আপনার বাইক রাইডকে আরো বেশি এফিশিয়েন্ট করে তুলতে বাইকের ফুয়েল কনজাম্পশনের মাত্রা বোঝার কোনো বিকল্প নেই। বাইক যদি তেল বেশি খায়, তাহলে তা শুধু আপনার পকেটকেই প্রভাবিত করবে না, বরং তার পাশাপাশি আপনার রাইডিং অভিজ্ঞতাকে’ও করে তুলতে পারে মলীন। তাই আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার বাইক কি পরিমাণ তেল খাচ্ছে এবং তা সাধারণের তুলনায় বেশি কি না। কি কি লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন যে বাইক তেল বেশি খাচ্ছে কি না এবং বাইকের তেল বেশি খাওয়া প্রতিরোধ করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তার সবই তুলে ধরবো আজকের লেখায়।
বাইক বেশি তেল খাওয়ার লক্ষণ
নিম্নোক্ত বিষয়গুলো দেখলে বা একটু নজর রাখলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার বাইক তেল বেশি খাচ্ছে কি না।
১। ফুয়েল এফিশিয়েন্সি মনিটর করুন
বাইকের তেল বেশি খাচ্ছে কি না তা বোঝার জন্য প্রথমেই ফুয়েল এফিশিয়েন্সি চেক করতে হবে। বাইকের ফুয়েল ট্যাংক সম্পূর্ণ ফুল করে তারপর চেক করুন যে তা কতো কিলোমিটার পর্যন্ত চলে। এভাবে কিছুদিন পর পর চেক করলে সহজেই বুঝে যাবেন যে বাইকের তেল বেশ খাচ্ছে কি না।
২। আপনার রাইডিং হ্যাবিট মনিটর করুন
আপনি যদি বাইক চালানোর ধরণে পরিবর্তন নিয়ে আসেন, তাহলে তা আপনার ফুয়েল এফিশিয়েন্সিকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন – খুব অ্যাগ্রেসিভ রাইডিং, ঘন ঘন ব্রেক করা ইত্যাদি বিষয়ের কারণে বাইকের তেল বেশি খরচ হতে পারে।
৩। ফুয়েল লিক
বাইকের কোনো দিক দিয়ে ফুল লিক হচ্ছে কি না তা কিছুদিন পর পর চেক করা প্রয়োজন। ফুয়েল ট্যাংকের নিচের অংশ, ফুয়েল লাইন, কার্বুরেটর ইত্যাদি স্থান চেক করলেই বুঝতে পারবেন যে ফুয়েল লিক হচ্ছে কি না। কোথাও ফুয়েলের দাগ দেখলে বা গ্যাসোলিনের কড়া গন্ধ পেলে বুঝে যাবেন যে ফুয়েল লিক হচ্ছে। বাইক তেল বেশি খাওয়ার কারণ হিসেবে ফুয়েল লিক’ই প্রধানত দায়ী হয়ে থাকে।
৪। টায়ার প্রেশার ঠিক না রাখা
আপনার বাইকের টায়ারের প্রেশার ঠিক যতো হওয়া উচিত, তার থেকে যদি কম রাখা হয়, তাহলে তা বাইকের ফুয়েল এফিশিয়েন্সিকে প্রভাবিত করে। বাইকের স্পিড কমে যায় এবং বেশি তেল খরচ হয়।
৫। এয়ার-ফিল্টারে ময়লা জমে থাকা
অনেক সময় এয়ার-ফিল্টারে ময়লা জমে থাকার কারণে তা ইঞ্জিনে বায়ু প্রবাহ হতে দেয় না। এতে করে ইঞ্জিনের এফিশিয়েন্সি কমে যায় এবং বেশি তেল খরচ হয়। তাই কিছু দিন পর পর এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করা উচিত।
৬। সঠিক গ্রেইডের ফুয়েল ব্যবহার না করা
আপনার বাইকের জন্য যেই গ্রেইডের ফুয়েল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে, সেটা ব্যবহার না করার কারণে’ও ফুয়েল এফিশিয়েন্সি কমে যেতে পারে।
৭। পরিবেশগত প্রভাব
অনেক সময় বিভিন্ন পরিবেশগত প্রভাব যেমন – বাতাস, তাপমাত্রা, রোডের কন্ডিশনের কারণে বাইকের ফুয়েল এফিশিয়েন্সি কমে যেতে পারে।
বাইক বেশি তেল খাওয়া প্রতিরোধ
বাইকের তেল বেশি খাওয়া প্রতিরোধ করার জন্য এই কাজগুলো করতে পারেন –
১। একটি নির্দিষ্ট মাত্রার গতি মেইনটেইন করুন।
২। গতির সাথে গিয়ার ম্যাচ রাখুন। বেশিক্ষণ লো গিয়ারে বাইক চললে ফুয়েল কনজাম্পশন বেড়ে যেতে পারে।
৩। ট্রাফিকে থেমে থাকাকালীন ইঞ্জিন বন্ধ করে দিন।
৪। বাইকের রেগুলার মেইনটেনেন্সের কাজগুলো করিয়ে ফেলুন।
৫। বাইকে অতিরিক্ত ভার বহন করা থেকে বিরত থাকুন।
৬। কিছুদিন পর পর এয়ার-ফিল্টার পরিষ্কার করুন।
৭। সঠিক টায়ার প্রেশার মেইনটেইন করুন।
৮। ভাঙা রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
পরিসংহার
কিছুদিন পর পর বাইকের ফুয়েল এফিশিয়েন্সি চেক করার মাধ্যমে সহজেই বুঝতে পারবেন যে বাইকের তেল বেশি খাচ্ছে কি না। আর বাইক যদি তেল বেশি খায়, তাহলে তা প্রতিরোধ করার জন্য উপরিউক্ত কাজগুলো করতে পারেন। মোটরসাইকেলের তেলের খরচ কমানোর জন্য এই ব্লগটি ফলো করতে পারেন।