যাতায়াতের জন্য সবচেয়ে সহজ, আরামদায়ক, এবং সাশ্রয়ী অপশনগুলোর মধ্যে একটি হলো ১২৫ সিসি নেকেড মোটরসাইকেল। শহুরে রাস্তা হোক কিংবা মহাসড়ক, ১২৫ সিসি নেকেড স্পোর্টস বাইক আপনাকে প্রদান করবে আরামদায়ক ও রোমাঞ্চকর রাইডিং অভিজ্ঞতা।
শুধু অসাধারণ রাইডিংই নয়, আপনি এই স্পোর্টস বাইকগুলোর সাহায্যে পারবেন নিজের বাইকিং অভিজ্ঞতাকে আরো সমৃদ্ধ করতে, এবং দ্রুতগতির সহায়তায় খুব স্বাচ্ছন্দ্যে যেকোন গন্তব্যে পৌঁছে যেতে।
কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে খুব বেশি ১২৫ সিসি নেকেড মোটরসাইকেলের মডেল পাওয়া যায়না, তাই আপনার পছন্দ ও চাহিদামতো একটি মডেল খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর হতে পারে। তাই এই আর্টিকেলে আমরা আপনার জন্য বাছাই করেছি বাজারের সেরা ৫ টি ১২৫ সিসি নেকেড স্পোর্টস মোটরসাইকেল, যেগুলোতে রয়েছে আরাম, স্টাইল, এবং পারফরম্যান্সের অনন্য সমন্বয়।
চলুন দেখে আসা যাক বাজারের সেরা ১২৫ সিসি নেকেড স্পোর্টস মোটরসাইকেলগুলো।
KTM Duke 125
কেটিএম ডিউক ১২৫ বাজারের অন্যতম সেরা ১২৫ সিসি নেকেড স্পোর্টস মোটরসাইকেল। ১২৫ সিসি শক্তির ফোর-স্ট্রোক, লিকুইড-কুলড, একক-সিলিন্ডার ইঞ্জিন দ্বারা চালিত এই বাইক এর সর্বোচ্চ গতি ১০০ কিমি প্রতি ঘন্টা এর চেয়েও বেশি। এছাড়াও বাইকটির রয়েছে ১৩.৪ লিটারের জ্বালানি ট্যাঙ্ক, যা একবার সম্পূর্ণরূপে ভর্তি করলে আপনি প্রায় ৩৪০ মাইল পথ যাওয়ার করার আশা করতে পারেন!
ডিউক ১২৫ বাইকটির সামনে একটি ৩২০ মিমি আর পিছনে একটি ২৩০ মিমি ডিস্ক রয়েছে, যা নিরাপদ স্টপিং পাওয়ার প্রদান করে। এছাড়াও বাইকটিতে ব্যবহৃত হয়েছে নানা আধুনিক প্রযুক্তি,যেমন টিএফটি ডিসপ্লে, এলইডি হেডলাইট এবং এলইডি টার্ন সিগন্যাল। আর সব মিলিয়ে দামের তুলনায় কেটিএম ডিউক ১২৫ অসাধারণ পারফর্ম্যান্স এবং ফিচার প্রদান করে থাকে। সব মিলিয়ে এই স্পোর্টস বাইকটি আপনাকে প্রদান করবে অসাধারণ রাইডিং অভিজ্ঞতা।
সুবিধা
- চমৎকার কর্মক্ষমতা
- কম ওজন
- অসাধারণ মাইলেজ
অসুবিধা
- আরো প্রযুক্তি থাকলে আরো ভালো রাইডিং অভিজ্ঞতা পাওয়া যেতো
Honda CB 125R
এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হোন্ডা সিবি১২৫ আর। রেট্রো স্টাইলিং ডিজাইন এর কারণে এই বাইকটি বাজারের আর ১০ টি বাইক থেকে অনেক আলাদা, যা এটিকে অনেক বাইকারের মনে উচ্চস্থানে আসীন করেছে।
একটি ১২৫ সিসি ফোর স্ট্রোক দ্বারা চালিত, লিকুইড কুলড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে এই বাইকে, যা একটি পূর্ণ ট্যাঙ্কে ১৮০ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। এছাড়াও বাইকটির সর্বোচ্চ গতি ১০০ কিমি প্রতি ঘন্টারও ঊর্ধে।
সিবি১২৫ আর এর সামনে একটি সিঙ্গেল ডিস্ক, পিছনে একটি ডিস্ক, এবিএস, টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং একটি মনোশক রয়েছে, যা একটি আরামদায়ক এবং নিরাপদ রাইড নিশ্চিত করে। যদিও বাইকটিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি বেশ সাধারণ, এই বাইকটি বিভিন্ন অসাধারণ লুক এবং কালার কম্বিনেশনে পাওয়া যায়, যা একে রাইডারদের নিকট বেশ জনপ্রিয় করে তুলেছে।
সুবিধা
- হোন্ডা ব্র্যান্ডের নির্ভরযোগ্যতা
- অসাধারণ লুক এবং ডিজাইন
- জ্বালানী সাশ্রয়ী
অসুবিধা
- প্রযুক্তি কম ব্যবহৃত হয়েছে
Yamaha MT 125
তালিকায় এর পরের স্থানটিই হলো ইয়ামাহা এমটি১২৫ এর। অসাধারণ ও রোমাঞ্চকর রাইডিং অভিজ্ঞতা প্রদান করা এই বাইকটিতে রয়েছে একটি ১২৫ সিসি ফোর স্ট্রোক, লিকুইড কুলড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন। একটি পূর্ণ জ্বালানি ট্যাঙ্কে বাইকটি প্রায় ২৯০ কিমি পর্যন্ত যেতে পারে।
এমটি ১২৫ এর সামনে একটি ২৯২ মিমি ডিস্ক, পিছনে ২২০ মিমি ডিস্ক, এবিএস, টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং একটি মনোশক রয়েছে, যা বাইকটিকে করে তুলেছে আধুনিক ও নিরাপদ। এছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে বাইকটিতে, যেমন একটি ৫” টিএফটি ডিসপ্লে, এলইডি হেডলাইট, ট্র্যাকশন কন্ট্রোল এবং স্লিপার ক্লাচ।
এটি তালিকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং প্রিমিয়াম বাইক, যার ফলে এই স্পোর্টস বাইকটি আপনার সব ধরণের আশা আকাঙ্খা পূরণ করবে এবং আপনার রাইডিং অভিজ্ঞতাকে করবে সমৃদ্ধ।
সুবিধা
- চমৎকার কর্মক্ষমতা
- জ্বালানী সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে অসাধারণ
- প্রাণবন্ত ডিজাইন
- নানা প্রযুক্তির ব্যবহার
অসুবিধা
- প্রিমিয়াম প্রাইসট্যাগ
Suzuki GSX-S125
সুজুকি ব্র্যান্ডটি সবসময় ১২৫ সিসি মোটরসাইকেলের বাজারে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে, এবং তারই ধারা বজায় রেখে ১২৫ সিসি নেকেড স্পোর্টস মোটরসাইকেল ক্যাটাগরিতেও তাদের রয়েছে উল্লেখযোগ্য অবদান, এবং তাদের মধ্যে একটি আকর্ষণীয় অপশন হলো সুজুকি জিএসএক্স-এস১২৫।এই স্পোর্টস বাইকটির কার্যক্ষমতা অনস্বীকার্য। হালকা ওজনের পাশাপাশী, এর রয়েছে একটি ১২৫ সিসি ফোর স্ট্রোক, লিকুইড কুলড, একক সিলিন্ডার ইঞ্জিন। এছাড়াও বাইকটির রয়েছে এটি একটি শাটার-কি লক সিস্টেম, সহজ স্টার্ট, ডিজিটাল ড্যাশ এবং একটি এলইডি হেডলাইটের আকার, যা সুজুকির সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত উন্নয়নগুলিকে প্রতিফলিত করে। এই বাইকটি তিনটি আলাদা রঙে পাওয়া যায়, যার মধ্যে প্রত্যেকটিই অসাধারণ ও অনন্য। মেটালিক ট্রাইটন ব্লু, টাইটান ব্ল্যাক এবং পার্ল ব্রিলিয়ান্ট হোয়াইট – এই তিনটির থেকে যেকোন একটি আপনি সহজেই নিজের জন্য বাছাই করতে পারেন।
সামগ্রিকভাবে, সুজুকির এই বাইকটি তালিকার অন্যতম সেরা একটি বাইক, এবং আপনি এটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিতে পারেন।
সুবিধা
- সবিধাজনক শক্তি-ওজন অনুপাত
- জ্বালানী সাশ্রয়ী
- প্রচুর রঙের বিকল্প
অসুবিধা
- এলইডী লাইটিং সবখানে ব্যবহার হলে ভালো হতো
- নীরস ডিজাইন
Lexmoto RSS 125
লেক্সমোটো আরএসএস১২৫ বাইকটিতে রয়েছে প্রযুক্তি, পারফরম্যান্স, এবং দুর্দান্ত ভিজ্যুয়াল এর অসাধারণ মিশেল। এই স্পোর্টস বাইকে রয়েছে একটি ১২৫ সিসি, ফোর-স্ট্রোক, লিকুইড কুলড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন, এবং এর ১৪.৫ লিটার জ্বালানি ট্যাঙ্ক পূর্ণ করা হলে এটি একবারে ৩০০ মাইলের বেশি যেতে পারে।
আরএসএস ১২৫ এর সামনে রয়েছে একটি ৩০০ মিমি ডিস্ক, পিছনে ২৪০মিমি ডিস্ক/ এছাড়াও রয়েছে একটি সম্মিলিত ব্রেকিং সিস্টেম, টেলিস্কোপিক ফর্কস, মনোশক, যা বাইকটিকে করে তুলেছে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিসংবলিত। তবে বাইকটির ওজন একটু বেশি অন্যনায় ১২৫সিসি বাইকের তুলনায়।
দুটি ভিন্ন রঙে আপনি এই বাইকটি পেতে পারেন – ক্রিমসন রেড বা টাস্কানি ইয়েলো। সব মিলিয়ে আরএসএস১২৫ একটি অসাধারণ মডেল, যা সহজেই আরামদায়ক ও সুবিধাজনক রাইডের মাধ্যমে আপনার বাইকিং অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
সুবিধা
- উন্নত ফিচার
- টিএফটি ড্যাশ
- ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকা দাম
অসুবিধা
- এবিএস নেই
- ওজন অনেক বেশি
শেষ কথা
নেকেড স্পোর্টসবাইক চালানো অনেক রাইডারের স্বপ্ন হলেও বাজেটের মধ্যে একটি ভালো মানাএর ১২৫ সিসি নেকেড স্পোর্টস মোটরসাইকেল খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। উপরে দেয়া তালিকার সবগুলো বাইকই অসাধারণ ফিচার, মাইলেজ, ও গতির দিক থেকে, এবং সবগুলো বাইকই বাইকারদের পছন্দের তালিকার বেশ উপরে। তাই আপনি সহজের আপনার জন্য একটি বেছে নিতে পারেন উপরের তালিকা থেকে। আর বাইক বাছাই করার সময়ে খেয়াল রাখবেন বাইকের বৈশিষ্ট্য, মাইলেজ, নিরাপত্তা ফিচার, গতি, এবং ডিজাইনের দিকে, যাতে এগুলো আপনার পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী হয়, এবং সব মিলিয়ে আপনার বাজেটের মধ্যেই থাকে।