স্কুটার না ই-বাইক? কোনটি আপনার জন্য ভালো অপশন!

29 Mar, 2023   
স্কুটার না ই-বাইক? কোনটি আপনার জন্য ভালো অপশন!

বাইক শুধুমাত্র জনপ্রিয়ই নয়, এখনকার দিনে সবার কাছে এটি একটি প্রয়োজনীয় বাহন। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, যোগাযোগের সহজ মাধ্যম, স্বল্প দূরত্বের জন্য উপযোগী, আরো বিভিন্ন কারণে ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটারের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এসব সহজে চালানো যায়, কন্ট্রোল করা খুব সহজ। তবুও এই দুটির মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে।

ই-বাইক অনেকটা প্রচলিত জ্বালানি চালিত বাইক গুলোর মতোই। মূল পার্থক্য হল ই-বাইকে প্রপালশনের জন্য একটি বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহার করা হয়। দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য এই বাইক গুলো স্ট্যান্ডার্ড। স্কুটার ২০০০ দশকের পর থেকে জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এসব বাইক গ্রিপ থ্রোটল ব্যবহার করেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এসব বাইক তিন চাকারও হয়। স্কুটার কন্ট্রোল করাও খুব সহজ। ই-বাইক গুলো সাধারণত স্কুটারগুলোর চেয়ে দ্রুত গতির হয়। তবে স্কুটার চালানো খুবই সহজ। 

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে মূলত মানুষ বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের দিকে ঝুঁকছে। জ্বালানি খরচ বাঁচাতে, যানজট এড়াতে, এবং স্বল্প দূরত্বে সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে ব্যবহারে, বেশিরভাগ মানুষ এখন বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের প্রতি আগ্রহ হচ্ছে। গত এক যুগে পুরো পৃথিবীতে ই-স্কুটার এবং ইলেকট্রিক বাইকের ডিমান্ড অনেক বেড়েছে। সব বয়সী এবং সকল পেশাজীবী মানুষদের মধ্যে এসব বাইকের চাহিদা তৈরী হয়েছে। বিশেষত মানুষ প্রয়োজনের খাতিরেই এসব বাইক ব্যবহার করছেন।

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার, বাহন হিসেবে যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি। বাজারে বিভিন্ন জ্বালানি চালিত স্কুটার পাওয়া যায় এবং এগুলো বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে বাজারে এসব স্কুটারের পাশাপাশি ইলেকট্রিক স্কুটারও পাওয়া যাচ্ছে। গ্রাহকরা এসব ই-স্কুটার ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। ইলেকট্রিক স্কুটার এবং ইলেকট্রিক বাইক ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়। চায়না, জাপান এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এসব বাইক অহরহ দেখা যায়।

এধরণের বাইক কেনার আগে চিন্তা করুন, আপনি কোন ধরণের বাইকে রাইড করে কমফোর্ট ফীল করেন। আমাদের দেশে বৈদ্যুতিক বাইক, স্কুটার দুটোই এভেইলেবল। তবে কেনার আগে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই ব্লগে বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের পার্থক্য, ভালো-মন্দ দিক, কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে, এসব বিষয় সহ, বর্তমান ই-বাইকের দাম-দর, এবং স্কুটারের বাজার নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

ই-বাইক এবং স্কুটারের মধ্যে পার্থক্য

আপনার যদি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এবং স্বল্প দূরত্বে পথ চলার জন্য বাইকের প্রয়োজন হয়, তাহলে স্কুটার বা ইলেকট্রিক বাইক, দুটোই আপনার জন্যে সাশ্রয়ী হবে। তবে বড় ব্যাটারি, উচ্চ শক্তি এবং সিটিং পজিশন বিবেচনা করলে ই-বাইক আপনার জন্যে ভালো হবে। স্কুটার গুলোর ব্যাটারি ছোট এবং সিটিং পজিশনও ছোট তাই কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। তবে মহিলা রাইডারদের জন্যে এসব বাইক খুব কম্ফোর্টেবল।

গণ পরিবহন সংকট এবং বিশৃঙ্খলা, যানজটপূর্ণ রাস্তা, ইত্যাদি কারণে অনেক কর্ম ঘন্টা নষ্ট হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে, বিদ্যুৎ চালিত বাইক হতে পারে আপনার সমাধান। ইলেকট্রিক বাইক গুলোর ভারী ওজন এবং স্ট্যাবিলিটি সিটি রাইডিংয়ের জন্য বেশ ভালো। স্কুটার হালকা হওয়ায় কট্রোল করা সহজ কিন্তু বেশি গতিতে চালালে, রাস্তা উঁচু নিচু থাকলে উল্টে যেতে পারে। তাছাড়া ই-বাইক বা স্কুটি কোনোটাই হাইওয়ে রাস্তার জন্য উপযোগী নয়।

বৈদ্যুতিক স্কুটার সাধারণত বৈদ্যুতিক বাইকের চেয়ে আরো বেশি সাশ্রয়ী এবং মেইনটেন্যান্স করা সহজ। যারা বাজেট-বান্ধব এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী বাইক চান তাদের জন্য স্কুটার ভালো হতে পারে। তবে ইলেকট্রিক বাইক, স্কুটারের চেয়ে শক্তিশালী হওয়ায় উঁচু রাস্তায় ভালোভাবে চালানো যায়। আপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ঠিক করবেন কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত হবে।

স্কুটার এবং ই-বাইক দুটোতেই কম যন্ত্রাংশ থাকে, এতে বাইক কন্ট্রোল করা সহজ হয়। তবে টেকসই এর দিক থেকে চিন্তা করলে এধরণের বাইক, জ্বালানি চালিত বাইক থেকে পিছিয়ে থাকবে। তাছাড়া এসব বাইক খুব বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়না। দুই থেকে তিন বছর পর পর ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয়।

যাইহোক, বৈদ্যুতিক বাইক বা স্কুটার কোনোটাই দীর্ঘ ভ্রমণ এর জন্য উপযুক্ত নয়। এগুলো স্বল্প দূরত্বে ব্যবহারের জন্য তৈরী করা হয়েছে। বাইক কেনার আগে অবশ্যই এই বিষয় গুলো চিন্তা করবেন। ব্লগের শেষ অংশে ই-বাইকের দাম এবং স্কুটারের বাজার দর নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।

ই-বাইক না স্কুটার? কোনটি কিনবেন?

ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটার দৈনন্দিন যাতায়াত এবং স্বল্প দূরত্বের জন্য দুর্দান্ত একটি বাহন। প্রয়োজনীয় বাহন হিসেবে এটির জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ই-বাইক দেখতে সাধারণ জ্বালানি চালিত বাইকের মতোই। এগুলো কালো ধোঁয়া বা কার্বন নিঃসরণ করে না, তাই পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। এ বাইক গুলো শব্দ দূষণও করে না। উঁচু খাড়া রাস্তা ছাড়া, সব ধরণের রাস্তায় সহজেই চলাচল করতে পারবেন। এসব বাইকের ইঞ্জিন শক্তি কম বলে খাড়া বা উঁচু রাস্তায় গতি উঠতে পারেনা। এই সমস্যা বাদে, এসব বাইক চালানো খুব সহজ।

শহরাঞ্চলের রাস্তায় যোগাযোগের জন্য এসব বাইক অনেক সুবিধাজনক। শহরের যানজট, গণ পরিবহনের সমস্যা এড়াতে, স্বল্প দূরত্ব যাতায়াতের জন্য, এসব বাইক অনেক সুবিধাজনক। ঘরেই চার্জ দেয়া যায়, জ্বালানি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তবে এসব বাইক নিয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারবেন না, বেশি গতিও তুলতে পারবেন না। ইলেকট্রিক স্কুটার, অনেকটা ইলেকট্রিক বাইকের মতোই। তবে ব্যাটারি ছোট বলে এসব বাইক অনেক হালকা। তাই সহজে চালাতে পারলেও, রেঞ্জ হবে কম। তবে পেট্রল/ডিজেল স্কুটারের সুবিধা হল এটি নিয়ে যে কোন স্থানে ঝামেলাবীহিনভাবে যাওয়া যায় এবং রেঞ্জের চিন্তা থাকে না। তাই আপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে বাইক কিনবেন।

ডিজেল চালিত বেশ কিছু স্কুটার দেশের বাজারে অনেক জনপ্রিয়। এগুলোর মধ্যে হোন্ডা অ্যাক্টিভ, টিভিএস জুপিটার, টিভিএস এন্ট্রক বহুল বিক্রিত বাইক।

আজকের ব্লগ সাজানো হয়েছে ইলেকট্রিক বাইক নাকি ইলেকট্রিক স্কুটার কোনটি কিনবেন এ প্রসঙ্গে। এখানে ই-বাইকের দাম এবং স্কুটারের দাম, পার্থক্য এবং স্পেসিফিকেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এটি আপনাদের উপকারে আসবে, এবং আপনার জন্য উপযুক্ত বাইক কিনতে সাহায্য করবে।

ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটারের স্পেসিফিকেশন ডিফারেন্স

         (১) ইঞ্জিন পাওয়ার এবং পারফরমেন্স

এসব বাইক এবং স্কুটারে ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন নেই, ব্যাটারি চালিত মোটরে চলে। ই-বাইকের মোটরের ইঞ্জিনে পাওয়ার, স্কুটারের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে ই-স্কুটারের এক্সেলেরেশন, বৈদ্যুতিক বাইকের চেয়ে তুলনামূলক ভালো, তাই তারাতারি পাওয়ার জেনারেট করতে পারে। তাই সিটি রাইডিংয়ে, এবং স্বল্প দুরত্বে তুলনামূলক সাধারণ গতিতে কম্ফোর্টেবল ভাবে যাওয়া যায়। চার্জ করতেও কম সময় লাগে। ওভারঅল ই-স্কুটারের পারফরমেন্স বেশ ভালো। ইলেক্ট্রিক বাইকের ব্যাটারি পাওয়ার বেশি বলে, তুলনামূলক বেশি গতি পাওয়া যায়। তবে ফুল চার্জ করতে অনেক সময় লাগে, প্রায় ৭-৮ ঘন্টা।

         (২) ব্যাটারি ক্ষমতা

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার দুটোই ব্যাটারি পাওয়ারে চলে। তাই ব্যাটারির ক্ষমতা যত বেশি হবে, বাইক তত পাওয়ারফুল হবে। বৈদ্যুতিক বাইকের ব্যাটারি, স্কুটারের ব্যাটারির চেয়ে বড় এবং কার্যক্ষমতা বেশি হয়। ব্যাটারিচালিত বাহনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এগুলোর গতি, ইঞ্জিন চালিত বাহনের চেয়ে কম হয়।

সাধারণত এসব বাইক হাল্কা হওয়ায় বেশি ওজন নিতে পারে না। যাদের ওজন বেশি এবং বেশি ওজনের পণ্য পরিবহন করতে চান, তাদের এসব বাইক আরো একটু চিন্তা করে কিনতে হবে। ই-বাইকে আপনি পিলিয়ন বা পণ্য পরিবহন করতে পারবেন, এই বাইক গুলো এভাবেই তৈরী করা হয়েছে। তবে খুব বেশি ওজন আপনি নিতে পারবেন না।

         (৩) গতি এবং পরিসীমা

ই-বাইক এবং ই-স্কুটার দুটোতেই পাওয়ারফুল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। তবে সাধারণত ইলেকট্রিক বাইকের ব্যাটারি কিছুটা বড় হয়। এসব বাইকে ৫০-৮০ কিমি মাইলেজ পাওয়া যায় ফুল চার্জে। ই-স্কুটার গুলোর ব্যাটারি কিছুটা ছোট হওয়ায়  এগুলো বেশ হালকা হয়, এবং মাইলেজ ৪০-৬০ কিমি এর মধ্যে থাকে। ই-স্কুটার বা বাইক কোনটিরই গতি বেশি হয় না। জ্বালানি চালিত বাইকের সাথে এসব বাইক কখনোই পেরে উঠে না। তবে বৈদ্যুতিক বাইক, স্কুটারের চেয়ে কিছুটা বেশি গতি সম্পন্ন হয়। বৈদ্যুতিক বাইকের সর্বোচ্চ গতি ২০ এমপিএইচ, এবং ইলেকট্রিক স্কুটারের সর্বোচ্চ গতি ১৫ এমপিএইচ  হয়ে থাকে। গতি এবং পাওয়ার এর উপর বাইকের দাম নির্ভর করে। বৈদ্যুতিক বাইক বা স্কুটার কেনার আগে অবশ্যই পিকআপ পরীক্ষা করে নেবেন। কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ি ইঞ্জিন স্টার্ট করার সাথে সাথে দ্রুত টর্ক উঠিয়ে ফেলে, এতে দ্রুত স্পিড বেড়ে যায়।

         (৪) বাইকের দাম এবং পার্টসের এভাইবিলিটি

জ্বালানি চালিত বাইকের তুলনায়, বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের দাম বেশ কমই বলা যায়। বাজারে বিভিন্ন দামের বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার পাবেন। তবে এসব বাইকের দাম ইলেকট্রিক স্কুটারের চেয়ে কিছুটা বেশি। ই-স্কুটারে ব্যাটারি ছোট এবং পার্টস কম বলে দামও কিছুটা কম হয়। সাধারণত ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এগুলোর দাম হয়ে থাকে। ব্যাটারির ক্ষমতা, গতিবেগ যত বেশি হয়, এগুলোর দামও ততই বাড়তে থাকে। ব্লগের শেষ অংশে এসব বাইকের দাম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের পার্টস কম থাকায় এগুলোর সার্ভিসিং খরচ কম। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে, জ্বালানি চালিত বাইকের তুলনায় এসব বাইক বেশি টেকসই নয়। বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তবে জ্বালানি চালিত স্কুটার চলে দীর্ঘদিন। এসব বাইকের ব্যাটারি ২-৩ বছরের মধ্যে পরিবর্তন করতে হয়। এসব বাইকের সব পার্টস বাজারে এভেইলেবল নয়। তাই কেনার আগে বাজার যাচাই করবেন, কোম্পানি কি কি আফটার সেলস সার্ভিস দিবে ভালো ভাবে জেনে নেবেন।

         (৫) এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি

জ্বালানি চালিত বাইকের তুলনায় বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার দুটোই পরিবেশ বান্ধব। এসব বাইক কালো ধোঁয়া বা কার্বন নিঃসরণ করে না, শব্দ দূষণ করে না, তাই পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ অতিরিক্ত হওয়ায়, ওজোন স্তরে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বৈদ্যুতিক যানবাহন গুলো পরিবেশের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।

         (৬) হুইল সাইজ

ইলেকট্রিক বাইকের চাকার সাইজ, স্কুটারের চেয়ে বেশ বড়। এই কারণে বিদ্যুৎ চালিত বাইকে যেকোনো রাস্তায় চালানো সহজ, (উঁচু বা খাড়া রাস্তা ছাড়া), কিছুটা স্পীডি হয়। ই-স্কুটারের চাকা ছোট হওয়ায় যেকোনো রাস্তায়, বিশেষ করে, ভাঙা এবং কর্দমাক্ত রাস্তায় চালানো কঠিন। ই-বাইকের চাকার সাইজ সাধারণত ১৫-১৬ ইঞ্চির মত হয়, এবং ই-স্কুটারের চাকার সাইজ সাধারণত ১০ ইঞ্চি থেকে ১২ ইঞ্চির মত হয়। তাই বাইক কেনার আগে এই বিষয় গুলো বিবেচনা করবেন।

         (৭) চার্জিং টাইম

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার দুটোই বিদ্যুৎ চার্জে চলে। বৈদ্যুতিক বাইকে ৭/৮ ঘন্টা চার্জ দিতে হয়, স্কুটারে ৪-৬ ঘন্টা চার্জ দিতে হয়। বৈদ্যুতিক বাইক এক চার্জে ৫০-৮০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারে। স্কুটার এক চার্জে ৪০-৬০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারে। বাইক কেনার আগে, ব্যাটারি পাওয়ার কত, ফুল চার্জ কত কিমি যাবে, এসব ভালো করে জেনে নেবেন। এসব বাইক সাধারণত বাসা-বাড়িতেই চার্জ করে নিতে হয়। আমাদের দেশে এখনো এসব বাইকের অনুমোদন না থাকায়, রাস্তায় চার্জিং স্টেশন নেই।

              (৮) লাইসেন্স

বিদ্যুৎ চালিত বাইক বাংলাদেশে এখনো অনুমোদিত নয়। তাই হাইওয়ে রাস্তায় বাদে অন্য সব রাস্তায় চালাতে লাইসেন্সের প্রয়োজন পরে না। ৭৫ সিসি বাইক এবং ৩০ কিমি কম গতি সম্পন্ন বাইক চালাতে কোন অনুমোদন লাগে না। এসব বাইক হাইওয়ে রোডে চালানোর অনুমতি নেই। শুধু মাত্র স্বল্প দূরত্বে, এবং সিটি রাইডিং এর জন্য এই বাইক চালানো যায়। তবে আশা করা বেশি সিসি সম্পন্ন বা বেশি দ্রুত গতির বাইক দেশে অনুমোদন পাবে। তাহলে দেশে এসব বাইকের আগ্রহী অনেক বাড়বে। তখন লাইসেন্সের প্রয়োজন পরবে। 

পরিশেষে বলা যায়, ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটারের জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। বৈষয়িক অর্থনৈতিক প্রেক্ষিতে এর জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে। এই বাইক গুলো এখনো আমাদের দেশের মানুষের কাছে খুব একটা পরিচিতি পায়নি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং অনুমোদন না পাওয়াই এর প্রধান কারণ।

আসলে ই-বাইক এবং স্কুটার দুটোরেই আলাদা আলাদা সুবিধা আছে। যার যার প্রয়োজনীয়তা এবং সুবিধার বিষয় বিবেচনা করে বাইক নির্বাচন করবেন। যেমন স্বল্প দূরত্বে দ্রুত চলাফেরার জন্য ইলেকট্রিক স্কুটার ভালো, তেমনি সিটি রাইডিংয়ের জন্য ই-বাইক ভালো। নিজের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে এবং আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করে কিনতে পারেন যেকোনো একটি।

ই-বাইকের দাম – ২০২২ সালের বর্তমান মূল্য তালিকা

বাইক নাম সিসি দাম/মুল্য
বীর ম্যাগনাম (Bir Magnum) ইলেকট্রিক ৳৭৩,৫০০
আকিজ দুর্দান্ত (Akij Durdanto) ইলেকট্রিক ৳১১০,০০০
আকিজ পনখিরাজ (Akij Ponkhiraj) ইলেকট্রিক ৳৮০,০০০
আকিজ দুর্জয় (Akij Durjoy) ইলেকট্রিক ৳৮৫,০০০
রানার ইওয়েভ ইকো (Runner eWave Eco) ইলেকট্রিক ৳৭১,০০০
গ্রিনটাইগার জিটি -৫ (GreenTiger GT-5) ইলেকট্রিক ৳৬৭,৫০০
গ্রিনটাইগার জিটি -৫ পালস (Motrac M2 Electric Bike) ইলেকট্রিক ৳৭৭,৫০০

N.B: The mentioned price information may not be 100% accurate. We collect information from manufacturer website and other reputed sources. Please inform us if you have found any mistake or wrong information.

স্কুটারের বাজার দর (এখানে জ্বালানি চালিত স্কুটারের আপডেট প্রাইস দেয়া হয়েছে)
বাইক নাম সিসি দাম/মুল্য
সুজুকি বারগম্যান স্ট্রিট ১২৫ ১২৫সিসি ৳২৪৯,০০০
টিভিএস এক্সএল ১০০ ইএস ১০০সিসি ৳৬৯,৯০০
জেনান গোল্ডফিশ ৫০ ৫০সিসি ৳৯৮,০০০
ভেসপা এলিগান্ট ১৫০ ১৫০সিসি ৳২১৫,০০০
ইয়ামাহা এনম্যাক্স ১৫৫ ১৫৫সিসি ৳৪২৫,০০০
এপ্রিলিয়া এসআর ১৫০ রেস ১৫০সিসি ৳১৭৭,০০০
এটলাস জংশন জেডএস ১১০-৭২ ১১০সিসি ৳৮৯,০০০
রানার স্কুটি ১১০ ১১০সিসি ৳৯৯,০০০
হোন্ডা ডিও ১১০ ১১০সিসি ৳১৪৬,৯০০
হিরো প্লেজার ১০০ ১০০সিসি ৳১২২,৯৯০

N.B: The mentioned price information may not be 100% accurate. We collect information from manufacturer website and other reputed sources. Please inform us if you have found any mistake or wrong information.

বাইক শুধুমাত্র জনপ্রিয়ই নয়, এখনকার দিনে সবার কাছে এটি একটি প্রয়োজনীয় বাহন। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, যোগাযোগের সহজ মাধ্যম, স্বল্প দূরত্বের জন্য উপযোগী, আরো বিভিন্ন কারণে ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটারের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এসব সহজে চালানো যায়, কন্ট্রোল করা খুব সহজ। তবুও এই দুটির মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে।

ই-বাইক অনেকটা প্রচলিত জ্বালানি চালিত বাইক গুলোর মতোই। মূল পার্থক্য হল ই-বাইকে প্রপালশনের জন্য একটি বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহার করা হয়। দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য এই বাইক গুলো স্ট্যান্ডার্ড। স্কুটার ২০০০ দশকের পর থেকে জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এসব বাইক গ্রিপ থ্রোটল ব্যবহার করেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এসব বাইক তিন চাকারও হয়। স্কুটার কন্ট্রোল করাও খুব সহজ। ই-বাইক গুলো সাধারণত স্কুটারগুলোর চেয়ে দ্রুত গতির হয়। তবে স্কুটার চালানো খুবই সহজ। 

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে মূলত মানুষ বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের দিকে ঝুঁকছে। জ্বালানি খরচ বাঁচাতে, যানজট এড়াতে, এবং স্বল্প দূরত্বে সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে ব্যবহারে, বেশিরভাগ মানুষ এখন বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের প্রতি আগ্রহ হচ্ছে। গত এক যুগে পুরো পৃথিবীতে ই-স্কুটার এবং ইলেকট্রিক বাইকের ডিমান্ড অনেক বেড়েছে। সব বয়সী এবং সকল পেশাজীবী মানুষদের মধ্যে এসব বাইকের চাহিদা তৈরী হয়েছে। বিশেষত মানুষ প্রয়োজনের খাতিরেই এসব বাইক ব্যবহার করছেন।

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার, বাহন হিসেবে যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি। বাজারে বিভিন্ন জ্বালানি চালিত স্কুটার পাওয়া যায় এবং এগুলো বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে বাজারে এসব স্কুটারের পাশাপাশি ইলেকট্রিক স্কুটারও পাওয়া যাচ্ছে। গ্রাহকরা এসব ই-স্কুটার ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। ইলেকট্রিক স্কুটার এবং ইলেকট্রিক বাইক ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়। চায়না, জাপান এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এসব বাইক অহরহ দেখা যায়।

এধরণের বাইক কেনার আগে চিন্তা করুন, আপনি কোন ধরণের বাইকে রাইড করে কমফোর্ট ফীল করেন। আমাদের দেশে বৈদ্যুতিক বাইক, স্কুটার দুটোই এভেইলেবল। তবে কেনার আগে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই ব্লগে বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের পার্থক্য, ভালো-মন্দ দিক, কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে, এসব বিষয় সহ, বর্তমান ই-বাইকের দাম-দর, এবং স্কুটারের বাজার নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

ই-বাইক এবং স্কুটারের মধ্যে পার্থক্য

আপনার যদি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এবং স্বল্প দূরত্বে পথ চলার জন্য বাইকের প্রয়োজন হয়, তাহলে স্কুটার বা ইলেকট্রিক বাইক, দুটোই আপনার জন্যে সাশ্রয়ী হবে। তবে বড় ব্যাটারি, উচ্চ শক্তি এবং সিটিং পজিশন বিবেচনা করলে ই-বাইক আপনার জন্যে ভালো হবে। স্কুটার গুলোর ব্যাটারি ছোট এবং সিটিং পজিশনও ছোট তাই কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। তবে মহিলা রাইডারদের জন্যে এসব বাইক খুব কম্ফোর্টেবল।

গণ পরিবহন সংকট এবং বিশৃঙ্খলা, যানজটপূর্ণ রাস্তা, ইত্যাদি কারণে অনেক কর্ম ঘন্টা নষ্ট হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে, বিদ্যুৎ চালিত বাইক হতে পারে আপনার সমাধান। ইলেকট্রিক বাইক গুলোর ভারী ওজন এবং স্ট্যাবিলিটি সিটি রাইডিংয়ের জন্য বেশ ভালো। স্কুটার হালকা হওয়ায় কট্রোল করা সহজ কিন্তু বেশি গতিতে চালালে, রাস্তা উঁচু নিচু থাকলে উল্টে যেতে পারে। তাছাড়া ই-বাইক বা স্কুটি কোনোটাই হাইওয়ে রাস্তার জন্য উপযোগী নয়।

বৈদ্যুতিক স্কুটার সাধারণত বৈদ্যুতিক বাইকের চেয়ে আরো বেশি সাশ্রয়ী এবং মেইনটেন্যান্স করা সহজ। যারা বাজেট-বান্ধব এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী বাইক চান তাদের জন্য স্কুটার ভালো হতে পারে। তবে ইলেকট্রিক বাইক, স্কুটারের চেয়ে শক্তিশালী হওয়ায় উঁচু রাস্তায় ভালোভাবে চালানো যায়। আপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ঠিক করবেন কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত হবে।

স্কুটার এবং ই-বাইক দুটোতেই কম যন্ত্রাংশ থাকে, এতে বাইক কন্ট্রোল করা সহজ হয়। তবে টেকসই এর দিক থেকে চিন্তা করলে এধরণের বাইক, জ্বালানি চালিত বাইক থেকে পিছিয়ে থাকবে। তাছাড়া এসব বাইক খুব বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়না। দুই থেকে তিন বছর পর পর ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয়।

যাইহোক, বৈদ্যুতিক বাইক বা স্কুটার কোনোটাই দীর্ঘ ভ্রমণ এর জন্য উপযুক্ত নয়। এগুলো স্বল্প দূরত্বে ব্যবহারের জন্য তৈরী করা হয়েছে। বাইক কেনার আগে অবশ্যই এই বিষয় গুলো চিন্তা করবেন। ব্লগের শেষ অংশে ই-বাইকের দাম এবং স্কুটারের বাজার দর নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে।

ই-বাইক না স্কুটার? কোনটি কিনবেন?

ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটার দৈনন্দিন যাতায়াত এবং স্বল্প দূরত্বের জন্য দুর্দান্ত একটি বাহন। প্রয়োজনীয় বাহন হিসেবে এটির জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ই-বাইক দেখতে সাধারণ জ্বালানি চালিত বাইকের মতোই। এগুলো কালো ধোঁয়া বা কার্বন নিঃসরণ করে না, তাই পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। এ বাইক গুলো শব্দ দূষণও করে না। উঁচু খাড়া রাস্তা ছাড়া, সব ধরণের রাস্তায় সহজেই চলাচল করতে পারবেন। এসব বাইকের ইঞ্জিন শক্তি কম বলে খাড়া বা উঁচু রাস্তায় গতি উঠতে পারেনা। এই সমস্যা বাদে, এসব বাইক চালানো খুব সহজ।

শহরাঞ্চলের রাস্তায় যোগাযোগের জন্য এসব বাইক অনেক সুবিধাজনক। শহরের যানজট, গণ পরিবহনের সমস্যা এড়াতে, স্বল্প দূরত্ব যাতায়াতের জন্য, এসব বাইক অনেক সুবিধাজনক। ঘরেই চার্জ দেয়া যায়, জ্বালানি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তবে এসব বাইক নিয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারবেন না, বেশি গতিও তুলতে পারবেন না। ইলেকট্রিক স্কুটার, অনেকটা ইলেকট্রিক বাইকের মতোই। তবে ব্যাটারি ছোট বলে এসব বাইক অনেক হালকা। তাই সহজে চালাতে পারলেও, রেঞ্জ হবে কম। তবে পেট্রল/ডিজেল স্কুটারের সুবিধা হল এটি নিয়ে যে কোন স্থানে ঝামেলাবীহিনভাবে যাওয়া যায় এবং রেঞ্জের চিন্তা থাকে না। তাই আপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে বাইক কিনবেন।

ডিজেল চালিত বেশ কিছু স্কুটার দেশের বাজারে অনেক জনপ্রিয়। এগুলোর মধ্যে হোন্ডা অ্যাক্টিভ, টিভিএস জুপিটার, টিভিএস এন্ট্রক বহুল বিক্রিত বাইক।

আজকের ব্লগ সাজানো হয়েছে ইলেকট্রিক বাইক নাকি ইলেকট্রিক স্কুটার কোনটি কিনবেন এ প্রসঙ্গে। এখানে ই-বাইকের দাম এবং স্কুটারের দাম, পার্থক্য এবং স্পেসিফিকেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এটি আপনাদের উপকারে আসবে, এবং আপনার জন্য উপযুক্ত বাইক কিনতে সাহায্য করবে।

ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটারের স্পেসিফিকেশন ডিফারেন্স

         (১) ইঞ্জিন পাওয়ার এবং পারফরমেন্স

এসব বাইক এবং স্কুটারে ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন নেই, ব্যাটারি চালিত মোটরে চলে। ই-বাইকের মোটরের ইঞ্জিনে পাওয়ার, স্কুটারের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে ই-স্কুটারের এক্সেলেরেশন, বৈদ্যুতিক বাইকের চেয়ে তুলনামূলক ভালো, তাই তারাতারি পাওয়ার জেনারেট করতে পারে। তাই সিটি রাইডিংয়ে, এবং স্বল্প দুরত্বে তুলনামূলক সাধারণ গতিতে কম্ফোর্টেবল ভাবে যাওয়া যায়। চার্জ করতেও কম সময় লাগে। ওভারঅল ই-স্কুটারের পারফরমেন্স বেশ ভালো। ইলেক্ট্রিক বাইকের ব্যাটারি পাওয়ার বেশি বলে, তুলনামূলক বেশি গতি পাওয়া যায়। তবে ফুল চার্জ করতে অনেক সময় লাগে, প্রায় ৭-৮ ঘন্টা।

         (২) ব্যাটারি ক্ষমতা

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার দুটোই ব্যাটারি পাওয়ারে চলে। তাই ব্যাটারির ক্ষমতা যত বেশি হবে, বাইক তত পাওয়ারফুল হবে। বৈদ্যুতিক বাইকের ব্যাটারি, স্কুটারের ব্যাটারির চেয়ে বড় এবং কার্যক্ষমতা বেশি হয়। ব্যাটারিচালিত বাহনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এগুলোর গতি, ইঞ্জিন চালিত বাহনের চেয়ে কম হয়।

সাধারণত এসব বাইক হাল্কা হওয়ায় বেশি ওজন নিতে পারে না। যাদের ওজন বেশি এবং বেশি ওজনের পণ্য পরিবহন করতে চান, তাদের এসব বাইক আরো একটু চিন্তা করে কিনতে হবে। ই-বাইকে আপনি পিলিয়ন বা পণ্য পরিবহন করতে পারবেন, এই বাইক গুলো এভাবেই তৈরী করা হয়েছে। তবে খুব বেশি ওজন আপনি নিতে পারবেন না।

         (৩) গতি এবং পরিসীমা

ই-বাইক এবং ই-স্কুটার দুটোতেই পাওয়ারফুল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। তবে সাধারণত ইলেকট্রিক বাইকের ব্যাটারি কিছুটা বড় হয়। এসব বাইকে ৫০-৮০ কিমি মাইলেজ পাওয়া যায় ফুল চার্জে। ই-স্কুটার গুলোর ব্যাটারি কিছুটা ছোট হওয়ায়  এগুলো বেশ হালকা হয়, এবং মাইলেজ ৪০-৬০ কিমি এর মধ্যে থাকে। ই-স্কুটার বা বাইক কোনটিরই গতি বেশি হয় না। জ্বালানি চালিত বাইকের সাথে এসব বাইক কখনোই পেরে উঠে না। তবে বৈদ্যুতিক বাইক, স্কুটারের চেয়ে কিছুটা বেশি গতি সম্পন্ন হয়। বৈদ্যুতিক বাইকের সর্বোচ্চ গতি ২০ এমপিএইচ, এবং ইলেকট্রিক স্কুটারের সর্বোচ্চ গতি ১৫ এমপিএইচ  হয়ে থাকে। গতি এবং পাওয়ার এর উপর বাইকের দাম নির্ভর করে। বৈদ্যুতিক বাইক বা স্কুটার কেনার আগে অবশ্যই পিকআপ পরীক্ষা করে নেবেন। কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ি ইঞ্জিন স্টার্ট করার সাথে সাথে দ্রুত টর্ক উঠিয়ে ফেলে, এতে দ্রুত স্পিড বেড়ে যায়।

         (৪) বাইকের দাম এবং পার্টসের এভাইবিলিটি

জ্বালানি চালিত বাইকের তুলনায়, বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের দাম বেশ কমই বলা যায়। বাজারে বিভিন্ন দামের বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার পাবেন। তবে এসব বাইকের দাম ইলেকট্রিক স্কুটারের চেয়ে কিছুটা বেশি। ই-স্কুটারে ব্যাটারি ছোট এবং পার্টস কম বলে দামও কিছুটা কম হয়। সাধারণত ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এগুলোর দাম হয়ে থাকে। ব্যাটারির ক্ষমতা, গতিবেগ যত বেশি হয়, এগুলোর দামও ততই বাড়তে থাকে। ব্লগের শেষ অংশে এসব বাইকের দাম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটারের পার্টস কম থাকায় এগুলোর সার্ভিসিং খরচ কম। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে, জ্বালানি চালিত বাইকের তুলনায় এসব বাইক বেশি টেকসই নয়। বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তবে জ্বালানি চালিত স্কুটার চলে দীর্ঘদিন। এসব বাইকের ব্যাটারি ২-৩ বছরের মধ্যে পরিবর্তন করতে হয়। এসব বাইকের সব পার্টস বাজারে এভেইলেবল নয়। তাই কেনার আগে বাজার যাচাই করবেন, কোম্পানি কি কি আফটার সেলস সার্ভিস দিবে ভালো ভাবে জেনে নেবেন।

         (৫) এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি

জ্বালানি চালিত বাইকের তুলনায় বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার দুটোই পরিবেশ বান্ধব। এসব বাইক কালো ধোঁয়া বা কার্বন নিঃসরণ করে না, শব্দ দূষণ করে না, তাই পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কারণ পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ অতিরিক্ত হওয়ায়, ওজোন স্তরে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বৈদ্যুতিক যানবাহন গুলো পরিবেশের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।

         (৬) হুইল সাইজ

ইলেকট্রিক বাইকের চাকার সাইজ, স্কুটারের চেয়ে বেশ বড়। এই কারণে বিদ্যুৎ চালিত বাইকে যেকোনো রাস্তায় চালানো সহজ, (উঁচু বা খাড়া রাস্তা ছাড়া), কিছুটা স্পীডি হয়। ই-স্কুটারের চাকা ছোট হওয়ায় যেকোনো রাস্তায়, বিশেষ করে, ভাঙা এবং কর্দমাক্ত রাস্তায় চালানো কঠিন। ই-বাইকের চাকার সাইজ সাধারণত ১৫-১৬ ইঞ্চির মত হয়, এবং ই-স্কুটারের চাকার সাইজ সাধারণত ১০ ইঞ্চি থেকে ১২ ইঞ্চির মত হয়। তাই বাইক কেনার আগে এই বিষয় গুলো বিবেচনা করবেন।

         (৭) চার্জিং টাইম

বৈদ্যুতিক বাইক এবং স্কুটার দুটোই বিদ্যুৎ চার্জে চলে। বৈদ্যুতিক বাইকে ৭/৮ ঘন্টা চার্জ দিতে হয়, স্কুটারে ৪-৬ ঘন্টা চার্জ দিতে হয়। বৈদ্যুতিক বাইক এক চার্জে ৫০-৮০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারে। স্কুটার এক চার্জে ৪০-৬০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারে। বাইক কেনার আগে, ব্যাটারি পাওয়ার কত, ফুল চার্জ কত কিমি যাবে, এসব ভালো করে জেনে নেবেন। এসব বাইক সাধারণত বাসা-বাড়িতেই চার্জ করে নিতে হয়। আমাদের দেশে এখনো এসব বাইকের অনুমোদন না থাকায়, রাস্তায় চার্জিং স্টেশন নেই।

              (৮) লাইসেন্স

বিদ্যুৎ চালিত বাইক বাংলাদেশে এখনো অনুমোদিত নয়। তাই হাইওয়ে রাস্তায় বাদে অন্য সব রাস্তায় চালাতে লাইসেন্সের প্রয়োজন পরে না। ৭৫ সিসি বাইক এবং ৩০ কিমি কম গতি সম্পন্ন বাইক চালাতে কোন অনুমোদন লাগে না। এসব বাইক হাইওয়ে রোডে চালানোর অনুমতি নেই। শুধু মাত্র স্বল্প দূরত্বে, এবং সিটি রাইডিং এর জন্য এই বাইক চালানো যায়। তবে আশা করা বেশি সিসি সম্পন্ন বা বেশি দ্রুত গতির বাইক দেশে অনুমোদন পাবে। তাহলে দেশে এসব বাইকের আগ্রহী অনেক বাড়বে। তখন লাইসেন্সের প্রয়োজন পরবে। 

পরিশেষে বলা যায়, ইলেকট্রিক বাইক এবং স্কুটারের জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। বৈষয়িক অর্থনৈতিক প্রেক্ষিতে এর জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে। এই বাইক গুলো এখনো আমাদের দেশের মানুষের কাছে খুব একটা পরিচিতি পায়নি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং অনুমোদন না পাওয়াই এর প্রধান কারণ।

আসলে ই-বাইক এবং স্কুটার দুটোরেই আলাদা আলাদা সুবিধা আছে। যার যার প্রয়োজনীয়তা এবং সুবিধার বিষয় বিবেচনা করে বাইক নির্বাচন করবেন। যেমন স্বল্প দূরত্বে দ্রুত চলাফেরার জন্য ইলেকট্রিক স্কুটার ভালো, তেমনি সিটি রাইডিংয়ের জন্য ই-বাইক ভালো। নিজের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে এবং আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করে কিনতে পারেন যেকোনো একটি।

ই-বাইকের দাম – ২০২২ সালের বর্তমান মূল্য তালিকা

বাইক নাম সিসি দাম/মুল্য
বীর ম্যাগনাম (Bir Magnum) ইলেকট্রিক ৳৭৩,৫০০
আকিজ দুর্দান্ত (Akij Durdanto) ইলেকট্রিক ৳১১০,০০০
আকিজ পনখিরাজ (Akij Ponkhiraj) ইলেকট্রিক ৳৮০,০০০
আকিজ দুর্জয় (Akij Durjoy) ইলেকট্রিক ৳৮৫,০০০
রানার ইওয়েভ ইকো (Runner eWave Eco) ইলেকট্রিক ৳৭১,০০০
গ্রিনটাইগার জিটি -৫ (GreenTiger GT-5) ইলেকট্রিক ৳৬৭,৫০০
গ্রিনটাইগার জিটি -৫ পালস (Motrac M2 Electric Bike) ইলেকট্রিক ৳৭৭,৫০০

N.B: The mentioned price information may not be 100% accurate. We collect information from manufacturer website and other reputed sources. Please inform us if you have found any mistake or wrong information.

স্কুটারের বাজার দর (এখানে জ্বালানি চালিত স্কুটারের আপডেট প্রাইস দেয়া হয়েছে)
বাইক নাম সিসি দাম/মুল্য
সুজুকি বারগম্যান স্ট্রিট ১২৫ ১২৫সিসি ৳২৪৯,০০০
টিভিএস এক্সএল ১০০ ইএস ১০০সিসি ৳৬৯,৯০০
জেনান গোল্ডফিশ ৫০ ৫০সিসি ৳৯৮,০০০
ভেসপা এলিগান্ট ১৫০ ১৫০সিসি ৳২১৫,০০০
ইয়ামাহা এনম্যাক্স ১৫৫ ১৫৫সিসি ৳৪২৫,০০০
এপ্রিলিয়া এসআর ১৫০ রেস ১৫০সিসি ৳১৭৭,০০০
এটলাস জংশন জেডএস ১১০-৭২ ১১০সিসি ৳৮৯,০০০
রানার স্কুটি ১১০ ১১০সিসি ৳৯৯,০০০
হোন্ডা ডিও ১১০ ১১০সিসি ৳১৪৬,৯০০
হিরো প্লেজার ১০০ ১০০সিসি ৳১২২,৯৯০

N.B: The mentioned price information may not be 100% accurate. We collect information from manufacturer website and other reputed sources. Please inform us if you have found any mistake or wrong information.

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy e-Bikesbikroy
Walton Cruize 2024 for Sale

Walton Cruize 2024

30 km
MEMBER
Tk 50,000
3 days ago
Yamaha R15 M . 2023 for Sale

Yamaha R15 M . 2023

14,500 km
verified MEMBER
Tk 541,500
3 days ago
GB-JAMUNA-GOLD-BROWN 2023 for Sale

GB-JAMUNA-GOLD-BROWN 2023

5 km
verified MEMBER
Tk 65,999
1 day ago
GB-Padma-Gold (Blue) 2023 for Sale

GB-Padma-Gold (Blue) 2023

0 km
verified MEMBER
Tk 70,000
1 day ago
Green Tiger GT 2022 falcon for Sale

Green Tiger GT 2022 falcon

8,000 km
MEMBER
Tk 59,000
1 day ago
Buy Scootersbikroy
TVS Wego 2019 2017 for Sale

TVS Wego 2019 2017

15,200 km
verified MEMBER
Tk 95,000
2 hours ago
Zongshen Z One T london 2021 for Sale

Zongshen Z One T london 2021

0 km
MEMBER
Tk 4,500
8 hours ago
Mahindra Gusto . 2018 for Sale

Mahindra Gusto . 2018

25,645 km
verified MEMBER
verified
Tk 72,000
8 hours ago
Yamaha Ray-ZR ALMOST NEW 2022 for Sale

Yamaha Ray-ZR ALMOST NEW 2022

9,000 km
verified MEMBER
Tk 208,000
10 hours ago
Runner Skooty . 2021 for Sale

Runner Skooty . 2021

15,325 km
MEMBER
Tk 82,000
10 hours ago
+ Post an ad on Bikroy