পুরাতন বাইক কেনার নিয়ম | যে সকল বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

30 Aug, 2023   
পুরাতন বাইক কেনার নিয়ম | যে সকল বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

বাংলাদেশে মোটরবাইকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছেই। চাকরি, ব্যবসা, শখ বা ফ্যাসিনেশন, দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম সহ বিভিন্ন প্রয়োজনেই মানুষ বাইক ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে। তবে বাইকের দামের কারণে, অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও, সাধ্য না থাকায় বাইক কিনতে পারেন না অথবা পুরানো বাইক কেনেন। অনেকেই সাধ্য আর প্রয়োজন ব্যালান্স করে পুরাতন মোটরসাইকেল কেনেন। তবে পুরানো মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে প্রায় সবাই কিছু না কিছু কনফিউশনে থাকেন। পুরানো বাইক কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যাচাই করে না কিনলে, এই বাইকই আপনার জীবনে একটি বোঝা হয়ে উঠতে পারে।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে যে সব বিষয় নিয়ে আমরা কনফিউশনে থাকি যেগুলো হলো, বর্তমান দাম কেমন হতে পারে, বাইকের কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা, ইঞ্জিন এবং মেকানিক্যাল কন্ডিশনের কি অবস্থা, কতদিন ব্যবহার করা হয়েছে, ইত্যাদি। এই ব্লগে পুরানো বাইক কেনার আগে কি কি বিষয় যাচাই করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া পুরাতন বাইক কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয় তা নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।

আমাদের দেশে অনেকেই ব্যবহৃত বা সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক কিনতে চান না বা পছন্দ করেন না। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরাতন মোটরসাইকেল কিনে এটি সার্ভিসিং বা রিপেয়ার করতে গিয়ে অনেক খরচ হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যত্ন সহকারে ব্যবহৃত বাইক অনায়াসে একটা নতুন বাইকের সমান পারফরম্যান্স দিচ্ছে।
তাই প্রথমে যাচাই করবেন, ক্রয় মূল্য আর সার্ভিসিং চার্জ মিলিয়ে যেন, বর্তমান মার্কেট ভ্যালুর চেয়ে কম হয়। এখানে খেয়াল রাখবেন বাইকের দামি যন্ত্রাংশ গুলো কেমন কাজ করছে, এবং কোনো যন্ত্রাংশ পরিবর্তন বা সংযোজন করতে হলে কত খরচ হতে পারে। ফ্রেম, সাসপেনশন, ফর্ক, ব্রেক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন, এই অংশগুলো ভালভাবে যাচাই করে নেবেন। তাছাড়া বাইকের কাগজপত্র, লাইসেন্স, রেজিস্ট্রার এগুলো ঠিক আছে কিনা যাচাই করবেন। গাড়ির নামে কোনো মামলা আছে কিনা চেক করবেন। বাইকের মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন, কারণ চুরি করা বাইক থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

ভালোভাবে যাচাই করবেন বাইকের লিগ্যাল ডকুমেন্টস এবং বাইকের সব ফী যথাসময়ে দেওয়া হয়েছে কিনা। বাইকের ইঞ্জিন এবং চেসিস নম্বর সঠিক কিনা মিলিয়ে নেবেন। মূলত এসব বিষয়গুলো যাচাই করে পুরাতন মোটরসাইকেল কিনলে, আপনি অযাচিত অনেক ঝামেলা এবং খরচ থেকে বেঁচে যাবেন।এই ব্লগে পুরানো বাইক কেনার আগে কি কি বিষয় যাচাই করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া পুরাতন মোটরসাইকেল ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয় তা নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।

পুরানো বাইক কেনার আগে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে

(১) বাইক মডিফাই করা কিনা দেখুন

ইঞ্জিন এবং মেকানিক্যাল কন্ডিশন চেক করুন। যন্ত্রাংশ, ইঞ্জিন এবং চেসিস নম্বর চেক করুন। যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা যাচাই করুন। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে মডিফাই করা বাইক কেনা সুবিধাজনক নয়। কারণ অনেক সময় বাইকের কোনো দুর্বলতা আড়াল জন্য মডিফিকেশন করা হয়। তাই ফ্রেম, সাসপেনশন, ফর্ক, ব্রেক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন, এই অংশগুলো ভালভাবে যাচাই করে নেবেন। তাছাড়াও মোড করা বাইকের যন্ত্রাংশ ভালো হয় না অথবা সেকেন্ড হ্যান্ড হয়। তাই মোডিফাই করা বাইক কিনলে যাচাই করে কিনবেন।

(২) বাইকের যান্ত্রিক পরিস্থিতি এবং বর্তমান কন্ডিশন

সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরবাইকের বর্তমান কন্ডিশন বোঝার জন্য ভালোভাবে টেস্ট রাইড করে দেখুন। তবে যান্ত্রিক পরিস্থিতি বুঝতে একজন দক্ষ মেকানিক সাথে থাকলে ভালো হয়। একজন দক্ষ মেকানিক, অথবা একজন দক্ষ বাইকার বাইক ভালো ভাবে অবজার্ভ করে এর এক্সটার্নাল বা ইন্টার্নাল কোন সমস্যা আছে কি না সহজেই বের করতে পারেন। এভাবে যাচাই করা সম্ভব না হলে, সেলারের সাথে কথা বলে কোন এক্সপার্ট বা সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে চেক করতে পারেন।

(৩) বাইক পরিছন্ন কিনা দেখুন

পরিছন্ন বাইক এক দেখাতেই যে কারো নজরে আসে। সেলারের সাথে বাইকের বর্তমান কন্ডিশন নিয়ে ভালোভাবে কথা বলুন। অনেক বাইকার, বাইকের উপরিভাগ মুছে পরিষ্কার করেন, কিন্তু ভেতরের খুঁটিনাটি পার্টস পরিষ্কার করেন না, এতে বাইকের ইন্টারনাল পার্টসের দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি হয়। যারা বাইক লাভার তারা রেগুলার বাইকের যত্ন নেন। অনেক সেলাররা বাইক বিক্রির আগে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে আনেন, এতে বাইকের আসল কন্ডিশন বুঝা যায় না। তাই পুরানো বাইক কেনার আগে ইন্টারনাল পার্টস গুলো ভালোভাবে চেক করুন, যে পার্টস গুলোতে বেশি ময়লা জমে, সেই জায়গা গুলো ভালো করে দেখুন।

(৪) রিপেয়ার/মেরামত খরচ

সাধারণত পুরাতন মোটরসাইকেল কিনলে কিছু পার্টস মেরামত অথবা সংযোজনের প্রয়োজন হয়। এতে কিছু টাকা খরচ হবেই। আবার অনেকেই বাইক কেনার পর, নিজের পছন্দ অনুযায়ী কিছু মডিফিকেশন করতে চান। তাই পুরানো বাইক কেনার আগে একটু হিসাব করে নেবেন মেরামত, মেইনটেন্যান্স, সংযোজন, এবং কাস্টমাইজেশন কস্ট মিলে কত খরচ পড়তে পারে। এতে আপনি টোটাল বাজেট সর্ম্পকে অবগত থাকবেন। এবং এই সব বিষয় মাথায় রেখে সেলারের সাথে দরদাম করতে পারবেন।

(৫) ব্রেকিং সিস্টেম, ক্লাচ এবং সাসপেনশন

পুরানো বাইক কেনার সময়, বাইকটি কত কিমি চালানো হয়েছে তা বুঝা যায়। আপনি বাইকের ডায়াল ইনডিকেটর দেখলেই, বাইকটি ঠিক কতটা রাস্তা পাড়ি দিয়েছে, তা দেখতে পারবেন। ক্লাচ চেক করে বাইকটি টেস্ট ড্রাইভ করুন। গতি বাড়ানো অবস্থায় সামনের ব্রেকে চাপ দিন। দেখবেন বাইকটি কোনো শব্দ না করেই স্থির হয়ে যাবে। এরপর ধীরে ধীরে ব্রেক ছেড়ে দেবেন, এবং ক্লাচ কন্ট্রোল করে পিকআপ বাড়াবেন, দেখবেন বাইকটি আস্তে আস্তে আগাবে। এই পুরো ব্যাপারটিতে কোনো প্রব্লেম ফেস করলে, সেলারের সাথে কথা বলে বুঝে নিন। আপনার কম্ফোর্টেবল এরিয়া অনুযায়ী ব্রেকিং সিস্টেম এবং সাসপেনশন ঠিক করে নিন।
বাইকের সাসপেনশন চেক করার জন্য ব্রেকের সাহায্য নিতে হয়। ব্রেক কষার পর বাইকের সাসপেনশন ফোর্কগুলো খুব সুন্দর ভাবে কোনো শব্দ না করে আগের অবস্থায় চলে আসবে। ফোর্করিং গুলো চেক করুন, এগুলো পরিষ্কার এবং মসৃণ ভাবে কাজ করছে কিনা। একই ভাবে পিছনের সাসপেনশন চেক করুন।

(৬) টায়ার সহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ পরীক্ষা
বাইকের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ গুলো হল ফ্রেম, সাসপেনশন, ফর্ক, ব্রেক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন, ইত্যাদি। এই পার্টস গুলোতে কোনো প্রব্লেম আছে কিনা খেয়াল করুন। বাইকের ধোঁয়া স্বাভাবিক ভাবে বের হচ্ছে কিনা দেখুন। সাইলেন্সর দিয়ে অতিরিক্ত ধোয়া বের হচ্ছে কিনা লক্ষ্য করুন। এই সমস্যা থাকা মানে, বাইকটির সিলিন্ডার অনেকটাই ড্যামেজড। এটি আপনাকে ভালোই খরচ করে সার্ভিসিং করতে হবে।

এরপর বাইকের টায়ারের দিকে নজর দিন। চাকার লেয়ারে যদি ফাটা ফাটা দাগ থাকে, চাকার লেয়ার যদি ক্ষয়ে যাওয়ার মতো দেখা যায়, তাহলে টায়ার পরিবর্তন করতে হবে। এরকম টায়ার হার্ড ব্রেক এবং স্কিড করার সময় ভালোভাবে সাপোর্ট দিতে পারে না।

(৭) রিসেল ভ্যালু
দামদর করার আগে রিসেল ভ্যালু কত হতে পারে চিন্তা করুন। বর্তমান মার্কেট ভ্যালু কত, কত দিন ব্যবহার করা হয়েছে, মাইলেজ কত হয়েছে, রিপেয়ার করা হয়েছে কিনা, সর্বোপরি বাইকের বর্তমান কন্ডিশন বিবেচনা করে, দামদর করবেন। অবশ্যই বাইকের মালিকানা, রেজিস্ট্রেশন অন্য সকল লিগ্যাল ডকুমেন্টস ঠিক আছে কি না, চেক করে নেবেন।

পুরানো বাইকের লিগ্যাল ডকুমেন্টস ভালোভাবে চেক করুন

বাইকের কন্ডিশন, মেরামত/সার্ভিসিং কস্ট, এগুলো যাচাই করার পর, এর সব লিগ্যাল ডকুমেন্টস ঠিক আছে কিনা, ভালবাবে চেক করুন। প্রথমে বাইকের রেজিস্ট্রেশন পেপার এবং ইনস্যুরেন্স পেপার চেক করুন। এগুলোর রেগুলার ফী দেওয়া হয়েছে কিনা, মেয়াদ ঠিক আছে কিনা চেক করুন। এর পর চেক করুন বাইকটির উপর কোন মামলা আছে কিনা, অর্থাৎ বাইকটির কোনো ডকুমেন্টস লিগ্যাল ইস্যুতে অভিযুক্ত কীনা।

বাইকের সব লিগ্যাল ডকুমেন্টস আসল কিনা, তা সাথে সাথে যাচাই করা সম্ভব না। তবে ইনস্যুরেন্স কোম্পানীর ওয়েবসাইটে ভিজিট করে অথবা কল করে ইনস্যুরেন্স পেপার যাচাই করা সম্ভব। এর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হবেন সেলার আপনাকে রিপেয়ার বা ড্যামেজ হয়ে যাওয়া বাইক বিক্রয় করছেন না।

বাইকের ইঞ্জিন এবং চেসিস নাম্বার রেজিস্ট্রেশনের সাথে মিলিয়ে নেবেন। বাইকের রেজিস্ট্রেশন পেপারই আসল জিনিস। বাইকটি যদি রেজিস্টার করার মত অবস্থায় না থাকে, সে ক্ষেত্রে আসল মালিকের সকল ডকুমেন্টস নিতে হবে এবং লয়ার এর সাহায্য নিয়ে রেজিস্টার করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন পেপার ছাড়া বাইক চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এই ব্যাপারটি অনেক ঝামেলার। জরিমানার পরিমান অনেক বেশিও হতে পারে। মাথায় রাখবেন যদি বাইকটি রেজিষ্ট্রেশন না করা থাকে এবং বাইকের নাম ট্রান্সফার করা সম্ভব না হয় তাহলে বাইকটি না কেনাই শ্রেয়।

সব ঠিক থাকলে বাইকের লাইসেন্স এবং এর মেয়াদ ঠিক আছে কিনা দেখুন। সব লিগ্যাল ডকুমেন্টস চেক করে বাইক কিনুন। এতে আপনি শতভাগ নিরাপদ থাকবেন।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় যে ভুলগুলো করবেন না:

সাধারণত প্রয়োজনের আমরা তাগিদেই পুরানো বাইক কিনে থাকি। তাছাড়াও ভালো বাইক দরকার কিন্তু বাজেট কম সেক্ষেত্রেও সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেলের চিন্তা আসে। বিক্রেতারা বিভিন্ন কারণে বাইক বিক্রী করে দেন, ভাগ্য ভালো থাকলে এবং বুঝে-শুনে কিনলে আপনি দূর্দান্ত মানের বাইক পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু ভাগ্য খারাপ থাকলে, কিংবা ভালোভাবে না বুঝে বাইক কিনলে নানা ধরনের বিড়বম্বনায় পরতে পারেন। তাই পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় কিছু সাধারন ভুল আপনাদের এড়িয়ে চলতে হবে।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় যে ভুলগুলো হয়

(১) বাইকের কাগজপত্র ঠিক ভাবে দেখে নেবেন। যেমন, লাইসেন্সের মেয়াদ, ট্যাক্স টোকেন, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট, ইত্যাদি।
(২) বিক্রেতা অনেক সময় নতুন মিটার লাগিয়ে নেন, এতে ঠিক কত মাইলেজ পথ অতিক্রম করেছে, তা বোঝা সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রে টায়ার গ্রিপ বা টায়ারের কন্ডিশন চেক করবেন।
(৩) বাইকের দুটি স্টার্ট কী (চাবি) থাকে, অনেকে একটা কী নিয়ে আসেন।
(৪) রাতের বেলা, অপরিচিত জায়গায়, নির্জন জায়গায় বাইক কিনতে যাবেন না। এতে প্রতারিত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
(৫) দক্ষ টেকনিশিয়ান, অথবা অন্তত দক্ষ বাইকার সাথে না নিয়ে যাওয়া। এতে বাইকের আসল কন্ডিশন আপনি নাও বুঝতে পারেন।

পুরানো বাইক কেনার সময় ডকুমেন্টস সম্পর্কিত যে ভুলগুলো করবেন না:

(১) মালিকানা সংক্রান্ত পেপারস সব চেক করবেন। কারণ মালিকানা পরিবর্তন বা নাম পরিবর্তন না করে বাইক চালালে ট্র্যাফিক পুলিশের মামলা এবং জরিমানার মুখে পরবেন।
(২) মূল মালিকের সাথে যোগাযোগ কঠিন হলে, বা তার অবস্থান দূরে কোথাও হলে, পুরানো বাইক কেনার আগে বা সঙ্গে সঙ্গে মূল মালিকের সাথে এফিডেভিট বা হলফনামা করে নাম পরিবর্তনের জন্য এপ্লাই করুন। না হলে আপনি পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিশের ঝামেলায় পরবেন, তাছাড়াও পরবর্তীতে বাইক বিক্রীর সময় ঝামেলায় পরবেন। তাই আইনগত ভাবে বাইকের মালিক হন।
(৩) বিক্রেতা নিজে বা বাইক নিয়ে কোনো ক্রাইম করে থাকলে, এর দায় আপনার উপরও পরতে পারে। তাই ট্রাফিক রিলেটেড ডকুমেন্টস, ইন্সুরেন্স পেপারস চেক করে নেবেন। প্রয়োজনে রেজিস্ট্রেশান পেপার, ফিটনেস পেপার, ব্লু বুক এর ফটোকপি নিয়ে বিআরটিএ অফিসে নিজে গিয়ে চেক করুন। ইঞ্জিন নং এবং চেসিস নং ঠিক আছে কি না, মিলিয়ে দেখুন।
(৪) অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে, বিক্রেতার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি রাখুন, এবং চেক করে দেখুন, আইডিটি নির্বাচন কমিশনের লিস্টেড কিনা। পারলে বাইকের ক্রয় রশিদটি বিক্রেতাকে নিয়ে আসতে বলুন। এরপর একটি এগ্রিমেন্ট পেপার সাইন করুন, ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প সহ।
(৫) বাইক বেচা-কেনার সময় সতর্ক থাকবেন, সকল লিগ্যাল ডকুমেন্টস চেক করে বুঝে নেবেন। বেচা-কেনার পর্ব শেষ হলে, দ্রুত বি.আর.টি.এ থেকে বাইকের মালিকানা ট্রান্সফার বা নাম পরিবর্তন করে নেবেন।

পরিশেষে, পুরানো বাইক কেনার আগে কেনার আগে অবশ্যই উপরের আলোচিত বিষয় গুলো মাথায় রাখবেন। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করলে অনেক ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবেন। বাইকের বর্তমান কন্ডিশন এবং লিগ্যাল ডকুমেন্টস বিবেচনা করেই বিক্রেতার সাথে দরদাম করবেন। সম্ভব হলে এসব বিষয়ে দক্ষ কাউকে সাথে নিয়ে পরামর্শ নেবেন। সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক কেনার চিন্তা করলে নিরাপত্তা নিয়ে একটু সচেতন থাকতেই হবে।

বাইক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ধারণা পেতে ভিজিট করুন বাইকস গাইডে। এটি একটি মোটরসাইকেল পোর্টাল যেখানে আপনি দেশে থাকা সব ধরণের বাইক সম্পর্কে ধারণা পাবেন। এখানে বিভিন্ন বাইকের স্পেসিফিকেশন, রিভিউ, ভালো-মন্দ দিক নিয়ে পর্যালোচনা, সহ আরো অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন।

বাংলাদেশে মোটরবাইকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছেই। চাকরি, ব্যবসা, শখ বা ফ্যাসিনেশন, দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম সহ বিভিন্ন প্রয়োজনেই মানুষ বাইক ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে। তবে বাইকের দামের কারণে, অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও, সাধ্য না থাকায় বাইক কিনতে পারেন না অথবা পুরানো বাইক কেনেন। অনেকেই সাধ্য আর প্রয়োজন ব্যালান্স করে পুরাতন মোটরসাইকেল কেনেন। তবে পুরানো মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে প্রায় সবাই কিছু না কিছু কনফিউশনে থাকেন। পুরানো বাইক কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যাচাই করে না কিনলে, এই বাইকই আপনার জীবনে একটি বোঝা হয়ে উঠতে পারে।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে যে সব বিষয় নিয়ে আমরা কনফিউশনে থাকি যেগুলো হলো, বর্তমান দাম কেমন হতে পারে, বাইকের কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা, ইঞ্জিন এবং মেকানিক্যাল কন্ডিশনের কি অবস্থা, কতদিন ব্যবহার করা হয়েছে, ইত্যাদি। এই ব্লগে পুরানো বাইক কেনার আগে কি কি বিষয় যাচাই করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া পুরাতন বাইক কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয় তা নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।

আমাদের দেশে অনেকেই ব্যবহৃত বা সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক কিনতে চান না বা পছন্দ করেন না। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরাতন মোটরসাইকেল কিনে এটি সার্ভিসিং বা রিপেয়ার করতে গিয়ে অনেক খরচ হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যত্ন সহকারে ব্যবহৃত বাইক অনায়াসে একটা নতুন বাইকের সমান পারফরম্যান্স দিচ্ছে।
তাই প্রথমে যাচাই করবেন, ক্রয় মূল্য আর সার্ভিসিং চার্জ মিলিয়ে যেন, বর্তমান মার্কেট ভ্যালুর চেয়ে কম হয়। এখানে খেয়াল রাখবেন বাইকের দামি যন্ত্রাংশ গুলো কেমন কাজ করছে, এবং কোনো যন্ত্রাংশ পরিবর্তন বা সংযোজন করতে হলে কত খরচ হতে পারে। ফ্রেম, সাসপেনশন, ফর্ক, ব্রেক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন, এই অংশগুলো ভালভাবে যাচাই করে নেবেন। তাছাড়া বাইকের কাগজপত্র, লাইসেন্স, রেজিস্ট্রার এগুলো ঠিক আছে কিনা যাচাই করবেন। গাড়ির নামে কোনো মামলা আছে কিনা চেক করবেন। বাইকের মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন, কারণ চুরি করা বাইক থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

ভালোভাবে যাচাই করবেন বাইকের লিগ্যাল ডকুমেন্টস এবং বাইকের সব ফী যথাসময়ে দেওয়া হয়েছে কিনা। বাইকের ইঞ্জিন এবং চেসিস নম্বর সঠিক কিনা মিলিয়ে নেবেন। মূলত এসব বিষয়গুলো যাচাই করে পুরাতন মোটরসাইকেল কিনলে, আপনি অযাচিত অনেক ঝামেলা এবং খরচ থেকে বেঁচে যাবেন।এই ব্লগে পুরানো বাইক কেনার আগে কি কি বিষয় যাচাই করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া পুরাতন মোটরসাইকেল ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয় তা নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।

পুরানো বাইক কেনার আগে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে

(১) বাইক মডিফাই করা কিনা দেখুন

ইঞ্জিন এবং মেকানিক্যাল কন্ডিশন চেক করুন। যন্ত্রাংশ, ইঞ্জিন এবং চেসিস নম্বর চেক করুন। যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা যাচাই করুন। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে মডিফাই করা বাইক কেনা সুবিধাজনক নয়। কারণ অনেক সময় বাইকের কোনো দুর্বলতা আড়াল জন্য মডিফিকেশন করা হয়। তাই ফ্রেম, সাসপেনশন, ফর্ক, ব্রেক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন, এই অংশগুলো ভালভাবে যাচাই করে নেবেন। তাছাড়াও মোড করা বাইকের যন্ত্রাংশ ভালো হয় না অথবা সেকেন্ড হ্যান্ড হয়। তাই মোডিফাই করা বাইক কিনলে যাচাই করে কিনবেন।

(২) বাইকের যান্ত্রিক পরিস্থিতি এবং বর্তমান কন্ডিশন

সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরবাইকের বর্তমান কন্ডিশন বোঝার জন্য ভালোভাবে টেস্ট রাইড করে দেখুন। তবে যান্ত্রিক পরিস্থিতি বুঝতে একজন দক্ষ মেকানিক সাথে থাকলে ভালো হয়। একজন দক্ষ মেকানিক, অথবা একজন দক্ষ বাইকার বাইক ভালো ভাবে অবজার্ভ করে এর এক্সটার্নাল বা ইন্টার্নাল কোন সমস্যা আছে কি না সহজেই বের করতে পারেন। এভাবে যাচাই করা সম্ভব না হলে, সেলারের সাথে কথা বলে কোন এক্সপার্ট বা সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে চেক করতে পারেন।

(৩) বাইক পরিছন্ন কিনা দেখুন

পরিছন্ন বাইক এক দেখাতেই যে কারো নজরে আসে। সেলারের সাথে বাইকের বর্তমান কন্ডিশন নিয়ে ভালোভাবে কথা বলুন। অনেক বাইকার, বাইকের উপরিভাগ মুছে পরিষ্কার করেন, কিন্তু ভেতরের খুঁটিনাটি পার্টস পরিষ্কার করেন না, এতে বাইকের ইন্টারনাল পার্টসের দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি হয়। যারা বাইক লাভার তারা রেগুলার বাইকের যত্ন নেন। অনেক সেলাররা বাইক বিক্রির আগে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে আনেন, এতে বাইকের আসল কন্ডিশন বুঝা যায় না। তাই পুরানো বাইক কেনার আগে ইন্টারনাল পার্টস গুলো ভালোভাবে চেক করুন, যে পার্টস গুলোতে বেশি ময়লা জমে, সেই জায়গা গুলো ভালো করে দেখুন।

(৪) রিপেয়ার/মেরামত খরচ

সাধারণত পুরাতন মোটরসাইকেল কিনলে কিছু পার্টস মেরামত অথবা সংযোজনের প্রয়োজন হয়। এতে কিছু টাকা খরচ হবেই। আবার অনেকেই বাইক কেনার পর, নিজের পছন্দ অনুযায়ী কিছু মডিফিকেশন করতে চান। তাই পুরানো বাইক কেনার আগে একটু হিসাব করে নেবেন মেরামত, মেইনটেন্যান্স, সংযোজন, এবং কাস্টমাইজেশন কস্ট মিলে কত খরচ পড়তে পারে। এতে আপনি টোটাল বাজেট সর্ম্পকে অবগত থাকবেন। এবং এই সব বিষয় মাথায় রেখে সেলারের সাথে দরদাম করতে পারবেন।

(৫) ব্রেকিং সিস্টেম, ক্লাচ এবং সাসপেনশন

পুরানো বাইক কেনার সময়, বাইকটি কত কিমি চালানো হয়েছে তা বুঝা যায়। আপনি বাইকের ডায়াল ইনডিকেটর দেখলেই, বাইকটি ঠিক কতটা রাস্তা পাড়ি দিয়েছে, তা দেখতে পারবেন। ক্লাচ চেক করে বাইকটি টেস্ট ড্রাইভ করুন। গতি বাড়ানো অবস্থায় সামনের ব্রেকে চাপ দিন। দেখবেন বাইকটি কোনো শব্দ না করেই স্থির হয়ে যাবে। এরপর ধীরে ধীরে ব্রেক ছেড়ে দেবেন, এবং ক্লাচ কন্ট্রোল করে পিকআপ বাড়াবেন, দেখবেন বাইকটি আস্তে আস্তে আগাবে। এই পুরো ব্যাপারটিতে কোনো প্রব্লেম ফেস করলে, সেলারের সাথে কথা বলে বুঝে নিন। আপনার কম্ফোর্টেবল এরিয়া অনুযায়ী ব্রেকিং সিস্টেম এবং সাসপেনশন ঠিক করে নিন।
বাইকের সাসপেনশন চেক করার জন্য ব্রেকের সাহায্য নিতে হয়। ব্রেক কষার পর বাইকের সাসপেনশন ফোর্কগুলো খুব সুন্দর ভাবে কোনো শব্দ না করে আগের অবস্থায় চলে আসবে। ফোর্করিং গুলো চেক করুন, এগুলো পরিষ্কার এবং মসৃণ ভাবে কাজ করছে কিনা। একই ভাবে পিছনের সাসপেনশন চেক করুন।

(৬) টায়ার সহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ পরীক্ষা
বাইকের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ গুলো হল ফ্রেম, সাসপেনশন, ফর্ক, ব্রেক, ফুয়েল ট্যাঙ্ক, ইঞ্জিন, ইত্যাদি। এই পার্টস গুলোতে কোনো প্রব্লেম আছে কিনা খেয়াল করুন। বাইকের ধোঁয়া স্বাভাবিক ভাবে বের হচ্ছে কিনা দেখুন। সাইলেন্সর দিয়ে অতিরিক্ত ধোয়া বের হচ্ছে কিনা লক্ষ্য করুন। এই সমস্যা থাকা মানে, বাইকটির সিলিন্ডার অনেকটাই ড্যামেজড। এটি আপনাকে ভালোই খরচ করে সার্ভিসিং করতে হবে।

এরপর বাইকের টায়ারের দিকে নজর দিন। চাকার লেয়ারে যদি ফাটা ফাটা দাগ থাকে, চাকার লেয়ার যদি ক্ষয়ে যাওয়ার মতো দেখা যায়, তাহলে টায়ার পরিবর্তন করতে হবে। এরকম টায়ার হার্ড ব্রেক এবং স্কিড করার সময় ভালোভাবে সাপোর্ট দিতে পারে না।

(৭) রিসেল ভ্যালু
দামদর করার আগে রিসেল ভ্যালু কত হতে পারে চিন্তা করুন। বর্তমান মার্কেট ভ্যালু কত, কত দিন ব্যবহার করা হয়েছে, মাইলেজ কত হয়েছে, রিপেয়ার করা হয়েছে কিনা, সর্বোপরি বাইকের বর্তমান কন্ডিশন বিবেচনা করে, দামদর করবেন। অবশ্যই বাইকের মালিকানা, রেজিস্ট্রেশন অন্য সকল লিগ্যাল ডকুমেন্টস ঠিক আছে কি না, চেক করে নেবেন।

পুরানো বাইকের লিগ্যাল ডকুমেন্টস ভালোভাবে চেক করুন

বাইকের কন্ডিশন, মেরামত/সার্ভিসিং কস্ট, এগুলো যাচাই করার পর, এর সব লিগ্যাল ডকুমেন্টস ঠিক আছে কিনা, ভালবাবে চেক করুন। প্রথমে বাইকের রেজিস্ট্রেশন পেপার এবং ইনস্যুরেন্স পেপার চেক করুন। এগুলোর রেগুলার ফী দেওয়া হয়েছে কিনা, মেয়াদ ঠিক আছে কিনা চেক করুন। এর পর চেক করুন বাইকটির উপর কোন মামলা আছে কিনা, অর্থাৎ বাইকটির কোনো ডকুমেন্টস লিগ্যাল ইস্যুতে অভিযুক্ত কীনা।

বাইকের সব লিগ্যাল ডকুমেন্টস আসল কিনা, তা সাথে সাথে যাচাই করা সম্ভব না। তবে ইনস্যুরেন্স কোম্পানীর ওয়েবসাইটে ভিজিট করে অথবা কল করে ইনস্যুরেন্স পেপার যাচাই করা সম্ভব। এর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হবেন সেলার আপনাকে রিপেয়ার বা ড্যামেজ হয়ে যাওয়া বাইক বিক্রয় করছেন না।

বাইকের ইঞ্জিন এবং চেসিস নাম্বার রেজিস্ট্রেশনের সাথে মিলিয়ে নেবেন। বাইকের রেজিস্ট্রেশন পেপারই আসল জিনিস। বাইকটি যদি রেজিস্টার করার মত অবস্থায় না থাকে, সে ক্ষেত্রে আসল মালিকের সকল ডকুমেন্টস নিতে হবে এবং লয়ার এর সাহায্য নিয়ে রেজিস্টার করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন পেপার ছাড়া বাইক চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এই ব্যাপারটি অনেক ঝামেলার। জরিমানার পরিমান অনেক বেশিও হতে পারে। মাথায় রাখবেন যদি বাইকটি রেজিষ্ট্রেশন না করা থাকে এবং বাইকের নাম ট্রান্সফার করা সম্ভব না হয় তাহলে বাইকটি না কেনাই শ্রেয়।

সব ঠিক থাকলে বাইকের লাইসেন্স এবং এর মেয়াদ ঠিক আছে কিনা দেখুন। সব লিগ্যাল ডকুমেন্টস চেক করে বাইক কিনুন। এতে আপনি শতভাগ নিরাপদ থাকবেন।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় যে ভুলগুলো করবেন না:

সাধারণত প্রয়োজনের আমরা তাগিদেই পুরানো বাইক কিনে থাকি। তাছাড়াও ভালো বাইক দরকার কিন্তু বাজেট কম সেক্ষেত্রেও সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেলের চিন্তা আসে। বিক্রেতারা বিভিন্ন কারণে বাইক বিক্রী করে দেন, ভাগ্য ভালো থাকলে এবং বুঝে-শুনে কিনলে আপনি দূর্দান্ত মানের বাইক পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু ভাগ্য খারাপ থাকলে, কিংবা ভালোভাবে না বুঝে বাইক কিনলে নানা ধরনের বিড়বম্বনায় পরতে পারেন। তাই পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় কিছু সাধারন ভুল আপনাদের এড়িয়ে চলতে হবে।

পুরাতন মোটরসাইকেল কেনার সময় যে ভুলগুলো হয়

(১) বাইকের কাগজপত্র ঠিক ভাবে দেখে নেবেন। যেমন, লাইসেন্সের মেয়াদ, ট্যাক্স টোকেন, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট, ইত্যাদি।
(২) বিক্রেতা অনেক সময় নতুন মিটার লাগিয়ে নেন, এতে ঠিক কত মাইলেজ পথ অতিক্রম করেছে, তা বোঝা সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রে টায়ার গ্রিপ বা টায়ারের কন্ডিশন চেক করবেন।
(৩) বাইকের দুটি স্টার্ট কী (চাবি) থাকে, অনেকে একটা কী নিয়ে আসেন।
(৪) রাতের বেলা, অপরিচিত জায়গায়, নির্জন জায়গায় বাইক কিনতে যাবেন না। এতে প্রতারিত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
(৫) দক্ষ টেকনিশিয়ান, অথবা অন্তত দক্ষ বাইকার সাথে না নিয়ে যাওয়া। এতে বাইকের আসল কন্ডিশন আপনি নাও বুঝতে পারেন।

পুরানো বাইক কেনার সময় ডকুমেন্টস সম্পর্কিত যে ভুলগুলো করবেন না:

(১) মালিকানা সংক্রান্ত পেপারস সব চেক করবেন। কারণ মালিকানা পরিবর্তন বা নাম পরিবর্তন না করে বাইক চালালে ট্র্যাফিক পুলিশের মামলা এবং জরিমানার মুখে পরবেন।
(২) মূল মালিকের সাথে যোগাযোগ কঠিন হলে, বা তার অবস্থান দূরে কোথাও হলে, পুরানো বাইক কেনার আগে বা সঙ্গে সঙ্গে মূল মালিকের সাথে এফিডেভিট বা হলফনামা করে নাম পরিবর্তনের জন্য এপ্লাই করুন। না হলে আপনি পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিশের ঝামেলায় পরবেন, তাছাড়াও পরবর্তীতে বাইক বিক্রীর সময় ঝামেলায় পরবেন। তাই আইনগত ভাবে বাইকের মালিক হন।
(৩) বিক্রেতা নিজে বা বাইক নিয়ে কোনো ক্রাইম করে থাকলে, এর দায় আপনার উপরও পরতে পারে। তাই ট্রাফিক রিলেটেড ডকুমেন্টস, ইন্সুরেন্স পেপারস চেক করে নেবেন। প্রয়োজনে রেজিস্ট্রেশান পেপার, ফিটনেস পেপার, ব্লু বুক এর ফটোকপি নিয়ে বিআরটিএ অফিসে নিজে গিয়ে চেক করুন। ইঞ্জিন নং এবং চেসিস নং ঠিক আছে কি না, মিলিয়ে দেখুন।
(৪) অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে, বিক্রেতার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি রাখুন, এবং চেক করে দেখুন, আইডিটি নির্বাচন কমিশনের লিস্টেড কিনা। পারলে বাইকের ক্রয় রশিদটি বিক্রেতাকে নিয়ে আসতে বলুন। এরপর একটি এগ্রিমেন্ট পেপার সাইন করুন, ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প সহ।
(৫) বাইক বেচা-কেনার সময় সতর্ক থাকবেন, সকল লিগ্যাল ডকুমেন্টস চেক করে বুঝে নেবেন। বেচা-কেনার পর্ব শেষ হলে, দ্রুত বি.আর.টি.এ থেকে বাইকের মালিকানা ট্রান্সফার বা নাম পরিবর্তন করে নেবেন।

পরিশেষে, পুরানো বাইক কেনার আগে কেনার আগে অবশ্যই উপরের আলোচিত বিষয় গুলো মাথায় রাখবেন। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করলে অনেক ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবেন। বাইকের বর্তমান কন্ডিশন এবং লিগ্যাল ডকুমেন্টস বিবেচনা করেই বিক্রেতার সাথে দরদাম করবেন। সম্ভব হলে এসব বিষয়ে দক্ষ কাউকে সাথে নিয়ে পরামর্শ নেবেন। সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক কেনার চিন্তা করলে নিরাপত্তা নিয়ে একটু সচেতন থাকতেই হবে।

বাইক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ধারণা পেতে ভিজিট করুন বাইকস গাইডে। এটি একটি মোটরসাইকেল পোর্টাল যেখানে আপনি দেশে থাকা সব ধরণের বাইক সম্পর্কে ধারণা পাবেন। এখানে বিভিন্ন বাইকের স্পেসিফিকেশন, রিভিউ, ভালো-মন্দ দিক নিয়ে পর্যালোচনা, সহ আরো অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন।

Similar Advices



Leave a comment

Please rate

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Buy New Bikesbikroy
Bajaj Pulsar ug3 2012 for Sale

Bajaj Pulsar ug3 2012

35,000 km
MEMBER
Tk 55,000
7 hours ago
TVS Apache RTR 2V 2022 model for Sale

TVS Apache RTR 2V 2022 model

7,000 km
verified MEMBER
verified
Tk 145,000
1 day ago
Hero CD ভালো 2003 for Sale

Hero CD ভালো 2003

30,000 km
MEMBER
Tk 48,000
1 day ago
Suzuki Access 2024 for Sale

Suzuki Access 2024

60 km
MEMBER
Tk 30,000
2 days ago
Bajaj V15 2022 for Sale

Bajaj V15 2022

16,000 km
MEMBER
Tk 115,000
2 days ago
Buy Used Bikesbikroy
Suzuki Gixxer 2023 for Sale

Suzuki Gixxer 2023

5,000 km
verified MEMBER
Tk 180,000
7 minutes ago
Suzuki Gixxer . 2023 for Sale

Suzuki Gixxer . 2023

4,900 km
MEMBER
Tk 305,000
21 minutes ago
TVS Metro Plus 2022 for Sale

TVS Metro Plus 2022

5,700 km
MEMBER
Tk 97,000
35 minutes ago
Yamaha FZS 2022 for Sale

Yamaha FZS 2022

18,000 km
MEMBER
Tk 204,000
41 minutes ago
+ Post an ad on Bikroy