আশা করি ক্লাচের ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের আর নতুন করে কিছু বলতে হবে না। ম্যানুয়াল বাইকে ক্লাচ ছাড়া গিয়ার চেঞ্জ করা পসিবল নয়। আধুনিক প্রযুক্তির অবদানে এখন মার্কেটে অনেক ধরণের ক্লাচ দেখতে পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেসিক ধরণের ক্লাচ হচ্ছে ড্রাই এবং ওয়েট ক্লাচ। মোটরসাইকেল কোম্পানীগুলোর আল্টিমেট লক্ষ্য হচ্ছে রাইডাররা যাতে অনেক সহজেই গিয়ার শিফট করতে পারে তা এনশিওর করা। তাই আজ আমরা ক্লাচের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করবো।
ক্লাচ কী?
মোটরসাইকেল ক্লাচ হচ্ছে ইঞ্জিনের একটি কমপোনেন্ট, যা ইঞ্জিন থেকে ট্রান্সমিশন বা গিয়ারবক্সে পাওয়ার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে যাতে করে গিয়ার পরিবর্তন করা যায়। সহজ ভাষায়, ক্লাচের মাধ্যমে রাইডাররা গিয়ার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে গিয়ারবক্সের পাওয়ার অন বা অফ করতে পারেন।
ক্লাচের প্রকারভেদ
আশা করি ক্লাচের ব্যবহার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। এখন চলুন ক্লাচের প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
১। ওয়েট ক্লাচ
ওয়েট ক্লাচ হচ্ছে সবচেয়ে কমন বাইকের ক্লাচ। ইঞ্জিনে ব্যবহার করা তেল এই ক্লাচে ব্যবহার করা হয়, তাই এর নাম ওয়েট ক্লাচ। এই বাইক অনেকদিন টিকে থাকে এবং অনেক পাওয়ার এফিশিয়েন্ট।
সুবিধা
- এফিশিয়েন্ট।
- দীর্ঘমেয়াদি।
- খরচ কম।
- শব্দ কম।
অসুবিধা
- ক্লাচের রোটেশনের সময় ইঞ্জিন কিছু পরিমাণ পাওয়ার হারায়।
২। ড্রাই ক্লাচ
ওয়েট ক্লাচ ও ড্রাই ক্লাচের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে এই যে ড্রাই ক্লাচে কোনো ধরণের তেল ব্যবহার করা হয় না। ড্রাই ক্লাচ সাধারণত বাইকের কেসের বাইরে বসানো থাকে এবং এই ক্লাচ শুধু মিনিমাল বাইকগুলোতেই ব্যবহার করা হয়।
সুবিধা
- সহজে পরিবর্তন করা যায়।
- সহজে ব্যবহার করা যায়।
- কোনো পাওয়ার লস হয় না।
অসুবিধা
- গরম হয়।
- কম সময় টিকে।
- শব্দ তৈরি করে।
৩। স্লিপার ক্লাচ
স্লিপার ক্লাচ ইঞ্জিনের ওভার-রেভিং বন্ধ করে এবং পেছনের চাকাকে নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। বিশেষ করে যখন অনেক দ্রুত ব্রেইক করার প্রয়োজন হয় তখন পেছনের চাকা ইঞ্জিনের পাওয়ারের চেয়ে’ও বেশি গতিতে ঘুড়তে পারে। স্লিপার ক্লাচ এটা এনশিওর করে যে ইঞ্জিনের গতি ও বাইকের গতি একই থাকছে।
সুবিধা
- ইঞ্জিন ব্রেকিং ফোর্স অ্যাবসর্ব করে নেয়।
- খুব দ্রুত ডাউনশিফট করা যায়।
- পারফরম্যান্সের জন্য সবচেয়ে ভালো।
অসুবিধা
- বেশ জটিল টেকনোলজি।
- বেশ দামী।
৪। মাল্টি-প্লেট ক্লাচ
মাল্টি-প্লেট ক্লাচ বাইকের আরো একটি বহুল ব্যবহৃত ক্লাচ। সাধারণত একাধিক ওয়েট অথবা ড্রাই ক্লাচের প্লেট ব্যবহার করে একটি মাল্টি-প্লেট ক্লাচ তৈরি করা হয়। এই ধরণের ক্লাচের টর্ক-ট্রান্সমিটিং ক্যাপাসিটি অনেক বেশি থাকে।
সুবিধা
- উচ্চমাত্রার টর্ক জেনারেট করতে পারে।
- সাইজে ছোট।
অসুবিধা
- বেশ দামী।
- অনেক ভারী।
৫। অটোমেটিক ক্লাচ
অটোমেটিক ক্লাচ সাধারণত স্কুটারে ব্যবহার করা হয়। এই ক্লাচের কাজ ইঞ্জিন আরপিএম ঠিক করে। যেহেতু ম্যানুয়ালি এটি চেঞ্জ করা যায় না, তাই একে অটোমেটিক ক্লাচ বলা হয়।
সুবিধা
- ব্যবহার বেশ সহজ।
- দাম কম।
অসুবিধা
- বেশি টর্ক জেনারেট করতে পারে না।
- কিছুটা পাওয়ার লস হয়।
- বেশ গরম হয়।
পরিসংহার
আপনি যেই ধরণের বাইক’ই রাইড করুন না কেনো, আপনার উচিত বাইকের খুটিনাটি তথ্য সম্পর্কে জানা। আশা করি ক্লাচের প্রকারভেদ সম্পর্কে আজ আপনাকে একটি ভালো ধারণা দিতে পেরেছি।