BAJAJ একটি ভারতীয় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোম্পানি। বিশ্বব্যাপী মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে বাজাজ একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডের বাইকগুলো রিজনেবল দাম এবং লং-লাস্টিং পারফরম্যান্সের জন্য খুবই জনপ্রিয়। এই ব্র্যান্ডের কমিউটার, স্কুটার, স্পোর্টস বাইক সহ আরো বিভিন্ন ক্যাটাগরির বাইক বাজারে পাওয়া যায়। এই ব্লগে সেরা ৫ টি ১০০ সিসি বাজাজ মোটরসাইকেল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বাজাজের ১০০ সিসি বাইকগুলো রেগুলার কমিউটিং-এর জন্য খুবই জনপ্রিয়। ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট, রিলায়েবল এবং আফোর্ডেবল প্রাইসের জন্য বাইকগুলো এখনো গ্রাহক জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। সিটি, ডিসকভার এবং প্লাটিনা বাজাজের ১০০ সিসির বাইক সিরিজ। ডিজাইন এবং সামান্য কিছু ফিচার, যেমন, ইলেক্ট্রিক-স্টার্ট, কমফোরটেক প্রযুক্তি ইত্যাদি ব্যাতিত, এগুলো প্রায় একই ধরণের বাইক।
সেরা ৫ টি ১০০ সিসি বাজাজ মোটরসাইকেল
Bajaj CT100
Bajaj CT100 হলো বাজাজ ব্র্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় মোটরসাইকেল। এটি একটি সাশ্রয়ী মূল্যের কমিউটার টাইপ বাইক। দৈনন্দিন ঘন ঘন ব্যবহারের জন্য এটি দুর্দান্ত একটি বাইক। বাইকটির প্রধান সুবিধাগুলো হলো – অসাধারণ মাইলেজ, লং-লাস্টিং ইঞ্জিন পারফরম্যান্স এবং অ্যাভেইলেবল স্পেয়ার পার্টস। মূলত স্বল্প দাম, ফুয়েল ইফিয়েন্সি এবং লং-লাস্টিং ইঞ্জিন পারফরম্যান্সের কারণে বাজাজের এই বাইকটি ব্যাপক গ্রাহক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাইকটি থেকে আপনি প্রায় ৫০ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৭৫ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন। এটির বডি স্ট্রাকচার বেশ মজবুত। বাইকটির ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল সেমি-ডিজিটাল ধরণের। হেডলাইট, টেইল লাইট এবং সকল ইন্ডিকেটর হ্যালোজেন ধরণের।
(১) ইঞ্জিন – বাইকটিতে ৯৯ সিসি ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এটিতে এক্সহস্টটেক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ইঞ্জিন সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪-স্ট্রোক এবং এয়ার-কুল্ড ফিচার বিশিষ্ট। এছাড়াও বাইকটিতে ক্যাপাসিটর ডিসচার্জ ইগনিশন (CDI) সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির ট্রান্সমিশন সিস্টেম ম্যানুয়াল, এখানে ওয়েট মাল্টিপ্লেট ক্লাচ এবং ৪-স্পিড গিয়ারবক্স রয়েছে।
(২) বডি ডাইমেনশন – বাইকটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা যথাক্রমে ১৯৪৫ মিমি, ৭৭০ মিমি, এবং ১০৬৫ মিমি। এটি বেশ হালকা বাইক, মাত্র ১০৯ কেজি। ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি ১০.৫ লিটার।
(৩) ব্রেকিং এবং সাসপেনশন – বাইকটির সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন সিস্টেম এবং পেছনের দিকে হাইড্রোলিক ডাবল এক্টিং সুইং-আর্ম সাসপেনশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। এটির উভয় চাকায় ফ্রিকশন টাইপ মেকানিক্যাল এক্সপান্ডিং-শু টাইপ ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে।
(৪) টায়ার এবং হুইল – বাইকটিতে টিউবটাইপ টায়ার এবং অ্যালয় টাইপ হুইল ব্যবহার করা হয়েছে। চাকা তুলনামূলক সরু হলেও, টায়ারের গ্রিপ খুবই ভালো।
বাইকটির বর্তমান বাজার মূল্য – ১,২০,০০০ টাকা/=
Bajaj CT 100B
Bajaj CT 100B, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাজেট-বান্ধব কমিউটার বাইক। রেগুলার কমিউটের জন্য এটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি মোটরসাইকেল। হালকা ওজন এবং কন্ট্রোল করা সহজ বিধায় বাইকটি খুবই কম্ফোর্টেবল ভাবে চালানো যায়। জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং রেগুলার কমিউটের উপযোগী হওয়ায় বাইকটি সিটি রোডে খুবই কার্যকর। সাশ্রয়ী দামের মধ্যে এটি বেশ স্মার্ট লুকিং এবং মজবুত স্ট্রাকচারের কমিউটার বাইক। বাজাজের এই বাইকটি থেকে আপনি প্রায় ৬০ কিমি/লিটার মাইলেজ এবং প্রায় ৮০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পেতে পারেন।
বাইকটি এখনকার সময় অনুযায়ী ওল্ড-ফ্যাশন্ড এবং তেমন আধুনিক নয়, তবে এটির দুর্দান্ত মাইলেজ, লং-লাস্টিং ইঞ্জিন পারফরম্যান্স এবং রেগুলার ব্যবহার উপযোগীতা এটিকে এখনো গ্রাহক জনপ্রিয়তার কাতারে রেখেছে। বাইকটির ইলেক্ট্রিক্যাল কনসোল সেমি-ডিজিটাল ধরণের। এটির হেডলাইট, টেইল লাইট এবং ইন্ডিকেটরস হ্যালোজেন ধরণের। বর্তমানে বাইকটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
(১) ইঞ্জিন – বাইকটিতে ৯৯.২৭ সিসির ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনে এক্সহস্টটেক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে যা এয়ার-কুলড। এছাড়াও এটিতে ২-ভালভ ক্যাপাসিটর ডিসচার্জ ইগনিশন (CDI) সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে যা ইঞ্জিনের স্থায়ীত্ব বাড়ায়। এটির ইঞ্জিনে ৪-স্পিড ট্রান্সমিশন রয়েছে এবং এখানে ওয়েট টাইপ ক্লাচ ব্যবহার করা হয়েছে।
(২) বডি ডাইমেনশন – বাইকটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা যথাক্রমে ১৯৭৫ মিমি, ৭৫২ মিমি, এবং ১০৬৫ মিমি। এটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬৯ মিমি। এটি বেশ হালকা বাইক, মাত্র ১০৯ কেজি। বাইকটির জ্বালানি ট্যাংকের ধারণ ক্ষমতা ১০.৫ লিটার।
(৩) ব্রেক এবং সাসপেনশন – বাইকটির সামনের দিকে ডুয়াল টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক এবং পেছনের দিকে স্প্রিং-এন-স্প্রিং (SNS) সাসপেনশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির সামনের এবং পিছনের ব্রেক দুটিই ১১০ মিমি-এর ড্রাম টাইপ।
(৪) হুইল এবং টায়ার – এটিতে টিউব টাইপ টায়ার এবং স্পোক টাইপ হুইল ব্যবহার করা হয়েছে। উভয় চাকার ব্যাস ১৭’’ ইঞ্চি। বাইকটির চাকা চিকন হলেও টায়ারের গ্রিপ খুবই ভালো।
বাইকটির বর্তমান বাজার মূল্য – ৮৯,৯০০ টাকা/=
Bajaj CT 100 ES
Bajaj CT 100 ES বাইকটি হল CT 100 এর একটি আপডেটেড সংস্করণ। এটি একটি জনপ্রিয় কমিউটার টাইপ মোটরসাইকেল। বাইকটির এই সংস্করণে ইলেক্টিক স্টার্ট সহ আরও বেশ কিছু উন্নত ফিচার সংযুক্ত করা হয়েছে। এটি বাজাজ ব্র্যান্ডের অন্যতম সফল এবং বহুল বিক্রিত একটি বাইক। লং-লাস্টিং পারফরম্যান্স এবং দৈনন্দিন ব্যবহার উপযোগী হওয়ায় এটি এখনো দেশের বাজার ধরে রেখেছে।
বাইকটির প্রধান সুবিধাগুলো হলো – বেশি মাইলেজ, লং-লাস্টিং ইঞ্জিন পারফরম্যান্স এবং এভেইলেবল সার্ভিসিং। মূলত জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং ভালো ইঞ্জিন পারফরম্যান্সের কারণে বাইকটি গ্রাহক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাজাজের দাবি অনুযায়ী এটি প্রায় ৮৯.৬ কিমি/লিটার মাইলেজ দেবে, এবং স্পিডও সিটি রোডের জন্য পারফেক্ট, প্রায় ৯০ কিমি/আওয়ার। জ্বালানি ধারণ ক্ষমতাও বেশ ভালো। বাইকটির হেডলাইট, টেইল লাইট এবং ইন্ডিকেটরস হ্যালোজেন ধরণের।
(১) ইঞ্জিন – বাইকটিতে ১০২ সিসির ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে এক্সহস্টটেক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে যা এয়ার-কুলড। এছাড়াও এটিতে ক্যাপাসিটর ডিসচার্জ ইগনিশন (CDI) সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনে ৪-স্পিড ট্রান্সমিশন রয়েছে এবং এতে ওয়েট টাইপ মাল্টি-প্লেট ক্লাচ ব্যবহার করা হয়েছে।
(২) বডি ডাইমেনশন – বাইকটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা যথাক্রমে ১৯৪৫ মিমি, ৭৫২ মিমি, এবং ১০৭২ মিমি। এটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬০ মিমি। হুইলবেস ১২৩৫ মিমি। এটি বেশ হালকা বাইক, ১১০ কেজি। জ্বালানি ট্যাংকের ধারণ ক্ষমতা ১০.৫ লিটার।
(৩) ব্রেক এবং সাসপেনশন – বাইকটির সামনের দিকে ডুয়াল টেলিস্কোপিক হাইড্রোলিক সাসপেনশন সিস্টেম এবং পেছনের দিকে স্প্রিং-এন-স্প্রিং (SNS) সাসপেনশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের এবং পিছনের ব্রেক দুটিই ১১০ মিমি-এর ড্রাম টাইপ।
(৪) হুইল এবং টায়ার – বাইকটির টায়ার টিউবলেস এবং হুইল অ্যালয় টাইপ। উভয় চাকাই স্পোক দিয়ে সজ্জিত এবং এর ব্যাস ১৭”। ওজন অনুযায়ী চাকা বেশ পাতলা, তবে টায়ারের গ্রিপ খুবই ভালো।
বাইকটির বর্তমান বাজার মূল্য – ১১১,০০০/= টাকা।
Bajaj Discover 100
Bajaj Discover 100 বাংলাদেশে ব্যাপক ব্যবহৃত এবং বহুল বিক্রিত একটি মোটরসাইকেল। এটি একটি প্রপার কমিউটার-বেসড মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেলটি ১০০সিসি রেঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে স্মার্ট লুকিং, টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী। সম্পূর্ণ কমিউনিটি পারপাসে ব্যবহারের জন্য এবং বাজেট সাশ্রয়ের ব্যাপারে চিন্তা করলে এটি একটি দুর্দান্ত বাইক। এটি লিটারে প্রায় ৪৫ কিমি মাইলেজ দেয়। বাইকাররা ফুল ট্যাংক ফুয়েলে ৭০+ কিঃমিঃ মাইলেজ পেয়েছেন এবং স্পিড প্রায় ৭০ কিমি/আওয়ার।
(১) ইঞ্জিন – বাইকটিতে ৯৪.৩৮ সিসি ইঞ্জিন ডিসপ্লেসমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির ইঞ্জিন এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক ইঞ্জিন সহ সিঙ্গেল-সিলিন্ডার।
(২) বডি ডাইমেনশন – এটির সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্য ২০৪০ মিমি, প্রস্থ ৭৬০ মিমি এবং উচ্চতা ১০৮৭ মিমি।
(৩) সাসপেনশন এবং ব্রেক – বাইকটির সামনের চাকায় টেলিস্কোপিক এবং পিছনের চাকায় নাইট্রোক্স সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। উভয় চাকার ব্রেকই ড্রাম ব্যবহার করা হয়েছে।
(৪) হুইল এবং টায়ার – বাইকটির টায়ার টিউবলেস এবং হুইল অ্যালয় টাইপ। উভয় চাকাই স্পোক দিয়ে সজ্জিত এবং এর ব্যাস ১৭”। ওজন অনুযায়ী চাকা বেশ পাতলা, তবে টায়ারের গ্রিপ খুবই ভালো।
বাইকটির বর্তমান বাজার মূল্য – ১,১১,৫০০/= টাকা।
Bajaj Platina 100 ES
Bajaj Platina 100 ES বাইকটি কিছুটা পুরনো তবে বেশ স্মার্ট আউটলুকের একটি বাইক। প্রথম দেখায় ইয়াং জেনারেশনের চোখ ধাঁধাতে না পারলেও, এর লং-লাস্টিং পারফরম্যান্স এবং কম্ফোর্টেবল রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স যেকোনো বয়সের মানুষকে মুগ্ধ করবে। ইলেকট্রিক্যাল প্যানেলটি এনালগ স্টাইলের। বাইকটি থেকে আপনি প্রায় ৫০ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৮০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পাবেন। এটি ইলেকট্রিক মেথডে স্টার্ট করা যায়।
(১) ইঞ্জিন – এটি একটি ১০২ সিসির বাইক, যাতে রয়েছে একটি ৪-স্পিডের গিয়ারবক্স। বাইকের সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এয়ার কুলিং, ৪-স্ট্রোক, টুইন স্পার্ক ডিটিএস-আই এক্সহস্টেক ইঞ্জিনটি কার্বুরেটরের মাধ্যমে জ্বালানী সাপ্লাই পেয়ে থাকে।
(২) বডি ডাইমেনশন – বাইকটির দৈর্ঘ্য ২০০০ মিমি, প্রস্থ ৮৪০ মিমি এবং উচ্চতা ১০৬০ মিমি। বাইকটির হুইলবেইজ ১২৫৫ মিমি, যেখানে নিরাপত্তার জন্য গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়েছে ১৯০ মিমি। জ্বালানী ট্যাংকটির সাইজ ১১.৫ লিটার, যেখানে ২ লিটার রিসার্ভ হিসেবে আছে। বাইকটির ওজন ১০৮ কেজি।
(৩) সাসপেনশন ও ব্রেক – বাইকটির সামনের দিকে ১২৫ মিমি ট্র্যাভেলের ডুয়াল টেলিস্কপিক সিস্টেম সাসপেনশন এবং পেছনে ১০০ মিমি ট্র্যাভেলের এসএনএস সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। এই এসএনএস-এ মধ্যে রয়েছে কো-এক্সিয়াল হাইড্রোলিক শক অ্যাবসর্বারের সাথে ট্রেইলিং আর্ম এবং কয়েল স্প্রিং। বাইকটির উভয় ব্রেকই ড্রাম টাইপ।
(৪) হুইল এবং টায়ার – বাইকটিতে ১৭ ইঞ্চি অ্যালয় রীমের টিউব টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের চাকায় ২.৭৫ X ১৭, ৪১ পি এবং পেছনের চাকায় ৩.০০ X ১৭, ৫০ পি সেট-আপ দেয়া হয়েছে।
বাইকটির বর্তমান বাজার মূল্য – ৯৬,৯০০/= টাকা।