মোটরবাইক হেলমেটের যত্ন – দেখে নিন এই টিপসগুলো

29 Mar, 2023   
মোটরবাইক হেলমেটের যত্ন – দেখে নিন এই টিপসগুলো

বাইকারদের জন্য হেলমেট খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সেফটি গিয়ার। এটি দুর্ঘটনার সময় আপনাকে সুরক্ষা দেবে, জীবন রক্ষা করবে। সকল যানবাহনের মধ্যে বাইক সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ একটা বাহন। বাইক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পাওয়াই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মাথায় আঘাতপ্রাপ্তরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, কারণ শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় মাথা তুলনামূলক নাজুক। তাই বাইক রাইডিংয়ের সময় অবশ্যই সেফটি গিয়ার এবং স্ট্যান্ডার্ড মানের সার্টিফাইড হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও হেলমেট আপনার চোখ-মুখ-নাককেও সুস্থ-স্বাভাবিক রাখবে। যেহেতু হেলমেট আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে সুরক্ষা দেয়, তাই এটিরও ভালোভাবে রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে। এই ব্লগে বাইকের হেলমেট এবং হেলমেটের যত্ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

হেলমেট একজন বাইকারের একান্ত ব্যবহার্য জিনিস। আপনার যেমন কিছু জিনিস আছে একান্ত ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তেমনি হেলমেটও শুধু মাত্র নিজের ব্যবহারের জন্য। হেলমেট পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখা কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। বরং নিজের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার জন্য এটি পরিছন্ন রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ আমরা অনেকেই একবার হেলমেট কিনে নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করি। পরিষ্কার-পরিছন্নতার ধার ধারিনা, এটি মোটেও স্বাস্থ্য সম্মত নয়। সাধারণ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে সহজেই হেলমেটের যত্ন নেয়া সম্ভব।

আপনি যদি রেগুলার বাইকার হন, তাহলে রেগুলার মোটরসাইকেল হেলমেট ব্যবহারে অভ্যস্থ হবেন এবং অবশ্যই হেলমেটের যত্ন নেবেন। হেলমেট ভালো রাখার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, সেগুলো মেনে চলবেন। ছোট ছোট কিছু বিষয় মেনে চললেই হেলমেট সুরক্ষিত থাকবে এবং আপনার নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভালো কাজে দেবে। এতে আপনার তেমন বাড়তি কোনো সময় অপচয় হবে না। এখানে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে হেলমেটের যত্ন নেবেন, এবং বাইকের হেলমেট স্বাস্থ্যসম্মতভাবে রাখা সংক্রান্ত কিছু টিপস। 

বাইকের হেলমেট কিভাবে পরিষ্কার করবেন

মাথার মাপ বুঝে হেলমেট কিনবেন। বাজারে অনেক স্ট্যান্ডার্ড মানের হেলমেট পাওয়া যায়। একটি স্ট্যান্ডার্ড মানের মোটরসাইকেল হেলমেটে কয়েকটি পার্ট থাকে। একবারে উপরের যে স্তরটি আমরা দেখি সেটি প্লাস্টিক বা ফাইবারের শক্ত আবরণ। উপরের খোলসের নিচে থাকে পাতলা কিন্তু মজবুত কর্কশিটের আস্তরণ, কর্কশিটের নিচে থাকে ফোমের আচ্ছাদন, এরপর পুরোটা ফোম এবং শক্ত কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে। অনেক হেলমেটের ভেতরের অংশ নেটের কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে।

বেশিরভাগ হেলমেটের ভেতরের অংশ গুলো আলাদা করা যায়। অন্তত ফোমসহ কাপড় বা নেটের আচ্ছাদন আলাদা করা যায়। এই অংশটি আপনি খুলে ভালো ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে পারবেন। তারপর রোদে শুকাতে দেবেন। আর যেসব হেলমেটের সব কিছু এটাচড, সেগুলো নিয়মিত রোদে দেবেন। তবে এগুলো ১ বছরের বেশি রেগুলার ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ ঘাম, ধুলা-ময়লা, এসব শুষ্ক আবহাওয়ায় এগুলো চিটচিটে হয়ে যাবে। অতিরিক্ত ব্যবহারে মাথা এবং মুখের ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে। যাইহোক এটাচড হেলমেট গুলো ডিটারজেন্ট, ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে, ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করলে সংক্রমণ হবার ঝুঁকি কমে যাবে। আপনি বাইকের হেলমেট পরার সময় মাথায় রুমাল বা পাতলা সুতির কাপড় পরতে পারেন।

হেলমেটের সামনের কাচ রেগুলার সাধারণ ভাবে পরিষ্কার করলেই যথেষ্ট। নরম সুতির কাপড় দিয়ে গ্লাস পরিষ্কার করলেই হবে। সপ্তাহে একদিন গ্লাস ক্লিনার দিয়ে সামনের কাচ দুই পাশে পরিষ্কার করে, পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নেবেন। নিয়মিত পরিষ্কার করলে আপনার হেলমেটের গ্লাস অনেকদিন ট্রান্সপারেন্ট থাকবে। কারণ রাতের বেলা, কুয়াশার সময়, ধুলাময় রাস্তায় পরিষ্কার হেলমেটের গ্লাস খুবই জরুরি।

অবশ্যই হেলমেটের গ্লাস নামিয়ে বাইক চালাবেন। এতে ধুলা-ময়লা, পোকা, ইটের গুঁড়া এসব চোখে পরবে না। দুর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না। তাই বাইক চালানোর সময় এগুলো হঠাৎ চোখে এসে পরলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও রাস্তার ধুলো-ময়লা চোখে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।

মোটরবাইক হেলমেটের যত্নে কিছু টিপস জেনে নিন

একজন বাইকার হিসেবে আপনি যদি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করেন, প্রথমে কোন বিষয় টি মাথায় আসবে? অবশ্যই হেলমেট। বাইকের রাইডিং গিয়ারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হেলমেট। আমাদের দেশ সহ পৃথিবীর সব দেশেই বাইক রাইডিংয়ের সময় মোটরসাইকেল হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। তাই বাইকারদের জন্য এটি রেগুলার ব্যবহার্য জিনিস। তাই হেলমেটের যত্ন নেওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

বাইকের হেলমেট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আপনার রুচিরও বহিঃপ্রকাশ। হেলমেট আমাদের মাথা সম্পূর্ণ ভাবে আবৃত করে রাখে। তাই যে কোনো বিপদের সময়, দুর্ঘটনা থেকে প্রাথমিক ভাবে বাঁচার জন্য হেলমেট আবশ্যক। বাইক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় মাথা, এটি ব্যবহারে চোখ, নাক, মুখ ও মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া থেকে বাঁচা যায়।

তাই মোটরসাইকেল হেলমেটের যত্ন নেয়া আমাদের সবারই দায়িত্বের মধ্যে পরে। হেলমেট এর ভেতর বাহির দুদিকেরই যত্ন নিতে হবে। এখানে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে বাইকের হেলমেটের যত্নে কি করা উচিৎ, এবং এ সংক্রান্ত কিছু টিপস। তাছাড়াও কি কি করা উচিৎ নয় এবং কিছু দরকারি পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

(১) নিয়মিত হেলমেট পরিস্কার করুন –

রাস্তাঘাটের ধুলা বালু, মাথার ঘাম, রোদের তাপ এসব কারণে হেলমেট খুব দ্রুত নোংরা হয়ে যায়। তাই হেলমেট নিয়মিত পরিস্কার রাখবেন। কিভাবে পরিষ্কার করবেন –

                (ক) হেলমেটের বাইরের অংশ পরিস্কার করার জন্য শ্যাম্পু বা ক্লিনিং জেল ব্যবহার করবেন। সুতি নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করবেন, এবং মুছবেন।

            (খ) ভিতরের অংশ অর্থাৎ নরম ফোমের জায়গা পরিষ্কারে একটু সময় দিতে হবে। প্রথমে চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন খুলে নেবেন, তার পর শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানিতে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখবেন। কালচে ভাব কেটে গেলে পরিস্কার পানিতে চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন কয়েকবার ঘষে ঘষে পরিষ্কার করবেন।

                 (গ) পানি থেকে তুলে চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন কোনোভাবেই নিংড়ানো যাবে না। এরপর ভালো করে পানি ঝরিয়ে, মুছে, হেলমেটটি রোদে শুকাতে দিতে হবে।

              (ঘ) হেলমেটের লাইনিং বেশি নোংরা হয়ে গেলে, খুলে পরিস্কার করে নিন, যদি খোলা যায়। ভিতরের লাইনিং পরিস্কারে শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করবেন। লাইনিং খোলা না গেলে হালকা ভাবে চেপে চেপে পরিস্কার করে নিন। ভেজা লাইনিং রোদে ভালোভাবে শুকানোর পর, হেলমেটে ভালোভাবে সেট করুন। লাইনিং খুলতে পারলে ভেতরের হার্ড-শেল অংশটাও ব্রাশ দিয়া ঘষে, পরিষ্কার করবেন।

               (ঙ) সাধারণত সব ধরণের হেলমেটের ভেতরের লাইনিং খোলা যায়না, তাই চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন এর মতো আলাদা করে ধোয়া যায় না। এধরণের হেলমেট পরিষ্কার করার জন্য হেলমেট ক্লিনিং কিট পাওয়া যায়।

হেলমেটের ভেতরের অংশ নরম ফোম এবং কাপড় দিয়ে তৈরী করা থাকে। এই জায়গাটাই সবচেয়ে বেশি নোংরা হয়। ঘাম, ধুলা-বালি এজন্য দায়ী। ভিতরের অংশ গুলো খুলে খুলে পরিষ্কার করতে হয়। ফোম এবং কাপড়ের অংশ গুলো শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। এরপর রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। আর যেসব হেলমেটের সব কিছু এটাচড সেগুলো রেগুলার ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে, রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে স্যাভলন, ডেটল এসব ব্যবহার করতে পারেন।

(২) বাইরের খোলস (Shell) পরিস্কার –

হেলমেটের বাইরের খোলস রোদের তাপ এবং ধুলা-বালুর কারণে শাইন নষ্ট হয়। তাই এমন কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে যেন রং নষ্ট না হয়। এক্ষেত্রে শ্যাম্পু বা ওয়াশিং জেল দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মোছার সময় নরম কাপড় বা টিস্যু ব্যবহার করবেন। বেশি ঘষাঘষি করবেন না, কোনো প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না।

(৩) পানি, শ্যাম্পু, ওয়াশিং জেল ব্যবহার করবেন –

মোটরসাইকেল হেলমেট পরিস্কারে পানি, শ্যাম্পু, ওয়াশিং জেল ব্যবহার করবেন। কোনো প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না। পরিস্কারের পর মোছার জন্যে কেবল ভেজা নরম কাপড় অথবা ভেজা টিস্যু ব্যবহার করুন। হেলমেটের ভেন্ট সাইড পরিষ্কারে নরম ব্রাশ বা সুতির কাপড় ব্যবহার করুন।

(৪) সতর্কতার সাথে ভাইজর পরিষ্কার করুন –

হেলমেটের ভাইজর গ্লাস খুব সেনসেটিভ একটা জায়গা। এই জায়গাটি সতর্কতার সাথে পরিষ্কার করতে হবে, না বুঝে ঘষাঘষি করলে ভাইজর নস্ট হয়ে যেতে পারে। ভাইজরের ভিতর দিয়েই আমরা সামনের দিকে দেখি, তাই এতে ধুলা ময়লার প্রলেপ জমলে বা স্ক্র্যাচ পরলে, সামনে ঠিকমতো দেখতে পাবেন না। 

আগেই বলা হয়েছে, ভাইজর গ্লাস একটি সেনসেটিভ জায়গা। ধুলা-বালু বা ময়লার আবরণ পরলে, ভাইজর সরাসরি কাপড় দিয়ে মুছবেন না। এতে ভাইজর গ্লাসে খুব সুক্ষ স্ক্র্যাচ পরবে, যা দিনের আলোয় বোঝা যায় না। এবং রাতের বেলা বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনের হেডলাইটের আলো ভাইজর গ্লাসের উপর পরলে অনেক রিফ্লেশনের হবে। আপনি সামনের রাস্তা মেজার করতে পারবেন না, তাই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ভাইজর গ্লাস পরিষ্কার করার জন্য এয়ার বা পানি ফ্লো করে ধুলা সরাবেন। তারপর নরম সুতি কাপড় বা নরম টিস্যু দিয়ে মুছবেন। বাইকের হেলমেট ব্যবহার করার পর ভাইজর আর বাইরের হার্ড-শেল রেগুলার পরিস্কার করবেন। কোনো কারণেই ভাইজরে ঘষাঘষি করবেন না, এতে দাগ পরে যাবে।

ভাইজরে তেল চিটচিটে জাতীয় প্রলেপ পরলে, শ্যাম্পো বা ওয়াশিং জেল ব্যবহার করবেন, এরপর নরম কাপড় বা নরম টিস্যু দিয়ে আলতো ভাবে মুছে ফেলবেন। খাঁজকাটা এবং কোনার অংশ পরিষ্কারে নরম কটন বাড ব্যবহার করবেন।

(৫) এয়ার ভেন্ট পরিষ্কার করবেন –

হেলমেটের ভিতরে বাতাস প্রবেশের জন্য এয়ারভেন্ট থাকে। তাই বাতাসের সাথে ধুলো ময়লাও ঢুকে যায়, রেগুলার পরিষ্কার না করলে জমে শক্ত হয়ে যায়। এয়ার ভেন্ট পরিষ্কার না করলে হেলমেটের লকিং জয়েন্ট, ভাইজর ল্যাচ এবং মডুলার জয়েন্টে ধুলা জমে জমে এগুলোর স্মুথনেস নষ্ট করে দেয়।

পরিষ্কারের সময় হেলমেটের সিনথেটিক এবং লাইনিং জয়েন্ট গুলো হালকা হয়ে গেলে রাবার টাইপ গ্লু দিয়ে লাগিয়ে ফেলবেন।

মোটরসাইকেল হেলমেটের যত্নে যে কাজ গুলো করবেন না

আমরা অনেকেই না জেনে না বুঝে, হেলমেটের অতি-যত্ন করতে গিয়ে এটির ক্ষতি করে ফেলি। আগ্রহের আতিশয্যে কিছু ভুল করে ফেলি। এই কাজ গুলো আপনারা এড়িয়ে চলবেন –

(১) হেলমেট পরিষ্কারে কখনো সরাসরি সাবান ব্যবহার করবেন না। সাবানে কেমিক্যাল থাকে, তাই রেগুলার ব্যবহারে ভাইজর গ্লাসে, ইনার সাইডে এবং হার্ড শেলে তেল চিটচিটে আবরণ পরে। এতে ধুলা ময়লার আস্তরন আরো বেশি পরে। শ্যাম্পো, ওয়াশিং জেল, ডিটারজেন্ট এসব ব্যবহার করবেন।

(২) হেলমেট পরিষ্কারে শক্ত কাপড়, এবং শুকনো টিস্যু ব্যবহার করবেন না। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ভাইজরের। ভাইজর গ্লাসে খুব সুক্ষ স্ক্র্যাচ পরবে, যা দিনের আলোতে তেমন সমস্যা না হলেও, রাতে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির আলোতে খুব সমস্যা হয়।

(৩) মোটরসাইকেল হেলমেট পরিস্কারে কোনো প্রকার রসায়নিক দ্রব্য (যেমন ফার্নিচার ক্লিনার) ব্যবহার করবেন না।

(৪) হেলমেটের পার্টস খোলার সময় বেশি চাপাচাপি করবেন না। বিশেষ করে লাইনার এবং ভাইজর আলাদা করার সময় সতর্ক থাকবেন। নাহলে লকিং রিভেট, ল্যাচ জয়েন্ট ভেঙে যেতে পারে।

(৫) হেলমেটের লাইনিং বা যেকোনো কিছু জোড়া লাগাতে কোনভাবেই ইন্ডাষ্ট্রিয়াল গ্লু ব্যবহার করবেন না। সবসময় রাবার গ্রেড গ্লু ব্যবহার করবেন।

 মোটরসাইকেল হেলমেট কিভাবে রাখবেন

বাইকের হেলমেট জামা কাপড়ের মতোই আপনার নিত্য ব্যবহার্য জিনিস। তাই এটি সঠিক ভাবে সংরক্ষন করাও গুরুত্বপূর্ণ। হেলমেট আলো বাতাস পূর্ণ, শুষ্ক, পরিষ্কার জায়গায় রাখুন। ড্রয়ার বা বদ্ধ জায়গায় রাখবেন না, এতে ফাঙ্গাস পরতে পারে, ভ্যাপসা গন্ধ হতে পারে। মাঝে মাঝে হেলমেট রোদে দেবেন, এতে স্যাতস্যাতে ভাব এবং ঘামের ভ্যাপসা গন্ধ চলে যাবে। বডি স্প্ৰে বা পারফিউম দেবেন না। হেলমেটের নিচে পাতলা রুমাল ব্যবহার করতে পারেন, এতে মাথার ঘামে প্যাডিং ভিজবে না, ভ্যাপসা গন্ধ হবে না। হেলমেট যেন পড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

কখন বাইকের হেলমেট পরিবর্তন করবেন? 

সকল জিনিসেরই একটি সাস্টেইনেবিলিটি পিরিয়ড রয়েছে। সাধারণ হেলমেট ১ বছরের মধ্যেই পরিবর্তন করতে হয়, স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট মোটামুটি ২/৩ বছর চালাতে পারবেন। তাছাড়াও হেলমেট দুর্ঘটনাজনিত কারনে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বায়ূ দূষণ, রোদের তাপ, ইউভি রশ্মি ও বিভিন্ন আবহাওয়া জনিত কারনে হেলমেট এর সাস্টেইনেবিলিটি নষ্ট হতে থাকে। আপনার মাথার সাথে কম্ফোর্টেবল ভাবে স্যুট করে এমন স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট কিনবেন। নষ্ট বা জোড়াতালি দেওয়া হেলমেট ব্যবহার করবেন না, নিজের ব্যবহার করা হেলমেট অন্যকে ব্যবহার করতে দেবেন না।

প্রায় সব স্ট্যান্ডার্ড হেলমেটে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওয়ারেন্টি পিরিয়ড দিয়ে থাকে। এই সময়ের পর হেলমেটের উপরের শক্ত অংশ দুর্বল হয়ে যায়; ভিতরের ভাইজর, ফোম, লাইজারের জয়েন্ট আলগা হয়ে যায়। এই অবস্থায় হেলমেট আপনাকে যথেষ্ট সুরক্ষা দেবে না। 

পরিশেষে, নিশ্চিত ভাবে জেনে রাখুন হেলমেটের যত্নে সচেতন না হলে, এটি যেকোনো দুর্ঘটনায় আপনার মাথা বাঁচানোয় কাজে দিবে না। একটি হেলমেট একজন বাইকারের রুচির পরিচয় বহন করে। নিয়ম মেনে নিয়মিত যত্ন করলে হেলমেট দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। এখনকার দিনে বাইকাররা তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে বেশ সচেতন। তাই সেফটি গিয়ার ব্যবহারে অনেক পজিটিভ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আপনি আপনার বাইকের হেলমেট যত বেশি সিকিউর রাখবেন, এটিও আপনাকে ততো বেশি সুরক্ষা দেবে। তাই নিয়মিত হেলমেটের যত্ন নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাইকের যত্ন এবং বাইক সংক্রান্ত যেকোনো ধারণা পেতে ভিজিট করুন বাইকস গাইডে। এখানে আপনি নতুন-পুরোনো বাইক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য, এক্সপার্ট রিভিউ, আরো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন।

বাইকারদের জন্য হেলমেট খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সেফটি গিয়ার। এটি দুর্ঘটনার সময় আপনাকে সুরক্ষা দেবে, জীবন রক্ষা করবে। সকল যানবাহনের মধ্যে বাইক সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ একটা বাহন। বাইক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পাওয়াই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মাথায় আঘাতপ্রাপ্তরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, কারণ শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় মাথা তুলনামূলক নাজুক। তাই বাইক রাইডিংয়ের সময় অবশ্যই সেফটি গিয়ার এবং স্ট্যান্ডার্ড মানের সার্টিফাইড হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও হেলমেট আপনার চোখ-মুখ-নাককেও সুস্থ-স্বাভাবিক রাখবে। যেহেতু হেলমেট আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে সুরক্ষা দেয়, তাই এটিরও ভালোভাবে রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে। এই ব্লগে বাইকের হেলমেট এবং হেলমেটের যত্ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

হেলমেট একজন বাইকারের একান্ত ব্যবহার্য জিনিস। আপনার যেমন কিছু জিনিস আছে একান্ত ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তেমনি হেলমেটও শুধু মাত্র নিজের ব্যবহারের জন্য। হেলমেট পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখা কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। বরং নিজের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার জন্য এটি পরিছন্ন রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ আমরা অনেকেই একবার হেলমেট কিনে নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করি। পরিষ্কার-পরিছন্নতার ধার ধারিনা, এটি মোটেও স্বাস্থ্য সম্মত নয়। সাধারণ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে সহজেই হেলমেটের যত্ন নেয়া সম্ভব।

আপনি যদি রেগুলার বাইকার হন, তাহলে রেগুলার মোটরসাইকেল হেলমেট ব্যবহারে অভ্যস্থ হবেন এবং অবশ্যই হেলমেটের যত্ন নেবেন। হেলমেট ভালো রাখার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, সেগুলো মেনে চলবেন। ছোট ছোট কিছু বিষয় মেনে চললেই হেলমেট সুরক্ষিত থাকবে এবং আপনার নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভালো কাজে দেবে। এতে আপনার তেমন বাড়তি কোনো সময় অপচয় হবে না। এখানে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে হেলমেটের যত্ন নেবেন, এবং বাইকের হেলমেট স্বাস্থ্যসম্মতভাবে রাখা সংক্রান্ত কিছু টিপস। 

বাইকের হেলমেট কিভাবে পরিষ্কার করবেন

মাথার মাপ বুঝে হেলমেট কিনবেন। বাজারে অনেক স্ট্যান্ডার্ড মানের হেলমেট পাওয়া যায়। একটি স্ট্যান্ডার্ড মানের মোটরসাইকেল হেলমেটে কয়েকটি পার্ট থাকে। একবারে উপরের যে স্তরটি আমরা দেখি সেটি প্লাস্টিক বা ফাইবারের শক্ত আবরণ। উপরের খোলসের নিচে থাকে পাতলা কিন্তু মজবুত কর্কশিটের আস্তরণ, কর্কশিটের নিচে থাকে ফোমের আচ্ছাদন, এরপর পুরোটা ফোম এবং শক্ত কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে। অনেক হেলমেটের ভেতরের অংশ নেটের কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে।

বেশিরভাগ হেলমেটের ভেতরের অংশ গুলো আলাদা করা যায়। অন্তত ফোমসহ কাপড় বা নেটের আচ্ছাদন আলাদা করা যায়। এই অংশটি আপনি খুলে ভালো ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে পারবেন। তারপর রোদে শুকাতে দেবেন। আর যেসব হেলমেটের সব কিছু এটাচড, সেগুলো নিয়মিত রোদে দেবেন। তবে এগুলো ১ বছরের বেশি রেগুলার ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ ঘাম, ধুলা-ময়লা, এসব শুষ্ক আবহাওয়ায় এগুলো চিটচিটে হয়ে যাবে। অতিরিক্ত ব্যবহারে মাথা এবং মুখের ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে। যাইহোক এটাচড হেলমেট গুলো ডিটারজেন্ট, ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে, ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করলে সংক্রমণ হবার ঝুঁকি কমে যাবে। আপনি বাইকের হেলমেট পরার সময় মাথায় রুমাল বা পাতলা সুতির কাপড় পরতে পারেন।

হেলমেটের সামনের কাচ রেগুলার সাধারণ ভাবে পরিষ্কার করলেই যথেষ্ট। নরম সুতির কাপড় দিয়ে গ্লাস পরিষ্কার করলেই হবে। সপ্তাহে একদিন গ্লাস ক্লিনার দিয়ে সামনের কাচ দুই পাশে পরিষ্কার করে, পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নেবেন। নিয়মিত পরিষ্কার করলে আপনার হেলমেটের গ্লাস অনেকদিন ট্রান্সপারেন্ট থাকবে। কারণ রাতের বেলা, কুয়াশার সময়, ধুলাময় রাস্তায় পরিষ্কার হেলমেটের গ্লাস খুবই জরুরি।

অবশ্যই হেলমেটের গ্লাস নামিয়ে বাইক চালাবেন। এতে ধুলা-ময়লা, পোকা, ইটের গুঁড়া এসব চোখে পরবে না। দুর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না। তাই বাইক চালানোর সময় এগুলো হঠাৎ চোখে এসে পরলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও রাস্তার ধুলো-ময়লা চোখে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।

মোটরবাইক হেলমেটের যত্নে কিছু টিপস জেনে নিন

একজন বাইকার হিসেবে আপনি যদি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করেন, প্রথমে কোন বিষয় টি মাথায় আসবে? অবশ্যই হেলমেট। বাইকের রাইডিং গিয়ারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হেলমেট। আমাদের দেশ সহ পৃথিবীর সব দেশেই বাইক রাইডিংয়ের সময় মোটরসাইকেল হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। তাই বাইকারদের জন্য এটি রেগুলার ব্যবহার্য জিনিস। তাই হেলমেটের যত্ন নেওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

বাইকের হেলমেট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আপনার রুচিরও বহিঃপ্রকাশ। হেলমেট আমাদের মাথা সম্পূর্ণ ভাবে আবৃত করে রাখে। তাই যে কোনো বিপদের সময়, দুর্ঘটনা থেকে প্রাথমিক ভাবে বাঁচার জন্য হেলমেট আবশ্যক। বাইক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় মাথা, এটি ব্যবহারে চোখ, নাক, মুখ ও মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া থেকে বাঁচা যায়।

তাই মোটরসাইকেল হেলমেটের যত্ন নেয়া আমাদের সবারই দায়িত্বের মধ্যে পরে। হেলমেট এর ভেতর বাহির দুদিকেরই যত্ন নিতে হবে। এখানে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে বাইকের হেলমেটের যত্নে কি করা উচিৎ, এবং এ সংক্রান্ত কিছু টিপস। তাছাড়াও কি কি করা উচিৎ নয় এবং কিছু দরকারি পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

(১) নিয়মিত হেলমেট পরিস্কার করুন –

রাস্তাঘাটের ধুলা বালু, মাথার ঘাম, রোদের তাপ এসব কারণে হেলমেট খুব দ্রুত নোংরা হয়ে যায়। তাই হেলমেট নিয়মিত পরিস্কার রাখবেন। কিভাবে পরিষ্কার করবেন –

                (ক) হেলমেটের বাইরের অংশ পরিস্কার করার জন্য শ্যাম্পু বা ক্লিনিং জেল ব্যবহার করবেন। সুতি নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করবেন, এবং মুছবেন।

            (খ) ভিতরের অংশ অর্থাৎ নরম ফোমের জায়গা পরিষ্কারে একটু সময় দিতে হবে। প্রথমে চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন খুলে নেবেন, তার পর শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানিতে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রাখবেন। কালচে ভাব কেটে গেলে পরিস্কার পানিতে চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন কয়েকবার ঘষে ঘষে পরিষ্কার করবেন।

                 (গ) পানি থেকে তুলে চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন কোনোভাবেই নিংড়ানো যাবে না। এরপর ভালো করে পানি ঝরিয়ে, মুছে, হেলমেটটি রোদে শুকাতে দিতে হবে।

              (ঘ) হেলমেটের লাইনিং বেশি নোংরা হয়ে গেলে, খুলে পরিস্কার করে নিন, যদি খোলা যায়। ভিতরের লাইনিং পরিস্কারে শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করবেন। লাইনিং খোলা না গেলে হালকা ভাবে চেপে চেপে পরিস্কার করে নিন। ভেজা লাইনিং রোদে ভালোভাবে শুকানোর পর, হেলমেটে ভালোভাবে সেট করুন। লাইনিং খুলতে পারলে ভেতরের হার্ড-শেল অংশটাও ব্রাশ দিয়া ঘষে, পরিষ্কার করবেন।

               (ঙ) সাধারণত সব ধরণের হেলমেটের ভেতরের লাইনিং খোলা যায়না, তাই চিকপ্যাড এবং চিন কার্টেইন এর মতো আলাদা করে ধোয়া যায় না। এধরণের হেলমেট পরিষ্কার করার জন্য হেলমেট ক্লিনিং কিট পাওয়া যায়।

হেলমেটের ভেতরের অংশ নরম ফোম এবং কাপড় দিয়ে তৈরী করা থাকে। এই জায়গাটাই সবচেয়ে বেশি নোংরা হয়। ঘাম, ধুলা-বালি এজন্য দায়ী। ভিতরের অংশ গুলো খুলে খুলে পরিষ্কার করতে হয়। ফোম এবং কাপড়ের অংশ গুলো শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। এরপর রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। আর যেসব হেলমেটের সব কিছু এটাচড সেগুলো রেগুলার ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে, রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে স্যাভলন, ডেটল এসব ব্যবহার করতে পারেন।

(২) বাইরের খোলস (Shell) পরিস্কার –

হেলমেটের বাইরের খোলস রোদের তাপ এবং ধুলা-বালুর কারণে শাইন নষ্ট হয়। তাই এমন কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে যেন রং নষ্ট না হয়। এক্ষেত্রে শ্যাম্পু বা ওয়াশিং জেল দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মোছার সময় নরম কাপড় বা টিস্যু ব্যবহার করবেন। বেশি ঘষাঘষি করবেন না, কোনো প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না।

(৩) পানি, শ্যাম্পু, ওয়াশিং জেল ব্যবহার করবেন –

মোটরসাইকেল হেলমেট পরিস্কারে পানি, শ্যাম্পু, ওয়াশিং জেল ব্যবহার করবেন। কোনো প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না। পরিস্কারের পর মোছার জন্যে কেবল ভেজা নরম কাপড় অথবা ভেজা টিস্যু ব্যবহার করুন। হেলমেটের ভেন্ট সাইড পরিষ্কারে নরম ব্রাশ বা সুতির কাপড় ব্যবহার করুন।

(৪) সতর্কতার সাথে ভাইজর পরিষ্কার করুন –

হেলমেটের ভাইজর গ্লাস খুব সেনসেটিভ একটা জায়গা। এই জায়গাটি সতর্কতার সাথে পরিষ্কার করতে হবে, না বুঝে ঘষাঘষি করলে ভাইজর নস্ট হয়ে যেতে পারে। ভাইজরের ভিতর দিয়েই আমরা সামনের দিকে দেখি, তাই এতে ধুলা ময়লার প্রলেপ জমলে বা স্ক্র্যাচ পরলে, সামনে ঠিকমতো দেখতে পাবেন না। 

আগেই বলা হয়েছে, ভাইজর গ্লাস একটি সেনসেটিভ জায়গা। ধুলা-বালু বা ময়লার আবরণ পরলে, ভাইজর সরাসরি কাপড় দিয়ে মুছবেন না। এতে ভাইজর গ্লাসে খুব সুক্ষ স্ক্র্যাচ পরবে, যা দিনের আলোয় বোঝা যায় না। এবং রাতের বেলা বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনের হেডলাইটের আলো ভাইজর গ্লাসের উপর পরলে অনেক রিফ্লেশনের হবে। আপনি সামনের রাস্তা মেজার করতে পারবেন না, তাই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ভাইজর গ্লাস পরিষ্কার করার জন্য এয়ার বা পানি ফ্লো করে ধুলা সরাবেন। তারপর নরম সুতি কাপড় বা নরম টিস্যু দিয়ে মুছবেন। বাইকের হেলমেট ব্যবহার করার পর ভাইজর আর বাইরের হার্ড-শেল রেগুলার পরিস্কার করবেন। কোনো কারণেই ভাইজরে ঘষাঘষি করবেন না, এতে দাগ পরে যাবে।

ভাইজরে তেল চিটচিটে জাতীয় প্রলেপ পরলে, শ্যাম্পো বা ওয়াশিং জেল ব্যবহার করবেন, এরপর নরম কাপড় বা নরম টিস্যু দিয়ে আলতো ভাবে মুছে ফেলবেন। খাঁজকাটা এবং কোনার অংশ পরিষ্কারে নরম কটন বাড ব্যবহার করবেন।

(৫) এয়ার ভেন্ট পরিষ্কার করবেন –

হেলমেটের ভিতরে বাতাস প্রবেশের জন্য এয়ারভেন্ট থাকে। তাই বাতাসের সাথে ধুলো ময়লাও ঢুকে যায়, রেগুলার পরিষ্কার না করলে জমে শক্ত হয়ে যায়। এয়ার ভেন্ট পরিষ্কার না করলে হেলমেটের লকিং জয়েন্ট, ভাইজর ল্যাচ এবং মডুলার জয়েন্টে ধুলা জমে জমে এগুলোর স্মুথনেস নষ্ট করে দেয়।

পরিষ্কারের সময় হেলমেটের সিনথেটিক এবং লাইনিং জয়েন্ট গুলো হালকা হয়ে গেলে রাবার টাইপ গ্লু দিয়ে লাগিয়ে ফেলবেন।

মোটরসাইকেল হেলমেটের যত্নে যে কাজ গুলো করবেন না

আমরা অনেকেই না জেনে না বুঝে, হেলমেটের অতি-যত্ন করতে গিয়ে এটির ক্ষতি করে ফেলি। আগ্রহের আতিশয্যে কিছু ভুল করে ফেলি। এই কাজ গুলো আপনারা এড়িয়ে চলবেন –

(১) হেলমেট পরিষ্কারে কখনো সরাসরি সাবান ব্যবহার করবেন না। সাবানে কেমিক্যাল থাকে, তাই রেগুলার ব্যবহারে ভাইজর গ্লাসে, ইনার সাইডে এবং হার্ড শেলে তেল চিটচিটে আবরণ পরে। এতে ধুলা ময়লার আস্তরন আরো বেশি পরে। শ্যাম্পো, ওয়াশিং জেল, ডিটারজেন্ট এসব ব্যবহার করবেন।

(২) হেলমেট পরিষ্কারে শক্ত কাপড়, এবং শুকনো টিস্যু ব্যবহার করবেন না। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ভাইজরের। ভাইজর গ্লাসে খুব সুক্ষ স্ক্র্যাচ পরবে, যা দিনের আলোতে তেমন সমস্যা না হলেও, রাতে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির আলোতে খুব সমস্যা হয়।

(৩) মোটরসাইকেল হেলমেট পরিস্কারে কোনো প্রকার রসায়নিক দ্রব্য (যেমন ফার্নিচার ক্লিনার) ব্যবহার করবেন না।

(৪) হেলমেটের পার্টস খোলার সময় বেশি চাপাচাপি করবেন না। বিশেষ করে লাইনার এবং ভাইজর আলাদা করার সময় সতর্ক থাকবেন। নাহলে লকিং রিভেট, ল্যাচ জয়েন্ট ভেঙে যেতে পারে।

(৫) হেলমেটের লাইনিং বা যেকোনো কিছু জোড়া লাগাতে কোনভাবেই ইন্ডাষ্ট্রিয়াল গ্লু ব্যবহার করবেন না। সবসময় রাবার গ্রেড গ্লু ব্যবহার করবেন।

 মোটরসাইকেল হেলমেট কিভাবে রাখবেন

বাইকের হেলমেট জামা কাপড়ের মতোই আপনার নিত্য ব্যবহার্য জিনিস। তাই এটি সঠিক ভাবে সংরক্ষন করাও গুরুত্বপূর্ণ। হেলমেট আলো বাতাস পূর্ণ, শুষ্ক, পরিষ্কার জায়গায় রাখুন। ড্রয়ার বা বদ্ধ জায়গায় রাখবেন না, এতে ফাঙ্গাস পরতে পারে, ভ্যাপসা গন্ধ হতে পারে। মাঝে মাঝে হেলমেট রোদে দেবেন, এতে স্যাতস্যাতে ভাব এবং ঘামের ভ্যাপসা গন্ধ চলে যাবে। বডি স্প্ৰে বা পারফিউম দেবেন না। হেলমেটের নিচে পাতলা রুমাল ব্যবহার করতে পারেন, এতে মাথার ঘামে প্যাডিং ভিজবে না, ভ্যাপসা গন্ধ হবে না। হেলমেট যেন পড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

কখন বাইকের হেলমেট পরিবর্তন করবেন? 

সকল জিনিসেরই একটি সাস্টেইনেবিলিটি পিরিয়ড রয়েছে। সাধারণ হেলমেট ১ বছরের মধ্যেই পরিবর্তন করতে হয়, স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট মোটামুটি ২/৩ বছর চালাতে পারবেন। তাছাড়াও হেলমেট দুর্ঘটনাজনিত কারনে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বায়ূ দূষণ, রোদের তাপ, ইউভি রশ্মি ও বিভিন্ন আবহাওয়া জনিত কারনে হেলমেট এর সাস্টেইনেবিলিটি নষ্ট হতে থাকে। আপনার মাথার সাথে কম্ফোর্টেবল ভাবে স্যুট করে এমন স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট কিনবেন। নষ্ট বা জোড়াতালি দেওয়া হেলমেট ব্যবহার করবেন না, নিজের ব্যবহার করা হেলমেট অন্যকে ব্যবহার করতে দেবেন না।

প্রায় সব স্ট্যান্ডার্ড হেলমেটে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওয়ারেন্টি পিরিয়ড দিয়ে থাকে। এই সময়ের পর হেলমেটের উপরের শক্ত অংশ দুর্বল হয়ে যায়; ভিতরের ভাইজর, ফোম, লাইজারের জয়েন্ট আলগা হয়ে যায়। এই অবস্থায় হেলমেট আপনাকে যথেষ্ট সুরক্ষা দেবে না। 

পরিশেষে, নিশ্চিত ভাবে জেনে রাখুন হেলমেটের যত্নে সচেতন না হলে, এটি যেকোনো দুর্ঘটনায় আপনার মাথা বাঁচানোয় কাজে দিবে না। একটি হেলমেট একজন বাইকারের রুচির পরিচয় বহন করে। নিয়ম মেনে নিয়মিত যত্ন করলে হেলমেট দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। এখনকার দিনে বাইকাররা তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে বেশ সচেতন। তাই সেফটি গিয়ার ব্যবহারে অনেক পজিটিভ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আপনি আপনার বাইকের হেলমেট যত বেশি সিকিউর রাখবেন, এটিও আপনাকে ততো বেশি সুরক্ষা দেবে। তাই নিয়মিত হেলমেটের যত্ন নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাইকের যত্ন এবং বাইক সংক্রান্ত যেকোনো ধারণা পেতে ভিজিট করুন বাইকস গাইডে। এখানে আপনি নতুন-পুরোনো বাইক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য, এক্সপার্ট রিভিউ, আরো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন।

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy Helmetsbikroy
Axxis Dream Helmet For Sell for Sale

Axxis Dream Helmet For Sell

MEMBER
Tk 4,550
1 hour ago
rapid RS dual Viajor for Sale

rapid RS dual Viajor

MEMBER
Tk 3,300
3 hours ago
SMK.. washable Helmet for Sale

SMK.. washable Helmet

MEMBER
Tk 1,650
3 hours ago
Helmet for sell for Sale

Helmet for sell

MEMBER
Tk 1,999
4 hours ago
Helmet for sell for Sale

Helmet for sell

MEMBER
Tk 700
5 hours ago
Buy Auto partsbikroy
সাইকেল পার্টস for Sale

সাইকেল পার্টস

MEMBER
Tk 700
11 minutes ago
Axxis Dream Helmet For Sell for Sale

Axxis Dream Helmet For Sell

MEMBER
Tk 4,550
1 hour ago
Fz s v2 silencer guard for Sale

Fz s v2 silencer guard

MEMBER
Tk 450
1 hour ago
rapid RS dual Viajor for Sale

rapid RS dual Viajor

MEMBER
Tk 3,300
3 hours ago
SMK.. washable Helmet for Sale

SMK.. washable Helmet

MEMBER
Tk 1,650
3 hours ago
+ Post an ad on Bikroy