ বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে দি সিটি ব্যাংক(city bank bike loan), ইস্টার্ণ ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, HSBC লিমিটেড, প্রাইম ও ব্র্যাক ব্যাংক (brac bank bike loan), এরা বিশেষ ভাবে মোটরসাইকেল ঋণ দিতে নতুন সেবা চালু করেছে।
আগ্রহী গ্রাহকদের বেশ বড় সুযোগ এনে দিয়েছে এই মোটরসাইকেল বা বাইক ঋণ।
২. বাইক লোন নিতে হলে কি কি কাগজের দরকার হয়?
উঃ বাইক লোন নিতে হলে গ্রাহককে কিছু ডকুমেন্টস দেখাতে হবে। যেমন মাসের মাসিক ইউটিলিটি বিল, গ্যারান্টার, এনআইডি বা পাসপোর্ট এবং পূর্ববর্তী ৩ থেকে ৬ মাসের একটি সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যাংক বিবরণী ইত্যাদি আরও কিছু তথ্য।
ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স সরবরাহ করতে হবে। যারা চাকরি করেন তাদের বেতনের স্টেটমেন্ট এবং বেতনের সার্টিফিকেট সরবরাহ করতে হবে। নগদ / ব্যাংক আমানত / রকেট / বিকাশের মাধ্যমে আপনি টাকা প্রদান করতে পারবেন।
৩. হিরো মোটরসাইকেল লোন নিয়ে কত টাকা ইন্টারেস্ট দিতে হবে?
উঃ কিস্তিতে বিক্রি হওয়া সমস্ত হিরো মোটরসাইকেলে কেবলমাত্র ১% ইন্টারেস্ট দিতে হবে।
৪. বাইক লোনের অসুবিধা কি?
উঃ বাইক লোনের অসুবিধা
১. মটরসাইকেলের ইন্টারেস্টে মূল্য বেশি দিতে হয়
২. লোন নিয়ে কিনলে বাইকের কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না
৩. বাইকের যেকোনো অপ্রত্যাশিত ক্ষতির দায়ভার আপনার উপর থাকবে
৫. ব্র্যাক ব্যাংক কোন ব্র্যান্ডের বাইকের লোন দিবে?
উঃ ব্র্যাক ব্যাংক ঋণ দিবে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের বাইকের জন্য।